ঢাকা ০৪:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
নরসিংদীতে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু জামালপুরে ধানের বাজার মধ্যস্বত্বভোগীরদের দখলে রানীশংকৈলে জিপিএ—৫ পাওয়া ৪ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের বাধা অর্থিক সংকট কালিয়াকৈরে এক নারী মাদক ব্যবসায়ী হেরোইনসহ গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উৎযাপন উপলক্ষে সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হারানো টাকা মালিকের হাতে ফেরত দিয়ে দিষ্টান্ত স্হাপন করলো পুলিশ ফুলবাড়ীতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কতৃক মসজিদ পরিস্কার অভিযান ফুলবাড়ীতে ভুট্টা বোঝাই ট্রলির চালক নিজ গাড়িতে চাপা পড়ে নিহত বিবাহিত অছাত্র কিশোরগ্যাং এর লিডার রুবেল হোসেন জয়কে দিয়ে এবার ছাত্রলীগের নতুন কমিটি করা হলো কুষ্টিয়ায় পদ্মায় ডুবে যাওয়া নিখোঁজ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার

জলঢাকায় জোড়া লাগা শিশু সন্তান নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে মা-বাবার,

শেখ সিরাজুল ইসলাম।।

অনিশ্চয়তা নিয়ে বড় হচ্ছে ২৩ মাস বয়সী জোড়া লাগা শিশু লাবিবা-লামিসা। সন্তান নিয়ে যেখানে আনন্দে দিন কাটানোর কথা সেখানে মা-বাবার চোখ জুড়ে এখন শুধুই অন্ধকার।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কৈমারী যদুনাথ পাড়া এলাকার লাল মিয়া ও মনুফা বেগম দম্পত্তির একমাত্র চাওয়া চিকিৎসার মাধ্যমে জোড়া লাগা দুই শিশুকে আলাদা করে করা। কিন্তু অর্থের অভাবে তা হচ্ছে না।
জন্মের পর থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করেও আলাদা করার কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি জোড়া এই দুই শিশুকে। জলঢাকা উপজেলা শহরের একটি ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় এই জোড়া লাগা দুই শিশুর। জন্মের পর খাওয়ার পরে পেটফুলে থাকলে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
দেড় মাস বয়সে রংপুর মেডিকেলে অপারেশনের মাধ্যমে পায়খানার রাস্তা আলাদা করে দেয়া হয়। এরপর অার এ সমস্যা থাকে না।
এখন অন্য সমস্যা না থাকলেও অস্বাভাবিক ভাবে জন্ম নেয়ায় জোড়া শিশু হিসেবে বেড়ে উঠতে হচ্ছে তাদের। একজন হাটতে চাইলে অন্যজন বসতে চায়, একজন খেতে চাইলে অন্যজন কাদে। একজন ঘুমাতে চাইলে তো অন্যজন চিৎকার করে। তবে দিন যত যাচ্ছে ততই তাদের নিয়ে শংকা বাড়ছে পরিবারে।
লাবিবা-লামিসার দাদী ইলমা খাতুন বলেন, নাতনি দুটি জম্মেছে ঠিকই। কিন্তু তারা স্বাভাবিক নয়। চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের আলাদা করতে হবে। এজন্য অনেক টাকা দরকার। আমরা গরীব মানুষ এতে টাকা পাব কই।
অনেকে সহযোগীতা করেছেন। ঢাকা পর্যন্ত গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসাটা দ্রুত শেষ হওয়া দরকার। যেন তারা স্বাভাবিক ভাবে আলাদা হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। এই শিশুদের নিয়ে আমরা অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।
লাবিবা-লামিসার মা মনুফা বেগম বলেন, জন্মের পর থেকে কষ্টের শেষ নেই আমার। ঠিকমত ঘুমাতে পারি না। এদের সাথে সবসময় থাকতে হয়।
একজন হাটতে চাইলে, অন্যজন বসে। একজন ঘুমাতে চাইলে আরেকজন বেড়াতে চায়। একজন খায় তো আরেকজন কাদে। প্রতিটি দিন যে কিভাবে কাটে তা বলে শেষ করা যাবে না।
দু’জনকে কোলে নিয়ে তো আর সবসময় বেড়ানো যায় না। সবার কোলেও যেতে চায় না। এখন তো ছোট আছে বড় হলে কি হবে এদের।
প্রতিবেশিরা বলেন, দিন আনি দিন খায় ওমরা। বাচ্চা দুটোকে অপারেশন করে আলাদা করা খুব দরকার। কিন্তু ওদের তো সাধ্য নাই। অনেক দিন থেকে শুনিছি অপারেশন হবে। কিন্তু টাকার জন্য হচ্ছেনা। জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসার বাবা লাল মিয়া বলেন, জন্মের পর এ হাসপাতাল ও হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা চালাচ্ছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেছিলাম। চিকিৎসকরা বোর্ড বসানোর কথা বলছে। এখন করোনা চলছে। কবে যে কি হয়। বুঝতে পারছি না। শিশু দুটি বড় হচ্ছে। অপারেশন করার সময় অনেক টাকা দরকার। আমার সামর্থ্য নেই। তাদের ভবিষ্যত নিয়ে আমি চিন্তিত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনো নেত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীতা চাই। তিনি বিষয়টি দেখলে আমার সমস্যা অবশ্যই সমাধান করে দেবেন আমার বিশ্বাস। এরকম অনেকেই জননেত্রীর সহায়তায় নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন, নিশ্চয় আমার সন্তানরাও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পাবে।
জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জোড়া শিশু দুটির চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছিলো, কিন্তু করোনার কারণে থমকে গেছে। কারণ জোড়া শিশুদুটির চিকিৎসায় কয়েক রকম চিকিৎসক প্রয়োজন। তারা বোর্ড বসাবেন। আমি আবারো যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত অপারেশন করা সম্ভব হয়।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নরসিংদীতে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু

জলঢাকায় জোড়া লাগা শিশু সন্তান নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে মা-বাবার,

আপডেট টাইম : ১১:১৬:৫১ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৮ আগস্ট ২০২১

শেখ সিরাজুল ইসলাম।।

অনিশ্চয়তা নিয়ে বড় হচ্ছে ২৩ মাস বয়সী জোড়া লাগা শিশু লাবিবা-লামিসা। সন্তান নিয়ে যেখানে আনন্দে দিন কাটানোর কথা সেখানে মা-বাবার চোখ জুড়ে এখন শুধুই অন্ধকার।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কৈমারী যদুনাথ পাড়া এলাকার লাল মিয়া ও মনুফা বেগম দম্পত্তির একমাত্র চাওয়া চিকিৎসার মাধ্যমে জোড়া লাগা দুই শিশুকে আলাদা করে করা। কিন্তু অর্থের অভাবে তা হচ্ছে না।
জন্মের পর থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করেও আলাদা করার কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি জোড়া এই দুই শিশুকে। জলঢাকা উপজেলা শহরের একটি ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় এই জোড়া লাগা দুই শিশুর। জন্মের পর খাওয়ার পরে পেটফুলে থাকলে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
দেড় মাস বয়সে রংপুর মেডিকেলে অপারেশনের মাধ্যমে পায়খানার রাস্তা আলাদা করে দেয়া হয়। এরপর অার এ সমস্যা থাকে না।
এখন অন্য সমস্যা না থাকলেও অস্বাভাবিক ভাবে জন্ম নেয়ায় জোড়া শিশু হিসেবে বেড়ে উঠতে হচ্ছে তাদের। একজন হাটতে চাইলে অন্যজন বসতে চায়, একজন খেতে চাইলে অন্যজন কাদে। একজন ঘুমাতে চাইলে তো অন্যজন চিৎকার করে। তবে দিন যত যাচ্ছে ততই তাদের নিয়ে শংকা বাড়ছে পরিবারে।
লাবিবা-লামিসার দাদী ইলমা খাতুন বলেন, নাতনি দুটি জম্মেছে ঠিকই। কিন্তু তারা স্বাভাবিক নয়। চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের আলাদা করতে হবে। এজন্য অনেক টাকা দরকার। আমরা গরীব মানুষ এতে টাকা পাব কই।
অনেকে সহযোগীতা করেছেন। ঢাকা পর্যন্ত গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসাটা দ্রুত শেষ হওয়া দরকার। যেন তারা স্বাভাবিক ভাবে আলাদা হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। এই শিশুদের নিয়ে আমরা অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।
লাবিবা-লামিসার মা মনুফা বেগম বলেন, জন্মের পর থেকে কষ্টের শেষ নেই আমার। ঠিকমত ঘুমাতে পারি না। এদের সাথে সবসময় থাকতে হয়।
একজন হাটতে চাইলে, অন্যজন বসে। একজন ঘুমাতে চাইলে আরেকজন বেড়াতে চায়। একজন খায় তো আরেকজন কাদে। প্রতিটি দিন যে কিভাবে কাটে তা বলে শেষ করা যাবে না।
দু’জনকে কোলে নিয়ে তো আর সবসময় বেড়ানো যায় না। সবার কোলেও যেতে চায় না। এখন তো ছোট আছে বড় হলে কি হবে এদের।
প্রতিবেশিরা বলেন, দিন আনি দিন খায় ওমরা। বাচ্চা দুটোকে অপারেশন করে আলাদা করা খুব দরকার। কিন্তু ওদের তো সাধ্য নাই। অনেক দিন থেকে শুনিছি অপারেশন হবে। কিন্তু টাকার জন্য হচ্ছেনা। জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসার বাবা লাল মিয়া বলেন, জন্মের পর এ হাসপাতাল ও হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা চালাচ্ছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেছিলাম। চিকিৎসকরা বোর্ড বসানোর কথা বলছে। এখন করোনা চলছে। কবে যে কি হয়। বুঝতে পারছি না। শিশু দুটি বড় হচ্ছে। অপারেশন করার সময় অনেক টাকা দরকার। আমার সামর্থ্য নেই। তাদের ভবিষ্যত নিয়ে আমি চিন্তিত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনো নেত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীতা চাই। তিনি বিষয়টি দেখলে আমার সমস্যা অবশ্যই সমাধান করে দেবেন আমার বিশ্বাস। এরকম অনেকেই জননেত্রীর সহায়তায় নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন, নিশ্চয় আমার সন্তানরাও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পাবে।
জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জোড়া শিশু দুটির চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছিলো, কিন্তু করোনার কারণে থমকে গেছে। কারণ জোড়া শিশুদুটির চিকিৎসায় কয়েক রকম চিকিৎসক প্রয়োজন। তারা বোর্ড বসাবেন। আমি আবারো যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত অপারেশন করা সম্ভব হয়।