ব্যস্ত সময় পার করছেন কুড়িগ্রামের কৃষকরা বন্যা আশঙ্কায় চাষ শুরু হয়নি চরাঞ্চলে
- আপডেট টাইম : ০১:২১:০১ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১
- / ২৬৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
রুহুল আমিন রুকু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।।
আমন চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার প্রন্তিক কৃষকরা। তবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় শুকিয়ে যাওয়া জমি নিয়ে বিপাকে অনেক কৃষক। এতে করে আমন চাষ ব্যহত হচ্ছে তাদের। জমিতে পানি না থাকায় অনেকে নিচু জমি, খাল ও পুকুরের পানি কিংবা সেচযন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে জমি প্রস্তুত করছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে প্রাথমিকভাবে কৃষকরা আমনের জমিতে আইল বাঁধা, আইলের সাইড কেটে জমিকে আমন চাষের উপযোগী করে তুলছে। যেসব জমিতে পাট আছে সে গুলো পাট কেটে প্রস্তুত করছেন। সেই লক্ষ্যে আমনের চারা রোপন করা নিয়ে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে কৃষকরা। অপরদিকে চরাঞ্চলের অনেক এলাকায় বন্যা আশঙ্কায় এখনও শুরু হয়নি আমনের চারা রোপন। তাদের অনেকে এখনও বীজতলা তৈরি করছেন। আবার কেউ কেউ আমন চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করতে ব্যস্ত রয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস জানায় উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এছাড়াও এবারের আমন চাষের জন্য ১২শ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি হয়েছে এবং এখনও কিছু বন্যা কবলিত এলাকায় বীজতলা তৈরির কাজ চলছে। এ বছর উচ্চ ফলনশীল ব্রি-বায়ান্ন, উপসি, হাইব্রিড, ছিয়াশি, সাতাশিসহ বিভিন্ন জাতের ধানের চারা রোপন করছেন কৃষকরা।
এদিকে উপজেলার ১ হাজার ২শ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনা দিয়েছেন কৃষি বিভাগ। এদের মধ্যে ৪শ কৃষককে ৫ কেজি করে উপসি জাতের ধানের বীজ এবং ১০ কেজি করে ডিএপি সার ও ১০ কেজি করে এমওপি সার দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৮শ কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার দেয়া হয়েছে।
কৃষকরা জানান উপজেলায় বন্যা আশঙ্কায় আগাম আমনের চারা রোপন করছেন। অপরদিকে অনাবৃষ্টির কারণে জমি শুকিয়ে আমনের চারা রোপনে বিপাকে পড়েছেন তারা। উপায়ন্তর না পেয়ে সেচযন্ত্রেমর মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে জমি প্রস্তুত করে আমনের চারা রোপন করছেন কেউ কেউ। সবমিলে ফসলে রোগবালাই থেকে রক্ষা ও যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে খরচ পুষিয়ে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া এলাকার কৃষক আবুল হোসেন জানায়, তিনি এবার ২ বিঘা জমিতে আমনের চারা রোপন করেছেন। বৃষ্টি হয়ে জমিতে পানি জমে যাওয়ায় তা প্রস্তুত করে আগাম চারা রোপন করেছেন তিনি। পৌরসভার কৃষক শাহানুর আলম, আব্দুর রহমানসহ আরও অনেক কৃষক জানান পোকামাকরের আক্রমণসহ অন্যান্য রোগবালাই দেখা না দিলে, এবং ক্ষরা, বন্যা কিংবা অন কেনো দুর্যোগের শিকার না হলে ধানের ফলন ভালো হয়ে লাভবান হবেন তারা। মধুরহাইল্যা এলাকার কৃষক শাহ-আলম জানায়, বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জমির পানি শুকিয়ে গেছে। তাই নিচু জায়গা থেকে পানি সেচে জমি প্রস্তুতির কাজ করছেন। বীজতলা থেকে তাদের ধানের চারাও উত্তোলন করেছেন। এখন জমি প্রস্তুত সম্পন্ন হলেই চারা রোপন করবেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয় কৃষকদেরকে সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। বন্যা কবিলিত এলাকা বাদে বাকী প্রায় সব এলাকায় আমনের চারা রোপন করছেন কৃষকরা। কৃষিক্ষেত বাঁচাতে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান ও যেকোনো দুর্যোগে তাদের পাশে থাকবে কৃষি বিভাগ।