ঢাকা ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

দক্ষতায় সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক ডিজিটাল ব্যাংক

  • নিজস্ব প্রতিবেদন
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩
  • ৭৭ ০.০০০ বার পাঠক

নগদ টাকার ব্যবহার কমানোর অংশ হিসেবে ৮টি ডিজিটাল ব্যাংককে কার্যক্রম পরিচালনার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রচলিত স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করেই ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া যাবে এই পদ্ধতিতে। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী উদ্যোগ।

বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল প্রযুক্তির পরিসরে গত এক যুগে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এ ব্যাপক সাফল্যের পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। এটি একদিকে যেমন আশাব্যঞ্জক, তেমনই আশঙ্কাও রয়েছে। জানা গেছে, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) ‘নগদ’ ও ‘কড়ি’ পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে প্রাথমিকভাবে কার্যক্রম শুরু করবে। আর ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে পৃথক উইং চালুর অনুমোদন দেয়া হয়েছে বিকাশ, ডিজি-১০ ও ডিজিটঅল নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে। আগামী ছয় মাস পর স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, জাপান বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক ও নর্থ ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংক নামে আরো তিনটি ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য প্রধান কার্যালয় থাকবে। তবে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি হবে স্থাপনাবিহীন। অর্থাৎ এই ব্যাংক কোনো ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) সেবা দেবে না। এর নিজস্ব কোনো শাখা বা উপশাখা, এটিএম, সিডিএম অথবা সিআরএমও থাকবে না। সব সেবাই হবে অ্যাপনির্ভর, মুঠোফোন বা ডিজিটাল যন্ত্রে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই সেবা মিলবে। গ্রাহকদের লেনদেনের সুবিধার্থে ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য দিতে পারবে। লেনদেনের জন্য কোনো প্লাস্টিক কার্ড দিতে পারবে না। অবশ্য এই ব্যাংকের সেবা নিতে গ্রাহকেরা অন্য ব্যাংকের এটিএম ও এজেন্টসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। একেকটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। প্রচলিত ধারার ব্যাংক করতে প্রয়োজন হয় ৫০০ কোটি টাকা। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা মূলধন দিতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ ব্যাংকিং লেনদেন ক্যাশলেস করার সরকারের যে লক্ষ্য, তা বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিংই একমাত্র উপায়। তবে বাংলাদেশে এখনও প্রান্তিক অনেক মানুষ প্রচলিত ধারার ব্যাংকিং সেবার আওতাতেও আসেনি। তাদের এই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবার ভেতর কতটা নিয়ে আসা যাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেকের দক্ষতার অভাব এবং প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক মোবাইল ফোন না থাকায় তাদের এ ধরনের ব্যাংকিংয়ের সেবা নেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে যেখানে অনেক সময় প্রচলিত অনেক ব্যাংক নিয়ে অভিযোগ ওঠে, গ্রাহকের দিক থেকে আস্থার সংকট তৈরি হয়, সেখানে এসব ডিজিটাল ব্যাংকের ওপর গ্রাহকরা কতটা আস্থা রাখতে পারবে? দেশে এত ব্যাংক থাকতে ডিজিপাল ব্যাংক কেন- এ প্রশ্ন আসছে সামনে। কারা এটার নিয়ন্ত্রণক হবে? ব্যাংক খাতে সুশানের অভাব রয়েছে। ঋণ কেলেঙ্কারিতে এ খাতের বদনামের শেষ নেই। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যাংক আলাদা ফরম্যাটে আসছে কি? এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় রাখতে হবে। প্রচলিত ব্যাংকের মতো এসব ব্যাংক চলুক, এটা আমরা চাই না। আস্থা-বিশ্বাসে, প্রযুক্তিগত দক্ষতায় সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক ডিজিটাল ব্যাংক।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

১০ বছর পূর্তীতে বিজয় মাহমুদের ফ্রী কোরআন শিক্ষার আসর

দক্ষতায় সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক ডিজিটাল ব্যাংক

আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

নগদ টাকার ব্যবহার কমানোর অংশ হিসেবে ৮টি ডিজিটাল ব্যাংককে কার্যক্রম পরিচালনার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রচলিত স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করেই ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া যাবে এই পদ্ধতিতে। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী উদ্যোগ।

বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল প্রযুক্তির পরিসরে গত এক যুগে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এ ব্যাপক সাফল্যের পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। এটি একদিকে যেমন আশাব্যঞ্জক, তেমনই আশঙ্কাও রয়েছে। জানা গেছে, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) ‘নগদ’ ও ‘কড়ি’ পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে প্রাথমিকভাবে কার্যক্রম শুরু করবে। আর ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে পৃথক উইং চালুর অনুমোদন দেয়া হয়েছে বিকাশ, ডিজি-১০ ও ডিজিটঅল নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে। আগামী ছয় মাস পর স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, জাপান বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক ও নর্থ ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংক নামে আরো তিনটি ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য প্রধান কার্যালয় থাকবে। তবে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি হবে স্থাপনাবিহীন। অর্থাৎ এই ব্যাংক কোনো ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) সেবা দেবে না। এর নিজস্ব কোনো শাখা বা উপশাখা, এটিএম, সিডিএম অথবা সিআরএমও থাকবে না। সব সেবাই হবে অ্যাপনির্ভর, মুঠোফোন বা ডিজিটাল যন্ত্রে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই সেবা মিলবে। গ্রাহকদের লেনদেনের সুবিধার্থে ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য দিতে পারবে। লেনদেনের জন্য কোনো প্লাস্টিক কার্ড দিতে পারবে না। অবশ্য এই ব্যাংকের সেবা নিতে গ্রাহকেরা অন্য ব্যাংকের এটিএম ও এজেন্টসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। একেকটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। প্রচলিত ধারার ব্যাংক করতে প্রয়োজন হয় ৫০০ কোটি টাকা। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা মূলধন দিতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ ব্যাংকিং লেনদেন ক্যাশলেস করার সরকারের যে লক্ষ্য, তা বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিংই একমাত্র উপায়। তবে বাংলাদেশে এখনও প্রান্তিক অনেক মানুষ প্রচলিত ধারার ব্যাংকিং সেবার আওতাতেও আসেনি। তাদের এই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবার ভেতর কতটা নিয়ে আসা যাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেকের দক্ষতার অভাব এবং প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক মোবাইল ফোন না থাকায় তাদের এ ধরনের ব্যাংকিংয়ের সেবা নেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে যেখানে অনেক সময় প্রচলিত অনেক ব্যাংক নিয়ে অভিযোগ ওঠে, গ্রাহকের দিক থেকে আস্থার সংকট তৈরি হয়, সেখানে এসব ডিজিটাল ব্যাংকের ওপর গ্রাহকরা কতটা আস্থা রাখতে পারবে? দেশে এত ব্যাংক থাকতে ডিজিপাল ব্যাংক কেন- এ প্রশ্ন আসছে সামনে। কারা এটার নিয়ন্ত্রণক হবে? ব্যাংক খাতে সুশানের অভাব রয়েছে। ঋণ কেলেঙ্কারিতে এ খাতের বদনামের শেষ নেই। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যাংক আলাদা ফরম্যাটে আসছে কি? এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় রাখতে হবে। প্রচলিত ব্যাংকের মতো এসব ব্যাংক চলুক, এটা আমরা চাই না। আস্থা-বিশ্বাসে, প্রযুক্তিগত দক্ষতায় সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক ডিজিটাল ব্যাংক।