ঢাকা ০৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
পুরোনো চেহারায় ফিরবে আওয়ামী লীগ, তৈরি হচ্ছে মাস্টারপ্ল্যান বিএনপি সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে: সালাহউদ্দিন খিলগাঁওয়ে গৃহবধূ ও তার পরিবারের উপর বর্বর হামলা: প্রাণনাশের হুমকি, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেছেন। বাড়িয়ালা ময়না বেগম নেতৃত্বে  পাসপোর্টে ফিরল ‘এক্সসেপ্ট ইসরাইল’, যা বললেন সাবেক রাষ্ট্রদূত রোববার সারা দেশে মহাসমাবেশের ডাক কারিগরি শিক্ষার্থীদের আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবে একমত এনসিপি, আমূল পরিবর্তনের আহ্বান কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের  সাবেক চেয়ারম্যান জামাল নাসের সচিবের বিরুদ্ধে অনিয়মে জনবল নিয়োগ,জ্ঞাত আয় বহিভূত সম্পদ অর্জন,, বোর্ডে অনিয়ম নিয়ম বহিরভূত  অবৈধ উপায়ে ১২ জন ঠিকা ভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগে বয়স জালিয়াতির অভিযোগ ট্রাম্প-মোদি-শি এসে কিছু করে দিয়ে যাবে না: মির্জা ফখরুল কোস্ট গার্ডের অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ করিম শরীফ বাহিনীর দুই সহযোগী আটক

২৭ আইপি টিভির বিরুদ্ধে অভিযান শিগগিরই

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৮:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২১
  • / ৩৫৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
  • নিজস্ব প্রতিবেদক।।
  • বোরহান হাওলাদার (জসিম)
ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অনুমোদনহীন আইপি (ইন্টারনেট প্রটোকল) টেলিভিশনের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে নামছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। আইপি টেলিভিশন খুলে কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির পদ হারানো হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধেও একটি আইপি টিভি খুলে নানা অপকর্ম চালানোর অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিক নিয়োগ দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ভুঁইফোড় আইপি টিভিগুলোর অপকর্ম রুখতে এবার উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে ২৭টি আইপি টিভির তালিকা করে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
২৭টি আইপি টিভি ও তার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সংক্রান্ত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওই তালিকার অনুলিপি দেশ রূপান্তরের হাতে রয়েছে। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে তালিকাটি পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। যে আইপি টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে ৭১ বাংলা টিভি (মালিক মো. তারেক), কিউ টিভি বাংলা (মালিক মো. ফারুক), আলিফ টিভি (মালিক মো. জামাল হোসেন), গ্লোবাল বাংলা টিভি (মালিক মো. ইহান), নিউজ ১০ (মালিক মো. আলমগীর হোসেন), স্বপ্ন টিভি (মালিক তারেক তাবিদ), চ্যানেল এস (মালিক সুজিত চক্রবর্তী), রূপসী বাংলা টিভি (মালিক আনোয়ার হোসেন), টাইমস ২৪ টিভি (মালিক ফারুক), ফূর্তি টিভি (মালিক হাসান আরিফ), নতুন সময় (মালিক মিন্টু), স্টার বাংলা টিভি (মালিক শিমুল হোসেন), ঢাকা টিভি (মালিক জুয়ের আনন্দ), বঙ্গ টিভি (মালিক রাসেল মিয়া হৃদয়), বিবিসি বাংলা টিভি (মালিক হাবিবুর রহমান), সি প্লাস টিভি (মালিক আলমগীর অপু), জাগো টিভি (মালিক সুমন), ম্যাজিক বাংলা টিভি (মালিক সফিউল্লাহ সিকদার), রয়েল বাংলা টিভি (মালিক সাজ্জাদ নুর), মুভি বাংলা টিভি (মালিক আলবি), আরএন টিভি (মালিক চাঁন মিয়া), মাতৃজগত টিভি (মালিক সেলিম চৌধুরী), ফ্যামিলি টিভি (মালিক শেখ মো. দিপু), দাওয়া টিভি (মালিক নাজিমুদ্দিন), চ্যানেল ৬ টিভি (মালিক সাইফুল ইসলাম), বিবিসি বাংলা টিভি (মালিক রিয়াজউদ্দিন রানা) এবং বাংলা ২১ টিভি (মালিক হোসাইন আরিফুর রহমান)।এ প্রসঙ্গে র‌্যাব ও পুলিশের দুই কর্মকর্তা গতকাল রবিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, শিগগির ওইসব অবৈধ আইপি টেলিভিশনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের বেশকিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালাচ্ছে। বিশেষ করে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে ভূরি ভূরি।

ওই কর্মকর্তারা আরও বলেন, সারা দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো ছড়িয়ে আছে কয়েক হাজার আইপি টেলিভিশন। ওইসব টিভির মালিকরা নিয়োগবাণিজ্য করছেন। তাদের পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কথিত সাংবাদিকরা দেদার অপকর্ম করছেন। রাজধানী ছাড়াও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য আইপি টিভি। প্রথম পর্যায়ে ২৭টি আইপি টিভি ও তার মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।

গত ২৯ জুলাই রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পর অবৈধ আইপি টিভির বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে ‘জয়যাত্রা’ নামে আইপি টিভির নামে দেশ-বিদেশ থেকে তার কাছে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকার মতো চাঁদা আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভুঁইফোড় সংগঠনের মতোই আইপি টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত কথিত ওইসব টিভির দৌরাত্ম্য। এর মাধ্যমে কয়েক হাজার নামধারী সাংবাদিক চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। প্রেস ক্লাব, বিভিন্ন ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে তাদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। এতে বিপাকে পড়ছেন মূলধারার সাংবাদিকরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, আইপি টিভি মূলত ঘরোয়াভাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। কম্পিউটার থেকে সম্প্রচারের জন্য ভিডিও চিত্র ফ্রি স্যাটেলাইট স্টেশনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে স্যাটেলাইটে পাঠানো হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ে যেকোনো অনুষ্ঠানেই সাংবাদিক দেখা যায়। তাদের চাপে আসল টেলিভিশনগুলোকে বিপাকে পড়তে হয়। হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পর ওইসব অবৈধ আইপি টিভির বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় একটি তালিকা পাঠিয়েছে। অভিযান শুরু হওয়ার আগে বিটিআরসির সহায়তা চাওয়া হবে। ওইসব টিভির সাংবাদিকরা সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইলও করছেন। কোথাও কোনো অপরাধ ঘটলে, অপরাধী ও ভিকটিমকে নানারকম হয়রানির ফাঁদে ফেলেন তারা। আইপি টিভির অন্যতম বাণিজ্য-পরিচয়পত্র কেনাবেচা। জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রামপর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগের নামে তারা পরিচয়পত্র বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমনকি দেশের বাইরেও তারা চাঁদাবাজি করছে।

‘জয়যাত্রা’ আইপি টিভির কার্যালয়ে অভিযানের পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (টিভি-২) রুজিনা সুলতানা দেশ রূপান্তরকে বলেছিলেন, ২০২০ সালে অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য যে নীতিমালা করা হয়েছিল, তার মধ্যেই আইপি টিভির বিষয় রয়েছে। এ নীতিমালার আলোকেই আইপি টিভি নিবন্ধনের কাজ করা হবে। নতুন করে আইপি টিভির জন্য কোনো নীতিমালা করা হয়নি। নিবন্ধনের জন্য অনেকে আবেদন করেছেন। প্রথম পর্যায়ে অনলাইন ও ম্যানুয়ালি পাঁচ শতাধিক আবেদন জমা পড়ে। সেগুলো নিবন্ধনের জন্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। নতুন কিছু আবেদনও এসেছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

২৭ আইপি টিভির বিরুদ্ধে অভিযান শিগগিরই

আপডেট টাইম : ০৬:৫৮:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২১
  • নিজস্ব প্রতিবেদক।।
  • বোরহান হাওলাদার (জসিম)
ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অনুমোদনহীন আইপি (ইন্টারনেট প্রটোকল) টেলিভিশনের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে নামছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। আইপি টেলিভিশন খুলে কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির পদ হারানো হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধেও একটি আইপি টিভি খুলে নানা অপকর্ম চালানোর অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিক নিয়োগ দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ভুঁইফোড় আইপি টিভিগুলোর অপকর্ম রুখতে এবার উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে ২৭টি আইপি টিভির তালিকা করে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
২৭টি আইপি টিভি ও তার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সংক্রান্ত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওই তালিকার অনুলিপি দেশ রূপান্তরের হাতে রয়েছে। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে তালিকাটি পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। যে আইপি টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে ৭১ বাংলা টিভি (মালিক মো. তারেক), কিউ টিভি বাংলা (মালিক মো. ফারুক), আলিফ টিভি (মালিক মো. জামাল হোসেন), গ্লোবাল বাংলা টিভি (মালিক মো. ইহান), নিউজ ১০ (মালিক মো. আলমগীর হোসেন), স্বপ্ন টিভি (মালিক তারেক তাবিদ), চ্যানেল এস (মালিক সুজিত চক্রবর্তী), রূপসী বাংলা টিভি (মালিক আনোয়ার হোসেন), টাইমস ২৪ টিভি (মালিক ফারুক), ফূর্তি টিভি (মালিক হাসান আরিফ), নতুন সময় (মালিক মিন্টু), স্টার বাংলা টিভি (মালিক শিমুল হোসেন), ঢাকা টিভি (মালিক জুয়ের আনন্দ), বঙ্গ টিভি (মালিক রাসেল মিয়া হৃদয়), বিবিসি বাংলা টিভি (মালিক হাবিবুর রহমান), সি প্লাস টিভি (মালিক আলমগীর অপু), জাগো টিভি (মালিক সুমন), ম্যাজিক বাংলা টিভি (মালিক সফিউল্লাহ সিকদার), রয়েল বাংলা টিভি (মালিক সাজ্জাদ নুর), মুভি বাংলা টিভি (মালিক আলবি), আরএন টিভি (মালিক চাঁন মিয়া), মাতৃজগত টিভি (মালিক সেলিম চৌধুরী), ফ্যামিলি টিভি (মালিক শেখ মো. দিপু), দাওয়া টিভি (মালিক নাজিমুদ্দিন), চ্যানেল ৬ টিভি (মালিক সাইফুল ইসলাম), বিবিসি বাংলা টিভি (মালিক রিয়াজউদ্দিন রানা) এবং বাংলা ২১ টিভি (মালিক হোসাইন আরিফুর রহমান)।এ প্রসঙ্গে র‌্যাব ও পুলিশের দুই কর্মকর্তা গতকাল রবিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, শিগগির ওইসব অবৈধ আইপি টেলিভিশনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের বেশকিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালাচ্ছে। বিশেষ করে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে ভূরি ভূরি।

ওই কর্মকর্তারা আরও বলেন, সারা দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো ছড়িয়ে আছে কয়েক হাজার আইপি টেলিভিশন। ওইসব টিভির মালিকরা নিয়োগবাণিজ্য করছেন। তাদের পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কথিত সাংবাদিকরা দেদার অপকর্ম করছেন। রাজধানী ছাড়াও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য আইপি টিভি। প্রথম পর্যায়ে ২৭টি আইপি টিভি ও তার মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।

গত ২৯ জুলাই রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পর অবৈধ আইপি টিভির বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে ‘জয়যাত্রা’ নামে আইপি টিভির নামে দেশ-বিদেশ থেকে তার কাছে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকার মতো চাঁদা আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভুঁইফোড় সংগঠনের মতোই আইপি টিভির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত কথিত ওইসব টিভির দৌরাত্ম্য। এর মাধ্যমে কয়েক হাজার নামধারী সাংবাদিক চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। প্রেস ক্লাব, বিভিন্ন ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে তাদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। এতে বিপাকে পড়ছেন মূলধারার সাংবাদিকরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, আইপি টিভি মূলত ঘরোয়াভাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। কম্পিউটার থেকে সম্প্রচারের জন্য ভিডিও চিত্র ফ্রি স্যাটেলাইট স্টেশনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে স্যাটেলাইটে পাঠানো হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ে যেকোনো অনুষ্ঠানেই সাংবাদিক দেখা যায়। তাদের চাপে আসল টেলিভিশনগুলোকে বিপাকে পড়তে হয়। হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পর ওইসব অবৈধ আইপি টিভির বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় একটি তালিকা পাঠিয়েছে। অভিযান শুরু হওয়ার আগে বিটিআরসির সহায়তা চাওয়া হবে। ওইসব টিভির সাংবাদিকরা সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইলও করছেন। কোথাও কোনো অপরাধ ঘটলে, অপরাধী ও ভিকটিমকে নানারকম হয়রানির ফাঁদে ফেলেন তারা। আইপি টিভির অন্যতম বাণিজ্য-পরিচয়পত্র কেনাবেচা। জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রামপর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগের নামে তারা পরিচয়পত্র বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমনকি দেশের বাইরেও তারা চাঁদাবাজি করছে।

‘জয়যাত্রা’ আইপি টিভির কার্যালয়ে অভিযানের পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (টিভি-২) রুজিনা সুলতানা দেশ রূপান্তরকে বলেছিলেন, ২০২০ সালে অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য যে নীতিমালা করা হয়েছিল, তার মধ্যেই আইপি টিভির বিষয় রয়েছে। এ নীতিমালার আলোকেই আইপি টিভি নিবন্ধনের কাজ করা হবে। নতুন করে আইপি টিভির জন্য কোনো নীতিমালা করা হয়নি। নিবন্ধনের জন্য অনেকে আবেদন করেছেন। প্রথম পর্যায়ে অনলাইন ও ম্যানুয়ালি পাঁচ শতাধিক আবেদন জমা পড়ে। সেগুলো নিবন্ধনের জন্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। নতুন কিছু আবেদনও এসেছে।