ঢাকা ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগ নেতার দখলের চেষ্টা।এই বিষয়ে সময়ের কন্ঠস্বরে নিউজ প্রকাশের পর এসিল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞা ফার্মেসী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সমগ্র বাংলাদেশ) পাকুন্দিয়া উপজেলা শাখা কমিটির সকলকে সনদ প্রদান ও আলোচনা সভা ২৫২ বছরের ইতিহাসে চট্টগ্রামে এই প্রথম নারী ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদায়ন ফরিদা খানম গাজীপুর জেলা মহানগর কাশিমপুরে স্বাধীন মত প্রকাশের জেরে থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্জেরহাটি গ্রামের সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব বনিকের দখলের চেষ্টা নরসিংদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু জুলাই বিপ্লবে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড

সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে খুলনা সড়ক বিভাগ নড়ে চড়ে বসেছে

মোঃ শাহিদুল ইসলাম ( যশোর। 
  • আপডেট টাইম : ১১:৪০:০৬ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৬৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন একটি দুর্ভোগের নাম। নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই একবার ফুলে ফেঁপে উঠে। আবার সেই স্থান মেরামত শেষ না হতেই খান্দ-খন্দে পরিণত হয়। বারবার খবরের শিরোনাম হওয়া গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি নিয়ে তাই বিভিন্ন সময় কথা বলেছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সর্বশেষ ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের এক মাসের সময় দিয়ে হুশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, এক মাসের মধ্যে সমাধান না হলে খবর আছে। এরপরই নড়েচড়ে বসেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তারা। গতকাল রোববার সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে একমাসের সময়সীমা বেঁধে চিঠি দিয়েছেন তারা। সেখানে বলা হয়েছে এক মাসের মধ্যে যশোর-খুলনা সড়কটি সম্পূর্ণ চলাচল উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে জামানত বাজেয়াপ্তসহ লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হবে।

সূত্র মতে, যশোর-খুলনা মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। ২০২০ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। সময় বাড়ানো হয় আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। একই সাথে সরকারের ব্যয় বাড়ে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সওজ প্রকৌশলীদের একমাসের সময় বেধে দিয়ে সড়কটির যথাযথ মানে উন্নীত করার নির্দেশ দেন। সওজ সূত্রে জানা গেছে, যশোর-খুলনা মহাসড়কটি নির্মাণকাজ চলমান থাকাবস্থায় ৮ কিলোমিটার সড়ক ফুলে ফেঁপে উঠে। বিষয়টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে সরকার বুয়েটের একজন শিক্ষককে পরামর্শক নিয়োগ করেন। তিনি সরেজমিন ঘুরে সড়কের দু’পাশে ওয়ারিং করার সুপারিশ করেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফ মাহমুদ জানান, সড়কে আঁকা-বাকা হয়ে ফুলে ফেঁপে উঠছিল। সেগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঠিক করে দিয়েছেন। আমাদের পরামর্শকের সুপারিশ অনুযায়ী সড়কের দু’পাশে হার্ডসোল্ডার ওয়ারিং করা হয়েছে। কেননা রাস্তার পাশে দেড় মিটার নিচু থাকার কারণে গাড়ির চাপ পড়ছিল রাস্তার মাঝখানে। যেকারণে সড়কের নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।সওজ সূত্র জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার উন্নয়নে ৩শ’২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার চুক্তি ছিল। মহাসড়কটি যশোর শহরতলীর পালবাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত নতুন করে নির্মিত হচ্ছে। ২৭ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন্ন করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব এন্ড ব্রাদার্স, তমা কনস্ট্রাশন এন্ড কোং। অথচ ৮ কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছিল উঁচুনিচু অবস্থা। ফুলে- ফেঁপে উঠায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। সড়কটি বর্তমানে ২৪ ফুট চওড়া রয়েছে। এটি আরো ১০ ফুট উন্নীত করে ৩৪ ফুট চওড়া ও দুই লেন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সড়কের নতুন করে ভিত তৈরি করে সাড়ে ৪ ফুট থেকে ৫ ফুট গর্ত করে প্রথমে বালি ফিলিং, পরে বালি ও খোয়া এবং শেষে বালি ও পাথর মিশিয়ে ভরাট করার নিয়ম আছে। এরপর বিটুমিন সারফেজ ৫ ইঞ্চি দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। সড়ক দুটির কাজের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের এ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোন নিয়মনীতি মানেনি। তারা গোজামিল দিয়ে ইচ্ছামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো বৃটিশ আমলের লোনা ধরা ইট ও খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙ্গে গর্তে ব্যবহার করেছেন। যা দরপত্রে বলা হয়নি। এছাড়া সড়কটি ৫ ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সেই নিয়মও মানেনি। সড়কে নতুন ইট বালি, খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে উঠানো মালামালই ফের ভরাট করা হয়েছে।যশোর-খুলনা সড়কের বসুন্দয়ার বাসিন্দা বাদল হোসেন জানান, নিয়ম মেনে সড়ক নির্মাণ করা না হলে সেটি বেশিদিন স্থায়ী হবে না। সড়ক নির্মাণের শুরুতে অনিয়ম হলেও কর্তৃপক্ষের জোরালো ভূমিকা আমরা দেখিনি। আমাদের এলাকার সড়কেও তৈরি হয়েছিল আকাবাঁকা। পরে সেগুেেলা সংস্কার করা হয়েছে।যশোর বাস মালিক সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান বাবলু জানান, নির্মিত সড়কে এমন ফুলে ফেঁপে উঠা কখনও দেখিনি। সেটি কোন রকম ঠিক করা হয়েছে। সওজের সাথে আঁতাত করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের কাজে অনিয়ম করার কারণে এমনটি হয়েছে। এতে সড়কের স্থায়ীত্ব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে খুলনা সড়ক বিভাগ নড়ে চড়ে বসেছে

আপডেট টাইম : ১১:৪০:০৬ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন একটি দুর্ভোগের নাম। নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই একবার ফুলে ফেঁপে উঠে। আবার সেই স্থান মেরামত শেষ না হতেই খান্দ-খন্দে পরিণত হয়। বারবার খবরের শিরোনাম হওয়া গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি নিয়ে তাই বিভিন্ন সময় কথা বলেছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সর্বশেষ ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের এক মাসের সময় দিয়ে হুশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, এক মাসের মধ্যে সমাধান না হলে খবর আছে। এরপরই নড়েচড়ে বসেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তারা। গতকাল রোববার সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে একমাসের সময়সীমা বেঁধে চিঠি দিয়েছেন তারা। সেখানে বলা হয়েছে এক মাসের মধ্যে যশোর-খুলনা সড়কটি সম্পূর্ণ চলাচল উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে জামানত বাজেয়াপ্তসহ লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হবে।

সূত্র মতে, যশোর-খুলনা মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। ২০২০ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। সময় বাড়ানো হয় আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। একই সাথে সরকারের ব্যয় বাড়ে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সওজ প্রকৌশলীদের একমাসের সময় বেধে দিয়ে সড়কটির যথাযথ মানে উন্নীত করার নির্দেশ দেন। সওজ সূত্রে জানা গেছে, যশোর-খুলনা মহাসড়কটি নির্মাণকাজ চলমান থাকাবস্থায় ৮ কিলোমিটার সড়ক ফুলে ফেঁপে উঠে। বিষয়টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে সরকার বুয়েটের একজন শিক্ষককে পরামর্শক নিয়োগ করেন। তিনি সরেজমিন ঘুরে সড়কের দু’পাশে ওয়ারিং করার সুপারিশ করেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফ মাহমুদ জানান, সড়কে আঁকা-বাকা হয়ে ফুলে ফেঁপে উঠছিল। সেগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঠিক করে দিয়েছেন। আমাদের পরামর্শকের সুপারিশ অনুযায়ী সড়কের দু’পাশে হার্ডসোল্ডার ওয়ারিং করা হয়েছে। কেননা রাস্তার পাশে দেড় মিটার নিচু থাকার কারণে গাড়ির চাপ পড়ছিল রাস্তার মাঝখানে। যেকারণে সড়কের নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।সওজ সূত্র জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার উন্নয়নে ৩শ’২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার চুক্তি ছিল। মহাসড়কটি যশোর শহরতলীর পালবাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত নতুন করে নির্মিত হচ্ছে। ২৭ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন্ন করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব এন্ড ব্রাদার্স, তমা কনস্ট্রাশন এন্ড কোং। অথচ ৮ কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছিল উঁচুনিচু অবস্থা। ফুলে- ফেঁপে উঠায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। সড়কটি বর্তমানে ২৪ ফুট চওড়া রয়েছে। এটি আরো ১০ ফুট উন্নীত করে ৩৪ ফুট চওড়া ও দুই লেন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সড়কের নতুন করে ভিত তৈরি করে সাড়ে ৪ ফুট থেকে ৫ ফুট গর্ত করে প্রথমে বালি ফিলিং, পরে বালি ও খোয়া এবং শেষে বালি ও পাথর মিশিয়ে ভরাট করার নিয়ম আছে। এরপর বিটুমিন সারফেজ ৫ ইঞ্চি দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। সড়ক দুটির কাজের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের এ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোন নিয়মনীতি মানেনি। তারা গোজামিল দিয়ে ইচ্ছামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো বৃটিশ আমলের লোনা ধরা ইট ও খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙ্গে গর্তে ব্যবহার করেছেন। যা দরপত্রে বলা হয়নি। এছাড়া সড়কটি ৫ ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সেই নিয়মও মানেনি। সড়কে নতুন ইট বালি, খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে উঠানো মালামালই ফের ভরাট করা হয়েছে।যশোর-খুলনা সড়কের বসুন্দয়ার বাসিন্দা বাদল হোসেন জানান, নিয়ম মেনে সড়ক নির্মাণ করা না হলে সেটি বেশিদিন স্থায়ী হবে না। সড়ক নির্মাণের শুরুতে অনিয়ম হলেও কর্তৃপক্ষের জোরালো ভূমিকা আমরা দেখিনি। আমাদের এলাকার সড়কেও তৈরি হয়েছিল আকাবাঁকা। পরে সেগুেেলা সংস্কার করা হয়েছে।যশোর বাস মালিক সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান বাবলু জানান, নির্মিত সড়কে এমন ফুলে ফেঁপে উঠা কখনও দেখিনি। সেটি কোন রকম ঠিক করা হয়েছে। সওজের সাথে আঁতাত করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের কাজে অনিয়ম করার কারণে এমনটি হয়েছে। এতে সড়কের স্থায়ীত্ব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।