ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
২৫২ বছরের ইতিহাসে চট্টগ্রামে এই প্রথম নারী ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদায়ন ফরিদা খানম গাজীপুর জেলা মহানগর কাশিমপুরে স্বাধীন মত প্রকাশের জেরে থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্জেরহাটি গ্রামের সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব বনিকের দখলের চেষ্টা নরসিংদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু জুলাই বিপ্লবে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড আজমিরীগঞ্জে  বিয়ের ছয় মাস পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা রায়পুরে দেশীয় শিল্প ও পণ্য মেলায় ভ্রাম্যমান আদালত, নগদ অর্থদণ্ড

কুড়িগ্রামের উলিপুরে হাতিয়া গণহত্যা দিবস আজ

এম সাহেব আলী মন্ডল, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৮:৪২ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২
  • / ১৫৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

তারিখ -১২ নভেম্বর ২০২২ ইং।

উত্তরবঙ্গের আলোচিত সর্ববৃহৎ হাতিয়া গণহত্যা দিবস আজ। কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা সদর হতে ৮ কিলোমিটার পূর্ব দিকে হাতিয়া ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের একটি জায়গার নাম দাগারকুঠি।
১৯৭১ সালের ২৩ রমজান দিনটি ছিল শনিবার। এইদিন ফজরের নামাজের পরপর
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, তাদের এদেশীয় দোসর, দালাল ও রাজাকারদের সহায়তায় কুড়িগ্রাম, উলিপুর ও চিলমারী এই তিন দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পাড়ের হাতিয়া ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে আক্রমণ চালিয়েছিল।
দাগারকুটি, নয়াদাড়া, নীলকন্ঠ, হিজলীগোপপাড়া, অনন্তপুর, হাতিয়া ভবেশ, সরকারিগ্রাম, রামখানা, কলাতিপাড়া, হাতিয়া বকসী, রামরামপুর, সাতভিটা, বকসিগন্জ, জলাঙ্গারকুটি, শ্যামপুর, ব্যাপারীগ্রাম, মন্ডলেরহাট, সাদিরগ্রাম, আঠারোপাইকা ও মাদারটারী এই ২০টি গ্রাম থেকে ৬৯৭ জন নিরীহ-নিরপরাধ মানুষকে ধরে এনে  জড়ো করেছিল দাগারকুটি বধ্যভূমিতে। তারপর গুলি করে এবং বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল তাদের। শুধু তাই নয়, সেদিন নারীদের  ধর্ষণ এবং বাড়িতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছিল নির্বিচারে। তাদের হত্যাযজ্ঞে কোলের শিশুরাও রেহাই পায়নি। ওই সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর লালসার শিকার কারীপাড়া গ্রামের শমসের আলীর স্ত্রী বীরাঙ্গনা ফুলঝুরি বেওয়া, গাবুরজান গ্রামের বীরাঙ্গনা হাছিনা বেগম এবং গুলির আঘাতে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে প্রাণে বেঁচে থাকা রামরামপুর গ্রামের কামাল হোসেন, ভাটিগ্রামের আইয়ুব আলী, সেই ভয়াল দিনের কথা স্মরণ করে আজও কেঁদে ফেলেন। দাগারকুটি বধ্যভূমিতে শহীদদের মরদেহ দু’দিন পড়েছিল। এরপর গ্রামবাসীরা এসে সেখানে তাদের গণকবর দিয়েছিলেন। সেই গণকবর ও স্মৃতিস্তম্ভ এখন দুটোই ব্রক্ষপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেছে। শহীদদের স্মরণে হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর বাজারের প্রবেশ মুখে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হাতিয়া ইউনিয়ন শাখার কমান্ডার মোঃ মজাহার আলী বলেন, ১৯৭১ সালের ওই মুক্তিযুদ্ধে দাগারকুঠি এলাকার শহিদদের পূর্নাঙ্গ তালিকা এখনও তৈরি হয়নি। হাতিয়া গণহত্যায় শহিদদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ এবং শহিদদের নামফলক স্থাপন ও তাদের পুনর্বাসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এলাকাবাসি। এদিকে দিবসটি পালনে রোববার সকালে স্মৃতিসৌধ চত্বরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কুড়িগ্রামের উলিপুরে হাতিয়া গণহত্যা দিবস আজ

আপডেট টাইম : ০৬:৩৮:৪২ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২

তারিখ -১২ নভেম্বর ২০২২ ইং।

উত্তরবঙ্গের আলোচিত সর্ববৃহৎ হাতিয়া গণহত্যা দিবস আজ। কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা সদর হতে ৮ কিলোমিটার পূর্ব দিকে হাতিয়া ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের একটি জায়গার নাম দাগারকুঠি।
১৯৭১ সালের ২৩ রমজান দিনটি ছিল শনিবার। এইদিন ফজরের নামাজের পরপর
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, তাদের এদেশীয় দোসর, দালাল ও রাজাকারদের সহায়তায় কুড়িগ্রাম, উলিপুর ও চিলমারী এই তিন দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পাড়ের হাতিয়া ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে আক্রমণ চালিয়েছিল।
দাগারকুটি, নয়াদাড়া, নীলকন্ঠ, হিজলীগোপপাড়া, অনন্তপুর, হাতিয়া ভবেশ, সরকারিগ্রাম, রামখানা, কলাতিপাড়া, হাতিয়া বকসী, রামরামপুর, সাতভিটা, বকসিগন্জ, জলাঙ্গারকুটি, শ্যামপুর, ব্যাপারীগ্রাম, মন্ডলেরহাট, সাদিরগ্রাম, আঠারোপাইকা ও মাদারটারী এই ২০টি গ্রাম থেকে ৬৯৭ জন নিরীহ-নিরপরাধ মানুষকে ধরে এনে  জড়ো করেছিল দাগারকুটি বধ্যভূমিতে। তারপর গুলি করে এবং বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল তাদের। শুধু তাই নয়, সেদিন নারীদের  ধর্ষণ এবং বাড়িতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছিল নির্বিচারে। তাদের হত্যাযজ্ঞে কোলের শিশুরাও রেহাই পায়নি। ওই সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর লালসার শিকার কারীপাড়া গ্রামের শমসের আলীর স্ত্রী বীরাঙ্গনা ফুলঝুরি বেওয়া, গাবুরজান গ্রামের বীরাঙ্গনা হাছিনা বেগম এবং গুলির আঘাতে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে প্রাণে বেঁচে থাকা রামরামপুর গ্রামের কামাল হোসেন, ভাটিগ্রামের আইয়ুব আলী, সেই ভয়াল দিনের কথা স্মরণ করে আজও কেঁদে ফেলেন। দাগারকুটি বধ্যভূমিতে শহীদদের মরদেহ দু’দিন পড়েছিল। এরপর গ্রামবাসীরা এসে সেখানে তাদের গণকবর দিয়েছিলেন। সেই গণকবর ও স্মৃতিস্তম্ভ এখন দুটোই ব্রক্ষপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেছে। শহীদদের স্মরণে হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর বাজারের প্রবেশ মুখে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হাতিয়া ইউনিয়ন শাখার কমান্ডার মোঃ মজাহার আলী বলেন, ১৯৭১ সালের ওই মুক্তিযুদ্ধে দাগারকুঠি এলাকার শহিদদের পূর্নাঙ্গ তালিকা এখনও তৈরি হয়নি। হাতিয়া গণহত্যায় শহিদদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ এবং শহিদদের নামফলক স্থাপন ও তাদের পুনর্বাসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এলাকাবাসি। এদিকে দিবসটি পালনে রোববার সকালে স্মৃতিসৌধ চত্বরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।