জীবন যুদ্ধে পরিবার বাচাতে ৯ বছর যাবত এক হাতেই রিক্সা চালাচ্ছেন জামালপুরের আলম
- আপডেট টাইম : ১২:১৮:৫৩ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২
- / ১৬৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
দীর্ঘ ৯ বছর ধরে এক হাতের উপর ভর করে চালাচ্ছেন তিন চাকার বাংলা রিক্সা। দেখলে অনেকের অবাক হলেও এটাই নিয়তির বিধান। কোন সিনেমার গল্প নয় কথাগুলো হতদরিদ্র অসহায় ভুমিহীন যুবক মো.আলম মিয়ার জীবন যুদ্ধের। এই জীবন সংগ্রামে কারো কাছে হাত পেতে না চেয়ে জীবনের কঠিন সময়গুলো বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে কঠোর পরিশ্রম করে স্ত্রী ও দুই সন্তানের ভরনপোষণসহ তাদের লেখা পড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন । দুই হাত থাকা অবস্থায় ঢাকা ও টঙ্গীর বিভিন্ন তুলার মিলে কাজ করছেন আলম। কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুরতম বিধান তুলার মেশিনে কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ একদিন তার ডান হাত কাটা পড়ে যায়। তুলার মেইল মালিকের করা চিকিৎসায় দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর সুস্থ হয়ে উঠেন তিনি ।কিন্তু হাত না থাকায় সেখানে বেশি দিন কাজ করতে পারলোনা আলম। জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার ঘোষের পাড়া ভূমিহীন পিতা মঞ্জু শেখের ছেলে মো.আলম মিয়া (৩৫)। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন । আলম মিয়া ও তার বাবা, মা সহ থাকেন টঙ্গীর বনমালা রেললাইনে একটি ছোট ভাড়া বাসায়। তার স্ত্রী ও সন্তানরা থাকেন গ্রামে শশুর বাড়িতে। গ্রামে মাথা গোজার মতো নেই কোনো বসত ভিটা। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে খেয়ে না খেয়ে স্ত্রী সন্তানের জন্য এক হাতেই রিক্সা চালিয়ে সংসারের খরচ ও সন্তানদের লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছেন আলম। কাজের সুবাদে ঢাকা ও টঙ্গীতে থাকা হলেও গ্রামে গিয়ে শশুর বাড়িতে উঠতে হয় আলম মিয়াকে। যেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সারাদেশে কোনো ভূমিহীন থাকবেনা। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীনদের জন্য সারাবাংলায় সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। সেখানে সরকারি বা বেসরকারি ভাবে কোনো দান অনুদান পর্যন্ত পাননি তিনি। এক হাত হারানো কর্মবীর যুবক আলম মিয়া সরকার ও বৃত্তবানদের দিকে সহযোগিতা চেয়েছেন। যদি কেউ সহযোগিতা করতে চান তবে তার দেওয়া ( 01313157773 )ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করতে পারবেন।
আলম মিয়া বলেন,জমি কিনে ঘর তুলার সামর্থ্য তো নেই, ভূমিহীনদের যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন আমি যদি একটা ঘর পেতাম, স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারতাম।
এ বিষয়ে ঘোষের পাড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুদ রানা জানান, গ্রামে জায়গা জমি না থাকায় ঢাকা শহরে কাজ করে খায় আলম ও তার বাবা মা । যখন বাড়িতে আসে আমি সাধ্য মতো তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
এ বিষয়ে জামালপুর জেলা মেলান্দহ উপজেলার ৯ নং ঘোষের পাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো সাইদুর রহমান লিটু জানান, আমার ইউনিয়ন পরিষদ ও ব্যক্তিগত ভাবে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে। যেহেতু আমাদের ইউনিয়নে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া সিস্টেম নেই। তবে সে (আলম) যদি চায় পরিবার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আশ্রয় প্রকল্পের ঘরে থাকার ব্যবস্থার চেষ্টা করবো।