ঢাকা ১২:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারতের রাষ্ট্রপতি, রাজভবন কে জন রাজভবনের জন্য চাবি তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে বস্তুনিষ্ঠ লেখনিতেই ছড়িয়ে পড়ে পরিচিতি, গড়ে ওঠে পাঠকের আস্থা নাজিরপুরে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে নির্যাতন ময়মনসিংহের থানায় মটর সাইকেল সেড ও বুক কর্ণার উদ্ভোধন এবার বেড়েছে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা: “বন্দর জেটিতে ৮ মিটারের জাহাজ ভিড়তে শুরু করেছে” মোংলায় নিশি ও সুমি লীলার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনসহ মানববন্ধন চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার এজাহার নামীয় আসামী গ্রেফতার কোটালীপাড়ায় জমি বিক্রির নামে প্রবাসীর টাকা নিয়ে প্রতারণা ঢাকা রেঞ্জে ৩ বারের মতো শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত হয়েছেন গাজীপুরের, কাজী শফিকুল আলম বিপিএম নবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ১(এক) জনের মৃত্যু

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে মাদকমুক্ত করার অভিযান শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মাদকমুক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে। মাদকের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। রাজধানীসহ সারাদেশের মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সারাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। দেশের কোনো জেলায় মাদকাসক্ত পুলিশ সন্দেহ হলে প্রতিটি জেলার ইউনিট প্রধানরা কৌশলে তাকে ডেকে এনে ডোপ টেস্ট করাচ্ছেন। যাদের পজিটিভ হয় তাদের আরো দুই দফায় ডোপ টেস্ট করে নিশ্চিত হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ইউনিট প্রধানরা। ডোপ টেস্টে যাদের চূড়ান্তভাবে পজিটিভ হবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে সারাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যের মধ্যে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশের মধ্যে ডোপ টেস্ট শুরু হয়েছে। সারাদেশে এ কার্যক্রম চলছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম প্রথম পুলিশে ডোপ টেস্ট শুরু করেন। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় এ পর্যন্ত ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মোট অভিযুক্ত ৮০ জন। এরমধ্যে এসআই আট জন, সার্জেন্ট এক জন, এএসআই পাঁচ জন, নায়েক ছয় জন ও কনস্টেবল ৬০ জন। এ পর্যন্ত বিভাগীয় মামলা হয়েছে ৬৮টি। মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে ১২টির।

র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কয়েক হাজার র্যাব সদস্যদের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। মাদকাসক্ত হওয়ায় ১৫ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা র্যাবের সব ব্যাটালিয়ান অধিনায়কদের নির্দেশ দিয়েছি ডোপ টেস্ট করার জন্য। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মাদকাসক্ত যেই থাকুক, ছাড় নেই।

প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, ঘোষণা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট করার ঘটনাটি উত্সাহব্যাঞ্জক। এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সরকারের মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার ঘোষণার অংশ হিসেবেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে অস্ত্র থাকে। তারা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের মাদকাসক্ত হওয়াটা বিপজ্জনক। ডোপ টেস্ট চালুর মাধ্যমে দুঃসাহসিক কাজ করছেন পুলিশের আইজিপি ও র্যাব মহাপরিচালক। আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে এর ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে, সুফল আসবে। গত ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকারের আট জন মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিসিএস পরীক্ষায় যারা নির্বাচিত হবেন তাদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। চালকদের লাইসেন্স করা ও লাইসেন্স নবায়ন করার সময়ও ডোপ টেস্ট করার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে, মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যরাই সাধারণত চাঁদাবাজি, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক কারবারসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ জন্য ডোপ টেস্টের মাধ্যমে চলছে পুলিশের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান। ডিএমপির ৫৭টি বিভাগে মোট ৫৭ ডিসি রয়েছেন। সদস্য আছে ৩৪ হাজার। আর সারাদেশে রয়েছে ২ লাখের বেশি পুলিশ সদস্য। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আসা পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে। অপরাধ বিশেষজ্ঞগণ বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও বের করে দেওয়ার এই উদ্যোগ দারুণ ফল দেবে।

আরো খবর.......
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের রাষ্ট্রপতি, রাজভবন কে জন রাজভবনের জন্য চাবি তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে মাদকমুক্ত করার অভিযান শুরু

আপডেট টাইম : ০৫:৫৭:১৭ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মাদকমুক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে। মাদকের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা। রাজধানীসহ সারাদেশের মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সারাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। দেশের কোনো জেলায় মাদকাসক্ত পুলিশ সন্দেহ হলে প্রতিটি জেলার ইউনিট প্রধানরা কৌশলে তাকে ডেকে এনে ডোপ টেস্ট করাচ্ছেন। যাদের পজিটিভ হয় তাদের আরো দুই দফায় ডোপ টেস্ট করে নিশ্চিত হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ইউনিট প্রধানরা। ডোপ টেস্টে যাদের চূড়ান্তভাবে পজিটিভ হবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে সারাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যের মধ্যে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশের মধ্যে ডোপ টেস্ট শুরু হয়েছে। সারাদেশে এ কার্যক্রম চলছে। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম প্রথম পুলিশে ডোপ টেস্ট শুরু করেন। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় এ পর্যন্ত ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মোট অভিযুক্ত ৮০ জন। এরমধ্যে এসআই আট জন, সার্জেন্ট এক জন, এএসআই পাঁচ জন, নায়েক ছয় জন ও কনস্টেবল ৬০ জন। এ পর্যন্ত বিভাগীয় মামলা হয়েছে ৬৮টি। মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে ১২টির।

র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কয়েক হাজার র্যাব সদস্যদের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। মাদকাসক্ত হওয়ায় ১৫ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা র্যাবের সব ব্যাটালিয়ান অধিনায়কদের নির্দেশ দিয়েছি ডোপ টেস্ট করার জন্য। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মাদকাসক্ত যেই থাকুক, ছাড় নেই।

প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, ঘোষণা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট করার ঘটনাটি উত্সাহব্যাঞ্জক। এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সরকারের মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার ঘোষণার অংশ হিসেবেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে অস্ত্র থাকে। তারা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের মাদকাসক্ত হওয়াটা বিপজ্জনক। ডোপ টেস্ট চালুর মাধ্যমে দুঃসাহসিক কাজ করছেন পুলিশের আইজিপি ও র্যাব মহাপরিচালক। আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে এর ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে, সুফল আসবে। গত ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকারের আট জন মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিসিএস পরীক্ষায় যারা নির্বাচিত হবেন তাদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। চালকদের লাইসেন্স করা ও লাইসেন্স নবায়ন করার সময়ও ডোপ টেস্ট করার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে, মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যরাই সাধারণত চাঁদাবাজি, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক কারবারসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ জন্য ডোপ টেস্টের মাধ্যমে চলছে পুলিশের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান। ডিএমপির ৫৭টি বিভাগে মোট ৫৭ ডিসি রয়েছেন। সদস্য আছে ৩৪ হাজার। আর সারাদেশে রয়েছে ২ লাখের বেশি পুলিশ সদস্য। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আসা পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে। অপরাধ বিশেষজ্ঞগণ বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও বের করে দেওয়ার এই উদ্যোগ দারুণ ফল দেবে।