ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
নাহিদসহ তিন জন সমন্বয়ককে হাসপাতাল থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে আহতদের দেখতে ঢামেক হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার সিলেট: ১৮-২৩ জুলাইয়ের ঘটনাপ্রবাহ রক্তাক্ত জুলাই থেকে কি কোনো শিক্ষা হবে? সব দল নিয়ে জাতীয় ঐক্যের মাঠে নামছেন বিএনপি শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে দেশের মানুষ: নৌবাহিনী প্রধান মেট্রোরেল স্টেশনের ধ্বংসলীলা দেখে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী রুশ এমআই-২৮ সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত মস্কোর দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কালুগা অঞ্চলে আজ বৃহস্পতিবার হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয় কে হামলা চালাবে—বিএনপির নীল নকশা আগেই প্রস্তুত ছিল: কাদের

সাইনবোর্ডসর্বস্ব এনজিওর আড়ালে বরগুনায় সুদের ব্যবসা জমজমাট

  • আপডেট টাইম : ১০:১৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ২৭৭ ৫০০.০০০ বার পাঠক

বরগুনা প্রতিনিধি।।

বরগুনায় সাইনবোর্ডসর্বস্ব এনজিওর আড়ালে সুদের ব্যবসা জমজমাটভাবে চলছে। স্বাক্ষর সম্বলিত ব্ল্যাংক চেক ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহীতারা সুদাসল পরিশোধ করেও নিস্তার পাচ্ছে না। ঋণের তিনগুণ পরিশোধ করেও অসংখ্য ঋণগ্রহীতা চেকের মামলার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় এসকল সুদখোররা প্রশাসনের নাকের ডগায় অনৈতিক একারবারটি বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তি বা সাইনবোর্ডসর্বস্ব এনজিওর পরিচালকদের হাতে জিম্মি অসংখ্য পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অনেকেই সুদের দোকান খুলে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বা বিত্তভৈববের মালিক বনে গিয়েছে। ইতোমধ্যেই একাধিক ঋণগ্রহীতা সুদের জালে জড়িয়ে সুদ প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় সুদখোরদের লাঞ্ছনা-অপমানের কারণে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। সুদখোরদের দৌড়াত্ম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেলেও এদের নিয়ন্ত্রনে সরকারের তরফ থেকে কোন সংস্থার কোনপ্রকার ভুমিকা এযাবত পরিলক্ষিত হয়নি। সুদ কারবারেরর সাথে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তি বা সংস্থা সুদাসল আদায়ের পরও গ্রাহকদের স্বাক্ষর সম্বলিত ব্ল্যাংক চেক ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পকে পুঁজি করে অনৈতিক লাভের পাশাপাশি চরমভাবে হয়রানি করে আসছে। বরগুনায় সোনার বাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ নামের একটা অখ্যাত এনজিওর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চেক জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
সোনার বাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এনজিওর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী গ্রামের মৃত মমিন উদ্দিন ওরফে মদন খাঁর পুত্র আখতারুজ্জামান ওরফে আবুল হোসেন, বরগুনা পৌরসভার মুসলিম পাড়ার তাজেম আলী সিকদারের পুত্র মোঃ মেহেদী হাসান মামুন ও দক্ষিন বরগুনার নুর ইসলাম মৃধার পুত্র মোঃ নান্না মিয়া এরা একটি জাল-জালিয়াত চক্র। এচক্রটি শিক্ষক ও ব্যবসায়ীদেও টার্গেট করে শহরের অণিগলি হতে শুরু করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ধরাছোয়ার বাইরে থেকে সুদের ব্যবসার ছদ্মাবরণে সক্রিয়ভাবে জালিয়াতি কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। এচক্রটি গ্রাহকদের স্বাক্ষরসম্বলিত বøাংক চেক ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প রেখে প্রথমদিকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে ঋণ দেয়। বরগুনা শহরের শফিকুল ইসলাম নামে জনৈক ব্যবসায়ী ঠেকাবশত স্বাক্ষরসম্বলিত বøাংক চেক ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প বন্ধক রেখে ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল ৫০ হাজার টাকায় সার্ভিস চার্জসহ ৬০ হাজার টাকা দৈনিক তিনশত টাকা পরিশোধ করতে হবে চুক্তিতে গ্রহণ করেন। যা ২০ আগষ্ট ২০১৭ সালে পরিশোধিত হয়। ঋণ পরিশোধের পওে জামানতের ব্ল্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প গ্রাহককে ফেরত না দিয়ে অন্য এক প্রতারককে বাদী করে ২০ আগষ্ট ২০২০ সালে এনআইএক্টে দুই লাখ আশি হাজার টাকার মামলা দায়ের করে।
এপ্রতারক চক্রটি জাহাঙ্গীর নামের এক স্কুল শিক্ষকের ৫লাখ টাকা লিখিত চেকের জামানতের বিপরীতে ৫ লাখ টাকা ঋণ দেন। ঋণ যথারীতি পরিশোধের পর ৫এর পিছনে ২বসিয়ে ২৫ লাখ টাকা দাবী করে। ৫লক্ষ টাকার বিপরীতে ১৫ লক্ষ টাকার মামলা দিয়ে আল-আমিন ফার্মেসীর আফজাল হোসেনের অনুপস্থিতিতে হাইকোর্টে ডিক্রি করে তাকে নিঃস্ব করে ফেলেছে। এচক্রটির ঋণের খপ্পরে পড়ে মামলার মুখোমুখি হয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষক সানু ও তার স্ত্রী সুলতানা রুবী, ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, নাসির উদ্দিন, জাফর হোসেন, রানু বেগম, মরণ চাঁদসহ অর্ধশতাধিক স্কুল শিক্ষক ও ব্যবসায়ী। অনেকেই হরেয়ছেন সর্বস্বান্ত। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এচক্রটি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
এচক্রের মূলহোতা আক্তারুজ্জামান ওরফে আবুল হোসেন একটি মাদ্রাসায় পিয়নের চাকুরী নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষার্থীদের কাছ হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জাল সার্টিফিকেট তৈরি ও বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাদ্রাসার পিয়ন চাকরীটা হারায়। চাকরী হারিয়ে সমমনা কয়েকজনকে নিয়ে শুন্যচালানে কথিত এনজিওর নাম ব্যবহার করে অবৈধ সুদের ব্যবসা শুরু করেন। প্রতিমাসে নয় হাজার টাকা লাভ দিবেন এই চুক্তিতে বরগুনার লাকুরতলা গ্রামের জনৈক সোবহানের নিকট থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছেন। টাকা দাবী করায় সোবাহানের নামে আদালতে মামলা ঠুকে দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে সোনার বাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এনজিওর পরিচালক আক্তারুজ্জামান ওরফে আবুল হোসেন বলেন, ‘টাকা মেরে দেয়ার জন্য কিছু লোক অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। আমরা বৈধভাবেই এব্যবসা করছি।’

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সাইনবোর্ডসর্বস্ব এনজিওর আড়ালে বরগুনায় সুদের ব্যবসা জমজমাট

আপডেট টাইম : ১০:১৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

বরগুনা প্রতিনিধি।।

বরগুনায় সাইনবোর্ডসর্বস্ব এনজিওর আড়ালে সুদের ব্যবসা জমজমাটভাবে চলছে। স্বাক্ষর সম্বলিত ব্ল্যাংক চেক ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহীতারা সুদাসল পরিশোধ করেও নিস্তার পাচ্ছে না। ঋণের তিনগুণ পরিশোধ করেও অসংখ্য ঋণগ্রহীতা চেকের মামলার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় এসকল সুদখোররা প্রশাসনের নাকের ডগায় অনৈতিক একারবারটি বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তি বা সাইনবোর্ডসর্বস্ব এনজিওর পরিচালকদের হাতে জিম্মি অসংখ্য পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অনেকেই সুদের দোকান খুলে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বা বিত্তভৈববের মালিক বনে গিয়েছে। ইতোমধ্যেই একাধিক ঋণগ্রহীতা সুদের জালে জড়িয়ে সুদ প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় সুদখোরদের লাঞ্ছনা-অপমানের কারণে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। সুদখোরদের দৌড়াত্ম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেলেও এদের নিয়ন্ত্রনে সরকারের তরফ থেকে কোন সংস্থার কোনপ্রকার ভুমিকা এযাবত পরিলক্ষিত হয়নি। সুদ কারবারেরর সাথে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তি বা সংস্থা সুদাসল আদায়ের পরও গ্রাহকদের স্বাক্ষর সম্বলিত ব্ল্যাংক চেক ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পকে পুঁজি করে অনৈতিক লাভের পাশাপাশি চরমভাবে হয়রানি করে আসছে। বরগুনায় সোনার বাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ নামের একটা অখ্যাত এনজিওর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চেক জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
সোনার বাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এনজিওর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী গ্রামের মৃত মমিন উদ্দিন ওরফে মদন খাঁর পুত্র আখতারুজ্জামান ওরফে আবুল হোসেন, বরগুনা পৌরসভার মুসলিম পাড়ার তাজেম আলী সিকদারের পুত্র মোঃ মেহেদী হাসান মামুন ও দক্ষিন বরগুনার নুর ইসলাম মৃধার পুত্র মোঃ নান্না মিয়া এরা একটি জাল-জালিয়াত চক্র। এচক্রটি শিক্ষক ও ব্যবসায়ীদেও টার্গেট করে শহরের অণিগলি হতে শুরু করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ধরাছোয়ার বাইরে থেকে সুদের ব্যবসার ছদ্মাবরণে সক্রিয়ভাবে জালিয়াতি কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। এচক্রটি গ্রাহকদের স্বাক্ষরসম্বলিত বøাংক চেক ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প রেখে প্রথমদিকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে ঋণ দেয়। বরগুনা শহরের শফিকুল ইসলাম নামে জনৈক ব্যবসায়ী ঠেকাবশত স্বাক্ষরসম্বলিত বøাংক চেক ও নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প বন্ধক রেখে ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল ৫০ হাজার টাকায় সার্ভিস চার্জসহ ৬০ হাজার টাকা দৈনিক তিনশত টাকা পরিশোধ করতে হবে চুক্তিতে গ্রহণ করেন। যা ২০ আগষ্ট ২০১৭ সালে পরিশোধিত হয়। ঋণ পরিশোধের পওে জামানতের ব্ল্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প গ্রাহককে ফেরত না দিয়ে অন্য এক প্রতারককে বাদী করে ২০ আগষ্ট ২০২০ সালে এনআইএক্টে দুই লাখ আশি হাজার টাকার মামলা দায়ের করে।
এপ্রতারক চক্রটি জাহাঙ্গীর নামের এক স্কুল শিক্ষকের ৫লাখ টাকা লিখিত চেকের জামানতের বিপরীতে ৫ লাখ টাকা ঋণ দেন। ঋণ যথারীতি পরিশোধের পর ৫এর পিছনে ২বসিয়ে ২৫ লাখ টাকা দাবী করে। ৫লক্ষ টাকার বিপরীতে ১৫ লক্ষ টাকার মামলা দিয়ে আল-আমিন ফার্মেসীর আফজাল হোসেনের অনুপস্থিতিতে হাইকোর্টে ডিক্রি করে তাকে নিঃস্ব করে ফেলেছে। এচক্রটির ঋণের খপ্পরে পড়ে মামলার মুখোমুখি হয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষক সানু ও তার স্ত্রী সুলতানা রুবী, ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, নাসির উদ্দিন, জাফর হোসেন, রানু বেগম, মরণ চাঁদসহ অর্ধশতাধিক স্কুল শিক্ষক ও ব্যবসায়ী। অনেকেই হরেয়ছেন সর্বস্বান্ত। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এচক্রটি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
এচক্রের মূলহোতা আক্তারুজ্জামান ওরফে আবুল হোসেন একটি মাদ্রাসায় পিয়নের চাকুরী নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষার্থীদের কাছ হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জাল সার্টিফিকেট তৈরি ও বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাদ্রাসার পিয়ন চাকরীটা হারায়। চাকরী হারিয়ে সমমনা কয়েকজনকে নিয়ে শুন্যচালানে কথিত এনজিওর নাম ব্যবহার করে অবৈধ সুদের ব্যবসা শুরু করেন। প্রতিমাসে নয় হাজার টাকা লাভ দিবেন এই চুক্তিতে বরগুনার লাকুরতলা গ্রামের জনৈক সোবহানের নিকট থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছেন। টাকা দাবী করায় সোবাহানের নামে আদালতে মামলা ঠুকে দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে সোনার বাংলা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এনজিওর পরিচালক আক্তারুজ্জামান ওরফে আবুল হোসেন বলেন, ‘টাকা মেরে দেয়ার জন্য কিছু লোক অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। আমরা বৈধভাবেই এব্যবসা করছি।’