ঢাকা ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভিক্ষায় চলেছে পাগলী বেওয়ার দিন

এম সাহেব আলী মন্ডল, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৯:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২
  • / ৬৯৫ ১৫০.০০০ বার পাঠক

তারিখ – ৮ নভেম্বর ২০২২ ইং। ১১৫ বছরেও দিব্যি সুস্থ। আসল নাম কেউ জানেনা। পাগলি নামেই সবাই চেনেন তাকে। কুড়িগ্রামের উলিপুরে শহীদ পরিবারের সদস্য বাকপ্রতিবন্ধী পাগলি বেওয়ার দিন চলছে ভিক্ষা করে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের রামখানা গ্রামে জন্ম পাগলি বেওয়ার। জন্ম থেকেই সে বাকপ্রতিবন্ধী। পাকিস্তান আমলে একই ইউনিয়নের নীলকন্ঠ গ্রামে বিয়ে হয় তার। বিয়ের ছয় মাস পার হতে না হতেই মারা যান তার স্বামী। অভাব অনটন ছিল তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। সংসারে ছিল এক ভাই, এক বোন ও বৃদ্ধ পিতা। ছোট ভাই আবুল হোসেন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে দাগারকুঠি নামক স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। তার লাশ রাস্তায় শিয়াল কুকুরকে খাওয়ানো হয়। ছেলের এমন করুন পরিণতি দেখে পিতা কানছিয়াশেখ সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এক সময় ধরলা নদীর কড়াল গ্রাসে ভেঙে যায় রামখানা গ্রাম। বিলিন হয়ে যায় পাগলীদের বেওয়ার বসতভিটা। সেই থেকে তার আশ্রয় হয় ভগ্নিপতি তছলিমের বাড়ীতে। বছর কয়েক পর ভগ্নিপতি তছলিমও মারা যান। সেখানেও তার আর থাকা হয়নি। বর্তমানে অনন্তপুর ফেডারেশন গ্রামে জাবেদ আলীর বাড়িতে একটি খুপরি ঘরে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও পেটের দায়ে সারাদিন ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করছেন। সরকারি ভাবে শহীদ পরিবারকে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করলেও কোনটাই জোটেনি তার ভাগ্যে। এ ব্যাপারে হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শায়খুল ইসলাম নয়া বলেন, পাগলী বেওয়া প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তবে তিনি অতি সহজ সরল। যে কোন বরাদ্দ পেলেই আমি তাকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করবো।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভিক্ষায় চলেছে পাগলী বেওয়ার দিন

আপডেট টাইম : ১০:৩৯:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২

তারিখ – ৮ নভেম্বর ২০২২ ইং। ১১৫ বছরেও দিব্যি সুস্থ। আসল নাম কেউ জানেনা। পাগলি নামেই সবাই চেনেন তাকে। কুড়িগ্রামের উলিপুরে শহীদ পরিবারের সদস্য বাকপ্রতিবন্ধী পাগলি বেওয়ার দিন চলছে ভিক্ষা করে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের রামখানা গ্রামে জন্ম পাগলি বেওয়ার। জন্ম থেকেই সে বাকপ্রতিবন্ধী। পাকিস্তান আমলে একই ইউনিয়নের নীলকন্ঠ গ্রামে বিয়ে হয় তার। বিয়ের ছয় মাস পার হতে না হতেই মারা যান তার স্বামী। অভাব অনটন ছিল তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। সংসারে ছিল এক ভাই, এক বোন ও বৃদ্ধ পিতা। ছোট ভাই আবুল হোসেন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে দাগারকুঠি নামক স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। তার লাশ রাস্তায় শিয়াল কুকুরকে খাওয়ানো হয়। ছেলের এমন করুন পরিণতি দেখে পিতা কানছিয়াশেখ সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এক সময় ধরলা নদীর কড়াল গ্রাসে ভেঙে যায় রামখানা গ্রাম। বিলিন হয়ে যায় পাগলীদের বেওয়ার বসতভিটা। সেই থেকে তার আশ্রয় হয় ভগ্নিপতি তছলিমের বাড়ীতে। বছর কয়েক পর ভগ্নিপতি তছলিমও মারা যান। সেখানেও তার আর থাকা হয়নি। বর্তমানে অনন্তপুর ফেডারেশন গ্রামে জাবেদ আলীর বাড়িতে একটি খুপরি ঘরে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও পেটের দায়ে সারাদিন ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করছেন। সরকারি ভাবে শহীদ পরিবারকে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করলেও কোনটাই জোটেনি তার ভাগ্যে। এ ব্যাপারে হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শায়খুল ইসলাম নয়া বলেন, পাগলী বেওয়া প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তবে তিনি অতি সহজ সরল। যে কোন বরাদ্দ পেলেই আমি তাকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করবো।