ঢাকা ০২:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
নতুন পরিবেশবান্ধব আসবাবপত্র তৈরি হচ্ছে পরিত্যক্ত সুপারির খোলসে পার্বতীপুরে সেচ মৌসুম গভীর নলকূপের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বিপাকে কৃষকরা মোংলায় ফ্যামিলি সাইকেল র‍্যালি নরসিংদীতে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু জামালপুরে ধানের বাজার মধ্যস্বত্বভোগীরদের দখলে রানীশংকৈলে জিপিএ—৫ পাওয়া ৪ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের বাধা অর্থিক সংকট কালিয়াকৈরে এক নারী মাদক ব্যবসায়ী হেরোইনসহ গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উৎযাপন উপলক্ষে সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হারানো টাকা মালিকের হাতে ফেরত দিয়ে দিষ্টান্ত স্হাপন করলো পুলিশ ফুলবাড়ীতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কতৃক মসজিদ পরিস্কার অভিযান

কসবায় মেডিকেলে সুযোগপ্রাপ্ত সামিয়ার দরিদ্র পরিবারকে আর্থিক সহায়তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মনকাশাইর গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী হকার পিতার কণ্যা সামিয়া আক্তারের মেডিক্যালে সুযোগ

পাওয়াকসবা  নিয়ে দেশের জনপ্রিয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভিতে ‘মেডিকেলে চান্স পাওয়া মেয়ের ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফুটপাতে খেলনা বিক্রেতা বাবা’ শিরোনামে গত ২০ সেপ্টেম্বর একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদ প্রকাশের পর মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সামিয়ার সংবাদটি ভাইরাল হয়। আরটিভিতে সামিয়ার সংবাদটি দেখেন ‘খান গ্রুপ-কাতার’-এর চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম খান।

এ সময় তিনি আরটিভির ব্রাহ্মণবাড়িয়া (উত্তর) সংবাদদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মো. শাহ আলম খান আরটিভির সংবাদদাতা মো. সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সামিয়ার মা-বাবার হাতে নগদ ৯০ হাজার টাকা ও সামিয়ার মায়ের সেলাই কাজের জন্য ১০ হাজার টাকাসহ মোট এক লাখ টাকা দিয়ে আর্থিক সহযোগিতা করেন।

খান গ্রুপ কাতারের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, প্রথেমেই আরটিভিকে ধন্যবাদ জানাই। মেধাবী শিক্ষার্থী সামিয়াকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার জন্য। আমি সামিয়ার ভর্তি খরচের জন্য ৯০ হাজার ও তার মায়ের জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছি। সবাই পাশে দাঁড়াবে এমনটাই আশা করছি।

উল্লেখ্য যে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর নীলফামারী মেডিকেল কলেজ থেকে ভর্তির সুযোগ দিয়ে কর্তৃপক্ষ সামিয়াকে মেসেজ পাঠায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেল এক বাক প্রতিবন্ধী খেলনা বিক্রেতা হকারের একমাত্র কণ্যা সামিয়া আক্তার। সামিয়া আক্তার শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত পড়াশোনা করে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাক প্রতিবন্ধী পিতার অভাব ও দরিদ্রতা। সামিয়ার স্বপ্নপূরণে সরকার এবং হৃদয়বান মহলের সহযোগিতা চান শিক্ষক, এলাকাবাসী ও সামিয়ার পরিবার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের মনকাশাইর গ্রামে ছোট্ট একটি দোচালা টিনের ঘরে সামিয়াদের বসবাস। বাবা বাক প্রতিবন্ধী সেলিম মিয়া পেশায় একজন হকার। গ্রামের স্কুলের মাঠে কয়েক হাজার টাকার বাচ্চাদের খেলনা নিয়ে বসে যা বিক্রি হয় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার। সেলিম মিয়ার এক ছেলে এক মেয়ে। দরিদ্রতায় জর্জরিত সেলিম মিয়া হকার হলেও লেখাপড়ার মূল্য বুঝতেন। তাই তার ছেলেকেও হাফেজে কোরআন বানিয়েছেন। মেয়ের পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় মেয়েকে শতকষ্টেও নিজেরা খেয়ে না খেয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী যতসামান্য খরচ দিতে পেরেছেন। দরিদ্র মেধাবী মেয়ে সামিয়া পিএসসি, জেসএসসিতে পেয়েছেন গোল্ডেন জিপিএ।

সামিয়া নবম শ্রেণিতে মানবিক বিভাগ নিয়েছিলো কিন্তু অধিক মেধাবী হওয়ায় শিক্ষরা তার মানবিক বিভাগ নেওয়াটা মেনে নিতে পারেন নি তাই শিক্ষকরা তাকে বিজ্ঞান বিভাগ নিতে বলেন। সামিয়া তার বাবার আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা শিক্ষকদের জানান শিক্ষকরা তাকে বিনামূল্যে পড়ানোর আশ্বাস দেন। শিক্ষকরা তাকে বিনামূল্যে প্রাইভেটও পড়াতেন। সামিয়া এসএসসিতেও বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ পান। পরে কসবা মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতেও ভালো ফলাফল করায় কলেজ শিক্ষকরা তাকে মেডিকেলে আবেদন করার পরামর্শ দিলে পরিবারের অভাব তাকে হতাশ করে। সামিয়ার পরিবারের অবস্থা জানতে পেরে কলেজ শিক্ষকরা ভর্তির আবেদনের বিষয়ে অর্ধেক টাকা (১২ হাজার টাকা) ব্যবস্থা করে দেন।

শেষ পর্যন্ত শেষ সম্বল সামিয়ার কানের দুল বিক্রি করে ভর্তির আবেদন করেন। প্রথমে ওয়েটিং তালিকায় থাকলেও গত ১৫ সেপ্টেম্বর নীলফামারী মেডিকেল কলেজ থেকে তাকে ভর্তির সুযোগ দিয়ে কর্তৃপক্ষ সামিয়াকে মেসেজ পাঠায়। এ খবরে সামিয়া খুশি হলেও দরিদ্রতার কারণে আনন্দ নেই পরিবারে।

সামিয়া আক্তার বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগ নেওয়ার পর থেকে সহপাঠী ও গ্রাম মহল্লার অনেকেরই তিরস্কার সইতে হয়েছে। মানুষের টিটকারি ও কটু কথায় রাতে শুয়ে শুয়ে নীরবে কেঁদেছি। তবু মনে ইচ্ছ ছিল আমি পারব। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেও দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। তাই প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের এলাকার আইনমন্ত্রীর নিকট আমার আবেদন তাঁরা যেন আমার স্বপ্ন পূরণে ভর্তিসহ যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেন। আমি যেন ডাক্তার হয়ে আমার মতো সমাজে অবহেলিতদের পাশে দাঁড়াতে পারি।’

ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া ও গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হোসেন শওকত আহমেদ ও শাহ আলমসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, ‘আমাদের গ্রামে এই প্রথম কোনো মেয়ে নিজ মেধায় মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ করছি তিনি যেনো এই দরিদ্র মেয়েটির মেডিকেলে ভর্তিসহ যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেন।’

সামিয়ার মা সেলিনা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষকদের সহায়তায় এই পর্যন্ত মেয়েকে পড়াতে পেরেছি। আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণে আইনমন্ত্রীসহ এলাকার সামর্থ্যবান সকলের সহযোগিতা চাই।’

বাক প্রতিবন্ধী বাবা সেলিম মিয়া কথা বলতে না পেরে চোখের পানিতে একমাত্র মেয়ের স্বপ্ন পূরণে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম বলেন, ‘শুনে অবাক হয়েছি। অভাব অনটনের মাঝেও মেয়েটির অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকায় সে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।’ এ সময় তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামিয়ার ভর্তির বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বিষয়টি এলাকার সাংসদ আইনমন্ত্রী মহোদয়কেও অবহিত করার আশ্বাস দেন ইউএনও।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নতুন পরিবেশবান্ধব আসবাবপত্র তৈরি হচ্ছে পরিত্যক্ত সুপারির খোলসে

কসবায় মেডিকেলে সুযোগপ্রাপ্ত সামিয়ার দরিদ্র পরিবারকে আর্থিক সহায়তা

আপডেট টাইম : ০১:৫৩:১৫ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মনকাশাইর গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী হকার পিতার কণ্যা সামিয়া আক্তারের মেডিক্যালে সুযোগ

পাওয়াকসবা  নিয়ে দেশের জনপ্রিয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভিতে ‘মেডিকেলে চান্স পাওয়া মেয়ের ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফুটপাতে খেলনা বিক্রেতা বাবা’ শিরোনামে গত ২০ সেপ্টেম্বর একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদ প্রকাশের পর মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সামিয়ার সংবাদটি ভাইরাল হয়। আরটিভিতে সামিয়ার সংবাদটি দেখেন ‘খান গ্রুপ-কাতার’-এর চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম খান।

এ সময় তিনি আরটিভির ব্রাহ্মণবাড়িয়া (উত্তর) সংবাদদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মো. শাহ আলম খান আরটিভির সংবাদদাতা মো. সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সামিয়ার মা-বাবার হাতে নগদ ৯০ হাজার টাকা ও সামিয়ার মায়ের সেলাই কাজের জন্য ১০ হাজার টাকাসহ মোট এক লাখ টাকা দিয়ে আর্থিক সহযোগিতা করেন।

খান গ্রুপ কাতারের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, প্রথেমেই আরটিভিকে ধন্যবাদ জানাই। মেধাবী শিক্ষার্থী সামিয়াকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার জন্য। আমি সামিয়ার ভর্তি খরচের জন্য ৯০ হাজার ও তার মায়ের জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছি। সবাই পাশে দাঁড়াবে এমনটাই আশা করছি।

উল্লেখ্য যে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর নীলফামারী মেডিকেল কলেজ থেকে ভর্তির সুযোগ দিয়ে কর্তৃপক্ষ সামিয়াকে মেসেজ পাঠায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেল এক বাক প্রতিবন্ধী খেলনা বিক্রেতা হকারের একমাত্র কণ্যা সামিয়া আক্তার। সামিয়া আক্তার শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত পড়াশোনা করে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাক প্রতিবন্ধী পিতার অভাব ও দরিদ্রতা। সামিয়ার স্বপ্নপূরণে সরকার এবং হৃদয়বান মহলের সহযোগিতা চান শিক্ষক, এলাকাবাসী ও সামিয়ার পরিবার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের মনকাশাইর গ্রামে ছোট্ট একটি দোচালা টিনের ঘরে সামিয়াদের বসবাস। বাবা বাক প্রতিবন্ধী সেলিম মিয়া পেশায় একজন হকার। গ্রামের স্কুলের মাঠে কয়েক হাজার টাকার বাচ্চাদের খেলনা নিয়ে বসে যা বিক্রি হয় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার। সেলিম মিয়ার এক ছেলে এক মেয়ে। দরিদ্রতায় জর্জরিত সেলিম মিয়া হকার হলেও লেখাপড়ার মূল্য বুঝতেন। তাই তার ছেলেকেও হাফেজে কোরআন বানিয়েছেন। মেয়ের পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় মেয়েকে শতকষ্টেও নিজেরা খেয়ে না খেয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী যতসামান্য খরচ দিতে পেরেছেন। দরিদ্র মেধাবী মেয়ে সামিয়া পিএসসি, জেসএসসিতে পেয়েছেন গোল্ডেন জিপিএ।

সামিয়া নবম শ্রেণিতে মানবিক বিভাগ নিয়েছিলো কিন্তু অধিক মেধাবী হওয়ায় শিক্ষরা তার মানবিক বিভাগ নেওয়াটা মেনে নিতে পারেন নি তাই শিক্ষকরা তাকে বিজ্ঞান বিভাগ নিতে বলেন। সামিয়া তার বাবার আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা শিক্ষকদের জানান শিক্ষকরা তাকে বিনামূল্যে পড়ানোর আশ্বাস দেন। শিক্ষকরা তাকে বিনামূল্যে প্রাইভেটও পড়াতেন। সামিয়া এসএসসিতেও বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ পান। পরে কসবা মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতেও ভালো ফলাফল করায় কলেজ শিক্ষকরা তাকে মেডিকেলে আবেদন করার পরামর্শ দিলে পরিবারের অভাব তাকে হতাশ করে। সামিয়ার পরিবারের অবস্থা জানতে পেরে কলেজ শিক্ষকরা ভর্তির আবেদনের বিষয়ে অর্ধেক টাকা (১২ হাজার টাকা) ব্যবস্থা করে দেন।

শেষ পর্যন্ত শেষ সম্বল সামিয়ার কানের দুল বিক্রি করে ভর্তির আবেদন করেন। প্রথমে ওয়েটিং তালিকায় থাকলেও গত ১৫ সেপ্টেম্বর নীলফামারী মেডিকেল কলেজ থেকে তাকে ভর্তির সুযোগ দিয়ে কর্তৃপক্ষ সামিয়াকে মেসেজ পাঠায়। এ খবরে সামিয়া খুশি হলেও দরিদ্রতার কারণে আনন্দ নেই পরিবারে।

সামিয়া আক্তার বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগ নেওয়ার পর থেকে সহপাঠী ও গ্রাম মহল্লার অনেকেরই তিরস্কার সইতে হয়েছে। মানুষের টিটকারি ও কটু কথায় রাতে শুয়ে শুয়ে নীরবে কেঁদেছি। তবু মনে ইচ্ছ ছিল আমি পারব। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেও দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। তাই প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের এলাকার আইনমন্ত্রীর নিকট আমার আবেদন তাঁরা যেন আমার স্বপ্ন পূরণে ভর্তিসহ যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেন। আমি যেন ডাক্তার হয়ে আমার মতো সমাজে অবহেলিতদের পাশে দাঁড়াতে পারি।’

ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া ও গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হোসেন শওকত আহমেদ ও শাহ আলমসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, ‘আমাদের গ্রামে এই প্রথম কোনো মেয়ে নিজ মেধায় মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ করছি তিনি যেনো এই দরিদ্র মেয়েটির মেডিকেলে ভর্তিসহ যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেন।’

সামিয়ার মা সেলিনা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষকদের সহায়তায় এই পর্যন্ত মেয়েকে পড়াতে পেরেছি। আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণে আইনমন্ত্রীসহ এলাকার সামর্থ্যবান সকলের সহযোগিতা চাই।’

বাক প্রতিবন্ধী বাবা সেলিম মিয়া কথা বলতে না পেরে চোখের পানিতে একমাত্র মেয়ের স্বপ্ন পূরণে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম বলেন, ‘শুনে অবাক হয়েছি। অভাব অনটনের মাঝেও মেয়েটির অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকায় সে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।’ এ সময় তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামিয়ার ভর্তির বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বিষয়টি এলাকার সাংসদ আইনমন্ত্রী মহোদয়কেও অবহিত করার আশ্বাস দেন ইউএনও।