ঢাকা ০২:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
মুসলিম ‘গণহত্যা’র জন্য ক্ষমা চাইলেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী সাবেক আইজিপিসহ ১০৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিপিএম-পিপিএম পদক প্রত্যাহার এবার বিপ্লব কুমার সরকার ও মেহেদি হাসান বরখাস্ত ছাত্রীনিবাস থেকে ঢাবি ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার আজমিরীগঞ্জে সিএনজি স্ট্যান্ড দখল নিয় সংঘর্ষ। আহত অর্ধ শতাধিক টঙ্গীতে ডেভিল হান্ট এর অভিযানে আ.লীগের নেত্রী ও তার পাঁচ সহযোগীকে ১৭৫১ পিস ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌর শহরের উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মদিনা প্যালেস নামের একটি ভবনের ৫ টি ফ্লাটে দুর্ধর্ষ চুরি সংগঠিত হয়েছে নান্দাইল প্রেসক্লাবের ১৭তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সমাপ্ত সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু দুপুরে ক্রিকেটের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মহারণ, পাকিস্তানের বাঁচা–মরার ম্যাচ পাকিস্তান-বাংলাদেশ সরাসরি বাণিজ্য পুনরায় শুরু, ১৯৭১ সালের পর প্রথম

আফগানিস্তানফেরতরা দেশে ঢুকলেই গ্রেফতার : ডিএমপি কমিশনার

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০২:২০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অগাস্ট ২০২১
  • / ২৭৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
অনলাইন রিপোর্টার ॥

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সম্প্রতি ক্ষমতা দখল করা আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের আহ্বানে যারা হিজরত করতে দেশ ছেড়েছেন তাদের বিষয়ে সতর্ক রয়েছে গোয়েন্দারা।

বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলেই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায় তাহলে তার বিষয়ে দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।

সোমবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ থেকে কতজন আফগানিস্তানে গেছে কিংবা সেখানে কতজন অবস্থান করছে এসব তথ্য আমাদের দেশের গোয়েন্দাদের থেকেই পাওয়া যায়। রাষ্ট্রীয়ভাবে আফগানিস্তান থেকে আমাদের বলা হয়নি এতজন বাংলাদেশি তাদের দেশ থেকে পালিয়ে গেছে কিংবা আটক হয়ে কারাগারে।

এসব নিয়ে দেশে যারা কাজ করে তারা সতর্ক রয়েছে। আফগানিস্তানফেরতরা যদি বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কোনো কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়, তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই; এসব তথ্য দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।

আশঙ্কার কথা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তালেবানরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেয়ার পরেই ঘোষণা করবে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র। তালেবানরা আরও বলবে, আমেরিকাকে যুদ্ধে পরাজিত করে আফগানিস্তানকে স্বাধীন করেছি। এর প্রেক্ষাপটে যুবকদের ভেতর (যারা জিহাদ করতে চায়) উৎসাহ তৈরি হবে। এই ঢেউ আমাদের উপমহাদেশসহ সব দেশেই লাগবে।

যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা দেশের সব লেভেলেই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করা উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, সেই অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি রাখা দরকার। আমাদের প্রস্তুতি আছে তবে যে ঢেউটা শুরু হবে তা মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু পুলিশের একার পক্ষে নয়, প্রত্যেক অভিভাবক ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রত্যেকের সহযোগিতা করা উচিত।

ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের যে বিষয়টি সেটি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যখন আফগানিস্তানে রাশিয়ান হস্তক্ষেপ হলো ঠিক সেই সময় বিধর্মীদের পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়িত করার জন্য জিহাদের ডাক দেয়া হলো।

আশির দশকে বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান এটাকে ইমানি দায়িত্ব মনে করে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে যায়। সেই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে এসে অনেকেই প্রকাশ্যে মিছিল করার সাহসও দেখিয়েছে।

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি আফগানিস্তানকেন্দ্রিক জানিয়ে তিনি বলেন, আফগানিস্তানফেরত বাংলাদেশিরাই পরবর্তীতে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) ও জেএমবিসহ একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করেছিল। এসব জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরির প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করবে।

তারা আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে জয় লাভ করেছে তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করেও জয়লাভ করবে বলে এমন ধারণা ছিল। এরপর নানাবিধ কারণে তারা কাশ্মীরে সফল হতে পারেনি।

পরবর্তীতে বাংলাদেশেই তারা খিলাফত কায়েমের জন্য আন্দোলন শুরু করে। ২০০৫ সালে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার পরে জঙ্গি সংগঠনগুলোকে মোটামুটি প্রায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে পুলিশ। হঠাৎ করে ইরাকে মার্কিন হস্তক্ষেপ হলো এবং আন্তর্জাতিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে আইএসের উদ্ভব হয়।

তিনি বলেন, আইএসের উদ্ভব হওয়ার পর বাংলাদেশে দ্বিতীয় দফা জঙ্গি সংগঠন তৈরি হয়। আইএস ভাবাদর্শের নব্য জেএমবি। বাংলাদেশে জঙ্গিদের যে উত্থান হচ্ছে তা সবসময়ই আন্তর্জাতিক কোনো ঘটনার প্রেক্ষাপটের পরে উৎসাহ পাচ্ছে, সেই অনুযায়ী সংগঠনগুলো সেভাবে তৈরি করছে ও মানুষকে সেভাবে আহ্বান করছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আফগানিস্তানফেরতরা দেশে ঢুকলেই গ্রেফতার : ডিএমপি কমিশনার

আপডেট টাইম : ০২:২০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অগাস্ট ২০২১
অনলাইন রিপোর্টার ॥

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সম্প্রতি ক্ষমতা দখল করা আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের আহ্বানে যারা হিজরত করতে দেশ ছেড়েছেন তাদের বিষয়ে সতর্ক রয়েছে গোয়েন্দারা।

বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলেই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায় তাহলে তার বিষয়ে দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।

সোমবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ থেকে কতজন আফগানিস্তানে গেছে কিংবা সেখানে কতজন অবস্থান করছে এসব তথ্য আমাদের দেশের গোয়েন্দাদের থেকেই পাওয়া যায়। রাষ্ট্রীয়ভাবে আফগানিস্তান থেকে আমাদের বলা হয়নি এতজন বাংলাদেশি তাদের দেশ থেকে পালিয়ে গেছে কিংবা আটক হয়ে কারাগারে।

এসব নিয়ে দেশে যারা কাজ করে তারা সতর্ক রয়েছে। আফগানিস্তানফেরতরা যদি বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, যদি কারও সন্তান কিংবা ছাত্র হঠাৎ করে কাউকে কোনো কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়, তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই; এসব তথ্য দ্রুত পুলিশকে জানানো উচিত।

আশঙ্কার কথা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তালেবানরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নেয়ার পরেই ঘোষণা করবে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র। তালেবানরা আরও বলবে, আমেরিকাকে যুদ্ধে পরাজিত করে আফগানিস্তানকে স্বাধীন করেছি। এর প্রেক্ষাপটে যুবকদের ভেতর (যারা জিহাদ করতে চায়) উৎসাহ তৈরি হবে। এই ঢেউ আমাদের উপমহাদেশসহ সব দেশেই লাগবে।

যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা দেশের সব লেভেলেই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করা উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, সেই অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি রাখা দরকার। আমাদের প্রস্তুতি আছে তবে যে ঢেউটা শুরু হবে তা মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু পুলিশের একার পক্ষে নয়, প্রত্যেক অভিভাবক ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রত্যেকের সহযোগিতা করা উচিত।

ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের যে বিষয়টি সেটি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যখন আফগানিস্তানে রাশিয়ান হস্তক্ষেপ হলো ঠিক সেই সময় বিধর্মীদের পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়িত করার জন্য জিহাদের ডাক দেয়া হলো।

আশির দশকে বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান এটাকে ইমানি দায়িত্ব মনে করে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে যায়। সেই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে এসে অনেকেই প্রকাশ্যে মিছিল করার সাহসও দেখিয়েছে।

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি আফগানিস্তানকেন্দ্রিক জানিয়ে তিনি বলেন, আফগানিস্তানফেরত বাংলাদেশিরাই পরবর্তীতে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) ও জেএমবিসহ একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করেছিল। এসব জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরির প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করবে।

তারা আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে জয় লাভ করেছে তারা কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধ করেও জয়লাভ করবে বলে এমন ধারণা ছিল। এরপর নানাবিধ কারণে তারা কাশ্মীরে সফল হতে পারেনি।

পরবর্তীতে বাংলাদেশেই তারা খিলাফত কায়েমের জন্য আন্দোলন শুরু করে। ২০০৫ সালে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার পরে জঙ্গি সংগঠনগুলোকে মোটামুটি প্রায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে পুলিশ। হঠাৎ করে ইরাকে মার্কিন হস্তক্ষেপ হলো এবং আন্তর্জাতিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে আইএসের উদ্ভব হয়।

তিনি বলেন, আইএসের উদ্ভব হওয়ার পর বাংলাদেশে দ্বিতীয় দফা জঙ্গি সংগঠন তৈরি হয়। আইএস ভাবাদর্শের নব্য জেএমবি। বাংলাদেশে জঙ্গিদের যে উত্থান হচ্ছে তা সবসময়ই আন্তর্জাতিক কোনো ঘটনার প্রেক্ষাপটের পরে উৎসাহ পাচ্ছে, সেই অনুযায়ী সংগঠনগুলো সেভাবে তৈরি করছে ও মানুষকে সেভাবে আহ্বান করছে।