হেডিংলি টেস্টে ভারত ১৩৯ রানে পিছিয়ে, হাতে আছে ৮ উইকেট
- আপডেট টাইম : ০৭:০৯:০১ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ২৮ আগস্ট ২০২১
- / ৩৮৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
খেলার রিপোর্টার।।
হেডিংলি টেস্ট তৃতীয় দিন পুজারা আর কোহলি জুটি ভরতকে এক নতুন সমীকরণের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।তৃতীয় দিন শেষে ভারত ৮ উইকেট হাতে রেখে এখনও পিছিয়ে ১৩৯ রানে। ভারতের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে ব্যাট করছে তাতে লিড নেওয়াটা খুব কঠিন বলে মনে হচ্ছেনা। চতুর্থ দিন ভারত যদি অলআউট হয়ে যায় এবং তরা যদি ১৪০ রান লিড নিতে পারে তাহলে পঞ্চম দিন সেই রান তাড়া করা খুব কঠিন হবে। কেননা পঞ্চম দিন উইকেটের কিছুটা ভেঙ্গে যেতে পারে সেখানে ভারতীয় বোলারদের সামনে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদে ব্যাটিং করাটা হবে খুব কঠিন । নায়ক হয়ে উঠতে পারে বাঁ হাতি স্পিনার জাদেজা। যদিও ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। তাই আগাম বলা খুব কঠিন। তবে ভারতের ব্যাটিং দেখে সমর্থকেদের মনে নতুর আশার আলো দেখা দিয়েছে।
প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানের গুটিয়ে যাওয়া ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে স্রেফ ২ উইকেট হারিয়েই করেছে ২১৫।
প্রথম ইনিংসে ৩৫৪ রানের বিশাল লিড ছিল ইংল্যান্ডের। ভারত তা নামিয়ে এনেছে ১৩৯ রানে। উইকেট বাকি ৮টি।
এই ঘুরে দাঁড়ানোর মূল নায়ক চেতেশ্বর পুজারা। ২০ টেস্টের সেঞ্চুরি খরা ঘোচানোর কাছাকাছি গিয়ে তিনি দিন শেষ করেন ৯১ রানে। পঞ্চাশের দেখাই পেলেন তিনি ১২ ইনিংস পর। ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মা আউট ৫৯ রানের লড়িয়ে ইনিংস খেলে। দিন শেষে অধিনায়ক কোহলি অপরাজিত ৪৫ রানে।
উইকেট এ দিন ব্যাটিংয়ের জন্য ছিল দারুণ। এই তিনজনই কাজে লাগান তা।
দিনের শুরুতে ভারতের কাজ ছিল ইংল্যান্ডের শেষ দুই উইকেট দ্রুত তুলে নেওয়া। তা হয়ে যায় দ্রুতই। ১৪ বলে রান না পেয়ে জাসপ্রিত বুমরাহকে এলোমেলো শট খেলে বোল্ড হন অলিভার রবিনসন। পরের ওভারে ৩২ রান করা ক্রেইগ ওভারটনকে ফিরিয়ে মোহাম্মদ শামি পান চতুর্থ উইকেটের দেখা।
আগের দিনের সঙ্গে আর কেবল ৯ রান যোগ করে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থামে ৪৩২ রানে।
এরপর ব্যবধান কমানোর লড়াই। রোহিত ও লোকেশ রাহুল শুরু করেন খুবই সাবধানী ব্যাটিংয়ে। ইংলিশ বোলারদের কোনো সুযোগ তারা দিতে চাননি। দুজন স্ট্রোকমেকার উইকেটে থাকার পরও ১৫ ওভারে রান আসে কেবল ২০।
লাঞ্চের ঠিক আগের বলে ভাঙ্গে ১৯ ওভারে ৩৪ রানের জুটি। ক্রেইগ ওভারটানের বলটি ছিল ভালো, তবে উইকেটের মূল কৃতিত্ব জনি বেয়ারস্টোর। স্লিপে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে অবিশ্বাস্য ক্ষীপ্রতায় এক হাতে ক্যাচ নেন তিনি। ৫৪ বলে ৮ করে ফেরেন রাহুল। লাঞ্চের পর ভারতীয় ব্যাটিংয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। পুজারা গিয়েই কয়েকটি বাউন্ডারি আদায় করেন। বিস্ময়করভাবে ভাবে লেগ স্টাম্পে কয়েকটি আলগা বল করেন জিমি অ্যান্ডারসন। দ্রুত বাড়তে থাকে রান। জমে যায় রোহিত ও পুজারার জুটি।
৩৯ রানে অবশ্য রোহিতকে ফেরাতে পারত ইংল্যান্ড। রবিনসনের বলে এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। জো রুট যখন রিভিউ নেন, ততক্ষণে সময় শেষ। রিপ্লেতে দেখা যায়, রিভিউ হলেই আউট হতেন রোহিত।
সেই রোহিত পরে ফিফটি পেরিয়ে থামেন রবিনসনের বলেই। এবার আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেন, রিভিউ নিয়ে রক্ষা হয়নি ১৫৬ বলে ৫৯ রান করা রোহিতের।
থিতু ব্যাটসম্যানকে হারিয়েও অবশ্য চাপে পড়েনি ভারত। কোহলি গিয়ে খেলতে থাকেন থিতু ব্যাটসম্যানের মতোই। পুজারা তো এগিয়ে চলেছেন তখন দারুণ ছন্দে। ইংলিশ বোলারদের সব প্রচেষ্টা থামিয়ে দারুণ সব শট খেলেন দুজন। আলোকস্বল্পতায় দিনের খেলা একটু আগে শেষ হওয়ার সময়ও দুজন অবিচ্ছিন্ন।
চতুর্থ দিনে এই জুটির সেঞ্চুরি হতে লাগবে আর কেবল ১ রান। পুজারার সেঞ্চুরির জন্য ৯ রান। কোহলির ফিফটি ছুঁতে ৫ রান। তবে ব্যক্তিগত এসব মাইলফলকই শুধু নয়, দুজনের দৃষ্টি থাকবে আরও দূরে।
ইংল্যান্ড তাকিয়ে থাকবে দ্বিতীয় নতুন বলে, দিনের শুরুতেই যা হাতে পাবে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ১ম ইনিংস: ৭৮
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৩২
ভারত ২য় ইনিংস: ৮০ ওভারে ২১৫/২ (রোহিত ৫৯, রাহুল ৮, পুজারা ৯১*, কোহলি ৪৫*; অ্যান্ডারসন ১৯-৮-৫১-০, রবিনসন ১৮-৪-৪০-১, ওভারটন ১৭-৬-৩৫-১, কারান ৯-১-৪০-০, মইন ১১-১-২৮-০, রুট ৬-১-১৫-০)।