ঢাকা ১১:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরজ বিধান পর্দা যেখানে নাই, সেখানে রহমত নাই -ছারছীনার পীর ছাহেব ভ্যাট ও শুল্ক কমানোর দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে রেস্তোরা মালিক, শ্রমিকের মানববন্ধন টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করায় বিএনপির মহাসচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ! ব্যাংক খাত ধ্বংসের শুরুটা হয় এসকে সুরের হাত দিয়ে গ্যাস-সংকটে চট্টগ্রামে দেশি বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা মাত্র ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট হলে নতুন বিনিয়োগ বাড়বে ঢাকা রাজধানী শাজাহানপুর ডাকাতি মামলার আসামি গ্রেফতার করেছে পুলিশ গাজীপুরে প্রতিবেশীদের হামলায় অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আহত দুই: তদন্তে পুলিশ নাসিরনগরে মাতৃস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক এ্যাডভোকেসী সভা ভৈরবে আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত অফিস থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার ঠাকুরগাঁওয়ে সীমান্তে বিএসএফ’র হাতে বাংলাদেশী আটক

জবাই করার আগে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ দেওয়ার চিকিৎসক নেই

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০১:৫৬:১৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২০ জুলাই ২০২১
  • / ২৯০ ৫০০০.০ বার পাঠক

সারফারাজ হোসেন

জবাই করার আগে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ দেওয়ার চিকিৎসক নেই সৈয়দপুর পৌরসভায়।

নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভার ভেটেরিনারি সার্জনের এই সনদ দেওয়ার কথা থাকলেও এ কাজ করছেন মাংস বিক্রেতা সমিতির এক নেতা।

সৈয়দপুর পৌরসভায় স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পদও দীর্ঘদিন শূন্য। এখানে অতিরক্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক। অভিযোগ উঠেছে তিনিও নির্ধারিত সময়ে কসাইখানায় যান না। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে স্বাস্থ্য পরিদর্শক আলতাব হোসেন বলেন, আমি নিয়মিত যাই। কসাইখানা দুই বছরের জন্য চুক্তি দেওয়া হয়। নাদিম নামের এক কসাই কসাইখানা চুক্তি পেয়েছেন। পৌরকর ও সিলের বিষয়টি তিনিই দেখেন।

সৈয়দপুর মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাদিম আহমেদ বলেন, সৈয়দপুর প্রানিসম্পদ অধিদফতরের চিকিৎসক আহসান হাবিব স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তারপরই পশু জবাই করে সিল মারা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সৈয়দপুরে কসাইখানা থাকলেও যে যার মতো শহরের যেখানে খুশি পশু জবাই করছেন। তাঁরা বলেন, এতে না জেনেই হয়ত লাম্পি স্কিন, তারকারোগসহ, দূর্বল, রুগ্ন, গর্ভবতী পশু জবাই করা মাংস খেতে হচ্ছে আমাদের।

শহরের গোলাহাট এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক ফারুক আহমেদ জানান, পরীক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র পশু করছে এলাকার কসাইরা। জবাইয়ের পর যেখানে সেখানে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে ক্ষতিকর হয়ে উঠছে এখানকার পরিবেশ।

পৌরসভার সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যসম্মত পশু জবাই করার জন্য সৈয়দপুর পৌরসভার একটিমাত্র কসাইখানা রয়েছে শহরের সুরকি মহল্লা এলাকায়। সপ্তাহে চার দিন সেখানে ৩০ থেকে ৪০ টি গরু জবাই করা হয়ে থাকে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহরের গোলাহাট রেলকলোনী, গোলাহাট বাজার, মোজার মোড়, সাহেবপাড়া রেলওয়ে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে, সাহেবপাড়া আমিন মোড়, মিস্ত্রিপাড়া, টার্মিনাল, বসুনিয়াপাড়া বাইপাস এলাকায় পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিদিন পশু জবাই করছে।

এসব এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার অভিযোগ করেন, গরু প্রতি টাকা নিয়ে যান পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শকের দায়িত্বে যিনি থাকেন। তাঁর মোখিক সনদেই পশু জবাই করা হয়। পরে ওই অসাধু কসাইরা নিজেদের বানানো “পরীক্ষিত” লেখা সিল মাংসের গায়ে মেরে নেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২৪ আগস্ট যত্রতত্র পশুপাখি জবাই বন্ধ এবং যথাযথ চিকিৎসকের সনদ ছাড়া পশু জবাই করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধের বিধান রেখে ‘পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১১’ নামে নতুন আইন করা হয়। কেউ আইন অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন-২০০৯ অনুযায়ী তিনি অনূর্ধ্ব এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ন্যূনতম পাঁচ হাজার থেকে অনূর্ধ্ব ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাশেদুল হক বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১১ তারিখে চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভায়। চিঠিতে জবাইয়ের আগে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সে নিয়ম মানা হচ্ছে না। আগে আমাদের এখানকার সার্জন আহসান হাবিবকে মাঝে মধ্যে কসাইখানায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু নানা কারনে সেই যাওয়াটাও এখন নিয়মিত নয়।

সৈয়দপুর পৌরমেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী বলেন, পরিষদের মিটিংয়ে আলোচনা করে ভেটেরিনারি সার্জনের পদের বিষয়ে খুব শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি যত্রতত্র পশু জবাই না করা এবং পশুবর্জ্য যেখানে সেখানে না ফেলার জন্য পৌরবাসির প্রতি অনুরোধ জানান।

 

 

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জবাই করার আগে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ দেওয়ার চিকিৎসক নেই

আপডেট টাইম : ০১:৫৬:১৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২০ জুলাই ২০২১

সারফারাজ হোসেন

জবাই করার আগে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ দেওয়ার চিকিৎসক নেই সৈয়দপুর পৌরসভায়।

নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভার ভেটেরিনারি সার্জনের এই সনদ দেওয়ার কথা থাকলেও এ কাজ করছেন মাংস বিক্রেতা সমিতির এক নেতা।

সৈয়দপুর পৌরসভায় স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পদও দীর্ঘদিন শূন্য। এখানে অতিরক্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক। অভিযোগ উঠেছে তিনিও নির্ধারিত সময়ে কসাইখানায় যান না। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে স্বাস্থ্য পরিদর্শক আলতাব হোসেন বলেন, আমি নিয়মিত যাই। কসাইখানা দুই বছরের জন্য চুক্তি দেওয়া হয়। নাদিম নামের এক কসাই কসাইখানা চুক্তি পেয়েছেন। পৌরকর ও সিলের বিষয়টি তিনিই দেখেন।

সৈয়দপুর মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাদিম আহমেদ বলেন, সৈয়দপুর প্রানিসম্পদ অধিদফতরের চিকিৎসক আহসান হাবিব স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তারপরই পশু জবাই করে সিল মারা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সৈয়দপুরে কসাইখানা থাকলেও যে যার মতো শহরের যেখানে খুশি পশু জবাই করছেন। তাঁরা বলেন, এতে না জেনেই হয়ত লাম্পি স্কিন, তারকারোগসহ, দূর্বল, রুগ্ন, গর্ভবতী পশু জবাই করা মাংস খেতে হচ্ছে আমাদের।

শহরের গোলাহাট এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক ফারুক আহমেদ জানান, পরীক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র পশু করছে এলাকার কসাইরা। জবাইয়ের পর যেখানে সেখানে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে ক্ষতিকর হয়ে উঠছে এখানকার পরিবেশ।

পৌরসভার সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যসম্মত পশু জবাই করার জন্য সৈয়দপুর পৌরসভার একটিমাত্র কসাইখানা রয়েছে শহরের সুরকি মহল্লা এলাকায়। সপ্তাহে চার দিন সেখানে ৩০ থেকে ৪০ টি গরু জবাই করা হয়ে থাকে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহরের গোলাহাট রেলকলোনী, গোলাহাট বাজার, মোজার মোড়, সাহেবপাড়া রেলওয়ে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে, সাহেবপাড়া আমিন মোড়, মিস্ত্রিপাড়া, টার্মিনাল, বসুনিয়াপাড়া বাইপাস এলাকায় পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিদিন পশু জবাই করছে।

এসব এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার অভিযোগ করেন, গরু প্রতি টাকা নিয়ে যান পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শকের দায়িত্বে যিনি থাকেন। তাঁর মোখিক সনদেই পশু জবাই করা হয়। পরে ওই অসাধু কসাইরা নিজেদের বানানো “পরীক্ষিত” লেখা সিল মাংসের গায়ে মেরে নেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২৪ আগস্ট যত্রতত্র পশুপাখি জবাই বন্ধ এবং যথাযথ চিকিৎসকের সনদ ছাড়া পশু জবাই করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধের বিধান রেখে ‘পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১১’ নামে নতুন আইন করা হয়। কেউ আইন অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন-২০০৯ অনুযায়ী তিনি অনূর্ধ্ব এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ন্যূনতম পাঁচ হাজার থেকে অনূর্ধ্ব ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাশেদুল হক বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১১ তারিখে চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভায়। চিঠিতে জবাইয়ের আগে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সে নিয়ম মানা হচ্ছে না। আগে আমাদের এখানকার সার্জন আহসান হাবিবকে মাঝে মধ্যে কসাইখানায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু নানা কারনে সেই যাওয়াটাও এখন নিয়মিত নয়।

সৈয়দপুর পৌরমেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী বলেন, পরিষদের মিটিংয়ে আলোচনা করে ভেটেরিনারি সার্জনের পদের বিষয়ে খুব শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি যত্রতত্র পশু জবাই না করা এবং পশুবর্জ্য যেখানে সেখানে না ফেলার জন্য পৌরবাসির প্রতি অনুরোধ জানান।