ঢাকা ০২:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

ঢাকায় গণপরিবহনে যৌন হয়রানি অযাচিত স্পর্শ-ধাক্কা-বাজে মন্তব্যের শিকার ৪৭ শতাংশ নারী

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

গণপরিবহনে চলাচল করা কিশোরী, তরুণী ও নারীদের ৬৩ শতাংশ নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়। এর মধ্যে প্রায় ৪৭ শতাংশ যৌন হয়রানির শিকার হয়। যৌন হয়রানির শিকার এই নারীদের প্রায় অর্ধেক সংখ্যক (৪৫ শতাংশ) পরবর্তী সময়ে মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

‘ঢাকা শহরে গণপরিবহনে হয়রানি: কিশোরী এবং তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব’ শিরোনামের এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এসব যৌন হয়রানির মধ্যে রয়েছে গণপরিবহনে ওঠা-নামার সময় চালকের সহকারীর অযাচিত স্পর্শ, বাসে জায়গা থাকার পরও যাত্রীদের গা ঘেঁষে দাঁড়ানো, বাজেভাবে স্পর্শ করা, ধাক্কা দেওয়া, বাজে মন্তব্য। জরিপে অংশগ্রহণকারী বেশির ভাগ নারী ঝামেলা এড়াতে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেননি।

যৌন নিপীড়নকারীদের মধ্যে যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। গণপরিবহনের চালক ও চালকের সহকারীর হাতেও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন অনেকে। নিপীড়নকারীদের মধ্যে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা বেশি।

গণপরিবহনে নারীদের যৌন হয়রানি: কিছুই কি করার নেই

সভ্যতার শুরুতে নারীরা ঘরে নির্যাতিত হতেন। আর এখন সভ্যতার বিকাশের ফলে ঘরে নির্যাতিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বাইরেও নির্যাতিত হচ্ছেন! বর্তমানে গণপরিবহনে নারীদের প্রতি যৌন হয়রানির ভয়াবহতা আমরা দেখতে পাই।

পৃথিবীর শুরুর দিকে কোনো গাড়ি বা গণপরিবহন আবিষ্কার হয়নি। সেসময় নারীরা যে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে শুধু ঘরেই বিভিন্নভাবে নিগ্রহের শিকার হতেন, সেই পরিস্থিতি আজও সমাজে বিদ্যমান। কিন্তু যখনই সভ্যতার বিকাশ ও নগরায়ণের কারণে গণপরিবহন ব্যবহারের অপরিহার্যতা তৈরি হলো এবং নারীদের ক্ষমতায়নের কারণে তাঁদের ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বাড়ল, তখন গণপরিবহনে যৌন হয়রানির বিষয়টি নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা হিসেবে যুক্ত হলো।

নারীরা বাসে ওঠার সময় বাসচালকের সহকারী ও অন্যান্য পুরুষ যাত্রী দ্বারা অযাচিতভাবে শরীরে বিভিন্নভাবে স্পর্শ, অশ্রাব্য ভাষায় নারীদের লক্ষ্য করে কটূক্তি, ফাঁকা বাসে নারীদের ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। শুধু তা–ই নয়, গাড়িতে ধর্ষণ করে সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী নারীকে হত্যা করে নির্জন স্থানে ফেলে যাওয়ার মতো ঘটনার সংখ্যাও বেড়ে চলেছে।

গণপরিবহনে নারী নির্যাতনের এমন ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে নির্যাতনের অনেকগুলো কারণ বেরিয়ে আসে। যার মধ্যে তিনটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে—এক. নারীরা তাঁদের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের প্রতিবাদ না করে সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের প্রতি সমর্থন প্রদর্শন করার প্রবণতা। দুই. নারী হেনস্তা ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত মানুষের প্রতিবাদমূলক তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে নীরব ভূমিকা পালন। তিন. আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকায় গণপরিবহনে যৌন হয়রানি অযাচিত স্পর্শ-ধাক্কা-বাজে মন্তব্যের শিকার ৪৭ শতাংশ নারী

আপডেট টাইম : ০৮:৩০:৫৯ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৩ জুন ২০২২

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

গণপরিবহনে চলাচল করা কিশোরী, তরুণী ও নারীদের ৬৩ শতাংশ নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়। এর মধ্যে প্রায় ৪৭ শতাংশ যৌন হয়রানির শিকার হয়। যৌন হয়রানির শিকার এই নারীদের প্রায় অর্ধেক সংখ্যক (৪৫ শতাংশ) পরবর্তী সময়ে মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

‘ঢাকা শহরে গণপরিবহনে হয়রানি: কিশোরী এবং তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব’ শিরোনামের এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এসব যৌন হয়রানির মধ্যে রয়েছে গণপরিবহনে ওঠা-নামার সময় চালকের সহকারীর অযাচিত স্পর্শ, বাসে জায়গা থাকার পরও যাত্রীদের গা ঘেঁষে দাঁড়ানো, বাজেভাবে স্পর্শ করা, ধাক্কা দেওয়া, বাজে মন্তব্য। জরিপে অংশগ্রহণকারী বেশির ভাগ নারী ঝামেলা এড়াতে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেননি।

যৌন নিপীড়নকারীদের মধ্যে যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। গণপরিবহনের চালক ও চালকের সহকারীর হাতেও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন অনেকে। নিপীড়নকারীদের মধ্যে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা বেশি।

গণপরিবহনে নারীদের যৌন হয়রানি: কিছুই কি করার নেই

সভ্যতার শুরুতে নারীরা ঘরে নির্যাতিত হতেন। আর এখন সভ্যতার বিকাশের ফলে ঘরে নির্যাতিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বাইরেও নির্যাতিত হচ্ছেন! বর্তমানে গণপরিবহনে নারীদের প্রতি যৌন হয়রানির ভয়াবহতা আমরা দেখতে পাই।

পৃথিবীর শুরুর দিকে কোনো গাড়ি বা গণপরিবহন আবিষ্কার হয়নি। সেসময় নারীরা যে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে শুধু ঘরেই বিভিন্নভাবে নিগ্রহের শিকার হতেন, সেই পরিস্থিতি আজও সমাজে বিদ্যমান। কিন্তু যখনই সভ্যতার বিকাশ ও নগরায়ণের কারণে গণপরিবহন ব্যবহারের অপরিহার্যতা তৈরি হলো এবং নারীদের ক্ষমতায়নের কারণে তাঁদের ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বাড়ল, তখন গণপরিবহনে যৌন হয়রানির বিষয়টি নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা হিসেবে যুক্ত হলো।

নারীরা বাসে ওঠার সময় বাসচালকের সহকারী ও অন্যান্য পুরুষ যাত্রী দ্বারা অযাচিতভাবে শরীরে বিভিন্নভাবে স্পর্শ, অশ্রাব্য ভাষায় নারীদের লক্ষ্য করে কটূক্তি, ফাঁকা বাসে নারীদের ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। শুধু তা–ই নয়, গাড়িতে ধর্ষণ করে সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী নারীকে হত্যা করে নির্জন স্থানে ফেলে যাওয়ার মতো ঘটনার সংখ্যাও বেড়ে চলেছে।

গণপরিবহনে নারী নির্যাতনের এমন ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে নির্যাতনের অনেকগুলো কারণ বেরিয়ে আসে। যার মধ্যে তিনটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে—এক. নারীরা তাঁদের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের প্রতিবাদ না করে সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের প্রতি সমর্থন প্রদর্শন করার প্রবণতা। দুই. নারী হেনস্তা ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত মানুষের প্রতিবাদমূলক তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে নীরব ভূমিকা পালন। তিন. আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব।