ঢাকা ০১:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু জুলাই বিপ্লবে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড আজমিরীগঞ্জে  বিয়ের ছয় মাস পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা রায়পুরে দেশীয় শিল্প ও পণ্য মেলায় ভ্রাম্যমান আদালত, নগদ অর্থদণ্ড কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের উঠান বৈঠক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  মোংলায় জলবায়ু ন্যায্যতার গণসংলাপে বক্তারা : সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা দিন অভিনব কায়দায় কুমড়া শাকের আড়ালে গাঁজা পাচারকালে ডিএনসি- কুমিল্লার হাতে ১৩ কেজি গাঁজাসহ আটক ০২ নারী মঠবাড়ীয়া সাফলেজা কচুবাড়ীয়া বসত ঘর ভাঙচুর লুটপাট ও যখম এর অভিযোগ আঃ খালেক হাওলাদার গংদের বিরুদ্ধে

ইনানীতে বিজিবি প্রধান, ৩৩০ জনকে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর

কক্সবাজার থেকে সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৬:২০ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • / ১১৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

আরাকান আর্মির আক্রমণের মুখে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ (বিজিপি) ৩৩০ জন নাগরিককে ফেরত নিয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার মিনিটের দিকে এ হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়।<>এরই মধ্যে সকাল ১১টার দিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ইনানীতে এসে পৌঁছান। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের কাছে বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর করেন।
bjp-8

কক্সবাজারের টেকনাফের নীলা সরকার ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের পালিয়ে আসা ৩৩০ সীমান্তরক্ষীকে ভোর ৫টা থেকে ১২টি বাসে করে উখিয়ার ইনানী উপকূলের নৌবাহিনীর জেটি ঘাট এলাকায় আনা হয়।জানা গেছে, ‘কর্ণফুল ‘ ও ‘বার আউলিয়া’ জাহাজে করে সাগর পথে পালিয়ে আসা ৩৩০ বর্ডার গার্ড পুলিশকে (বিজিপি) মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।

bjp-9

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এসব নাগরিকদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য। এদের মধ্যে বিজিপি, সেনা, ইমিগ্রেশন ও পুলিশের সদস্য রয়েছে। আশ্রয় নেওয়াদের মধ্যে বর্তমানে ৯ জন অসুস্থ রয়েছেন।

তাদের মধ্যে ৫ জন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং গতকালও ৪ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে কয়েক ধাপে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল তারা। পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে আশ্রয় দেয়।

bjp-4

বিজিবিসহ একাধিক সূত্র বলছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়েক দিনের এই ৩৩০ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। বিজিবির অধীনের আহতদেরও চিকিৎসা দেওয়া হয়। উভয় দেশের আলোচনার প্রেক্ষিতে আশ্রয়রত ৩৩০ জনকে হস্তান্তর করা হবে।

তথ্য মতে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনী ’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি-টিএনএলএ, আরাকান আর্মি-এএ এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি-এমএনডিএএ একজোট হয়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। তারা শান, রাখাইন, চীন ও কেয়াহ রাজ্যে লড়াই চালাচ্ছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও সেনাপোস্ট দখল করে ইতিমধ্যে তারা সাফল্য দেখিয়েছে।

bjp-6

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রভাব পড়ছে সীমান্তের এপারের জনগোষ্ঠীর মধ্যেও। যুদ্ধের গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়ছে বাংলাদেশ সীমান্তে। এতে অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ১০-১২ জন।

উখিয়া থানার ওসি মো: শামীম হোসেন বলেন, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তায় সৈকতে আনা হয়েছে। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

bjp-3

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষে গোলাগুলি, মর্টারশেল ও বোমা বিস্ফোরণে টিকে থাকতে না পেরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, উখিয়া উপজেলার পালংখালীর রহমতের বিল এবং টেকনাফের হোয়াইক্যং এর উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে কয়েক দফায় আশ্রয় নেন বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ছাড়াও সেনা সদস্য, পুলিশ সদস্য, ইমিগ্রেশন সদস্য ও বেসামরিক নাগরিকসহ ৩৩০ জন। যার মধ্যে তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে ১৪৮ জন, উখিয়ার রহমতের বিল সীমান্ত দিয়ে ১১৪ জন এবং উলুবনিয়ার সীমান্ত দিয়ে ৬৮ জন বিজিপি সদস্য সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করে। বিজিবি তাদের নিরস্ত্র করে আশ্রয় দেয়।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ইনানীতে বিজিবি প্রধান, ৩৩০ জনকে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর

আপডেট টাইম : ০৬:৫৬:২০ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আরাকান আর্মির আক্রমণের মুখে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ (বিজিপি) ৩৩০ জন নাগরিককে ফেরত নিয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার মিনিটের দিকে এ হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়।<>এরই মধ্যে সকাল ১১টার দিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ইনানীতে এসে পৌঁছান। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের কাছে বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর করেন।
bjp-8

কক্সবাজারের টেকনাফের নীলা সরকার ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের পালিয়ে আসা ৩৩০ সীমান্তরক্ষীকে ভোর ৫টা থেকে ১২টি বাসে করে উখিয়ার ইনানী উপকূলের নৌবাহিনীর জেটি ঘাট এলাকায় আনা হয়।জানা গেছে, ‘কর্ণফুল ‘ ও ‘বার আউলিয়া’ জাহাজে করে সাগর পথে পালিয়ে আসা ৩৩০ বর্ডার গার্ড পুলিশকে (বিজিপি) মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।

bjp-9

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এসব নাগরিকদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য। এদের মধ্যে বিজিপি, সেনা, ইমিগ্রেশন ও পুলিশের সদস্য রয়েছে। আশ্রয় নেওয়াদের মধ্যে বর্তমানে ৯ জন অসুস্থ রয়েছেন।

তাদের মধ্যে ৫ জন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং গতকালও ৪ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে কয়েক ধাপে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল তারা। পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে আশ্রয় দেয়।

bjp-4

বিজিবিসহ একাধিক সূত্র বলছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়েক দিনের এই ৩৩০ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। বিজিবির অধীনের আহতদেরও চিকিৎসা দেওয়া হয়। উভয় দেশের আলোচনার প্রেক্ষিতে আশ্রয়রত ৩৩০ জনকে হস্তান্তর করা হবে।

তথ্য মতে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনী ’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি-টিএনএলএ, আরাকান আর্মি-এএ এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি-এমএনডিএএ একজোট হয়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। তারা শান, রাখাইন, চীন ও কেয়াহ রাজ্যে লড়াই চালাচ্ছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও সেনাপোস্ট দখল করে ইতিমধ্যে তারা সাফল্য দেখিয়েছে।

bjp-6

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রভাব পড়ছে সীমান্তের এপারের জনগোষ্ঠীর মধ্যেও। যুদ্ধের গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়ছে বাংলাদেশ সীমান্তে। এতে অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ১০-১২ জন।

উখিয়া থানার ওসি মো: শামীম হোসেন বলেন, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তায় সৈকতে আনা হয়েছে। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

bjp-3

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষে গোলাগুলি, মর্টারশেল ও বোমা বিস্ফোরণে টিকে থাকতে না পেরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, উখিয়া উপজেলার পালংখালীর রহমতের বিল এবং টেকনাফের হোয়াইক্যং এর উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে কয়েক দফায় আশ্রয় নেন বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ছাড়াও সেনা সদস্য, পুলিশ সদস্য, ইমিগ্রেশন সদস্য ও বেসামরিক নাগরিকসহ ৩৩০ জন। যার মধ্যে তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে ১৪৮ জন, উখিয়ার রহমতের বিল সীমান্ত দিয়ে ১১৪ জন এবং উলুবনিয়ার সীমান্ত দিয়ে ৬৮ জন বিজিপি সদস্য সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করে। বিজিবি তাদের নিরস্ত্র করে আশ্রয় দেয়।