ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে কুপিয়ে জখম

জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
  • আপডেট টাইম : ১০:০৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ১৬৬ ৫০০০.০ বার পাঠক

নির্বাচন ঘিরে নওগাঁয় বাড়তে শুরু করেছে সহিংসতা। এবার প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে শহরের বটতলী মোড় এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত ওই ব্যক্তির নাম রেজাউল ইসলাম ওরফে রেঞ্জা (৬০)। নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পার-নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা। রেজাউল ইসলাম নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন রেঞ্জা। পথে রাত ৮টার দিকে বটতলী মোড় এলাকায় পৌঁছালে তাঁর উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা করা হয়। হামলাকারীরা কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
শনিবার রাতে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফজলুল হক নয়ন বলেন, রাত সাড়ে ৮টার গুরুত্বর জখম অবস্থায় রেঞ্জা নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে এনছিলেন কয়েকজন যুবক। তাঁর ডান পায়ে হাটুর একটু ওপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর গভীর ক্ষত ছিলো। এছাড়া ডান হাতের কবজির নিচে এবং মাঝখানের আঙ্গুলের ওপরে কোপ দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁর হাতের একটু রগ কেটে গিয়েছে। এছাড়া তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের অভিযোগ, নৌকার প্রার্থীর অনুসারী নেতাকর্মীরা রেজাউল ইসলাম রেঞ্জার উপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে। কয়েক দিন আগে নৌকার প্রার্থীর অনুসারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান আমার কর্মী চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আসলাম হোসেনকে ট্রাক প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা করলে প্রাণনাশের হুমকি দেন। নৌকা প্রার্থীর অনুসারী নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।

নওগাঁ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নিজাম উদ্দিন জলিল (জন)। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল হক কমল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের কোন নেতাকর্মী কারোর উপর হামলা করেনি। তাঁদের অভিযোগের সত্যতা কতটুকু সেটা তদন্তসাপেক্ষে বলা যাবে। এ ধরণের হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। পুলিশ নিশ্চয়ই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকের উপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে এ নিয়ে নওগাঁয় ছয়টি সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটলো। এছাড়া প্রতিপক্ষের হাতে নওগাঁর বিভিন্ন সংসদীয় এলাকায় প্রতিপক্ষের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অন্তত ১২টি ঘটনা ঘটেছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে কুপিয়ে জখম

আপডেট টাইম : ১০:০৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

নির্বাচন ঘিরে নওগাঁয় বাড়তে শুরু করেছে সহিংসতা। এবার প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে শহরের বটতলী মোড় এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত ওই ব্যক্তির নাম রেজাউল ইসলাম ওরফে রেঞ্জা (৬০)। নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পার-নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা। রেজাউল ইসলাম নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন রেঞ্জা। পথে রাত ৮টার দিকে বটতলী মোড় এলাকায় পৌঁছালে তাঁর উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা করা হয়। হামলাকারীরা কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
শনিবার রাতে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফজলুল হক নয়ন বলেন, রাত সাড়ে ৮টার গুরুত্বর জখম অবস্থায় রেঞ্জা নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে এনছিলেন কয়েকজন যুবক। তাঁর ডান পায়ে হাটুর একটু ওপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর গভীর ক্ষত ছিলো। এছাড়া ডান হাতের কবজির নিচে এবং মাঝখানের আঙ্গুলের ওপরে কোপ দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁর হাতের একটু রগ কেটে গিয়েছে। এছাড়া তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের অভিযোগ, নৌকার প্রার্থীর অনুসারী নেতাকর্মীরা রেজাউল ইসলাম রেঞ্জার উপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে। কয়েক দিন আগে নৌকার প্রার্থীর অনুসারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান আমার কর্মী চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আসলাম হোসেনকে ট্রাক প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা করলে প্রাণনাশের হুমকি দেন। নৌকা প্রার্থীর অনুসারী নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।

নওগাঁ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নিজাম উদ্দিন জলিল (জন)। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল হক কমল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের কোন নেতাকর্মী কারোর উপর হামলা করেনি। তাঁদের অভিযোগের সত্যতা কতটুকু সেটা তদন্তসাপেক্ষে বলা যাবে। এ ধরণের হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। পুলিশ নিশ্চয়ই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকের উপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে এ নিয়ে নওগাঁয় ছয়টি সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটলো। এছাড়া প্রতিপক্ষের হাতে নওগাঁর বিভিন্ন সংসদীয় এলাকায় প্রতিপক্ষের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অন্তত ১২টি ঘটনা ঘটেছে।