ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
রাণীশংকৈলে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা কোনাবাড়ি পল্লী বিদ্যুৎ পাওয়ার সাবস্টেশনে আগুন তামাক হচ্ছে মাদকের মূল লক্ষ্য -ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম কিরাটন ইউনিয়নের পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম আমাদের মাঝে আর নেই শিবগঞ্জে সানামসজিদ স্থলবন্দরে হিট স্ট্রোকে ট্রাফিক পরিদর্শকের মৃত্যু গাজীপুরবাসীর জন্য চরম “সৌভাগ্য’ বর্তমান ডিসি এডিসি রেভিনিউ চৌকস ও মেধাবী দুই কর্মকর্তার চিন্তা,চেতনায় কর্মে, সর্বোপরিভাবে সততাকে প্রাধাণ্য দিয়েই দায়িত্ব পালন করছেন জামালপুরে ভোজ্য তেল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পর ছাত্রলীগ নেতার গলিত মরদেহ উদ্ধার চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টির জন্য চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায় মঠবাড়ীয়া তীব্র তাপদাহের হাত থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ। প্রার্থনা

করোনায় সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসে কর্মসূচী নেই

হবিগঞ্জ ॥ বুধবার (৩০ জুন) সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস। করোনা পরিস্থিতিতে এ দিবসে হবিগঞ্জে তেমন কোন কর্মসূচী নেই। এর আগে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের চার ভাই সিদু ,কানহু, চান্দ ও ভাইরোর নেতৃত্বে আদিবাসীরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। অধিকার আদায়ের সে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিল ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা।

এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে হবিগঞ্জের চা বাগানগুলোতে তেমন কোন কর্মসূচী নেই। অথচ এর আগে দিবসটিতে জেলার চুনারুঘাট, মাধবপুর, বাহুবল, নবীগঞ্জ উপজেলার চা বাগানগুলোতে বসবাসকারী প্রায় ৩০ হাজার সাঁওতাল দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করে আসছিলেন।

এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলার চানপুর চা বাগানের বাসিন্দা ও আদিবাসী ফোরাম হবিগঞ্জ জেলার নেতা স্বপন সাঁওতাল বলেন, হবিগঞ্জের চা বাগানগুলোতে প্রায় ৩০ হাজার সাঁওতাল রয়েছে। আমাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। প্রতি বছর আমরা জাঁকজমকভাবে দিবসটি পালন করলেও এবার করোনার জন্য কোন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়নি। তবে কয়েকটি বাগানে সীমিত আকারে কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হওয়ার কথা।

তিনি বলেন, সহজ-সরল সাঁওতালরাই এই উপমহাদেশের দুর্গম জঙ্গল ও ভূমিকে কঠোর পরিশ্রম করে আবাদী জমিতে রুপান্তর করে কৃষির প্রচলন করে। এখনও সাঁওতালরা চা শিল্প ও কৃষিতে অনেক অবদান রাখছে। কিন্তু সাঁওতালরা তাদের এই পরিশ্রমের কোন স্বীকৃতি পায়নি। সরকারি কোন পৃষ্টপোষকতা না থাকায় আমাদের সংস্কৃতি ও ভাষা বিলীন হওয়ার পথে।

একই বাগানের বাসিন্দা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, আজ থেকে ১৬৪ বছর পূর্বে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের চার ভাই সিদু, কানহু, চান্দ ও ভাইরোর নেতৃত্বে আদিবাসীরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ সৈন্য ও তাদের দোসর অসৎ ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর ও মহাজনদের অত্যাচার, নিপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন যুদ্ধ শুরু হয়। সাঁওতালরা তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলেও ইংরেজ বাহিনীর হাতে ছিলো বন্দুক ও কামান। তারা ঘোড়া ও হাতি যুদ্ধে ব্যবহার করেছিল। এ যুদ্ধে ইংরেজ সৈন্যসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা মারা যায়। সাঁওতাল বিদ্রোহের লেলিহান শিখা ব্রিটিশ সরকারের মসনদ কাঁপিয়ে দিয়েছিল। যুদ্ধে সিদু কানহু চান্দ ও ভাইরো পর্যায়ক্রমে নিহত হন। ১৮৫৬ সালের নবেম্বর মাসে যুদ্ধ শেষ হয় ও বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে।

চা শ্রমিকদের প্রাণের নাট্য সংগঠন দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, শুধু সাঁওতালরা নয় পুরো চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীই অধিকার বঞ্চিত রয়েছে। করোনার প্রকোপ থাকায় এ দিবসটিতে তেমন কোন আয়োজন করা হয়নি।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

রাণীশংকৈলে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

করোনায় সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসে কর্মসূচী নেই

আপডেট টাইম : ০৭:৩৮:৪১ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ৩০ জুন ২০২১

হবিগঞ্জ ॥ বুধবার (৩০ জুন) সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস। করোনা পরিস্থিতিতে এ দিবসে হবিগঞ্জে তেমন কোন কর্মসূচী নেই। এর আগে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের চার ভাই সিদু ,কানহু, চান্দ ও ভাইরোর নেতৃত্বে আদিবাসীরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। অধিকার আদায়ের সে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিল ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা।

এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে হবিগঞ্জের চা বাগানগুলোতে তেমন কোন কর্মসূচী নেই। অথচ এর আগে দিবসটিতে জেলার চুনারুঘাট, মাধবপুর, বাহুবল, নবীগঞ্জ উপজেলার চা বাগানগুলোতে বসবাসকারী প্রায় ৩০ হাজার সাঁওতাল দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করে আসছিলেন।

এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলার চানপুর চা বাগানের বাসিন্দা ও আদিবাসী ফোরাম হবিগঞ্জ জেলার নেতা স্বপন সাঁওতাল বলেন, হবিগঞ্জের চা বাগানগুলোতে প্রায় ৩০ হাজার সাঁওতাল রয়েছে। আমাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। প্রতি বছর আমরা জাঁকজমকভাবে দিবসটি পালন করলেও এবার করোনার জন্য কোন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়নি। তবে কয়েকটি বাগানে সীমিত আকারে কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হওয়ার কথা।

তিনি বলেন, সহজ-সরল সাঁওতালরাই এই উপমহাদেশের দুর্গম জঙ্গল ও ভূমিকে কঠোর পরিশ্রম করে আবাদী জমিতে রুপান্তর করে কৃষির প্রচলন করে। এখনও সাঁওতালরা চা শিল্প ও কৃষিতে অনেক অবদান রাখছে। কিন্তু সাঁওতালরা তাদের এই পরিশ্রমের কোন স্বীকৃতি পায়নি। সরকারি কোন পৃষ্টপোষকতা না থাকায় আমাদের সংস্কৃতি ও ভাষা বিলীন হওয়ার পথে।

একই বাগানের বাসিন্দা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, আজ থেকে ১৬৪ বছর পূর্বে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের চার ভাই সিদু, কানহু, চান্দ ও ভাইরোর নেতৃত্বে আদিবাসীরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ সৈন্য ও তাদের দোসর অসৎ ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর ও মহাজনদের অত্যাচার, নিপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন যুদ্ধ শুরু হয়। সাঁওতালরা তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলেও ইংরেজ বাহিনীর হাতে ছিলো বন্দুক ও কামান। তারা ঘোড়া ও হাতি যুদ্ধে ব্যবহার করেছিল। এ যুদ্ধে ইংরেজ সৈন্যসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা মারা যায়। সাঁওতাল বিদ্রোহের লেলিহান শিখা ব্রিটিশ সরকারের মসনদ কাঁপিয়ে দিয়েছিল। যুদ্ধে সিদু কানহু চান্দ ও ভাইরো পর্যায়ক্রমে নিহত হন। ১৮৫৬ সালের নবেম্বর মাসে যুদ্ধ শেষ হয় ও বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে।

চা শ্রমিকদের প্রাণের নাট্য সংগঠন দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, শুধু সাঁওতালরা নয় পুরো চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীই অধিকার বঞ্চিত রয়েছে। করোনার প্রকোপ থাকায় এ দিবসটিতে তেমন কোন আয়োজন করা হয়নি।