নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দিতে বালু উত্তোলন রোধে হাইকোর্টের রুল আনন্দ প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী
- আপডেট টাইম : ০৮:০৩:৩২ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ২৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ ও নতুনচর বালু মহাল থেকে নিয়মের বাইরে বালু উত্তোলন রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে,তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
স্থানীয় এক বাসিন্দার করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
রিটে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি), পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ডিসিসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আদালত দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছেন।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন জমা দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া।
কিন্তু তাতে সাড়া না পাওয়ায় এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তিনি।
গত ১ এপ্রিল দৈনিক সময়ের আলোতে প্রকাশিত ‘শর্ত ভেঙে বালু উত্তোলনে ভাঙছে বেড়িবাঁধ, আতঙ্কে তীরের মানুষ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়,।
নবীনগরের মেঘনা নদীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধ।
ইজারার শর্ত অনুযায়ী, ২০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করার কথা থাকলেও সেখানে প্রায় শতাধিক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় বেড়িবাঁধের ৫০ ফুট এলাকা জুড়ে হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোর মানুষজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো নদী গর্ভে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষায় ২০১৮ সালে সোনাবালুয়া ঘাট থেকে এমপি টিলা পর্যন্ত ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পাউবো।
মেঘনার জাফরাবাদ মৌজার নতুনচর এলাকায় ৩২ একর দীর্ঘ একটি সুনির্দিষ্ট সীমানায় বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মুন্সী এন্টারপ্রাইজ বার্ষিক ৯ কোটি টাকার বিনিময়ে এই বালু মহালের ইজারা পায়।
ইজারার শর্ত ভঙ্গ ও সীমানা অতিক্রম করে দিনে ও রাতে বালু উত্তোলন করছেন মুন্সী এন্টারপ্রাইজ নামের এই প্রতিষ্ঠান। এতে করে নদীর তীরবর্তী সোনাবালুয়া ঘাট, এমপি টিলা, নুরজাহানপুর, ঈদগা মাঠ ও কবরস্থানসহ নদী পাড়ের গ্রামগুলো নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ইজারাদার শাহাদাত হোসেন শোভন বলেন, বালু উত্তোলনে আমরা নিয়ম বহির্ভূত কোনো কাজ করা হচ্ছে না।
ড্রেজারের সংখ্যার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, বালু ব্যবসায় আমার সঙ্গে আরো শতাধিক পার্টনার রয়েছে। তাই ব্যবহারের সর্বোচ্চ ২০টি ড্রেজার কথাটা সত্যি না।
তবে মৌখিকভাবে ৩০ থেকে ৩৫টি ড্রেজার চালানোর কথা রয়েছে। তবে ইজারায় সংখ্যা নির্দিষ্ট করে কোনো উল্লেখ নেই।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী বলেন, বালুমহাল এলাকায় শর্তের বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। আগেও সীমানার বাইরে ড্রেজার মেশিন পাওয়া যাওয়ায় ইজারাদারের নয়জন লোককে জেল জরিমানা করেছি। আজকে আবার এই বালুমহালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।