ঢাকা ১০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে. ড. রেজাউল করিম মঠবাড়ীয়া আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ইং ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয় টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের হস্তক্ষেপে মামলা প্রত্যাহার হওয়া টাঙ্গাইলবাসী খুশি! সভাপতি/সম্পাদকের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অনিয়মের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান সিইসির পুলিশ, র‌্যাব, আনসারের নতুন পোশাক চুড়ান্ত নাইজেরিয়ায় ট্যাংকার ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ৮৬ অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করা প্রতিবেদন প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের যুবদল নেতাকে পিটিয়ে আহত করেছে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা বরগুনার, পাথরঘাটায় সাবেক ইউপি সদস্যকে হুমকি ও মারধর চার প্রদেশে দেশ ভাগ করার কথা ভাবছে সংস্কার কমিশন

৩৭ বছর ভাত খান না ১৫ সন্তানের জননী জোহরা বিবি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ০৯:১৫:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৮৩ ৫০০০.০ বার পাঠক

মাছে ভাতে বাঙালি বাংলাদেশের একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ। বাঙালির প্রধান খাবার ভাত। ভাত আমাদের শরীরের শর্করা উৎপাদনের প্রধান উৎস। ভাত শরীরের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শক্তির জোগান দেয়। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জলবায়ু ধান উৎপাদনে উপযোগী হওয়ায় হাজার হাজার বছর ধরে এ অঞ্চলের সকলের প্রিয় খাবার ভাত। ভাত ছাড়া তিন বেলা খাওয়ার কথা বাঙালি কল্পনা করতে পারে না। তাই কেউ যদি ৩৭ বছর ভাত না খেয়ে দিব্যি সাধারণ জীবনযাপন করছে শুনতে একটু অবাক লাগে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শহরতলী কুখরালী গ্রামের ৮৬ বছরের বয়োবৃদ্ধা ১৫ সন্তানের জননী জোহরা বিবি ৩৭ বছর যাবৎ ভাত না খেয়ে আছেন। জোহরা বিবি কয়েক বছর পূর্বে অজু করার সময় পড়ে যেয়ে সামনের চারটি দাঁত ও পরে আরও দু‘টি দাঁত হারান। দন্তহীন মুখে ধীরে স্পষ্টভাবে জোহরা বিবি বলেন, আমার আব্বা মান্দার মোড়ল ভারতের বশিরহাট থানার মেজ দারোগা ছিল। সাকচুড়া আমাদের গ্রামের নাম। ছোট বেলায় আব্বা আমার মোড়ল পরিবারে বিয়ে দেয়। আমার বয়স যখন তের বছর তখন আমার বড় ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলের বয়স এখন ৭২ বছর। আল্লাহ আমার ১৫ সন্তান দিয়েছে। আমার দুই জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে মারা গেছে। আল্লাহর রহমতে ১০ জন সন্তান জীবিত আছে, সাত জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে। আমার ছোট ছেলের জন্মের দুই তিন বছর পর আমার পেটে অনেক ব্যথা যন্ত্রণা হত। ছেলেরা বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেট কাটতে হবে জানায়। কিন্তু আমি তো পেট কাটবো না। পেটের যন্ত্রণায় আমার খাওয়া কমে যায়। তখন আমি শাকসবজি, তরিতরকারি আর মুড়ি খেতাম। এরপর থেকে আমার পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়। এরপর থেকে আমি আর কখনো ভাত খাইনি। এখন সকালে বিস্কুট আর চা, দুপুরে মুড়ি ভিজিয়ে তরিতরকারি দিয়ে খাই, কখনো কখনো অল্প মাছ ও মাংস খাই, আর রাতে বিস্কুট আর চা খাই। আমি চশমা ছাড়া কোরআন শরিফ পড়তে পারি, তবে চশমা পড়লে ভাল হয়। পর্দাশীল জোহরা বিবি হাসতে হাসতে বলেন, শরিল (শরীর) আর আগের মত নেই, আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে, বয়স হচ্ছে তো-। জোহরা বিবির জেষ্ঠ্য পুত্র নূর ইসলাম মোড়ল জানান, মার ছোটবেলা থেকে পেটে একটু ব্যথা যন্ত্রণা ছিল। ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে পেটের যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়। আমরা মার ডাক্তারের কাছে নিলে ডাক্তার জানায়, ‘টিউমার হয়েছে অপারেশন করতে হবে।’ কিন্তু মা অপারেশন করবে না। ডাক্তারের ওষুধ খায় আর মা ভাত খাওয়া বাদ দেয়, এতে মার পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়। ১৯৮৫ সালের পর থেকে মা আর ভাত খায়নি। মা ভাত না খাওয়ায় প্রথমে আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম কিন্তু মা সুস্থ থাকায় আমাদের চিন্তা দূর হয়। তারপর থেকে মা যা খেতে চায় তা খাওয়ানোর চেষ্টা করি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি মা সুস্থ থেকে বাকি জীবন পার করতে পারে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

৩৭ বছর ভাত খান না ১৫ সন্তানের জননী জোহরা বিবি

আপডেট টাইম : ০৯:১৫:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২

মাছে ভাতে বাঙালি বাংলাদেশের একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ। বাঙালির প্রধান খাবার ভাত। ভাত আমাদের শরীরের শর্করা উৎপাদনের প্রধান উৎস। ভাত শরীরের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শক্তির জোগান দেয়। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জলবায়ু ধান উৎপাদনে উপযোগী হওয়ায় হাজার হাজার বছর ধরে এ অঞ্চলের সকলের প্রিয় খাবার ভাত। ভাত ছাড়া তিন বেলা খাওয়ার কথা বাঙালি কল্পনা করতে পারে না। তাই কেউ যদি ৩৭ বছর ভাত না খেয়ে দিব্যি সাধারণ জীবনযাপন করছে শুনতে একটু অবাক লাগে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শহরতলী কুখরালী গ্রামের ৮৬ বছরের বয়োবৃদ্ধা ১৫ সন্তানের জননী জোহরা বিবি ৩৭ বছর যাবৎ ভাত না খেয়ে আছেন। জোহরা বিবি কয়েক বছর পূর্বে অজু করার সময় পড়ে যেয়ে সামনের চারটি দাঁত ও পরে আরও দু‘টি দাঁত হারান। দন্তহীন মুখে ধীরে স্পষ্টভাবে জোহরা বিবি বলেন, আমার আব্বা মান্দার মোড়ল ভারতের বশিরহাট থানার মেজ দারোগা ছিল। সাকচুড়া আমাদের গ্রামের নাম। ছোট বেলায় আব্বা আমার মোড়ল পরিবারে বিয়ে দেয়। আমার বয়স যখন তের বছর তখন আমার বড় ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলের বয়স এখন ৭২ বছর। আল্লাহ আমার ১৫ সন্তান দিয়েছে। আমার দুই জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে মারা গেছে। আল্লাহর রহমতে ১০ জন সন্তান জীবিত আছে, সাত জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে। আমার ছোট ছেলের জন্মের দুই তিন বছর পর আমার পেটে অনেক ব্যথা যন্ত্রণা হত। ছেলেরা বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেট কাটতে হবে জানায়। কিন্তু আমি তো পেট কাটবো না। পেটের যন্ত্রণায় আমার খাওয়া কমে যায়। তখন আমি শাকসবজি, তরিতরকারি আর মুড়ি খেতাম। এরপর থেকে আমার পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়। এরপর থেকে আমি আর কখনো ভাত খাইনি। এখন সকালে বিস্কুট আর চা, দুপুরে মুড়ি ভিজিয়ে তরিতরকারি দিয়ে খাই, কখনো কখনো অল্প মাছ ও মাংস খাই, আর রাতে বিস্কুট আর চা খাই। আমি চশমা ছাড়া কোরআন শরিফ পড়তে পারি, তবে চশমা পড়লে ভাল হয়। পর্দাশীল জোহরা বিবি হাসতে হাসতে বলেন, শরিল (শরীর) আর আগের মত নেই, আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে, বয়স হচ্ছে তো-। জোহরা বিবির জেষ্ঠ্য পুত্র নূর ইসলাম মোড়ল জানান, মার ছোটবেলা থেকে পেটে একটু ব্যথা যন্ত্রণা ছিল। ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে পেটের যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়। আমরা মার ডাক্তারের কাছে নিলে ডাক্তার জানায়, ‘টিউমার হয়েছে অপারেশন করতে হবে।’ কিন্তু মা অপারেশন করবে না। ডাক্তারের ওষুধ খায় আর মা ভাত খাওয়া বাদ দেয়, এতে মার পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়। ১৯৮৫ সালের পর থেকে মা আর ভাত খায়নি। মা ভাত না খাওয়ায় প্রথমে আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম কিন্তু মা সুস্থ থাকায় আমাদের চিন্তা দূর হয়। তারপর থেকে মা যা খেতে চায় তা খাওয়ানোর চেষ্টা করি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি মা সুস্থ থেকে বাকি জীবন পার করতে পারে।