সড়ক দূর্ঘটনা আর কত প্রান কেড়ে নিবে পিরোজপুর-নাজিরপুর টু ঢাকা মহা সড়কে
- আপডেট টাইম : ১১:৫২:১৮ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩
- / ১৩৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
সড়ক যেন এক মৃত্যু ফাঁদ। পত্রপত্রিকার পাতায় কিংবা টিভির পর্দায় আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি সড়কে ভয়াবহ সব দুর্ঘটনার চিত্র। প্রতিটি জীবকে অবশ্যই মৃত্যুর স্বাধ বরণ করে নিতে হবে এটাই সত্য। তবে সবাই স্বাভাবিক মৃত্যু চায়। দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ কারোই কাম্য নয়। দুর্ঘটনায় হতাহতের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই নাজুক। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর সড়ক পথের যথেষ্ট উন্নতি হলেও জনসংখ্যার তুলনায় যথেষ্ট নয়। এটি সত্যিই অত্যান্ত পরিতাপের বিষয়। সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে আমাদের কী কিছুই করার নেই? যন্ত্রদানবের তান্ডবে প্রতিনিয়ত প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে নানা বয়স ও শ্রেণির মানুষের। প্রাণ শিহরতি হয়ে ওঠে যখন দেখি একই পরিবারের চার-পাঁচজন সদস্য একই সঙ্গে দুর্ঘটনায় নিহত হচ্ছে। ফুল ফোটার আগেই ঝড়ে যাচ্ছে শত শত প্রাণ। সরু রাস্তা, ড্রাইভারের অদক্ষতা, মাদক সেবন এবং নিদ্রার অভাব, প্রতিযোগীতামূলক ওভারট্রাকিংয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারনে ক্রমন্নয়েই বেড়ে চলছে পিরোজপুর-নাজিরপুর টু ঢাকা মহাসড়কে এ দূর্ঘটনা যেন নিত্য দিনের রুটিনে পরিনত হয়েছে। পরিবারের একটি তাজা প্রান সড়র দূর্ঘটনায় চলে যাওয়া যে কত কষ্টের তা একমাত্র তার পরিবার,আত্মীয়-স্বজনই বোঝে, গত ১৮ মার্চ পাথঘাটা থেকে ঢাকাগামী গ্রামীন পরিবহন পিরোজপুরের সংকরপাশা নামক স্থানে ১৭ জন যাত্রীবহনকরা টমটমকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে ৩ জন এবং পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় আরো ৪ জন মারা যায়। ১৯ মার্চ পিরোজপুর-নাজিরপুর সড়কের কদমতলার পাইকবাড়ি এলাকায় নাজনীন আক্তার (৩৫) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই গৃহবধূর স্বামী আলমগীর হোসেন মোল্লা ও মেয়ে রাফিয়া আক্তার (৩)। তিনি নাজিরপুর উপজেলার বুইচাকাঠী গ্রামের বাসিন্দা। ২২ মার্চ নাজিরপুরের দিঘীরজান তেল পাম্পের সামনে পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রন হারিয়ে একটি দোকানের ভিতরে উঠে যায় এতে গুরুত্বর আহত হয় ড্রাইভার। ২১ মার্চ নাজিরপুরের চিথলিয়া গাঙ্গেরআগা নামক স্থানে রাতে কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রন হারিয়ে উল্টে খাদে পড়ে যায় এতে ড্রাইভার সহ হেল্পার আহত হন। ২১ মার্চ পিরোজপুরের ব্রাহ্মমনকাঠীতে যাত্রীবাহী একটি লোকাল বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে যায় এতে কয়েকজন গুরুত্বর আহত হয়। একই দিন মঠবাড়িয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা গাড়ি উল্টে পড়ে ২ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া ছোট-খাট দূর্ঘটনা এই মাহাসড়কের নিত্যদিনের সঙ্গী। এভাবেই দিন দিন ভাড়ি হচ্ছে সড়কে মৃত্যুর মিছিল। স্বজনদের আহাজারী শুনতে পথচারীরা যেন অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
এবিষয়ে জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোঃ সাইফুর রহমান চৌধুরী জানান, আমরা প্রাথমিক ভাবে দূর্ঘটনার কারণ হিসেবে সরু রাস্তা, ড্রাইভারের অদক্ষতা এবং নিদ্রার অভাব, প্রতিযোগীতামূলক ওভারট্রাকিংয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং মহাসড়কে থ্রিহুইলার চলাচল এসব দূর্ঘটনার কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছি। নিরাপদ সড়কের জন্য জেলা শহর কেন্দ্রীক গাড়ি নিয়ন্ত্রন করতে চেষ্টা করছি। মহাসড়কগুলো সাধারণত হাইওয়ে পুলিশ নিয়ন্ত্রন করে আমাদের এ রুটে হাইওয়ে পুলিশ না থাকা এবং আমাদের ট্রাফিক জনবল কম থাকায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রনের জন্য আমাদের একটি মাত্র স্প্রিটগান থাকলেও তা বিকল, আমরা দ্রতগামী গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রনের জন্য স্প্রিটগান আবেদন করেছি, এটি পেলে আমরা দ্রতগামী গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রন রোধে ব্যবস্থা নিতে পারব, এবং আশাকরি দূর্ঘটনা কমবে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে দূর্ঘটনা রোধে বাস মালিক সমিতির সভাপতি, পেশাদার ড্রাইভার এবং মালিক পক্ষদের নিয়ে সচেতনতা মূলক কর্মশালা চলমান রাখছি।