ঢাকা ১০:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
অধ্যাদেশ বাতিল চায় এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, ৩ দিনের কলম বিরতি লক্ষ্মীপুর আল মুঈন মাদ্রসা থেকে ছাত্রের মরাদেহ উদ্ধার মরহুম সিদ্দিকুর রহমান সাহেবের ২৫তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত রছুল্লাবাদ শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ এর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত পুশ ইন করা ৭৫ জন বাংলাদেশি মুসলিম এবং ৩ জন ভারতীয় মুসলিমকে উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড ঢাকার মূল সড়কে কোনো রিকশা চলতে পারবে না: ডিএনসিসি প্রশাসক টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের দোসরদের দিয়ে বিএনপির কমিটি গঠনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ, কুশপুত্তলিকা দাহ নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি বুধবার পর্যন্ত মূলতবি মেক্সিকোতে নির্বাচনি প্রচারণার সময় মেয়র প্রার্থীকে গুলি করে হত্যা আন্দালিব রহমান পার্থের স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

আফগানিস্তানফেরতরা দেশে ঢুকলেই গ্রেফতার : ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০২:২০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অগাস্ট ২০২১
  • / ৩০৯ ১৫০০০.০ বার পাঠক
অনলাইন রিপোর্টার ॥

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সম্প্রতি ক্ষমতা দখল করা আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের আহ্বানে যারা হিজরত করতে দেশ ছেড়েছেন তাদের বিষয়ে সতর্ক রয়েছে গোয়েন্দারা।

বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলেই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায় তাহলে তার বিষয়ে দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।

সোমবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ থেকে কতজন আফগানিস্তানে গেছে কিংবা সেখানে কতজন অবস্থান করছে এসব তথ্য আমাদের দেশের গোয়েন্দাদের থেকেই পাওয়া যায়। রাষ্ট্রীয়ভাবে আফগানিস্তান থেকে আমাদের বলা হয়নি এতজন বাংলাদেশি তাদের দেশ থেকে পালিয়ে গেছে কিংবা আটক হয়ে কারাগারে।

এসব নিয়ে দেশে যারা কাজ করে তারা সতর্ক রয়েছে। আফগানিস্তানফেরতরা যদি বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কোনো কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়, তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই; এসব তথ্য দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।

আশঙ্কার কথা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তালেবানরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেয়ার পরেই ঘোষণা করবে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র। তালেবানরা আরও বলবে, আমেরিকাকে যুদ্ধে পরাজিত করে আফগানিস্তানকে স্বাধীন করেছি। এর প্রেক্ষাপটে যুবকদের ভেতর (যারা জিহাদ করতে চায়) উৎসাহ তৈরি হবে। এই ঢেউ আমাদের উপমহাদেশসহ সব দেশেই লাগবে।

যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা দেশের সব লেভেলেই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করা উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, সেই অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি রাখা দরকার। আমাদের প্রস্তুতি আছে তবে যে ঢেউটা শুরু হবে তা মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু পুলিশের একার পক্ষে নয়, প্রত্যেক অভিভাবক ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রত্যেকের সহযোগিতা করা উচিত।

ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের যে বিষয়টি সেটি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যখন আফগানিস্তানে রাশিয়ান হস্তক্ষেপ হলো ঠিক সেই সময় বিধর্মীদের পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়িত করার জন্য জিহাদের ডাক দেয়া হলো।

আশির দশকে বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান এটাকে ইমানি দায়িত্ব মনে করে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে যায়। সেই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে এসে অনেকেই প্রকাশ্যে মিছিল করার সাহসও দেখিয়েছে।

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি আফগানিস্তানকেন্দ্রিক জানিয়ে তিনি বলেন, আফগানিস্তানফেরত বাংলাদেশিরাই পরবর্তীতে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) ও জেএমবিসহ একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করেছিল। এসব জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরির প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করবে।

তারা আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে জয় লাভ করেছে তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করেও জয়লাভ করবে বলে এমন ধারণা ছিল। এরপর নানাবিধ কারণে তারা কাশ্মীরে সফল হতে পারেনি।

পরবর্তীতে বাংলাদেশেই তারা খিলাফত কায়েমের জন্য আন্দোলন শুরু করে। ২০০৫ সালে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার পরে জঙ্গি সংগঠনগুলোকে মোটামুটি প্রায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে পুলিশ। হঠাৎ করে ইরাকে মার্কিন হস্তক্ষেপ হলো এবং আন্তর্জাতিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে আইএসের উদ্ভব হয়।

তিনি বলেন, আইএসের উদ্ভব হওয়ার পর বাংলাদেশে দ্বিতীয় দফা জঙ্গি সংগঠন তৈরি হয়। আইএস ভাবাদর্শের নব্য জেএমবি। বাংলাদেশে জঙ্গিদের যে উত্থান হচ্ছে তা সবসময়ই আন্তর্জাতিক কোনো ঘটনার প্রেক্ষাপটের পরে উৎসাহ পাচ্ছে, সেই অনুযায়ী সংগঠনগুলো সেভাবে তৈরি করছে ও মানুষকে সেভাবে আহ্বান করছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আফগানিস্তানফেরতরা দেশে ঢুকলেই গ্রেফতার : ডিএমপি কমিশনার

আপডেট টাইম : ০২:২০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অগাস্ট ২০২১
অনলাইন রিপোর্টার ॥

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সম্প্রতি ক্ষমতা দখল করা আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের আহ্বানে যারা হিজরত করতে দেশ ছেড়েছেন তাদের বিষয়ে সতর্ক রয়েছে গোয়েন্দারা।

বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলেই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায় তাহলে তার বিষয়ে দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।

সোমবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ থেকে কতজন আফগানিস্তানে গেছে কিংবা সেখানে কতজন অবস্থান করছে এসব তথ্য আমাদের দেশের গোয়েন্দাদের থেকেই পাওয়া যায়। রাষ্ট্রীয়ভাবে আফগানিস্তান থেকে আমাদের বলা হয়নি এতজন বাংলাদেশি তাদের দেশ থেকে পালিয়ে গেছে কিংবা আটক হয়ে কারাগারে।

এসব নিয়ে দেশে যারা কাজ করে তারা সতর্ক রয়েছে। আফগানিস্তানফেরতরা যদি বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কোনো কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়, তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই; এসব তথ্য দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।

আশঙ্কার কথা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তালেবানরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেয়ার পরেই ঘোষণা করবে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র। তালেবানরা আরও বলবে, আমেরিকাকে যুদ্ধে পরাজিত করে আফগানিস্তানকে স্বাধীন করেছি। এর প্রেক্ষাপটে যুবকদের ভেতর (যারা জিহাদ করতে চায়) উৎসাহ তৈরি হবে। এই ঢেউ আমাদের উপমহাদেশসহ সব দেশেই লাগবে।

যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা দেশের সব লেভেলেই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করা উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, সেই অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি রাখা দরকার। আমাদের প্রস্তুতি আছে তবে যে ঢেউটা শুরু হবে তা মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু পুলিশের একার পক্ষে নয়, প্রত্যেক অভিভাবক ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রত্যেকের সহযোগিতা করা উচিত।

ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের যে বিষয়টি সেটি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যখন আফগানিস্তানে রাশিয়ান হস্তক্ষেপ হলো ঠিক সেই সময় বিধর্মীদের পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়িত করার জন্য জিহাদের ডাক দেয়া হলো।

আশির দশকে বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান এটাকে ইমানি দায়িত্ব মনে করে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে যায়। সেই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে এসে অনেকেই প্রকাশ্যে মিছিল করার সাহসও দেখিয়েছে।

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি আফগানিস্তানকেন্দ্রিক জানিয়ে তিনি বলেন, আফগানিস্তানফেরত বাংলাদেশিরাই পরবর্তীতে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) ও জেএমবিসহ একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করেছিল। এসব জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরির প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করবে।

তারা আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে জয় লাভ করেছে তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করেও জয়লাভ করবে বলে এমন ধারণা ছিল। এরপর নানাবিধ কারণে তারা কাশ্মীরে সফল হতে পারেনি।

পরবর্তীতে বাংলাদেশেই তারা খিলাফত কায়েমের জন্য আন্দোলন শুরু করে। ২০০৫ সালে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার পরে জঙ্গি সংগঠনগুলোকে মোটামুটি প্রায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে পুলিশ। হঠাৎ করে ইরাকে মার্কিন হস্তক্ষেপ হলো এবং আন্তর্জাতিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে আইএসের উদ্ভব হয়।

তিনি বলেন, আইএসের উদ্ভব হওয়ার পর বাংলাদেশে দ্বিতীয় দফা জঙ্গি সংগঠন তৈরি হয়। আইএস ভাবাদর্শের নব্য জেএমবি। বাংলাদেশে জঙ্গিদের যে উত্থান হচ্ছে তা সবসময়ই আন্তর্জাতিক কোনো ঘটনার প্রেক্ষাপটের পরে উৎসাহ পাচ্ছে, সেই অনুযায়ী সংগঠনগুলো সেভাবে তৈরি করছে ও মানুষকে সেভাবে আহ্বান করছে।