ঢাকা ১২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
কাকরাইল আগুরাগলি এলাকায় মজুমদার ভিলা—৯৪ নং আবাসিক ভবন রাজউক কর্তক অবৈধ নকশায় নির্মাণ করার প্রমাণিত হওয়ায় মালিককে চিঠি পর্ব ২ শ্রীপুরে ওসি’র ঘুষ লেনদেনের অডিও ভাইরাল গুলশানে র‍্যাবের ক্যাশিয়ার শাহ আলমের ইস্পায় গড়ে তুলেছে অপরাধের আখড়া। পর্ব ২ জানাযায় প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে গুরুত্ব পাবে কতটুকু নার্সিং ডিপ্লোমাকে ডিগ্রী সমমান করার দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থান কর্মসূচি ঠাকুরগাঁওয়ে কবরের ওপর থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক খামার তৈরি করায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী দেশে তিন স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম

বন কর্মকর্তাদের টাকা দিলে সুন্দরবনে জেলেদের প্রবেশ বৈধ, না দিলে অবৈধ

ওমর ফারুক
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৩:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ২১৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

সুন্দরবন নির্ভরশীল পেশাজীবি জেলেদের বনের অভ্যন্তরে ঢুকতে গেলে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের টাকা দিতে হয়। পাশ পারমিট (সরকারি রাজস্ব) ছাড়াও অতিরিক্ত এই টাকা না দিলে জেলেরা অবৈধ। বন কর্মকর্তাদের অন্যায় আবদারের এই টকা দিলে সেই জেলে বৈধ। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সুন্দরবন উপকূলের জেলেরা।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় মোংলা থানায় সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবি ও স্থানীয় সুধী সমাজের সাথে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনেই এমন অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী জেলেরা। এসব অভিযোগের যথেষ্ট সত্যতা রয়েছে বলেও অনুষ্ঠিত এই সভায় মত প্রকাশ করেন স্থানীয় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরা। তারা এসময় বলেন, বিষ দিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ নদীতে মাছ শিকারের সাথে বনবিভাগের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িত রয়েছেন। বনবিভাগের এক বোটম্যান মিজানুর রহমান সুন্দরবনকে শেষ করে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। তিন মাস নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও সুন্দরবনে অবৈধভাবে প্রবেশ করে মাছ শিকার করা হয়েছে। এর সাথে বনবিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও প্রভাবশালীরাও জড়িত রয়েছেন। এমন প্রমাণও তুলে ধরেন ভুক্তভোগী জেলে ও জনপ্রতিনিধিরা।

পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে এসব অভিযোগ করেন, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সুনিল কুমার বিশ্বাস, জাতীয় মৎস্য সমিতির মোংলার সভাপতি বিদুৎ মন্ডল, মোংলা মৎস্য বাজার সমিতির সভাপতি আফজাল ফরাজি, সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার, চিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হেসেন, সুধী সমাজের প্রতিনিধি শাজাহান সিদ্দিকী ও জেলে আব্দুর রশিদ।

এসময় অভিযোগকারীদের বক্তব্য শুনে সভায় যোগদান করা পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) খলিলুর রহমান বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট স্টেশনে নতুন যোগদান করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তার উধর্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে বলে সভায় জানান তিনি।

মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুদ্দীনের সভাপতিত্বে সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব চৌধুরী, বাগেরহাট জেলার পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর দাশ, মোংলা রামপাল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার, উপজেলা আ’ লীগের সভাপতি সুনিল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, মোংলা মৎস্য বাজার সমিতির সভাপতি আফজাল ফরাজি, মোংলা মৎস্য বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী আঃ হালিম, নৌ পুলিশের কর্মকর্তা, এবং জেলে, মৌয়াল, মৎস্যজিবীসহ সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেশাজীবীরা।

সভায় খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন অক্সিজেনের ব্যাংক এবং আমাদের মায়ের মত। এই বনকে সবাইকে ভালবাসতে হবে। বনকে ঘিরে যারাই অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিষ দিয়ে সুন্দরবন মাছ ধরা যেকোন উপায়ে বন্ধ করা হবে। এর সাথে জড়িতরা কেউই ছাড় পাবেনা। বনবিভাগের কর্মকর্তাদের আরও স্বচ্ছতার সাথে কাজ করতেও আহবান জানান তিনি।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বন কর্মকর্তাদের টাকা দিলে সুন্দরবনে জেলেদের প্রবেশ বৈধ, না দিলে অবৈধ

আপডেট টাইম : ১০:৪৩:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সুন্দরবন নির্ভরশীল পেশাজীবি জেলেদের বনের অভ্যন্তরে ঢুকতে গেলে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের টাকা দিতে হয়। পাশ পারমিট (সরকারি রাজস্ব) ছাড়াও অতিরিক্ত এই টাকা না দিলে জেলেরা অবৈধ। বন কর্মকর্তাদের অন্যায় আবদারের এই টকা দিলে সেই জেলে বৈধ। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সুন্দরবন উপকূলের জেলেরা।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় মোংলা থানায় সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবি ও স্থানীয় সুধী সমাজের সাথে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনেই এমন অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী জেলেরা। এসব অভিযোগের যথেষ্ট সত্যতা রয়েছে বলেও অনুষ্ঠিত এই সভায় মত প্রকাশ করেন স্থানীয় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরা। তারা এসময় বলেন, বিষ দিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদ নদীতে মাছ শিকারের সাথে বনবিভাগের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িত রয়েছেন। বনবিভাগের এক বোটম্যান মিজানুর রহমান সুন্দরবনকে শেষ করে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। তিন মাস নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও সুন্দরবনে অবৈধভাবে প্রবেশ করে মাছ শিকার করা হয়েছে। এর সাথে বনবিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও প্রভাবশালীরাও জড়িত রয়েছেন। এমন প্রমাণও তুলে ধরেন ভুক্তভোগী জেলে ও জনপ্রতিনিধিরা।

পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে এসব অভিযোগ করেন, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সুনিল কুমার বিশ্বাস, জাতীয় মৎস্য সমিতির মোংলার সভাপতি বিদুৎ মন্ডল, মোংলা মৎস্য বাজার সমিতির সভাপতি আফজাল ফরাজি, সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার, চিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হেসেন, সুধী সমাজের প্রতিনিধি শাজাহান সিদ্দিকী ও জেলে আব্দুর রশিদ।

এসময় অভিযোগকারীদের বক্তব্য শুনে সভায় যোগদান করা পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) খলিলুর রহমান বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট স্টেশনে নতুন যোগদান করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তার উধর্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে বলে সভায় জানান তিনি।

মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুদ্দীনের সভাপতিত্বে সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব চৌধুরী, বাগেরহাট জেলার পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর দাশ, মোংলা রামপাল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার, উপজেলা আ’ লীগের সভাপতি সুনিল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, মোংলা মৎস্য বাজার সমিতির সভাপতি আফজাল ফরাজি, মোংলা মৎস্য বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী আঃ হালিম, নৌ পুলিশের কর্মকর্তা, এবং জেলে, মৌয়াল, মৎস্যজিবীসহ সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেশাজীবীরা।

সভায় খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন অক্সিজেনের ব্যাংক এবং আমাদের মায়ের মত। এই বনকে সবাইকে ভালবাসতে হবে। বনকে ঘিরে যারাই অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিষ দিয়ে সুন্দরবন মাছ ধরা যেকোন উপায়ে বন্ধ করা হবে। এর সাথে জড়িতরা কেউই ছাড় পাবেনা। বনবিভাগের কর্মকর্তাদের আরও স্বচ্ছতার সাথে কাজ করতেও আহবান জানান তিনি।