ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
মানুষের তৈরি মতবাদ আল্লাহর আইনের সাথে চ্যালেঞ্জ করার শামিল – ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগ নেতার দখলের চেষ্টা।এই বিষয়ে সময়ের কন্ঠস্বরে নিউজ প্রকাশের পর এসিল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞা ফার্মেসী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সমগ্র বাংলাদেশ) পাকুন্দিয়া উপজেলা শাখা কমিটির সকলকে সনদ প্রদান ও আলোচনা সভা ২৫২ বছরের ইতিহাসে চট্টগ্রামে এই প্রথম নারী ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদায়ন ফরিদা খানম গাজীপুর জেলা মহানগর কাশিমপুরে স্বাধীন মত প্রকাশের জেরে থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্জেরহাটি গ্রামের সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব বনিকের দখলের চেষ্টা নরসিংদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

প্রতারণার হাতিয়ার আইপি টিভি নিয়ে চলছে

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৮:৫০ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট ২০২১
  • / ২৭০ ৫০০০.০ বার পাঠক

  • আইপি টিভি নিয়ে চলছে নৈরাজ্য
  • রাজধানীসহ সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে
  • সাংবাদিকতার নামে অনৈতিক কর্মকান্ড
  • তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব নেই
  • নিবন্ধনের জন্য ৬শ’ আবেদন

জসিম উদ্দিন ॥ প্রযুক্তির বিকাশে এখন হাতের মুঠোয় সারা পৃথিবী। আবার অনেকক্ষেত্রে প্রযুক্তির এই বিকাশ আশীর্বাদের পরিবর্তে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তেমনই এক উদাহরণ ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিভিশন বা আইপি টিভি। সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে এই আইপি টিভি। রাজধানীসহ প্রতিটি জেলা, উপজেলা এবং গ্রামগঞ্জে আইপি টিভির সংখ্যা সহএকধিক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলের নামের সঙ্গে মিল রেখে এসব আইপি টিভির

নামকরণ করা হচ্ছে। নিয়ম-কানুনের বালাইহীন সেসব টিভির মাধ্যমে সংবাদ কিংবা প্রতিবেদন প্রচারের নামে চলছে প্রতারণামূলক কর্মকান্ড। চলছে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাঁদাবাজি। সাংবাদিকতার নামে অনৈতিক কর্মকান্ডের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে তথাকথিত আইপি টিভি। সেই সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বিভিন্ন কনটেন্ট। অথচ তথ্য ও সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভির সংবাদ প্রচারের কোন বৈধতা নেই। এমনকি এখন পর্যন্ত কোন আইপি টিভির অনুমোদন দেয়নি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সেই সুবাদে প্রণীত হয়নি আইপি টিভি পরিচালনার কোন নীতিমালা। উল্টোদিকে পরিচালনার নীতিমালা না থাকলেও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ৬১টি প্রতিষ্ঠানকে আইপি টিভি সেবা দেয়ার অনুমতি দিয়েছে। এমন বাস্তবতায় বিটিআরসি ৬১টি আইপি টিভিকে সেবা প্রদানের অনুমতি দিলেও তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য ৬০০টি আইপি টিভির আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্য থেকে বেশ কিছু আইপি টিভিকে অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বেসরকারী টিভি চ্যানেলের মালিকদের সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)। অ্যাটকো বলছে, দেশে প্রতিষ্ঠিত টিভি চ্যানেল থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের টিভির অনুমোদন দেয়া হলে বাড়তে থাকবে নৈরাজ্য। বাড়তে থাকবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। এছাড়া আইপি টিভির লাগাম টেনে ধরতে তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির মধ্যে সমন্বয়ের তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টজনরা। সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান কঠিন হবে।

শুধু দর্শকদের বিনোদনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত ৬১টি আইপি টিভিকে সেবা প্রদানের অনুমতি দিয়েছে বিটিআরসি। নিয়মানুযায়ী এসব টিভি কোন গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ নিতে পারবে না। অথচ এই প্রাথমিক অনুমোদনের বাইরে অবৈধভাবে চলা আইপি টিভির সংখ্যা সহস্রাধিক। এ কারণেই বিটিআরসি থেকে ৬১টি আইপি টিভির অনুমোদন দেয়া হলেও তথ্য অধিদফতরের নিবন্ধনের জন্য জমা পড়েছে ৬০০ আবেদন।

বিটিআরসি সূত্র জানায়, কিছু শর্তসাপেক্ষে আইপি টিভি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে আইপি টিভি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের অনুমোদিত (অথবা বাংলাদেশে ডাউনলিঙ্কের অনুমতিপ্রাপ্ত) দেশী/বিদেশী টিভি চ্যানেলের কনটেন্ট প্রচার করতে পারবে। তবে প্রতিটি চ্যানেল বা প্রোগ্রাম বা কনটেন্ট প্রচারে প্রয়োজনীয় অনুমোদন/ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। অনুমোদিত চ্যানেল ছাড়া অন্য কোন চ্যানেল ডাউনলিঙ্ক, বিপণন বা সঞ্চালন বা নিজস্ব অনুষ্ঠান প্রদর্শন বা সম্প্রচার করতে পারবে না। যদিও এই নিয়ম-কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন আইপি টিভি দেশের সমাজ ও সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ, মূল্যবোধহীন নিজস্ব অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সংবাদ প্রচার করছে।

আইপি টিভি নিয়ে উদ্ভূত জটিল পরিস্থিতিতে সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কোন আইপি টিভিকেই এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। রেজিস্ট্রেশন দেয়ার জন্য আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৬শ’র কাছাকাছি আবেদন পড়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে এ মাসের মধ্যেই আমরা কিছু আইপি টিভিকে অনুমোদন দেব।

আইপি টিভিকে অনুমোদন দেয়া নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন বেসরকারী টিভি চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো। এ বিষয়ে একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাটকোর সিনিয়র সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু জনকণ্ঠকে বলেন, এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার। যেহেতু নানা নিয়ম-কানুন মেনে সরকার বিভিন্ন টিভি চ্যানেলকে অনুমোদন দিয়েছে সেখানে আইপি টিভি নামে কোন টিভি চ্যানেল থাকতে পারে না। শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্ত টিভি চ্যানেলগুলোরই সম্প্রচার হওয়া উচিত। লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিটি চ্যানেলই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কনটেন্ট প্রচার করছে। সেক্ষেত্রে আইপি টিভি নামের ইন্টারনেটনির্ভর চ্যানেল পরিচালনার কোন মানে হয় না। এ ধরনের টিভি চ্যানেলের প্রচারের ঘোর বিরোধিতা করছি আমরা। স্বল্প খরচে আইপি টিভি চালানো যায় বিধায় অনেকেই সেই সুযোগটি নিয়ে নানা অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। রিপোর্টারকে বেতন দেয়ার বদলে উল্টো তাদের কাছ থেকে পয়সা আদায় করেন এসব আইপি চ্যানেলের মালিক। তাহলে সেই রিপোর্টার তো স্বাভাবিকভাবেই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত হবেন। এমন বাস্তবতায় আইপি টিভির নামে যদি কোন টিভি চ্যানেলকে লাইসেন্স দেয়া হয় সেটা নৈরাজ্য ছাড়া আর কিছুই হবে না। এ ধরনের চ্যানেলের কোন সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই। এস্টাবলিশমেন্ট বলেও কিছু নেই। এ ধরনের টিভির মডেলটাই হচ্ছে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের একটি প্ল্যাটফর্ম। এর বড় উদাহরণ হেলেনা জাহাঙ্গীরের ‘জয়যাত্রা’ নামের আইপি টিভি। তার ওই চ্যানেলে কি এমন তথ্য দেয়া হতো যা আমরা লাইসেন্সপ্রাপ্ত টিভি চ্যানেলগুলো দিতে পারিনি? সব মিলিয়ে আইপি টিভি একটি বিপজ্জনক মডেল। তাই এ ধরনের লাইসেন্স প্রদানের ঘোরবিরোধী আমরা। আমাদের অধিকাংশ চ্যানেলের বিনিয়োগ ১০০ কোটি টাকা। মাসে বেতন দিতে হয় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা। তাই আইপি টিভির মাধ্যমে মূলত মূলধারার টিভি চ্যানেলগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ বিষয়ে চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, আইপি টিভির কারণে মূল ধারার টিভি চ্যানেলগুলোর বাজার সংকুচিত হচ্ছে। ভাগ বসাচ্ছে বিজ্ঞাপনের বাজারে। তাছাড়া এ ধরনের টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে যা খুশি তাই দেখানো হচ্ছে দর্শককে। সরকারীভাবে নিবন্ধিত একটি টিভি চ্যানেলকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে লাইসেন্স নিতে হচ্ছে। সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের নীতি- নৈতিকতার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। অথচ এসব আইপি টিভির ক্ষেত্রে নিয়মের কোন বালাই নেই। ফলে এসব আইপি টিভি পরিচালনাকারীরা যেমন খুশি তেমন কনটেন্ট তৈরি করে ছেড়ে দিচ্ছেন। যেখানে সমাজ-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে ধর্মীয় মূল্যবোধের বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। পাশাপাশি সাংবাদিকতার নামে চলছে অপতৎপরতা। এর ফলে প্রতিষ্ঠিত টিভি চ্যানেলগুলোকে অসুস্থ সংস্কৃতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বলতে কিছু আর থাকবে না। সামাজিক মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে যেতে হবে। এটা হতে পারে না। নিয়ম-কানুনের দরকার আছে। এই অসুস্থ সংস্কৃতির প্রতিযোগিতাকে রোধ করা এখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে। তিনি বলেন, কোন আইপি টিভিকেই সেবা পরিচালনার অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার নেই বিটিআরসির। কোথাও টিভি শব্দটি যুক্ত হলেই সেটির এখতিয়ার থাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের। আমার জানা মতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আইপি টিভির অনুমোদন দিয়ে থাকে। এ নিয়ে সম্ভবত দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়নি। যে কোন টিভির লাইসেন্স বা নিবন্ধন দেয়ার সুযোগ তথ্য মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কারো নেই। সেক্ষেত্রে বিটিআরসি কেবলমাত্র স্পেকট্রাম বরাদ্দ করতে পারে। এই বিবেচনায় আইপি টিভির প্রচারের বিষয়ে বিটিআরসির কোন সম্পর্ক নেই। তাই আইপি টিভির সম্প্রচারের বিষয়েও অনলাইন পোর্টালের মতো পৃথক নীতিমালা তৈরি করা উচিত। অনেক সময় এ ধরনের ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে অনেকে গুজব ও সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়ে যায়। এ কারণেই আইপি টিভির ক্ষেত্রে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রেও অনেক কিছু বিবেচনায় নিতে হবে। নইলে আইপি টিভিকে নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন হবে।

এ বিষয়ে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্রী বলেন, মূলত আইপিটিভির অনুমোদন দেয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। এটা তথ্য মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। তবে আমরা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডরদের শর্তসাপেক্ষে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন চ্যানেলের কনটেন্ট প্রচারের অনুমোদন দেই। কিন্তু সেটাকে টেলিভিশন হিসেবে চালানোর অধিকার তাদের নেই। আর এই আইপি টিভির কারণে কোন টিভি চ্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা মামলা করতে পারে। তখন আমরাও ওই আইপিটিভি নামে প্রচারিত ওই চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের ব্যবস্থা নেব। ৬১টি আইএসপি সম্প্রচারের অনুমোদন পেলেও আইপি টিভির নামে কেমন করে সহস্রাধিক চ্যানেল চলছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের আইপি টিভি সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, আইপি টিভির লাইসেন্স প্রদানের দায়িত্ব তথ্য মন্ত্রণালয়ের। আইপি টিভি নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিটিআরসির অবশ্যই সমন্বয় থাকতে হবে। সমন্বয়হীনতার কারণেই জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে বিটিআরসি যেসব আইপি টিভিকে সেবা পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে সেগুলোকে তারা টেলিভিশনের পরিবর্তে পণ্য হিসেবে বিবেচনা করছে। বিভিন্ন কোম্পানির নামে বিটিআরসি যে অনুমোদন দেয় সেটা কোন গণমাধ্যম হিসেবে বিবেচিত অনুমোদন নয়। অথচ সেসব আইপি টিভি কৌশলে বা সুযোগ নিয়ে নিজেদের গণমাধ্যম হিসেবে দাবি করছে। তাই গণমাধ্যম হিসেবে কোন আইপি টিভি পরিচালিত হলে সেটিকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। এই নিবন্ধন নেয়ার আগ পর্যন্ত প্রচলিত বিধিবিধান মেনে চলতে পারে আইপি টিভি। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা (২০১৭) ও সংশোধিত ২০২০-এ বলা আছে, আইপি/ অনলাইন টেলিভিশনগুলো অনুমতি ছাড়া সংবাদ প্রচার করতে পারবে না। তবে সুস্থ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচারে বাধা নেই। প্রচলিত আইন ভাঙলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে।

 

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রতারণার হাতিয়ার আইপি টিভি নিয়ে চলছে

আপডেট টাইম : ০৩:০৮:৫০ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট ২০২১
  • আইপি টিভি নিয়ে চলছে নৈরাজ্য
  • রাজধানীসহ সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে
  • সাংবাদিকতার নামে অনৈতিক কর্মকান্ড
  • তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব নেই
  • নিবন্ধনের জন্য ৬শ’ আবেদন

জসিম উদ্দিন ॥ প্রযুক্তির বিকাশে এখন হাতের মুঠোয় সারা পৃথিবী। আবার অনেকক্ষেত্রে প্রযুক্তির এই বিকাশ আশীর্বাদের পরিবর্তে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তেমনই এক উদাহরণ ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিভিশন বা আইপি টিভি। সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে এই আইপি টিভি। রাজধানীসহ প্রতিটি জেলা, উপজেলা এবং গ্রামগঞ্জে আইপি টিভির সংখ্যা সহএকধিক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলের নামের সঙ্গে মিল রেখে এসব আইপি টিভির

নামকরণ করা হচ্ছে। নিয়ম-কানুনের বালাইহীন সেসব টিভির মাধ্যমে সংবাদ কিংবা প্রতিবেদন প্রচারের নামে চলছে প্রতারণামূলক কর্মকান্ড। চলছে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাঁদাবাজি। সাংবাদিকতার নামে অনৈতিক কর্মকান্ডের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে তথাকথিত আইপি টিভি। সেই সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বিভিন্ন কনটেন্ট। অথচ তথ্য ও সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভির সংবাদ প্রচারের কোন বৈধতা নেই। এমনকি এখন পর্যন্ত কোন আইপি টিভির অনুমোদন দেয়নি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সেই সুবাদে প্রণীত হয়নি আইপি টিভি পরিচালনার কোন নীতিমালা। উল্টোদিকে পরিচালনার নীতিমালা না থাকলেও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ৬১টি প্রতিষ্ঠানকে আইপি টিভি সেবা দেয়ার অনুমতি দিয়েছে। এমন বাস্তবতায় বিটিআরসি ৬১টি আইপি টিভিকে সেবা প্রদানের অনুমতি দিলেও তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য ৬০০টি আইপি টিভির আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্য থেকে বেশ কিছু আইপি টিভিকে অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বেসরকারী টিভি চ্যানেলের মালিকদের সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)। অ্যাটকো বলছে, দেশে প্রতিষ্ঠিত টিভি চ্যানেল থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের টিভির অনুমোদন দেয়া হলে বাড়তে থাকবে নৈরাজ্য। বাড়তে থাকবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। এছাড়া আইপি টিভির লাগাম টেনে ধরতে তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির মধ্যে সমন্বয়ের তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টজনরা। সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান কঠিন হবে।

শুধু দর্শকদের বিনোদনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত ৬১টি আইপি টিভিকে সেবা প্রদানের অনুমতি দিয়েছে বিটিআরসি। নিয়মানুযায়ী এসব টিভি কোন গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ নিতে পারবে না। অথচ এই প্রাথমিক অনুমোদনের বাইরে অবৈধভাবে চলা আইপি টিভির সংখ্যা সহস্রাধিক। এ কারণেই বিটিআরসি থেকে ৬১টি আইপি টিভির অনুমোদন দেয়া হলেও তথ্য অধিদফতরের নিবন্ধনের জন্য জমা পড়েছে ৬০০ আবেদন।

বিটিআরসি সূত্র জানায়, কিছু শর্তসাপেক্ষে আইপি টিভি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে আইপি টিভি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের অনুমোদিত (অথবা বাংলাদেশে ডাউনলিঙ্কের অনুমতিপ্রাপ্ত) দেশী/বিদেশী টিভি চ্যানেলের কনটেন্ট প্রচার করতে পারবে। তবে প্রতিটি চ্যানেল বা প্রোগ্রাম বা কনটেন্ট প্রচারে প্রয়োজনীয় অনুমোদন/ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। অনুমোদিত চ্যানেল ছাড়া অন্য কোন চ্যানেল ডাউনলিঙ্ক, বিপণন বা সঞ্চালন বা নিজস্ব অনুষ্ঠান প্রদর্শন বা সম্প্রচার করতে পারবে না। যদিও এই নিয়ম-কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন আইপি টিভি দেশের সমাজ ও সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ, মূল্যবোধহীন নিজস্ব অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সংবাদ প্রচার করছে।

আইপি টিভি নিয়ে উদ্ভূত জটিল পরিস্থিতিতে সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কোন আইপি টিভিকেই এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। রেজিস্ট্রেশন দেয়ার জন্য আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৬শ’র কাছাকাছি আবেদন পড়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে এ মাসের মধ্যেই আমরা কিছু আইপি টিভিকে অনুমোদন দেব।

আইপি টিভিকে অনুমোদন দেয়া নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন বেসরকারী টিভি চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো। এ বিষয়ে একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাটকোর সিনিয়র সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু জনকণ্ঠকে বলেন, এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার। যেহেতু নানা নিয়ম-কানুন মেনে সরকার বিভিন্ন টিভি চ্যানেলকে অনুমোদন দিয়েছে সেখানে আইপি টিভি নামে কোন টিভি চ্যানেল থাকতে পারে না। শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্ত টিভি চ্যানেলগুলোরই সম্প্রচার হওয়া উচিত। লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিটি চ্যানেলই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কনটেন্ট প্রচার করছে। সেক্ষেত্রে আইপি টিভি নামের ইন্টারনেটনির্ভর চ্যানেল পরিচালনার কোন মানে হয় না। এ ধরনের টিভি চ্যানেলের প্রচারের ঘোর বিরোধিতা করছি আমরা। স্বল্প খরচে আইপি টিভি চালানো যায় বিধায় অনেকেই সেই সুযোগটি নিয়ে নানা অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। রিপোর্টারকে বেতন দেয়ার বদলে উল্টো তাদের কাছ থেকে পয়সা আদায় করেন এসব আইপি চ্যানেলের মালিক। তাহলে সেই রিপোর্টার তো স্বাভাবিকভাবেই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত হবেন। এমন বাস্তবতায় আইপি টিভির নামে যদি কোন টিভি চ্যানেলকে লাইসেন্স দেয়া হয় সেটা নৈরাজ্য ছাড়া আর কিছুই হবে না। এ ধরনের চ্যানেলের কোন সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই। এস্টাবলিশমেন্ট বলেও কিছু নেই। এ ধরনের টিভির মডেলটাই হচ্ছে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের একটি প্ল্যাটফর্ম। এর বড় উদাহরণ হেলেনা জাহাঙ্গীরের ‘জয়যাত্রা’ নামের আইপি টিভি। তার ওই চ্যানেলে কি এমন তথ্য দেয়া হতো যা আমরা লাইসেন্সপ্রাপ্ত টিভি চ্যানেলগুলো দিতে পারিনি? সব মিলিয়ে আইপি টিভি একটি বিপজ্জনক মডেল। তাই এ ধরনের লাইসেন্স প্রদানের ঘোরবিরোধী আমরা। আমাদের অধিকাংশ চ্যানেলের বিনিয়োগ ১০০ কোটি টাকা। মাসে বেতন দিতে হয় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা। তাই আইপি টিভির মাধ্যমে মূলত মূলধারার টিভি চ্যানেলগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ বিষয়ে চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, আইপি টিভির কারণে মূল ধারার টিভি চ্যানেলগুলোর বাজার সংকুচিত হচ্ছে। ভাগ বসাচ্ছে বিজ্ঞাপনের বাজারে। তাছাড়া এ ধরনের টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে যা খুশি তাই দেখানো হচ্ছে দর্শককে। সরকারীভাবে নিবন্ধিত একটি টিভি চ্যানেলকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে লাইসেন্স নিতে হচ্ছে। সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের নীতি- নৈতিকতার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। অথচ এসব আইপি টিভির ক্ষেত্রে নিয়মের কোন বালাই নেই। ফলে এসব আইপি টিভি পরিচালনাকারীরা যেমন খুশি তেমন কনটেন্ট তৈরি করে ছেড়ে দিচ্ছেন। যেখানে সমাজ-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে ধর্মীয় মূল্যবোধের বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। পাশাপাশি সাংবাদিকতার নামে চলছে অপতৎপরতা। এর ফলে প্রতিষ্ঠিত টিভি চ্যানেলগুলোকে অসুস্থ সংস্কৃতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বলতে কিছু আর থাকবে না। সামাজিক মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে যেতে হবে। এটা হতে পারে না। নিয়ম-কানুনের দরকার আছে। এই অসুস্থ সংস্কৃতির প্রতিযোগিতাকে রোধ করা এখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে। তিনি বলেন, কোন আইপি টিভিকেই সেবা পরিচালনার অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার নেই বিটিআরসির। কোথাও টিভি শব্দটি যুক্ত হলেই সেটির এখতিয়ার থাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের। আমার জানা মতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আইপি টিভির অনুমোদন দিয়ে থাকে। এ নিয়ে সম্ভবত দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়নি। যে কোন টিভির লাইসেন্স বা নিবন্ধন দেয়ার সুযোগ তথ্য মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কারো নেই। সেক্ষেত্রে বিটিআরসি কেবলমাত্র স্পেকট্রাম বরাদ্দ করতে পারে। এই বিবেচনায় আইপি টিভির প্রচারের বিষয়ে বিটিআরসির কোন সম্পর্ক নেই। তাই আইপি টিভির সম্প্রচারের বিষয়েও অনলাইন পোর্টালের মতো পৃথক নীতিমালা তৈরি করা উচিত। অনেক সময় এ ধরনের ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে অনেকে গুজব ও সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়ে যায়। এ কারণেই আইপি টিভির ক্ষেত্রে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রেও অনেক কিছু বিবেচনায় নিতে হবে। নইলে আইপি টিভিকে নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন হবে।

এ বিষয়ে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্রী বলেন, মূলত আইপিটিভির অনুমোদন দেয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। এটা তথ্য মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। তবে আমরা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডরদের শর্তসাপেক্ষে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন চ্যানেলের কনটেন্ট প্রচারের অনুমোদন দেই। কিন্তু সেটাকে টেলিভিশন হিসেবে চালানোর অধিকার তাদের নেই। আর এই আইপি টিভির কারণে কোন টিভি চ্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা মামলা করতে পারে। তখন আমরাও ওই আইপিটিভি নামে প্রচারিত ওই চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের ব্যবস্থা নেব। ৬১টি আইএসপি সম্প্রচারের অনুমোদন পেলেও আইপি টিভির নামে কেমন করে সহস্রাধিক চ্যানেল চলছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের আইপি টিভি সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, আইপি টিভির লাইসেন্স প্রদানের দায়িত্ব তথ্য মন্ত্রণালয়ের। আইপি টিভি নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিটিআরসির অবশ্যই সমন্বয় থাকতে হবে। সমন্বয়হীনতার কারণেই জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে বিটিআরসি যেসব আইপি টিভিকে সেবা পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে সেগুলোকে তারা টেলিভিশনের পরিবর্তে পণ্য হিসেবে বিবেচনা করছে। বিভিন্ন কোম্পানির নামে বিটিআরসি যে অনুমোদন দেয় সেটা কোন গণমাধ্যম হিসেবে বিবেচিত অনুমোদন নয়। অথচ সেসব আইপি টিভি কৌশলে বা সুযোগ নিয়ে নিজেদের গণমাধ্যম হিসেবে দাবি করছে। তাই গণমাধ্যম হিসেবে কোন আইপি টিভি পরিচালিত হলে সেটিকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। এই নিবন্ধন নেয়ার আগ পর্যন্ত প্রচলিত বিধিবিধান মেনে চলতে পারে আইপি টিভি। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা (২০১৭) ও সংশোধিত ২০২০-এ বলা আছে, আইপি/ অনলাইন টেলিভিশনগুলো অনুমতি ছাড়া সংবাদ প্রচার করতে পারবে না। তবে সুস্থ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচারে বাধা নেই। প্রচলিত আইন ভাঙলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে।