ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮ -এর প্রতিবেদন প্রকাশ
- আপডেট টাইম : ১০:৩০:১৩ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০
- / ৩৫৬ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আজ ‘ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮’ -এর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিবিএস,
ইউনিসেফ বাংলাদেশ এবং ওয়াটারএইডের যৌথ উদ্যোগে এ জরিপটি পরিচালিত হয়েছিল। আজ রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ
জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর প্রতিবেদনে পাঁচটি পৃথক ক্ষেত্র থেকে সংগৃহীত তথ্য হতে প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপিত হয়েছে। এই
ক্ষেত্রগুলো হলো- গৃহস্থালি, বিদ্যালয়, স্বাস্থ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, রেস্তোরাঁ এবং ফুটপাতের খাদ্য বিক্রেতা। উক্ত ক্ষেত্রসমূহে
এসডিজির স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সূচক, পঞ্চবর্ষিকী পরিকল্পনা, ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ ইত্যাদির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব জনাব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ডঅঝঐ সেক্টরে প্রমাণ
ভিত্তিক কর্মসূচী গ্রহণ ও কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নে এ জরিপের ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি এ জরিপ হতে
এসডিজি সূচক ৬.২.১ ‘‘সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার সুবিধাসহ নিরাপদ ব্যবস্থাপনার স্যানিটেশন সেবা ব্যবহারকারী জনসংখ্যার
অনুপাত’’ এর তথ্য পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ইউনিসেফ এবং ওয়াটারএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় দেশব্যাপী এই জরিপ পরিচালনা
করেছে। যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে এই জরিপটি করা হয়েছে। সরাসরি সাক্ষাৎকার, স্যানিটেশন সুবিধাগুলো দেখতে তাৎক্ষণিক
যাচাই এবং বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং হাতধোয়া পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে ৪০ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তারা জানেন খাওয়ার আগে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৬ শতাংশ কিশোরী তাদের প্রথম মাসিকের আগে ঋতুস্রাব সম্পর্কে জানত। ৪৩ শতাংশ কিশোরী এবং ২৯
শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নারী তাদের মাসিকের সময় ডিসপোজেবল প্যাড ব্যবহার করেন।
বিদ্যালয়ে ৩৯ শতাংশ ছেলে-মেয়ে পানি ও সাবানের সুবিধা রয়েছে এমন উন্নত ও ব্যবহারযোগ্য টয়লেট ব্যবহার করতে পারে।
তবে, স্যানিটারি প্যাড অপসারনের ব্যবস্থা ২২ শতাংশ বিদ্যালয়ে রয়েছে এবং এসব বিদ্যালয়ে ঋতুস্রাব ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা
মানসম্পন্ন টয়লেট রয়েছে। ৩০ শতাংশ কিশোরী বলেছেন, তারা শেষ ছয় মাসে তাদের মাসিকের সময় বিদ্যালয়ে যাওয়া থেকে
বিরত ছিলেন এবং গড়ে আড়াই দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে, ৩৬ শতাংশ কিশোরী বলেছেন, তারা ঋতুস্রাব
সংক্রান্ত স্বাস্থ্যশিক্ষা বিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন।
প্রতিবেদনটিতে রেস্তোরাঁ ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে স্যানিটেশন সুবিধা এবং পরিবেশগত স্বাস্থ্যবিধির (হাইজিন) পাশাপাশি খাদ্য বিক্রেতা এবং
সেবাদানকারীদের হাইজিন চর্চার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ৬৮ শতাংশ বাবুর্চি রেস্তোরাঁয় তাদের কাজের
সময় হাত ধোয়ার কথা উল্লেখ করেন।
ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ‘এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে তা তুলে ধরা
হয়েছে এবং এই অনুসারে, বিশেষত কোভিড -১৯ এর উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি (হাইজিন) মেনে চলার
প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে। ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮ একটি গুরুত্বপূর্ণ জরিপ, যা আমাদের ঘাটতিগুলোকে চিহ্নিত করে,
অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জগুলো সামনে নিয়ে আসে এবং দেশব্যাপী স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
সর্বোপরি, প্রতিবেদনটি কেবল ‘ওয়াশ (ডঅঝঐ)’ – খাতে যারা কাজ করে শুধু তাদের জন্যই নয়, বরং যারা জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং
খাদ্য সুরক্ষা বিষয়ে আগ্রহী তাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ রিসোর্স।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক জনাব মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) জনাব তুষার মোহন
সাধু খাঁ। জরিপের মূল ফলাফল তুলে ধরেন বিবিএস এর ডেমোগ্রাফি এন্ড হেলথ উইং এর পরিচালক জনাব মো: মাসুদ আলম।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি এবং উন্নয়ন খাতের বিশেষ অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন এই ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে প্রতিবেদনটি ‘ওয়াশ’, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং খাদ্য সুরক্ষা ক্ষেত্রে কর্তব্যরত
ব্যক্তিদের ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। তারা সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন গড়ে তোলার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে বিস্তৃত
পরিসরে উদ্যোগ নেয়ার প্রতি জোর দেন। তারা এই সুষ্ঠু জরিপ পরিচালনায় প্রতিশ্রæতি ও নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা রাখার জন্য
বিবিএস’র ডেমোগ্রাফি এন্ড হেলথ উইং এবং ইউনিসেফ, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ও ওয়াটারএইড সহ কারিগরি এবং
আর্থিক সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।