ঢাকা ০৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
পশ্চিমারা অনেক আগেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে আদালতের নির্দেশনার কপি হাতে পেলে জামায়াত ও ইশরাক ইস্যুতে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব নগদে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুদক, তলব করা হতে পারে আতিক ও জুঁইকে ১১ জেলায় সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস ইতিহাস গড়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চ্যাম্পিয়ন পিএসজি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য ‘বড় গেম খেলতে’ দেশে আনা হয় সুব্রত বাইনকে সুড়ঙ্গ তৈরি করে নেপালের কারাগার থেকে পালানোর গল্প * সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে-গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিবন্ধন ফিরে ‘পেল’ জামায়াত নাসিরনগর উপজেলা ওলামা দলের কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন কমল জ্বালানি তেলের দাম জ্বালানি তেলের দাম দেশের বাজারে আরও এক দফা কমল গুমের সাথে জড়িতদের বিচার ও ৫ দফা দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে অধিকার এর মানববন্ধন

মা-বাবা কষ্ট করে বড় করেছেন, সেদিকটাও দেখতে হবে: হাইকোর্ট শিশু সন্তানসহ কিশোরী মাকে সেফহোম থেকে মুক্তির আদেশ হাইকোর্টের

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৩:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৩৩৬ ১৫০.০০০ বার পাঠক

আদালত প্রতিনিধি।।

তিন মাসের শিশু সন্তান নিয়ে আট মাস ধরে সেগুফতা মেহজাবিন খান আছেন সেফহোমে। আদালতের নির্দেশে ঐ কিশোরী মাকে বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) হাজির করা হয় হাইকোর্টে। কার জিম্মায় যেতে চান আদালতের এমন জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি বলেন, স্বামীর জিম্মায় যেতে চাই। বাবা-মায়ের কাছে নয়।

Nogod

এ পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, তুমি অল্প বয়সে বিয়ে করেছো। এখন সংসারও করছো। কিন্তু তোমার বাবা-মা তো তোমাকে অনেক কষ্টে লালন-পালন করে বড় করেছেন। তাদের দিকটাও তো তোমাকে দেখতে হবে। এরপরই তাকে স্বামীর জিম্মায় যাওয়ার পাশাপাশি সেফ হোম থেকে মুক্তির আদেশ দেয় হাইকোর্ট।

দশম শ্রেণিতে পড়তেন সেগুফতা (১৬)। প্রেমের সম্পর্ক থাকায় তিনি স্বেচ্ছায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বাড়ি ছেড়ে কামাল মজুমদার নামে এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান। পরে বিয়েও করেন। কিন্তু তার মা তাহমিনা বেগম ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। ঐ মামলায় গত বছরের ২৬ মে কামালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন মেয়েটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দুজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তখন মেয়েটি অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।

এরপর মেয়েটির মা তাদের সন্তানকে নিজ জিম্মায় নিতে আদালতে আবেদন করেন। কিন্তু মেয়েটি পিতা-মাতার জিম্মায় যেতে না চাওয়ায় ঐদিনই তাকে পাঠানো হয় টঙ্গীর কোনাবাড়ি শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালিকা)। আর তার স্বামী কামালকে পাঠায় কারাগারে। ঐ উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকাবস্থায় গত ২৭ অক্টোবর মেয়েটি ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর আগে গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন পান ছেলেটি। জামিনে মুক্তি পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে নিজের জিম্মায় নিতে আদালতে আবেদন করেন। ঐ আবেদন খারিজ করে দেয় ট্রাইব্যুনাল। আসেন হাইকোর্টে।

আরও পড়ুনঃ ফেসবুকে ভুয়া অডিও ক্লিপ, গ্রেফতার ২

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২৩ ডিসেম্বর এক আদেশে সেফ হোম থেকে সন্তানসহ ঐ কিশোরী মাকে আদালতে হাজির করার জন্য উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মোতাবেক গতকাল হাইকোর্টে হাজির করা হয় ঐ কিশোরী মাকে। হাজির ছিলো মেয়েটির স্বামী কামাল।

আদালত শুরুতে ছেলেটিকে বলেন, তুমি কি করো? জবাবে বলেন, নারায়ণগঞ্জে ছোট ব্যবসা করি। আদালত বলেন, তুমি তো কিছুদিন পর মেয়েটির বাবা-মায়ের কাছে যৌতুক দাবি করবে। ছেলেটি জবাবে বলেন, স্যার আমি যৌতুক চাইবো না।

আদালত বলেন, আমরাও চাই তুমি তোমার স্ত্রীকে যথাযথ সম্মান দাও। তার যেন কোনো অমর্যাদা না হয়। সুখে-শান্তিতে বসবাস করো। এরপরই হাইকোর্ট সেফহোম থেকে কিশোরীকে মুক্তির আদেশ দেয়। আদালতে আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী শুনানি করেন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মা-বাবা কষ্ট করে বড় করেছেন, সেদিকটাও দেখতে হবে: হাইকোর্ট শিশু সন্তানসহ কিশোরী মাকে সেফহোম থেকে মুক্তির আদেশ হাইকোর্টের

আপডেট টাইম : ০৫:০৩:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২১

আদালত প্রতিনিধি।।

তিন মাসের শিশু সন্তান নিয়ে আট মাস ধরে সেগুফতা মেহজাবিন খান আছেন সেফহোমে। আদালতের নির্দেশে ঐ কিশোরী মাকে বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) হাজির করা হয় হাইকোর্টে। কার জিম্মায় যেতে চান আদালতের এমন জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি বলেন, স্বামীর জিম্মায় যেতে চাই। বাবা-মায়ের কাছে নয়।

Nogod

এ পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, তুমি অল্প বয়সে বিয়ে করেছো। এখন সংসারও করছো। কিন্তু তোমার বাবা-মা তো তোমাকে অনেক কষ্টে লালন-পালন করে বড় করেছেন। তাদের দিকটাও তো তোমাকে দেখতে হবে। এরপরই তাকে স্বামীর জিম্মায় যাওয়ার পাশাপাশি সেফ হোম থেকে মুক্তির আদেশ দেয় হাইকোর্ট।

দশম শ্রেণিতে পড়তেন সেগুফতা (১৬)। প্রেমের সম্পর্ক থাকায় তিনি স্বেচ্ছায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বাড়ি ছেড়ে কামাল মজুমদার নামে এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান। পরে বিয়েও করেন। কিন্তু তার মা তাহমিনা বেগম ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। ঐ মামলায় গত বছরের ২৬ মে কামালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন মেয়েটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দুজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তখন মেয়েটি অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।

এরপর মেয়েটির মা তাদের সন্তানকে নিজ জিম্মায় নিতে আদালতে আবেদন করেন। কিন্তু মেয়েটি পিতা-মাতার জিম্মায় যেতে না চাওয়ায় ঐদিনই তাকে পাঠানো হয় টঙ্গীর কোনাবাড়ি শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালিকা)। আর তার স্বামী কামালকে পাঠায় কারাগারে। ঐ উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকাবস্থায় গত ২৭ অক্টোবর মেয়েটি ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর আগে গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন পান ছেলেটি। জামিনে মুক্তি পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে নিজের জিম্মায় নিতে আদালতে আবেদন করেন। ঐ আবেদন খারিজ করে দেয় ট্রাইব্যুনাল। আসেন হাইকোর্টে।

আরও পড়ুনঃ ফেসবুকে ভুয়া অডিও ক্লিপ, গ্রেফতার ২

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২৩ ডিসেম্বর এক আদেশে সেফ হোম থেকে সন্তানসহ ঐ কিশোরী মাকে আদালতে হাজির করার জন্য উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মোতাবেক গতকাল হাইকোর্টে হাজির করা হয় ঐ কিশোরী মাকে। হাজির ছিলো মেয়েটির স্বামী কামাল।

আদালত শুরুতে ছেলেটিকে বলেন, তুমি কি করো? জবাবে বলেন, নারায়ণগঞ্জে ছোট ব্যবসা করি। আদালত বলেন, তুমি তো কিছুদিন পর মেয়েটির বাবা-মায়ের কাছে যৌতুক দাবি করবে। ছেলেটি জবাবে বলেন, স্যার আমি যৌতুক চাইবো না।

আদালত বলেন, আমরাও চাই তুমি তোমার স্ত্রীকে যথাযথ সম্মান দাও। তার যেন কোনো অমর্যাদা না হয়। সুখে-শান্তিতে বসবাস করো। এরপরই হাইকোর্ট সেফহোম থেকে কিশোরীকে মুক্তির আদেশ দেয়। আদালতে আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী শেখ আলী আহমেদ খোকন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী শুনানি করেন।