গৃহহীন হিসেবে কয়েক বছর পূর্বে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কর পেলেন পারুল বেগম
- আপডেট টাইম : ০৯:৫৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৩
- / ২৬৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
দরিদ্র ও গৃহহীন হিসেবে কয়েক বছর পূর্বে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পান নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের পারুল বেগম।
সম্প্রতি সেই ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র (এসি) লাগানোর পর এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পারুল বেগমের স্বামী-ছেলে ব্যবহার করেন লক্ষাধিক টাকার মোটরসাইকেল। এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন- যদি তিনি দরিদ্রই হন, তাহলে কিভাবে তার ঘরে এসি ব্যবহার হয়?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মান্দা উপজেলায় হাতেগোনা কিছু সরকারি অফিস, মসজিদ এবং বাসাবাড়িতে এসি ব্যবহার হয়। এ ছাড়া এলাকার অন্যান্য বাসাবাড়িতে বা বহুতল ভবনে সচরাচর এসির ব্যবহার চোখে পড়ে না। অথচ সরকারের দেওয়া আশ্রয়ণের ঘরে ব্যবহার হচ্ছে এসি। দলীয় সুপারিশে তিনি এ ঘরটি পেয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, বর্তমানে পারুল বেগম গোবিন্দপুর গ্রামের একটি গভীর নলকূপের অপারেটর। তার স্বামী এবং ছেলে প্রতিমাসে মাসে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার মতো আয় করেন বলে সব জায়গায় দাম্ভিকতা দেখান তিনি। কিন্তু কোন খাত থেকে তাদের এই মোটা অংকের টাকা হয় তা এলাকাবাসীর অজানা। তার ছেলে পারভেজ সাংবাদিক পরিচয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের ডিসকভার এবং স্বামী রেজাউল ইসলাম লক্ষাধিক টাকা মূল্যের টিভিএস মোটরসাইকেলে ব্যবহার করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য এ উপজেলায় বেশকিছু গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্যে কিছু ঘর নির্মাণাধীন থাকলেও বাকি ঘরগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এগুলো তালিকাভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর মাঝে ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ উপজেলায় দলীয় সুপারিশে বেশ কিছু ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। যার অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দল ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে বরাদ্দ নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আশ্রয়ণের ঘর পাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে পারুল বেগমের স্বামী রেজাউল ইসলাম জানান, সরকারিভাবে আমরা এই ঘরটি পেয়েছি। আমরা গরম সহ্য করতে পারি না। তাই ঘরে এসি লাগিয়েছি। এতে দোষের কী হলো।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, তৎকালীন এমপি মহোদয় এবং ইউএনওর সুপারিশে গৃহহীনদের তালিকায় গোবিন্দপুর (শাহানাপাড়া) গ্রামে পারুল বেগম নামে এক ভূমিহীন নারীকে একটি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি নিজ উদ্যোগে ঘরে এসি লাগিয়েছেন বলে লোকমুখে শুনেছি।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, দরিদ্র ও অসহায় বা এমন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোকে সরকারি খরচে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। কোনো সচ্ছল ব্যক্তির এ ঘর পাওয়ার কথা নয়। তারপরও এ ধরনের অভিযোগের সূত্র ধরে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।