ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালপুরে পাট চাষে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নতুন পরিবেশবান্ধব আসবাবপত্র তৈরি হচ্ছে পরিত্যক্ত সুপারির খোলসে পার্বতীপুরে সেচ মৌসুম গভীর নলকূপের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বিপাকে কৃষকরা মোংলায় ফ্যামিলি সাইকেল র‍্যালি নরসিংদীতে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু জামালপুরে ধানের বাজার মধ্যস্বত্বভোগীরদের দখলে রানীশংকৈলে জিপিএ—৫ পাওয়া ৪ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের বাধা অর্থিক সংকট কালিয়াকৈরে এক নারী মাদক ব্যবসায়ী হেরোইনসহ গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উৎযাপন উপলক্ষে সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হারানো টাকা মালিকের হাতে ফেরত দিয়ে দিষ্টান্ত স্হাপন করলো পুলিশ

সুন্দরবনের গোলপাতা আহরণে হরিলুট

মোংলা প্রতিনিধি।।

সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণ চলছে হরিলুট। মৌসুম শেষ হলেও থেমে নেই নৌকা ভর্তি গোলপাতা আসা। রাজস্বের চেয়ে কয়েকগুণ টাকা আদায় করায় বাওয়ালিরাও অতিরিক্ত পাতা ও গাছ নিয়ে আসছেন। এর উপর গোলপাতা আহরণে মন্ত্রনালয়ে ধার্য করেছে অতিরিক্ত রাজস্ব। বন কর্মকর্তারা বলছে ধার্যকৃত রাজস্বের বেশি টাকা আদায় করতে পারে না কুপ কর্মকর্তা। গোলপাতা আহরণ ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও এপ্রিলেও দেখা গেছে গোলপাতা বোঝাই নৌকা।

সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢেউটিনের বিকল্প হিসেবে ঘরের ছাউনিতে গোলপাতা ব্যবহার করে থাকেন। বাগেরহাট, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসতঘর ও রান্নাঘরের চাল ছাউনির অন্যতম উপাদান গোলপাতা। গোলপাতার ঘর পরিবেশবান্ধব। এ পাতা দিয়ে তৈরি ঘরে শীত মৌসুমে ঠাণ্ডা অনুভব হয় না। আবার গরমের সময় তেমন গরম অনুভব হয় না। গোলপাতার ঘর হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর বসবাসের সবচেয়ে উপযোগী। এ পাতার দাম টিন বা অন্য যে কোনো ধরনের ছাউনির চেয়ে অনেক কম। তাই এ অঞ্চলের মানুষের কাছে গোলপাতার বেশ সমাদর রয়েছে। প্রতি গোলপাতা আহরণ মৌসুমে এ অঞ্চলের কয়েক হাজার বাওয়ালি গোলপাতা আহরণ, পরিবহন ও বিক্রির কাজে সংশ্নিষ্ট থাকেন।

সুন্দরবন পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের চাঁদপাই ও শ্যালা নামক দুটি কূপের আওতাধীন এলাকায় পাস-পারমিট প্রক্রিয়া শেষে বনে প্রবেশ করেছিলেন বাওয়ালিরা।

কয়েকজন বাওয়ালি জানান,সরকারি রাজস্বের চেয়েও ৩ গুন টাকা দিতে হয় বনবিভাগের অসাধূ কর্মকর্তাদের। এ কারনে জীবনের ঝুকি নিয়ে তারা বেশি করে গোলপাতা বোঝাই দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ গোলপাতার নিচে নিয়ে আসছেন কর্তন নিষিদ্ধ বিভিন্ন গাছ।

বাওয়ালি আঃ রহিম (ছদ্মনাম) বলেন, পাস পার্মিট বাদেও প্রতিটা স্টেশনে বকশিশ দিতে হয় বন কর্মকর্তাদের। সরকারি ভাবে যে টাকা রাজস্ব নেওয়ার কথা সেখানে নেওয়া হচ্ছে তিন চার গুন বেশি টাকা। না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয়।অবশ্যই টাকা বেশি দিলে গোলপাতা ও বিভিন্ন প্রকার গাছ কেটে অানা যায়।

যার বিরুদ্ধে বাওয়ালিদের ক্ষোভ ও অভিযোগ চাঁদপাই রেঞ্জর ষ্টেশন কর্মকর্তা ও গোলপাতা কুপের কর্মকর্তা মোঃ ওবাইদুর রহমানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার তার কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে। দির্ঘদীন ঘোরার পর তাকে পাওয়া গেলও রাজস্বের চেয়ে বেশী টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। বরং তিনি বার বার বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগী বন কর্মকর্তা ( ডিএফও, বাগেরহাট) মুহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন জানান,গোলপাতা নিয়ে ফেরার সময়ে নৌকার ঝুল হিসেবে বন থেকে কোন গাছ কাটতে পারবেনা বাওয়ালিরা। তিনি দাবি করেন, সরকারের রাজস্বের চেয়ে কয়েকগুণ টাকা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই কুপ আফিসের। বিষয়টি তিনি ক্ষতিয়ে দেখবেন।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুরে পাট চাষে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ

সুন্দরবনের গোলপাতা আহরণে হরিলুট

আপডেট টাইম : ১০:০২:১৫ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০২২

মোংলা প্রতিনিধি।।

সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণ চলছে হরিলুট। মৌসুম শেষ হলেও থেমে নেই নৌকা ভর্তি গোলপাতা আসা। রাজস্বের চেয়ে কয়েকগুণ টাকা আদায় করায় বাওয়ালিরাও অতিরিক্ত পাতা ও গাছ নিয়ে আসছেন। এর উপর গোলপাতা আহরণে মন্ত্রনালয়ে ধার্য করেছে অতিরিক্ত রাজস্ব। বন কর্মকর্তারা বলছে ধার্যকৃত রাজস্বের বেশি টাকা আদায় করতে পারে না কুপ কর্মকর্তা। গোলপাতা আহরণ ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও এপ্রিলেও দেখা গেছে গোলপাতা বোঝাই নৌকা।

সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢেউটিনের বিকল্প হিসেবে ঘরের ছাউনিতে গোলপাতা ব্যবহার করে থাকেন। বাগেরহাট, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসতঘর ও রান্নাঘরের চাল ছাউনির অন্যতম উপাদান গোলপাতা। গোলপাতার ঘর পরিবেশবান্ধব। এ পাতা দিয়ে তৈরি ঘরে শীত মৌসুমে ঠাণ্ডা অনুভব হয় না। আবার গরমের সময় তেমন গরম অনুভব হয় না। গোলপাতার ঘর হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর বসবাসের সবচেয়ে উপযোগী। এ পাতার দাম টিন বা অন্য যে কোনো ধরনের ছাউনির চেয়ে অনেক কম। তাই এ অঞ্চলের মানুষের কাছে গোলপাতার বেশ সমাদর রয়েছে। প্রতি গোলপাতা আহরণ মৌসুমে এ অঞ্চলের কয়েক হাজার বাওয়ালি গোলপাতা আহরণ, পরিবহন ও বিক্রির কাজে সংশ্নিষ্ট থাকেন।

সুন্দরবন পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের চাঁদপাই ও শ্যালা নামক দুটি কূপের আওতাধীন এলাকায় পাস-পারমিট প্রক্রিয়া শেষে বনে প্রবেশ করেছিলেন বাওয়ালিরা।

কয়েকজন বাওয়ালি জানান,সরকারি রাজস্বের চেয়েও ৩ গুন টাকা দিতে হয় বনবিভাগের অসাধূ কর্মকর্তাদের। এ কারনে জীবনের ঝুকি নিয়ে তারা বেশি করে গোলপাতা বোঝাই দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ গোলপাতার নিচে নিয়ে আসছেন কর্তন নিষিদ্ধ বিভিন্ন গাছ।

বাওয়ালি আঃ রহিম (ছদ্মনাম) বলেন, পাস পার্মিট বাদেও প্রতিটা স্টেশনে বকশিশ দিতে হয় বন কর্মকর্তাদের। সরকারি ভাবে যে টাকা রাজস্ব নেওয়ার কথা সেখানে নেওয়া হচ্ছে তিন চার গুন বেশি টাকা। না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয়।অবশ্যই টাকা বেশি দিলে গোলপাতা ও বিভিন্ন প্রকার গাছ কেটে অানা যায়।

যার বিরুদ্ধে বাওয়ালিদের ক্ষোভ ও অভিযোগ চাঁদপাই রেঞ্জর ষ্টেশন কর্মকর্তা ও গোলপাতা কুপের কর্মকর্তা মোঃ ওবাইদুর রহমানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার তার কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে। দির্ঘদীন ঘোরার পর তাকে পাওয়া গেলও রাজস্বের চেয়ে বেশী টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। বরং তিনি বার বার বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগী বন কর্মকর্তা ( ডিএফও, বাগেরহাট) মুহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন জানান,গোলপাতা নিয়ে ফেরার সময়ে নৌকার ঝুল হিসেবে বন থেকে কোন গাছ কাটতে পারবেনা বাওয়ালিরা। তিনি দাবি করেন, সরকারের রাজস্বের চেয়ে কয়েকগুণ টাকা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই কুপ আফিসের। বিষয়টি তিনি ক্ষতিয়ে দেখবেন।