ঢাকা ০৯:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জানাযায় প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে গুরুত্ব পাবে কতটুকু নার্সিং ডিপ্লোমাকে ডিগ্রী সমমান করার দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থান কর্মসূচি ঠাকুরগাঁওয়ে কবরের ওপর থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক খামার তৈরি করায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী দেশে তিন স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম নবীনগরে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত ১৯ দিনে এলো ২১ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ১২ দিন ধরে কারাগারে ১৬ বছরের শিক্ষার্থী মাহিম এজাহারে মাহিমের নাম ছিল না কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে

দিনাজপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১৭৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর ১২ দিন ধরে রংপুর কারাগারে রয়েছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তিনি দায়িত্বরত পুলিশের জন্য হুমকির কারণ ছিলেন না। তারপরও গত ১৬ জুলাই পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এর কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়।

আবু সাঈদ নিহত: পুলিশের গুলির উল্লেখ নেই এফআইআরে
আরও

আবু সাঈদ নিহত: পুলিশের গুলির উল্লেখ নেই এফআইআরে

তবে পুলিশের প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হননি।

এফআইআরে বলা হয়েছে, ‘বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দিক থেকে গুলি ছুড়তে থাকে এবং ইটের টুকরো নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়।’

রংপুর নগরীর একটি ফটো স্টুডিওর মালিক মো. শাহজালাল বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আমার ছেলে মাহিমকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।’

তিনি আরও জানান, জন্ম সনদ অনুসারে আলফি শাহরিয়ার মাহিমের বয়স ১৬ বছর ১০ মাস। সে রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের কৌঁসুলি (পিপি) রফিক হাসনাইন বলেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলার এজাহারে মাহিমের নাম ছিল না কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মাহিমের বাবা জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি শিশু আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে। আগামী ৪ আগস্ট সেই আবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

শাহজালাল গণমাধ্যমকে বলেন, গত ১৮ জুলাই বাড়ির কাছে পার্কারমোড়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিল মাহিম। সে কলেজের ইউনিফর্ম পরেছিল। পার্কারমোড় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই।

মাহিমের বন্ধুদের বরাত দিয়ে শাহজালাল আরও বলেন, পার্কারমোড়ের চারপাশে সংঘর্ষ শুরু হলে আতঙ্কিত হয়ে মাহিম বাড়ির উল্টো দিকে দৌড়াতে শুরু করে। সে সময় তার পায়ে শটগানের ছররা গুলি লাগে।

সারাদিন খোঁজ করেও মাহিমকে পাওয়া যায়নি। রাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে একজন ফোন করেন। তিনি জানান, মাহিম তাদের হেফাজতে আছে। পরদিন ১৯ জুলাই মাহিমকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি, বলেন শাহজালাল।

পরদিন শাহজালাল ফোন করলে ওই ব্যক্তি জানান, মাহিমকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। ওইদিন বিকেলে তিনি জানতে পারেন মাহিমকে আদালতে হাজির করে রংপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত রাত ৮টা ২৪ মিনিটে এক ফেসবুক পোস্টে মাহিমের এক বোন উল্লেখ করেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার গতকাল মাহিমের পরিবারকে তার কার্যালয়ে ডেকেছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, মাহিম সুস্থ আছেন এবং বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে পরিবারের সদস্যদের আদালতে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, আজ আদালতের কার্যক্রম শেষে মাহিমকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার (ক্রাইম) আবু মারুফ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ওই ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত ১৮ জুলাই। সে সময় পুলিশ রংপুরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ ছিল।

‘সে পুলিশকে বলেনি যে সে শিক্ষার্থী। আর তাকে দেখেও বোঝা যায়নি তার বয়স ১৬ বছরের কিছু বেশি। তাকে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় চালান দেওয়া হয়েছে। পরে বিষয়টি জানতে পেরে মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে আইনগতভাবে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে,’ বলেন মারুফ।

এ জাতির সাথে প্রতারণা অনুসন্ধান চলছে

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ১২ দিন ধরে কারাগারে ১৬ বছরের শিক্ষার্থী মাহিম এজাহারে মাহিমের নাম ছিল না কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে

আপডেট টাইম : ০৫:০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর ১২ দিন ধরে রংপুর কারাগারে রয়েছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তিনি দায়িত্বরত পুলিশের জন্য হুমকির কারণ ছিলেন না। তারপরও গত ১৬ জুলাই পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এর কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়।

আবু সাঈদ নিহত: পুলিশের গুলির উল্লেখ নেই এফআইআরে
আরও

আবু সাঈদ নিহত: পুলিশের গুলির উল্লেখ নেই এফআইআরে

তবে পুলিশের প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হননি।

এফআইআরে বলা হয়েছে, ‘বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দিক থেকে গুলি ছুড়তে থাকে এবং ইটের টুকরো নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়।’

রংপুর নগরীর একটি ফটো স্টুডিওর মালিক মো. শাহজালাল বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আমার ছেলে মাহিমকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।’

তিনি আরও জানান, জন্ম সনদ অনুসারে আলফি শাহরিয়ার মাহিমের বয়স ১৬ বছর ১০ মাস। সে রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের কৌঁসুলি (পিপি) রফিক হাসনাইন বলেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলার এজাহারে মাহিমের নাম ছিল না কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মাহিমের বাবা জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি শিশু আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে। আগামী ৪ আগস্ট সেই আবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

শাহজালাল গণমাধ্যমকে বলেন, গত ১৮ জুলাই বাড়ির কাছে পার্কারমোড়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিল মাহিম। সে কলেজের ইউনিফর্ম পরেছিল। পার্কারমোড় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই।

মাহিমের বন্ধুদের বরাত দিয়ে শাহজালাল আরও বলেন, পার্কারমোড়ের চারপাশে সংঘর্ষ শুরু হলে আতঙ্কিত হয়ে মাহিম বাড়ির উল্টো দিকে দৌড়াতে শুরু করে। সে সময় তার পায়ে শটগানের ছররা গুলি লাগে।

সারাদিন খোঁজ করেও মাহিমকে পাওয়া যায়নি। রাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে একজন ফোন করেন। তিনি জানান, মাহিম তাদের হেফাজতে আছে। পরদিন ১৯ জুলাই মাহিমকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি, বলেন শাহজালাল।

পরদিন শাহজালাল ফোন করলে ওই ব্যক্তি জানান, মাহিমকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। ওইদিন বিকেলে তিনি জানতে পারেন মাহিমকে আদালতে হাজির করে রংপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত রাত ৮টা ২৪ মিনিটে এক ফেসবুক পোস্টে মাহিমের এক বোন উল্লেখ করেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার গতকাল মাহিমের পরিবারকে তার কার্যালয়ে ডেকেছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, মাহিম সুস্থ আছেন এবং বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে পরিবারের সদস্যদের আদালতে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, আজ আদালতের কার্যক্রম শেষে মাহিমকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার (ক্রাইম) আবু মারুফ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ওই ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত ১৮ জুলাই। সে সময় পুলিশ রংপুরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ ছিল।

‘সে পুলিশকে বলেনি যে সে শিক্ষার্থী। আর তাকে দেখেও বোঝা যায়নি তার বয়স ১৬ বছরের কিছু বেশি। তাকে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় চালান দেওয়া হয়েছে। পরে বিষয়টি জানতে পেরে মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে আইনগতভাবে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে,’ বলেন মারুফ।

এ জাতির সাথে প্রতারণা অনুসন্ধান চলছে