সংবাদ শিরোনাম ::
মোংলায় যুবলীগ নেতার দখলে আওয়ামী লীগ নেতার চিংড়ি ঘের, ৬ বছরেও জবর দখলের সুরহা মিলেনি
সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
- আপডেট টাইম : ০৬:৩৬:২৪ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৪ মার্চ ২০২২
- / ২৯৮ ৫০০০.০ বার পাঠক
মো:ওমর ফারুক মোংলা।।
মোংলায় দীর্ঘ ছয় বছর ধরে আওয়ামী লীগ নেতার একটি চিংড়ি দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নে উলুবুনিয়া গ্রামে ১৮ একর ২০ শতক জমির চিংড়ি ঘেরটি দখলের ঘটনায় কয়েক দফা সালিশ বৈঠক হলেও দীর্ঘ কয়েক বছরেও তার কোন সুরাহ
হয়নি। দোদান্ড প্রতাপশালী মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি তারিকুল শেখ সালিশ বৈঠক না মেনে চিংড়ি ঘেরটি জবর দখলে রেখেছেন। এনিয়ে যে কোন মূহুর্তে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশের সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত এবং বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ভুক্তভোগী বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এবং উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ আব্দুল মান্নানের দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২০১৪ সালের ২৫ মে ও ২০ আগষ্ট সোনাইলতলা ইউনিয়নের উলুবুনিয়া মৌজার উলুবুনিয়া গ্রামে দলিল মূল্যে জমি ক্রয় করে শেখ আব্দুল মান্নান। এর সাথে আরো কিছু জমি লিজ (বর্গা) নিয়ে মোট ৪২ বিঘার জমিতে সোনাইলতলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি তারিকুল শেখের সঙ্গে ভাগাভাগি করে চিংঘি ঘেরে মাছ চাষ শুরু করেন। কিন্তু কৌশলে ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত শেখ আব্দুল মান্নানের ১৮ একর ২০ শতক জমি জবর দখল করে নিয়ে চিংড়ি চাষ করে আসচেন যুবলীগ নেতা তারিকুল।
এনিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অভিযোগ দিলে স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতারা বিরোধপূর্ণ এই ঘেরের সালিশ বৈঠক করেন। সালিশ বৈঠকে ভুক্তভোগী শেখ আব্দুল মান্নান প্রতিনিয়ত উপস্থিত হলেও প্রতিপক্ষ তারিকুল প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন। স্থানীয় আওয়ামী নেতাদের সালিশে তারিকুল উপস্থিত হলেও থানায় উপস্থিত হননি একবারও। আওয়ামী লীগ নেতাদের সালিশির রায়ের দিন উপস্থিত না হয়ে সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে অজ্ঞাত প্রভাবে উলুবুনিয়া গ্রামের মৃত শাকেম আলী শেখের ছেলে ও যুবলীগ নেতা তারিকুল শেখ বিবদমান ঘেরটি জবর দখল করে মাছ চাষ করে যাচ্ছেন।
উলুবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা রহিমা বেগম, আল-আমিন শেখ ও মিজানুর রহমান বলেন, এই ঘেরটি আগে মান্নান সাহেব করতো। ঘেরের বেশির ভাগ জমিই তার। কিন্তু গত কয়েক বছর দেখছি ঘেরটি তারিকুল করে। কিভাবে করে তা তো আমরা জানিনা। কোন না কোন কায়দায় তো করছে তারিকুল।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই গ্রামের আরো কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ঘেরের মধ্যকার অধিকাংশ জায়গা মান্নান সাহেবের। এর আগে ঘেরটি তিনি করতেন। এখন জোর খাটিয়ে তারিকুল ঘেরটি জবর দখল করে খাচ্ছে। এ বিষয়ে তারিকুল বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সালিশ আমি মানি না, আমি মানি গ্রামের/এলাকার সালিশ। আর মান্নান সাহেবের যদি এ চিংড়ি ঘেরে জমি থাকে তাহলে সে ঘিরে নিয়ে যাক।
বিরোধপূর্ণ এই চিংড়ি ঘেরের সালিশকারী মোংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম হোসেন বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস
চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলামসহ আরো নেতাদের নিয়ে আমরা কয়েকবার সালিশ বৈঠক করেছি। তাতে ওই চিংড়ি ঘেরে শেখ আব্দুল মান্নানের ১৮ একর ২০ শতক জমির মালিকানা রয়েছে। কিন্তু এই সালিশি তারিকুল মানেনি। চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিনে মান্নান সাহেব হাজির হলেও তারিকুল আসেনি।
এ বিষয়ে মোংলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, চিংড়ি ঘের জবর দখল নিয়ে তারিকুলকে অনেকবার ডাকা হয়েছে কিন্তু সে আসেনি। তবে এ নিয়ে এখন ভুক্তভোগী আদালতে মামলা করতে পারেন বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, এটির মীমাংসার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো এসআই রাজ্জাককে দেয়া হয়েছিলো, তিনি বলতে পারবেন সর্বশেষ অবস্থা। এসআই রাজ্জাক বলেন, মান্নান ও তারিকুলের ঘেরের বিষয়ে শেষ পর্যন্ত কোন সমাধান দেয়া সম্ভব হয়নি। যেহেতু জমিজমার ঝামেলা তাই মান্নানকে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য বলেছিলাম।
আরো খবর.......