ঢাকা ০৭:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
রায়পুরে দেশীয় শিল্প ও পণ্য মেলায় ভ্রাম্যমান আদালত, নগদ অর্থদণ্ড কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের উঠান বৈঠক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  মোংলায় জলবায়ু ন্যায্যতার গণসংলাপে বক্তারা : সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা দিন অভিনব কায়দায় কুমড়া শাকের আড়ালে গাঁজা পাচারকালে ডিএনসি- কুমিল্লার হাতে ১৩ কেজি গাঁজাসহ আটক ০২ নারী মঠবাড়ীয়া সাফলেজা কচুবাড়ীয়া বসত ঘর ভাঙচুর লুটপাট ও যখম এর অভিযোগ আঃ খালেক হাওলাদার গংদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আখড়া বরগুনার পাসপোর্ট অফিস, দালাল ছাড়া মিলছে না পাসপোর্ট কাশেমপুর থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে বিট্টিমরাই স্কুল ছাত্র মোঃ রাব্বি নিজ খালাকে আটকিয়ে ? ওসি সাইফুল ইসলাম মোটা অংকের টাকার বিনিময় তাদের আসামি করে গ্রেফতার দেখান আনন্দবাজারকে ডা. শফিকুর রহমান কোনও রাজনৈতিক দলকে খারিজ বা সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই রাজনৈতিক দলগুলো যদি বলে যে তারা সংস্কার চায় না, তাহলে এখনই নির্বাচন দিয়ে দেবো: ড. ইউনূস দেশবাসীকে ফের কাঁদালেন শহিদ নাফিজের মা

কাগুজে সুদের পরিমাণ বাড়ছে ব্যাংকগুলোতে কাগুজে সুদের পরিমাণ বাড়ছে ব্যাংকগুলোতে

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৬:১২:২৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ২৭০ ৫০০০.০ বার পাঠক

অর্থনীতি রিপোর্টার।।

বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে প্রাপ্ত সুদই ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস। তবে বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে সেই সুদ আদায় হচ্ছে না ঠিক মতো। সুদ আদায় না হলেও তা স্থগিত সুদ নামে জমা হচ্ছে ব্যাংকের হিসাবে। এভাবেই অনাদায়ী সুদের পরিমাণ গত সেপ্টম্বর শেষে এ পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, অনাদায়ী সুদ হিসাবে সর্বোচ্চ পরিমাণে জমা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকে। গত সেপ্টম্বর শেষে ব্যাংকটির অনাদায়ী সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এক বছর আগে অর্থাত্ ২০১৯ সালের সেপ্টম্বরে যা ছিল ৫ হাজার ২৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১ হাজার ২৩০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে অনাদায়ী সুদের প্রবৃদ্ধি হয় ২৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অপর রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। এ ব্যাংকে জমা হওয়া সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। এক বছর আগে যা ছিল ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এ ব্যাংকেও বৃদ্ধি পায় ৫৩১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, সুদ আদায় না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে করোনা মহামারি। অনেকেই ব্যাংক ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারছেন না; কিন্তু ব্যাংকগুলোকে প্রতি তিন মাস অন্তর সুদের এ হিসাবটি করে থাকে। নিয়মিত তা জানাতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। করোনাকালে মানুষের সুবিধার্থে সব ধরনের ঋণের বিপরীতে কিস্তি জমা দানের বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি ডিসেম্বর পর্যন্ত সুবিধাটি অব্যাহত থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ব্যাংক কোনো গ্রাহককে ঋণের অর্থ ফেরত চাইতে বাধ্য করতে পারবে না। সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে সামর্থ্যবানরাও ব্যাংক ঋণ পরিশোধে অনীহা দেখাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

অনাদায়ী সুদের পরিমাণ বিষয়ে বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম চৌধুরী বলেন, ‘এটি ব্যাংকের বিনিয়োগকৃত অর্থের ধার্যকৃত সুদ। ধার্যকৃত সুদের যে অংশটুকু আদায় হয় না, তা অনাদায়ী সুদ হিসাবে দেখাতে হয়। ঋণ খেলাপিদের কাছেই এ অর্থ পাওনা রয়েছে। এটি আদায় হলেই আয় খাতে দেখানো হবে; কিন্তু করোনাকালে অনেক ব্যবসায়ী অর্থ পরিশোধ করছেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার মাধ্যমে সুযোগটি দেওয়ায় সামর্থ্য থাকার পরও অনেকে দিচ্ছেন না।’

তবে অনাদায়ী সুদের প্রকৃত পরিমাণ আগামী বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষ হলে জানা যাবে বলে মনে করেন এই ব্যাংকার। তথ্য অনুযায়ী, অনাদায়ী সুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে। তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টম্বর শেষে অনাদায়ী সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫৭৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

বিদেশি ব্যাংকের ৩১৪ কোটি, বিশেষায়িত ব্যাংকের ১ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ২২২ কোটি ৪৬ লাখ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। জানা গেছে, অনাদায়ী সুদ হচ্ছে ব্যাংকের সম্ভাব্য সুদ আয়। অনেক ব্যাংকই এটিকে আয় দেখিয়ে আর্থিক প্রতিবেদন ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখান। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাংক ও শেয়ারহোল্ডাররা। এটি বন্ধ করতে সুদ আদায় না হলে তা আয় বা মুনাফা খাতে না দেখাতে নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে সুদ আদায় না হলে তা আয় খাতে স্থানান্তর করতে পারে না ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

অনাদায়ী এসব সুদ জমা হচ্ছে খেলাপি হওয়া ঋণের বিপরীতে। একদিকে ঋণ আদায় হচ্ছে না, অন্যদিকে এসব ঋণ থেকে সম্ভাব্য সুদও আদায় করতে পারছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সেপ্টম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কাগুজে সুদের পরিমাণ বাড়ছে ব্যাংকগুলোতে কাগুজে সুদের পরিমাণ বাড়ছে ব্যাংকগুলোতে

আপডেট টাইম : ০৬:১২:২৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০

অর্থনীতি রিপোর্টার।।

বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে প্রাপ্ত সুদই ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস। তবে বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে সেই সুদ আদায় হচ্ছে না ঠিক মতো। সুদ আদায় না হলেও তা স্থগিত সুদ নামে জমা হচ্ছে ব্যাংকের হিসাবে। এভাবেই অনাদায়ী সুদের পরিমাণ গত সেপ্টম্বর শেষে এ পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, অনাদায়ী সুদ হিসাবে সর্বোচ্চ পরিমাণে জমা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকে। গত সেপ্টম্বর শেষে ব্যাংকটির অনাদায়ী সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এক বছর আগে অর্থাত্ ২০১৯ সালের সেপ্টম্বরে যা ছিল ৫ হাজার ২৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১ হাজার ২৩০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে অনাদায়ী সুদের প্রবৃদ্ধি হয় ২৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অপর রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। এ ব্যাংকে জমা হওয়া সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। এক বছর আগে যা ছিল ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এ ব্যাংকেও বৃদ্ধি পায় ৫৩১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, সুদ আদায় না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে করোনা মহামারি। অনেকেই ব্যাংক ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারছেন না; কিন্তু ব্যাংকগুলোকে প্রতি তিন মাস অন্তর সুদের এ হিসাবটি করে থাকে। নিয়মিত তা জানাতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। করোনাকালে মানুষের সুবিধার্থে সব ধরনের ঋণের বিপরীতে কিস্তি জমা দানের বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি ডিসেম্বর পর্যন্ত সুবিধাটি অব্যাহত থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ব্যাংক কোনো গ্রাহককে ঋণের অর্থ ফেরত চাইতে বাধ্য করতে পারবে না। সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে সামর্থ্যবানরাও ব্যাংক ঋণ পরিশোধে অনীহা দেখাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

অনাদায়ী সুদের পরিমাণ বিষয়ে বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম চৌধুরী বলেন, ‘এটি ব্যাংকের বিনিয়োগকৃত অর্থের ধার্যকৃত সুদ। ধার্যকৃত সুদের যে অংশটুকু আদায় হয় না, তা অনাদায়ী সুদ হিসাবে দেখাতে হয়। ঋণ খেলাপিদের কাছেই এ অর্থ পাওনা রয়েছে। এটি আদায় হলেই আয় খাতে দেখানো হবে; কিন্তু করোনাকালে অনেক ব্যবসায়ী অর্থ পরিশোধ করছেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার মাধ্যমে সুযোগটি দেওয়ায় সামর্থ্য থাকার পরও অনেকে দিচ্ছেন না।’

তবে অনাদায়ী সুদের প্রকৃত পরিমাণ আগামী বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষ হলে জানা যাবে বলে মনে করেন এই ব্যাংকার। তথ্য অনুযায়ী, অনাদায়ী সুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে। তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টম্বর শেষে অনাদায়ী সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫৭৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

বিদেশি ব্যাংকের ৩১৪ কোটি, বিশেষায়িত ব্যাংকের ১ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ২২২ কোটি ৪৬ লাখ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। জানা গেছে, অনাদায়ী সুদ হচ্ছে ব্যাংকের সম্ভাব্য সুদ আয়। অনেক ব্যাংকই এটিকে আয় দেখিয়ে আর্থিক প্রতিবেদন ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখান। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাংক ও শেয়ারহোল্ডাররা। এটি বন্ধ করতে সুদ আদায় না হলে তা আয় বা মুনাফা খাতে না দেখাতে নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে সুদ আদায় না হলে তা আয় খাতে স্থানান্তর করতে পারে না ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

অনাদায়ী এসব সুদ জমা হচ্ছে খেলাপি হওয়া ঋণের বিপরীতে। একদিকে ঋণ আদায় হচ্ছে না, অন্যদিকে এসব ঋণ থেকে সম্ভাব্য সুদও আদায় করতে পারছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সেপ্টম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।