ঢাকা ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
মেহেরপুরের সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদের স্ত্রী গ্রেফতার ও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিকে গণসংবর্ধনা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ৪ গাড়ির সংঘর্ষ, আহত ১৫ ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সগঞ্জের শ্রীনগরে ৪ টি যানবাহনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রমজানে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল পাবে ৫০ লাখ পরিবার: খাদ্য উপদেষ্টা স্বৈরাচারের পক্ষে যত বয়ান তৈরি হয়েছে, তার সবকিছু নথিভুক্ত করা হচ্ছে অনেক গণমাধ্যম স্বৈরাচারের হাতকে শক্তিশালী করেছে: প্রেস সচিব লক্ষ্মীপুরে হাজিরপাড়ার পুর্ব আলাদাদপুর আসলামিয়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন ডিসি সম্মেলনে গিয়ে ‘কষ্ট পেলেন’ প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত জনমত জরিপ প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুবারের বেশি চান না ৬৪ ভাগ মানুষ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই,ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে মাদকমুক্ত করার অভিযান শুরু

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫৭:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৩২৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মাদকমুক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে। মাদকের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। রাজধানীসহ সারাদেশের মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সারাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। দেশের কোনো জেলায় মাদকাসক্ত পুলিশ সন্দেহ হলে প্রতিটি জেলার ইউনিট প্রধানরা কৌশলে তাকে ডেকে এনে ডোপ টেস্ট করাচ্ছেন। যাদের পজিটিভ হয় তাদের আরো দুই দফায় ডোপ টেস্ট করে নিশ্চিত হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ইউনিট প্রধানরা। ডোপ টেস্টে যাদের চূড়ান্তভাবে পজিটিভ হবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে সারাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যের মধ্যে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশের মধ্যে ডোপ টেস্ট শুরু হয়েছে। সারাদেশে এ কার্যক্রম চলছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম প্রথম পুলিশে ডোপ টেস্ট শুরু করেন। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় এ পর্যন্ত ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মোট অভিযুক্ত ৮০ জন। এরমধ্যে এসআই আট জন, সার্জেন্ট এক জন, এএসআই পাঁচ জন, নায়েক ছয় জন ও কনস্টেবল ৬০ জন। এ পর্যন্ত বিভাগীয় মামলা হয়েছে ৬৮টি। মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে ১২টির।

র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কয়েক হাজার র্যাব সদস্যদের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। মাদকাসক্ত হওয়ায় ১৫ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা র্যাবের সব ব্যাটালিয়ান অধিনায়কদের নির্দেশ দিয়েছি ডোপ টেস্ট করার জন্য। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মাদকাসক্ত যেই থাকুক, ছাড় নেই।

প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, ঘোষণা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট করার ঘটনাটি উত্সাহব্যাঞ্জক। এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সরকারের মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার ঘোষণার অংশ হিসেবেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে অস্ত্র থাকে। তারা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের মাদকাসক্ত হওয়াটা বিপজ্জনক। ডোপ টেস্ট চালুর মাধ্যমে দুঃসাহসিক কাজ করছেন পুলিশের আইজিপি ও র্যাব মহাপরিচালক। আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে এর ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে, সুফল আসবে। গত ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকারের আট জন মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিসিএস পরীক্ষায় যারা নির্বাচিত হবেন তাদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। চালকদের লাইসেন্স করা ও লাইসেন্স নবায়ন করার সময়ও ডোপ টেস্ট করার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে, মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যরাই সাধারণত চাঁদাবাজি, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক কারবারসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ জন্য ডোপ টেস্টের মাধ্যমে চলছে পুলিশের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান। ডিএমপির ৫৭টি বিভাগে মোট ৫৭ ডিসি রয়েছেন। সদস্য আছে ৩৪ হাজার। আর সারাদেশে রয়েছে ২ লাখের বেশি পুলিশ সদস্য। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আসা পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে। অপরাধ বিশেষজ্ঞগণ বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও বের করে দেওয়ার এই উদ্যোগ দারুণ ফল দেবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে মাদকমুক্ত করার অভিযান শুরু

আপডেট টাইম : ০৫:৫৭:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মাদকমুক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে। মাদকের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। রাজধানীসহ সারাদেশের মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সারাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। দেশের কোনো জেলায় মাদকাসক্ত পুলিশ সন্দেহ হলে প্রতিটি জেলার ইউনিট প্রধানরা কৌশলে তাকে ডেকে এনে ডোপ টেস্ট করাচ্ছেন। যাদের পজিটিভ হয় তাদের আরো দুই দফায় ডোপ টেস্ট করে নিশ্চিত হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ইউনিট প্রধানরা। ডোপ টেস্টে যাদের চূড়ান্তভাবে পজিটিভ হবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে সারাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যের মধ্যে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশের মধ্যে ডোপ টেস্ট শুরু হয়েছে। সারাদেশে এ কার্যক্রম চলছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম প্রথম পুলিশে ডোপ টেস্ট শুরু করেন। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় এ পর্যন্ত ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মোট অভিযুক্ত ৮০ জন। এরমধ্যে এসআই আট জন, সার্জেন্ট এক জন, এএসআই পাঁচ জন, নায়েক ছয় জন ও কনস্টেবল ৬০ জন। এ পর্যন্ত বিভাগীয় মামলা হয়েছে ৬৮টি। মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে ১২টির।

র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কয়েক হাজার র্যাব সদস্যদের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। মাদকাসক্ত হওয়ায় ১৫ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা র্যাবের সব ব্যাটালিয়ান অধিনায়কদের নির্দেশ দিয়েছি ডোপ টেস্ট করার জন্য। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মাদকাসক্ত যেই থাকুক, ছাড় নেই।

প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, ঘোষণা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট করার ঘটনাটি উত্সাহব্যাঞ্জক। এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সরকারের মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার ঘোষণার অংশ হিসেবেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে অস্ত্র থাকে। তারা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের মাদকাসক্ত হওয়াটা বিপজ্জনক। ডোপ টেস্ট চালুর মাধ্যমে দুঃসাহসিক কাজ করছেন পুলিশের আইজিপি ও র্যাব মহাপরিচালক। আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে এর ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে, সুফল আসবে। গত ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকারের আট জন মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিসিএস পরীক্ষায় যারা নির্বাচিত হবেন তাদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। চালকদের লাইসেন্স করা ও লাইসেন্স নবায়ন করার সময়ও ডোপ টেস্ট করার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে, মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যরাই সাধারণত চাঁদাবাজি, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক কারবারসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ জন্য ডোপ টেস্টের মাধ্যমে চলছে পুলিশের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান। ডিএমপির ৫৭টি বিভাগে মোট ৫৭ ডিসি রয়েছেন। সদস্য আছে ৩৪ হাজার। আর সারাদেশে রয়েছে ২ লাখের বেশি পুলিশ সদস্য। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আসা পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে। অপরাধ বিশেষজ্ঞগণ বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও বের করে দেওয়ার এই উদ্যোগ দারুণ ফল দেবে।