ঢাকা ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
নাহিদসহ তিন জন সমন্বয়ককে হাসপাতাল থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে আহতদের দেখতে ঢামেক হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার সিলেট: ১৮-২৩ জুলাইয়ের ঘটনাপ্রবাহ রক্তাক্ত জুলাই থেকে কি কোনো শিক্ষা হবে? সব দল নিয়ে জাতীয় ঐক্যের মাঠে নামছেন বিএনপি শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে দেশের মানুষ: নৌবাহিনী প্রধান মেট্রোরেল স্টেশনের ধ্বংসলীলা দেখে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী রুশ এমআই-২৮ সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত মস্কোর দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কালুগা অঞ্চলে আজ বৃহস্পতিবার হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয় কে হামলা চালাবে—বিএনপির নীল নকশা আগেই প্রস্তুত ছিল: কাদের

মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের অংশ যাচ্ছেতাই!

  • আপডেট টাইম : ০৫:০৭:১২ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২১
  • / ২৯৭ ৫০০.০০০ বার পাঠক

স্টাফ রিপোর্টার।।

রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরের অংশ ফিটফাট হলেও নিচের ভাগ যেন সদরঘাট! শনির আখড়া থেকে নিমতলী পর্যন্ত নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে। পুরোটাই ময়লার ভাগাড় ও ঘোড়ার আস্তাবলে একরকম আবর্জনায় জর্জরিত। বেশিরভাগ জায়গায় রিকশা–ভ্যানের স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে ভাতের হোটেল পর্যন্ত দেখা যায়। এসব দখলদারিত্বকে অবৈধ বললেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি নগর কর্তৃপক্ষ।

Nogod

সরেজমিনে দেখা যায়, উড়ালসড়কের নিচে প্রায় দুই শতাধিক অস্থায়ী দোকান। এর মধ্যে আছে ভাতের হোটেল। যত্রতত্র আবর্জনার ঢিবি। প্রতিটি দোকানে দৈনিক ও মাসিক চাঁদা দিতে হলেও ভয়ে স্বীকার করতে নারাজ ব্যবসায়ীরা।

ঘর তুলে বসবাস করছেন সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

ফুলবাড়িয়া অংশে রাস্তা দখল করে আছে রিকশাস্ট্যান্ড ও খাবারের দোকান। টিকাটুলীর রাজধানী মার্কেট এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে ছিন্নমূল মানুষের বসবাস। কাপ্তান বাজার অংশে মুরগির খাঁচা ও বর্জ্যের কারণে দুর্গন্ধে চলা দায়। রাজনৈতিক নাম ভাঙিয়ে উড়ালসড়কের নিচে ইটের দেয়াল দিয়ে বানানো হয়েছে গোডাউন ও মুরগির দোকান। এছাড়া আছে রিকশা ও ভ্যানের স্ট্যান্ড। সবচেয়ে দূষিত নগরী ঢাকা

গুলিস্তানের অংশে নিয়মিত বসে জুতার দোকানের পসরা। শনির আখড়া-যাত্রাবাড়ী অংশ বিভিন্ন ফলের দোকান, রিকশা ও ভ্যানের স্ট্যান্ড আর চায়ের দোকানের দখলে। পুরোনো প্যাকিং বাক্স, ডাবের খোসা, পলিথিনের স্তর ঢেকে ফেলেছে নিচের বিভাজকের মেঝে।

ফ্লাইওভারের নিচে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ।

ফ্লাইওভারের বঙ্গবাজার থেকে নিমতলী গেটের আগ পর্যন্ত ঘোড়ার আস্তাবল ও ময়লার ভাগাড়। ঘোড়ার বিষ্ঠা আর পাশের মুরগির বাজারের বর্জ্যে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ। তাই সাধারণ পথচারীদের জন্য চলাচলের রাস্তা যেন বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাজধানীর ওয়ারী এলাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসানকে এই এলাকা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। তিনি ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘গুলিস্তানে ফ্লাইওভারের নিচে জুতার দোকানের কারণে যানজট লেগেই থাকে। আবর্জনার দুর্গন্ধে ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে গেছে। আমাদের সাধারণ মানুষের অসুবিধা কারও চোখে পড়ে না।’

কাপ্তান বাজার এলাকার বাসিন্দা শারমিন সুলতানার দাবি, ‘বিভিন্ন দুর্গন্ধের কারণে কাপ্তান বাজার এলাকায় সবসময় নাক-মুখে হাত রেখে যাতায়াত করতে হয়। ফ্লাইওভারের নিচের অংশে এখন দেয়াল তুলে মুরগির দোকান ও খাবারের হোটেল বসানো হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে মুরগি বোঝাই ট্রাকের কারণে তো চলাচলই করাই যায় না।’

অস্থায়ী জুতার দোকন।

২০১৩ সালের অক্টোবরে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হয় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার। চার লেনের এই উড়ালসড়ক শনির আখড়া থেকে বকশীবাজার মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে এটি নির্মাণে বিনিয়োগকারী ছিল একটি প্রতিষ্ঠান। আর সার্বিক তত্ত্বাবধান করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

মিরপুরে ৭৫ ফুট জায়গার মধ্যে ৪৫ ফুটই দখল

মূল নকশায় ফ্লাইওভারের নিচে উঁচু বিভাজকে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুল গাছের চারা রোপণের পরিকল্পনা থাকলেও এখানে রীতিমতো ঘর তুলে বসবাস করছেন সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তাই এই এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ বাড়ছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

ফ্লাইওভারের নিচে রাখা হয়েছে ভ্যান। ছবি: ইত্তেফাক

সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের থাকার বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ভবন নির্মাণ হচ্ছে। আপাতত ফ্লাইওভারের নিচের কিছু অংশে তাদের থাকার জায়গা দেওয়া হয়েছে।’

তবে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের খালি জায়গাগুলো দখলে থাকার বিষয় জানা ছিল না বলে দাবি করেন ডিএসসিসির এই প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা। শিগগিরই সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তার বক্তব্য, ‘অবৈধভাবে দখল হয়ে থাকা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে অভিযান শুরু করবে ডিএসসিসি।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের অংশ যাচ্ছেতাই!

আপডেট টাইম : ০৫:০৭:১২ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার।।

রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরের অংশ ফিটফাট হলেও নিচের ভাগ যেন সদরঘাট! শনির আখড়া থেকে নিমতলী পর্যন্ত নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে। পুরোটাই ময়লার ভাগাড় ও ঘোড়ার আস্তাবলে একরকম আবর্জনায় জর্জরিত। বেশিরভাগ জায়গায় রিকশা–ভ্যানের স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে ভাতের হোটেল পর্যন্ত দেখা যায়। এসব দখলদারিত্বকে অবৈধ বললেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি নগর কর্তৃপক্ষ।

Nogod

সরেজমিনে দেখা যায়, উড়ালসড়কের নিচে প্রায় দুই শতাধিক অস্থায়ী দোকান। এর মধ্যে আছে ভাতের হোটেল। যত্রতত্র আবর্জনার ঢিবি। প্রতিটি দোকানে দৈনিক ও মাসিক চাঁদা দিতে হলেও ভয়ে স্বীকার করতে নারাজ ব্যবসায়ীরা।

ঘর তুলে বসবাস করছেন সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

ফুলবাড়িয়া অংশে রাস্তা দখল করে আছে রিকশাস্ট্যান্ড ও খাবারের দোকান। টিকাটুলীর রাজধানী মার্কেট এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে ছিন্নমূল মানুষের বসবাস। কাপ্তান বাজার অংশে মুরগির খাঁচা ও বর্জ্যের কারণে দুর্গন্ধে চলা দায়। রাজনৈতিক নাম ভাঙিয়ে উড়ালসড়কের নিচে ইটের দেয়াল দিয়ে বানানো হয়েছে গোডাউন ও মুরগির দোকান। এছাড়া আছে রিকশা ও ভ্যানের স্ট্যান্ড। সবচেয়ে দূষিত নগরী ঢাকা

গুলিস্তানের অংশে নিয়মিত বসে জুতার দোকানের পসরা। শনির আখড়া-যাত্রাবাড়ী অংশ বিভিন্ন ফলের দোকান, রিকশা ও ভ্যানের স্ট্যান্ড আর চায়ের দোকানের দখলে। পুরোনো প্যাকিং বাক্স, ডাবের খোসা, পলিথিনের স্তর ঢেকে ফেলেছে নিচের বিভাজকের মেঝে।

ফ্লাইওভারের নিচে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ।

ফ্লাইওভারের বঙ্গবাজার থেকে নিমতলী গেটের আগ পর্যন্ত ঘোড়ার আস্তাবল ও ময়লার ভাগাড়। ঘোড়ার বিষ্ঠা আর পাশের মুরগির বাজারের বর্জ্যে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ। তাই সাধারণ পথচারীদের জন্য চলাচলের রাস্তা যেন বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাজধানীর ওয়ারী এলাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসানকে এই এলাকা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। তিনি ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘গুলিস্তানে ফ্লাইওভারের নিচে জুতার দোকানের কারণে যানজট লেগেই থাকে। আবর্জনার দুর্গন্ধে ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে গেছে। আমাদের সাধারণ মানুষের অসুবিধা কারও চোখে পড়ে না।’

কাপ্তান বাজার এলাকার বাসিন্দা শারমিন সুলতানার দাবি, ‘বিভিন্ন দুর্গন্ধের কারণে কাপ্তান বাজার এলাকায় সবসময় নাক-মুখে হাত রেখে যাতায়াত করতে হয়। ফ্লাইওভারের নিচের অংশে এখন দেয়াল তুলে মুরগির দোকান ও খাবারের হোটেল বসানো হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে মুরগি বোঝাই ট্রাকের কারণে তো চলাচলই করাই যায় না।’

অস্থায়ী জুতার দোকন।

২০১৩ সালের অক্টোবরে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হয় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার। চার লেনের এই উড়ালসড়ক শনির আখড়া থেকে বকশীবাজার মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে এটি নির্মাণে বিনিয়োগকারী ছিল একটি প্রতিষ্ঠান। আর সার্বিক তত্ত্বাবধান করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

মিরপুরে ৭৫ ফুট জায়গার মধ্যে ৪৫ ফুটই দখল

মূল নকশায় ফ্লাইওভারের নিচে উঁচু বিভাজকে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুল গাছের চারা রোপণের পরিকল্পনা থাকলেও এখানে রীতিমতো ঘর তুলে বসবাস করছেন সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তাই এই এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ বাড়ছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

ফ্লাইওভারের নিচে রাখা হয়েছে ভ্যান। ছবি: ইত্তেফাক

সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের থাকার বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ভবন নির্মাণ হচ্ছে। আপাতত ফ্লাইওভারের নিচের কিছু অংশে তাদের থাকার জায়গা দেওয়া হয়েছে।’

তবে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের খালি জায়গাগুলো দখলে থাকার বিষয় জানা ছিল না বলে দাবি করেন ডিএসসিসির এই প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা। শিগগিরই সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তার বক্তব্য, ‘অবৈধভাবে দখল হয়ে থাকা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে অভিযান শুরু করবে ডিএসসিসি।