ঢাকা ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেলের কবরের বেড়া দিতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিক দিবস জামালপুরে আমের ফলন কমার আশংকা আজমিরীগঞ্জে জনৈক এক নারীকে ইভটিজিং, মোবাইল কোর্টের জেল ও জরিমানা ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন: মুরাদ কবির সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের হেলপার গুরুতর আহত কুরআনে যাদেরকে আল্লাহর ওলি বলা হয়েছে। দুধরচকী। পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াবাঙ্গা দর্গাবাজারে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী মো: মকবুল হোসেনের পথসভা ও গণসংযোগ জামালপুরে হাত পাখা শিল্পের প্রসার

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ধ্রুপদী ফাইনাল কাল সকালে

খেলার রিপোর্ট।।

বিনোদনের সেরা মাধ্যম খেলা। আর সেটা যদি হয় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফুটবল মহারণ তাহলে তো কথাই নেই। ফুটবলবিশ্ব এখন সেই আকর্ষণীয় দ্বৈরথ দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। লড়াইটা আবার ফাইনালের রঙিন মঞ্চে। অর্থাৎ ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে ৪৭তম কোপা আমেরিকা ফুটবলের ধ্রুপদী ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্বফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। ফুটবল দুনিয়ার সবচেয়ে উত্তাপ ছড়ানো কাক্সিক্ষত এ দ্বৈরথ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল ৬টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে সনি সিক্স ও সনি টেন ২ চ্যানেল।

ঐতিহ্যগতভাবে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের দ্বৈরথের ছাপ হাজার মাইল দূরের বাংলাদেশেও আছড়ে পড়েছে। পেলে-ম্যারাডোনা, রোনাল্ডো-বাতিস্তুতা কিংবা হালের মেসি-নেইমার যুগেও দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচের উত্তাপ এতটুকু কমেনি। তবে এবারের আসরটি একইসঙ্গে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সঙ্গে হওয়ায় বহির্বিশ্বে কিছুটা হলেও উত্তাপ কম। কারণ গুণে-মানে বর্তমানে ইউরোপের ফুটবলের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল। তবে এটা ঠিক, ইউরোপের ফুটবল যতই এগিয়ে যাক বা জনপ্রিয় হোক, ফুটবলের আসল ঝাঁজটা কিন্তু ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মহারণেই। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এটা তো বলাইবাহুল্য।

এবার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইউরোপীয় যজ্ঞ হলেও কোপায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠে আসায় লাল-সবুজের দেশে এখন উত্তাপ আর উন্মাদনা মেসি-নেইমারদের নিয়েই বেশি। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ধ্রুপদী ফুটবলশৈলী দেখার উন্মদনা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে। যে যেভাবে পারছেন প্রিয় দলের জন্য শুভকামনা জানিয়ে হাজির হয়েছেন। অনলাইনে তো ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ভক্তদের মাঝে চলছে রীতিমতো যুদ্ধ। সরাসরিও কম যান না দু’দলের সমর্থকরা। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কথার লড়াই থেকে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ফাইনাল শেষে এই উত্তাপ-উত্তেজনার রঙ কেমন হয় সেদিকেও সবার আছে কৌতূহলী দৃষ্টি।

মহারণের আগে কথার লড়াই চলছে দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যেও। মেসি ও আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা যে কোন মূল্যে জীবনবাজি রেখে হলেও শিরোপা জয়ের প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছেন। তেমনি ব্রাজিলের ফুটবলাররাও হুঙ্কার ছেড়েছেন মেসি তথা আর্জেন্টিনার স্বপ্ন সত্যি হতে দেবেন না। সুপারস্টপার মেসিকে এবারও একরাশ হতাশা উপহার দিতে বদ্ধপরিকর সেলেসাওরা। এমনটা জানিয়েছেন ব্রাজিল ডিফেন্ডার মারকুইনহোস। ফরাসী ক্লাব পিএসজিতে খেলা এ ফুটবলার বলেছেন, ‘নিজের ইতিহাস আর সে যেভাবে সবকিছু জয় করেছে তাতে সবাই চাইবে মেসিই জিতুক। কিন্তু তার লক্ষ্য অর্জন থেকে দূরে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই আমরা করব। একজন খেলোয়াড় নিয়ে মেসিকে আটকানো কঠিন। তবে আমাদের কোচ তিতে জানেন আমাদের করণীয় কি। শুধু মেসিতেই মনোযোগ দেয়া যাবে না। কারণ শুধু তার ওপর মনোযোগী হলে অন্যরা ব্যবধান গড়ে দিতে পারে।’

মারকুইনহোস আরও বলেন, ‘জৈব সুরক্ষা বলয়ে আমরা ৪৫ দিন ধরে আছি। পরিবারকে দেখতে পাচ্ছি না। সেরা দলটাই ফাইনালে জিতবে। আর আমি আশা করছি এটা ব্রাজিলই হবে। এটা কেবলই একটা ফুটবল ম্যাচ নয়। সেই ছোটবেলা থেকে এমন একটা ম্যাচ খেলার স্বপ্ন দেখতাম। এখানে খেলে গেছেন পেলে, জিকো, রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো, ম্যারাডোনাদের মতো খেলোয়াড়। এ লড়াইটা ফুটবলবিশ্বকেই তুলে ধরে; কেবল দক্ষিণ আমেরিকাকে নয়। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের সময় থমকে যায় গোটা বিশ্ব।’

ফাইনালে ব্রাজিল পাচ্ছে না অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে। কোয়ার্টার ফাইনালে চিলির লেফটব্যাক ইউজেনিও মেনার মুখে অসাবধানবশত লাথি মেরে বসেন জেসুস। যে কারণে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলা এই তারকা। কিন্তু তার নিষেধাজ্ঞা মানতে পারছেন না ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমার, ‘এমন সিদ্ধান্ত যারা নেয় তাদের অধীনে খেলা চালিয়ে যাওয়া খুবই হতাশা আর লজ্জাজনক। ওরা খেলার দারুণ একটা বিশ্লেষণ করেছে, তারজন্য সাধুবাদ প্রাপ্য। দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি কোনরকম আপীল করারও সুযোগ নেই। অভিনন্দন কনমেবল। আমার মনে হয় না আপনারা আসলে কি ঘটেছিল সেটা ভালভাবে লক্ষ্য করেছেন।’

কোপার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু গতবারের চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন না নেইমার। চোটের কারণে ছিলেন মাঠের বাইরে। এবার ক্যারিয়ারে প্রথম কোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে তিনি। আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারলেই স্বপ্নের ট্রফি। এমনই জানিয়েছেন বর্তমানে সেলেসাওদের সেরা তারকা। তবে শিরোপা জিততে মরিয়া হয়ে আছেন মেসিও। ক্ষুদে এই জাদুকরের আর্জেন্টিনার জার্সিতে একটা শিরোপা জয়ের অপেক্ষা দীর্ঘদিনের। স্বর্ণালি ক্যারিয়ারে ক্লাব বার্সিলোনার হয়ে ভুরি ভুরি ট্রফি জিতলেও আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে এখনও কোন আন্তর্জাতিক শিরোপা জিততে পারেননি রেকর্ড সর্বোচ্চ ছয়বারের ফিফাসেরা তারকা। পারবেন কী করে! আর্জেন্টিনা যে সেই ১৯৯৩ সালে কোপা জয়ের পর আর কোন আন্তর্জাতিক ট্রফি জিততে পারেনি। এবার দীর্ঘ ২৮ বছর পর আরেকবার হাহাকার ঘোচানোর সুযোগ মেসির সামনে।

এ টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে চলা ক্ষুদে জাদুকর মনেপ্রাণে চাচ্ছেন স্বপ্নের ট্রফি ছুঁয়ে দেখতে। ফাইনালের আগে ছয় ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ চার গোল ও পাঁচ এ্যাসিস্ট করেছেন মেসি। ব্রাজিলের বিরুদ্ধেও অপ্রতিরোধ্য এ ধারা ধরে রাখতে চান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক, ‘অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে শিরোপা জয়ের জন্য আমরা বেশি রোমাঞ্চিত। সর্বশেষ কাপের চেয়ে আমাদের দলটি অনেক শক্তিশালী। সর্বশেষ কাপেও ভাল একটা ভাবমূর্তি নিয়ে আমরা অভিযান শেষ করেছিলাম।’ ২০১৪ বিশ্বকাপের পর ২০১৫ ও ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালে হেরেছে মেসির আর্জেন্টিনা। এর আগে ২০০৭ সালের কোপার ফাইনাল খেলেও হারের তেতো স্বাদ পেয়েছিলেন সেই সময়ের উঠতি তারকা। এবার আর কাঁদতে চান না মেসি, ‘আরেকটি ফাইনাল খেলতে পেরে আমি খুব খুশি। দেশের হয়ে একটি শিরোপা খুব করে জিততে চাই আমি।’

এবার দীর্ঘ ১৪ বছর পর হতে চলেছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ফাইনাল মহারণ। সর্বশেষ ২০০৭ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে খেলেছিল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। এবারের আগে কোপাসহ দু’দল ফাইনালে খেলেছে মোট চারবার। এর মধ্যে কোপায় তিনবার ও ফিফা কনফেডারেশন্স কাপে একবার। এর দ্বৈরথে আর্জেন্টিনা জিতেছে সেই ৮৪ বছর আগে ১৯৩৭ সালে। তখন টুর্নামেন্টের নাম ছিল দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ। এরপর ২০০৪ ও ২০০৭ কোপা ও ২০০৫ ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালে জিতেছে ব্রাজিল। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে পেলের দেশকে ম্যারাডোনার দেশ হারাতে পারেনি দীর্ঘ ৩০ বছর। কোপায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা সর্বশেষ জিতেছে সেই ১৭ জুলাই ১৯৯১ সালে। মেসির নেতৃত্বে এবার আর্জেন্টিনা ইতিহাস বদলাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেলের কবরের বেড়া দিতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ধ্রুপদী ফাইনাল কাল সকালে

আপডেট টাইম : ০৫:২৭:৪১ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১

খেলার রিপোর্ট।।

বিনোদনের সেরা মাধ্যম খেলা। আর সেটা যদি হয় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফুটবল মহারণ তাহলে তো কথাই নেই। ফুটবলবিশ্ব এখন সেই আকর্ষণীয় দ্বৈরথ দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। লড়াইটা আবার ফাইনালের রঙিন মঞ্চে। অর্থাৎ ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে ৪৭তম কোপা আমেরিকা ফুটবলের ধ্রুপদী ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্বফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। ফুটবল দুনিয়ার সবচেয়ে উত্তাপ ছড়ানো কাক্সিক্ষত এ দ্বৈরথ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল ৬টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে সনি সিক্স ও সনি টেন ২ চ্যানেল।

ঐতিহ্যগতভাবে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের দ্বৈরথের ছাপ হাজার মাইল দূরের বাংলাদেশেও আছড়ে পড়েছে। পেলে-ম্যারাডোনা, রোনাল্ডো-বাতিস্তুতা কিংবা হালের মেসি-নেইমার যুগেও দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচের উত্তাপ এতটুকু কমেনি। তবে এবারের আসরটি একইসঙ্গে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সঙ্গে হওয়ায় বহির্বিশ্বে কিছুটা হলেও উত্তাপ কম। কারণ গুণে-মানে বর্তমানে ইউরোপের ফুটবলের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল। তবে এটা ঠিক, ইউরোপের ফুটবল যতই এগিয়ে যাক বা জনপ্রিয় হোক, ফুটবলের আসল ঝাঁজটা কিন্তু ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মহারণেই। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এটা তো বলাইবাহুল্য।

এবার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইউরোপীয় যজ্ঞ হলেও কোপায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠে আসায় লাল-সবুজের দেশে এখন উত্তাপ আর উন্মাদনা মেসি-নেইমারদের নিয়েই বেশি। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ধ্রুপদী ফুটবলশৈলী দেখার উন্মদনা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে। যে যেভাবে পারছেন প্রিয় দলের জন্য শুভকামনা জানিয়ে হাজির হয়েছেন। অনলাইনে তো ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ভক্তদের মাঝে চলছে রীতিমতো যুদ্ধ। সরাসরিও কম যান না দু’দলের সমর্থকরা। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কথার লড়াই থেকে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ফাইনাল শেষে এই উত্তাপ-উত্তেজনার রঙ কেমন হয় সেদিকেও সবার আছে কৌতূহলী দৃষ্টি।

মহারণের আগে কথার লড়াই চলছে দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যেও। মেসি ও আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা যে কোন মূল্যে জীবনবাজি রেখে হলেও শিরোপা জয়ের প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছেন। তেমনি ব্রাজিলের ফুটবলাররাও হুঙ্কার ছেড়েছেন মেসি তথা আর্জেন্টিনার স্বপ্ন সত্যি হতে দেবেন না। সুপারস্টপার মেসিকে এবারও একরাশ হতাশা উপহার দিতে বদ্ধপরিকর সেলেসাওরা। এমনটা জানিয়েছেন ব্রাজিল ডিফেন্ডার মারকুইনহোস। ফরাসী ক্লাব পিএসজিতে খেলা এ ফুটবলার বলেছেন, ‘নিজের ইতিহাস আর সে যেভাবে সবকিছু জয় করেছে তাতে সবাই চাইবে মেসিই জিতুক। কিন্তু তার লক্ষ্য অর্জন থেকে দূরে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই আমরা করব। একজন খেলোয়াড় নিয়ে মেসিকে আটকানো কঠিন। তবে আমাদের কোচ তিতে জানেন আমাদের করণীয় কি। শুধু মেসিতেই মনোযোগ দেয়া যাবে না। কারণ শুধু তার ওপর মনোযোগী হলে অন্যরা ব্যবধান গড়ে দিতে পারে।’

মারকুইনহোস আরও বলেন, ‘জৈব সুরক্ষা বলয়ে আমরা ৪৫ দিন ধরে আছি। পরিবারকে দেখতে পাচ্ছি না। সেরা দলটাই ফাইনালে জিতবে। আর আমি আশা করছি এটা ব্রাজিলই হবে। এটা কেবলই একটা ফুটবল ম্যাচ নয়। সেই ছোটবেলা থেকে এমন একটা ম্যাচ খেলার স্বপ্ন দেখতাম। এখানে খেলে গেছেন পেলে, জিকো, রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো, ম্যারাডোনাদের মতো খেলোয়াড়। এ লড়াইটা ফুটবলবিশ্বকেই তুলে ধরে; কেবল দক্ষিণ আমেরিকাকে নয়। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের সময় থমকে যায় গোটা বিশ্ব।’

ফাইনালে ব্রাজিল পাচ্ছে না অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে। কোয়ার্টার ফাইনালে চিলির লেফটব্যাক ইউজেনিও মেনার মুখে অসাবধানবশত লাথি মেরে বসেন জেসুস। যে কারণে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলা এই তারকা। কিন্তু তার নিষেধাজ্ঞা মানতে পারছেন না ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমার, ‘এমন সিদ্ধান্ত যারা নেয় তাদের অধীনে খেলা চালিয়ে যাওয়া খুবই হতাশা আর লজ্জাজনক। ওরা খেলার দারুণ একটা বিশ্লেষণ করেছে, তারজন্য সাধুবাদ প্রাপ্য। দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি কোনরকম আপীল করারও সুযোগ নেই। অভিনন্দন কনমেবল। আমার মনে হয় না আপনারা আসলে কি ঘটেছিল সেটা ভালভাবে লক্ষ্য করেছেন।’

কোপার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু গতবারের চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন না নেইমার। চোটের কারণে ছিলেন মাঠের বাইরে। এবার ক্যারিয়ারে প্রথম কোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে তিনি। আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারলেই স্বপ্নের ট্রফি। এমনই জানিয়েছেন বর্তমানে সেলেসাওদের সেরা তারকা। তবে শিরোপা জিততে মরিয়া হয়ে আছেন মেসিও। ক্ষুদে এই জাদুকরের আর্জেন্টিনার জার্সিতে একটা শিরোপা জয়ের অপেক্ষা দীর্ঘদিনের। স্বর্ণালি ক্যারিয়ারে ক্লাব বার্সিলোনার হয়ে ভুরি ভুরি ট্রফি জিতলেও আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে এখনও কোন আন্তর্জাতিক শিরোপা জিততে পারেননি রেকর্ড সর্বোচ্চ ছয়বারের ফিফাসেরা তারকা। পারবেন কী করে! আর্জেন্টিনা যে সেই ১৯৯৩ সালে কোপা জয়ের পর আর কোন আন্তর্জাতিক ট্রফি জিততে পারেনি। এবার দীর্ঘ ২৮ বছর পর আরেকবার হাহাকার ঘোচানোর সুযোগ মেসির সামনে।

এ টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলে চলা ক্ষুদে জাদুকর মনেপ্রাণে চাচ্ছেন স্বপ্নের ট্রফি ছুঁয়ে দেখতে। ফাইনালের আগে ছয় ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ চার গোল ও পাঁচ এ্যাসিস্ট করেছেন মেসি। ব্রাজিলের বিরুদ্ধেও অপ্রতিরোধ্য এ ধারা ধরে রাখতে চান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক, ‘অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে শিরোপা জয়ের জন্য আমরা বেশি রোমাঞ্চিত। সর্বশেষ কাপের চেয়ে আমাদের দলটি অনেক শক্তিশালী। সর্বশেষ কাপেও ভাল একটা ভাবমূর্তি নিয়ে আমরা অভিযান শেষ করেছিলাম।’ ২০১৪ বিশ্বকাপের পর ২০১৫ ও ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালে হেরেছে মেসির আর্জেন্টিনা। এর আগে ২০০৭ সালের কোপার ফাইনাল খেলেও হারের তেতো স্বাদ পেয়েছিলেন সেই সময়ের উঠতি তারকা। এবার আর কাঁদতে চান না মেসি, ‘আরেকটি ফাইনাল খেলতে পেরে আমি খুব খুশি। দেশের হয়ে একটি শিরোপা খুব করে জিততে চাই আমি।’

এবার দীর্ঘ ১৪ বছর পর হতে চলেছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ফাইনাল মহারণ। সর্বশেষ ২০০৭ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে খেলেছিল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। এবারের আগে কোপাসহ দু’দল ফাইনালে খেলেছে মোট চারবার। এর মধ্যে কোপায় তিনবার ও ফিফা কনফেডারেশন্স কাপে একবার। এর দ্বৈরথে আর্জেন্টিনা জিতেছে সেই ৮৪ বছর আগে ১৯৩৭ সালে। তখন টুর্নামেন্টের নাম ছিল দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ। এরপর ২০০৪ ও ২০০৭ কোপা ও ২০০৫ ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালে জিতেছে ব্রাজিল। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে পেলের দেশকে ম্যারাডোনার দেশ হারাতে পারেনি দীর্ঘ ৩০ বছর। কোপায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা সর্বশেষ জিতেছে সেই ১৭ জুলাই ১৯৯১ সালে। মেসির নেতৃত্বে এবার আর্জেন্টিনা ইতিহাস বদলাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।