ঢাকা ০৫:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালপুরে ভোজ্য তেল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পর ছাত্রলীগ নেতার গলিত মরদেহ উদ্ধার চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টির জন্য চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায় মঠবাড়ীয়া তীব্র তাপদাহের হাত থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ। প্রার্থনা ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক শব্দদূষণ দিবস উদযাপিত উজিরপুরে সাব রেজিষ্টার মোঃ ইমরান খান এর বিদায় উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত রায়পুরে আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ জামালপুরে বিনা খেসারি-১ এর চাষের উজ্জল সম্ভাবনা ব্যাংককের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনোহরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হলেন এড.মো. মাসউদ

নিজেরা পদ্মা সেতু নির্মাণেই দেশের ভাবমূর্তি পাল্টেছে

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার সিদ্ধান্তই সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে উল্লেখ করে বলেছেন, বাংলাদেশ পরনির্ভরশীল না। বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ আমাদের যে দাবায়ে রাখা যায় না, আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ দীর্ঘকাল দেশ পরিচালনার সুযোগ পাওয়াতেই বাংলাদেশ আজ মর্যাদাপূর্ণ, স্বনির্ভর এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে উঠছে। বিশে^ এই বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ মানুষের জীবন মান উন্নয়নে আজকে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে, যা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।

সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্বকালে দেয়া প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগের প্রেক্ষিতে একটা বিষয় সুস্পষ্ট হয়েছে যে, সমগ্র বিশ^ এখন বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখছে। যেটি অতীতে ছিল না। সারাবিশ্ব বাংলাদেশের কথা শুনলে, আগে যেমন বাংলাদেশ বললে বা বাংলাদেশের কথা শুনলে বলত- বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়, বন্যা, দারিদ্র্য। এখন আর সে কথা কেউ বলে না, বরং বলে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বস্তুত ইংরেজী নতুন বছর ২০২১ সালে এটাই ছিল মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক।

বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী সকলকে ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে নতুন বছরে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন চলমান থাকার পাশাপাশি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সমাগত হওয়ায় এটিকে জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের প্রথম মিটিং আমরা করছি। সবাইকে ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা।

তিনি বলেন, এই বছরটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সালে আমরা আমাদের মহান নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করছি। আর সেই সঙ্গে ২০২১ সালে এসে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর সঙ্গে আবার আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করতে যাচ্ছি। সেই জন্য বাংলাদেশের জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চতুর্থবারের মতো তাঁকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করায় দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সৌভাগ্য, দেশের জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী যেমন উদ্যাপন করেছি, তেমনই সরকারে থেকেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের এবং দেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে। আমরা তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে করোনাভাইরাসের কারণে অনেক অনুষ্ঠান করতে পারিনি। লোকসমাগম করতে পারিনি। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য স্থির করেছি, বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রতিটি ঘর আলোকিত হবে। শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করব, কর্মসংস্থান করব। দেশকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যাব।

প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সীমিত সম্পদ এবং বিশাল জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়েই তাঁর সরকার দেশকে আত্মমর্যাদাশীল করে গড়ে তুলতে চায়। আমাদের যতটুকু আছে তা নিয়েই দেশের যে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে তাঁদের কর্মক্ষম করে তুলব। আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে নিজেদের আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান করতে পারায় আজকে বিশে^ সেটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আসীন হয়েছি। তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে বাংলাদেশ- এই একটি সিদ্ধান্তই সারাবিশে^ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে যে, বাংলাদেশের মানুষ আর পরনির্ভরশীল নয়।

এ সময় পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের জন্য প্রধানমন্ত্রী কারও নাম উল্লেখ না করে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করেন। পাশাপাশি তার গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ আঁকড়ে থাকার চেষ্টাকে দায়ী করেন।

সরকারপ্রধান এ প্রসঙ্গে বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পেছনে আমাদের দেশেরই স্বনামধন্য কিছু লোক জড়িত, যেটা আমাদের দুর্ভাগ্য। একটি ব্যাংকের (গ্রামীণ ব্যাংক) সামান্য একটি এমডি পদের লোভে একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে যেটি বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে, যে পদ্মা সেতু আমাদের দক্ষিণের ২২ জেলার মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারেÑ সেটি বন্ধের ব্যবস্থা নিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যা হোক একটি আঘাত আসলে হয়ত মানুষ সচেতন হয় এবং নিজের কাজ করা শেখে, আমরা সেটাই শিখেছি। ওই আঘাতটা আসাতে আমরা হতাশ না হয়ে বরং সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেই এবং যেটা আজকে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। তিনি বলেন, সবসময় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আত্মমর্যাদা নিয়ে আমাদের চলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় কোভিড-১৯ এর জন্য চলমান জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচী ঘটা করে পালন করতে না পারলেও দেশের সকল জনগণকে একটি ঘর করে দেয়ার মাধ্যমে দেশের সকল ভূমিহীন, নিঃস্ব, হতদরিদ্র পরিবারকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাংলাদেশে আর একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, সকল ঘরে বিদ্যুতের সেবা পৌঁছে দিয়ে প্রত্যেক ঘরে আমরা আলো জ্বালবো।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে মৌলিক চাহিদাগুলো তাঁর সরকার পূরণ করে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এবং সেভাবেই দেশকেও এগিয়ে নিয়ে গিয়ে জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীনের পরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে সেই যে বলেছিলেন, ‘এই দেশের মাটি এবং মানুষ রয়েছে, তা দিয়েই তিনি দেশকে গড়ে তুলবেন।’ সেকথা মাথায় রেখেই তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবই। আমাদের বিশাল উর্বর ভূমি এবং আমাদের দেশের মানুষ; তাদের নিয়েই আমরা দেশ গড়ব এবং সেটা আমরা করতে পারছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি যে, নতুন ২০২১ সাল আমাদের দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণ করুক। করোনাভাইরাসের হাত থেকে দেশবাসী রক্ষা পাক। বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা, বিশ্বের মানুষও মুক্তি পাক। আমার প্রবাসী বাঙালীরাও মুক্তি পাক। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারি এই কামনাই করি।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুরে ভোজ্য তেল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে

নিজেরা পদ্মা সেতু নির্মাণেই দেশের ভাবমূর্তি পাল্টেছে

আপডেট টাইম : ০৬:২২:০৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১১ জানুয়ারি ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার সিদ্ধান্তই সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে উল্লেখ করে বলেছেন, বাংলাদেশ পরনির্ভরশীল না। বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ আমাদের যে দাবায়ে রাখা যায় না, আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ দীর্ঘকাল দেশ পরিচালনার সুযোগ পাওয়াতেই বাংলাদেশ আজ মর্যাদাপূর্ণ, স্বনির্ভর এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে উঠছে। বিশে^ এই বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ মানুষের জীবন মান উন্নয়নে আজকে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে, যা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।

সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্বকালে দেয়া প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগের প্রেক্ষিতে একটা বিষয় সুস্পষ্ট হয়েছে যে, সমগ্র বিশ^ এখন বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখছে। যেটি অতীতে ছিল না। সারাবিশ্ব বাংলাদেশের কথা শুনলে, আগে যেমন বাংলাদেশ বললে বা বাংলাদেশের কথা শুনলে বলত- বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়, বন্যা, দারিদ্র্য। এখন আর সে কথা কেউ বলে না, বরং বলে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বস্তুত ইংরেজী নতুন বছর ২০২১ সালে এটাই ছিল মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক।

বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী সকলকে ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে নতুন বছরে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন চলমান থাকার পাশাপাশি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সমাগত হওয়ায় এটিকে জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের প্রথম মিটিং আমরা করছি। সবাইকে ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা।

তিনি বলেন, এই বছরটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সালে আমরা আমাদের মহান নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করছি। আর সেই সঙ্গে ২০২১ সালে এসে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর সঙ্গে আবার আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করতে যাচ্ছি। সেই জন্য বাংলাদেশের জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চতুর্থবারের মতো তাঁকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করায় দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সৌভাগ্য, দেশের জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী যেমন উদ্যাপন করেছি, তেমনই সরকারে থেকেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের এবং দেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে। আমরা তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে করোনাভাইরাসের কারণে অনেক অনুষ্ঠান করতে পারিনি। লোকসমাগম করতে পারিনি। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য স্থির করেছি, বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রতিটি ঘর আলোকিত হবে। শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করব, কর্মসংস্থান করব। দেশকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যাব।

প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সীমিত সম্পদ এবং বিশাল জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়েই তাঁর সরকার দেশকে আত্মমর্যাদাশীল করে গড়ে তুলতে চায়। আমাদের যতটুকু আছে তা নিয়েই দেশের যে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে তাঁদের কর্মক্ষম করে তুলব। আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে নিজেদের আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান করতে পারায় আজকে বিশে^ সেটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আসীন হয়েছি। তিনি বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে বাংলাদেশ- এই একটি সিদ্ধান্তই সারাবিশে^ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে যে, বাংলাদেশের মানুষ আর পরনির্ভরশীল নয়।

এ সময় পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের জন্য প্রধানমন্ত্রী কারও নাম উল্লেখ না করে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করেন। পাশাপাশি তার গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ আঁকড়ে থাকার চেষ্টাকে দায়ী করেন।

সরকারপ্রধান এ প্রসঙ্গে বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পেছনে আমাদের দেশেরই স্বনামধন্য কিছু লোক জড়িত, যেটা আমাদের দুর্ভাগ্য। একটি ব্যাংকের (গ্রামীণ ব্যাংক) সামান্য একটি এমডি পদের লোভে একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে যেটি বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে, যে পদ্মা সেতু আমাদের দক্ষিণের ২২ জেলার মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারেÑ সেটি বন্ধের ব্যবস্থা নিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যা হোক একটি আঘাত আসলে হয়ত মানুষ সচেতন হয় এবং নিজের কাজ করা শেখে, আমরা সেটাই শিখেছি। ওই আঘাতটা আসাতে আমরা হতাশ না হয়ে বরং সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেই এবং যেটা আজকে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। তিনি বলেন, সবসময় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আত্মমর্যাদা নিয়ে আমাদের চলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় কোভিড-১৯ এর জন্য চলমান জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচী ঘটা করে পালন করতে না পারলেও দেশের সকল জনগণকে একটি ঘর করে দেয়ার মাধ্যমে দেশের সকল ভূমিহীন, নিঃস্ব, হতদরিদ্র পরিবারকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাংলাদেশে আর একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, সকল ঘরে বিদ্যুতের সেবা পৌঁছে দিয়ে প্রত্যেক ঘরে আমরা আলো জ্বালবো।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে মৌলিক চাহিদাগুলো তাঁর সরকার পূরণ করে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এবং সেভাবেই দেশকেও এগিয়ে নিয়ে গিয়ে জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীনের পরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে সেই যে বলেছিলেন, ‘এই দেশের মাটি এবং মানুষ রয়েছে, তা দিয়েই তিনি দেশকে গড়ে তুলবেন।’ সেকথা মাথায় রেখেই তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবই। আমাদের বিশাল উর্বর ভূমি এবং আমাদের দেশের মানুষ; তাদের নিয়েই আমরা দেশ গড়ব এবং সেটা আমরা করতে পারছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি যে, নতুন ২০২১ সাল আমাদের দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণ করুক। করোনাভাইরাসের হাত থেকে দেশবাসী রক্ষা পাক। বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা, বিশ্বের মানুষও মুক্তি পাক। আমার প্রবাসী বাঙালীরাও মুক্তি পাক। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারি এই কামনাই করি।