প্রত্যেক মানুষের জীবনে কোনো না কোনো দুঃখ থাকে
- আপডেট টাইম : ০৬:১৪:২৭ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২১
- / ২৪৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
আসাদুজ্জামান নূর, একাধারে একজন অভিনেতা, আবৃত্তিকার, নাট্যনির্দেশক, ব্যবসায়ী এবং সংসদ সদস্য। দায়িত্ব পালন করেছেন সরকারের সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসাবেও। তবে এতসব কিছুর পরও নিজেকে একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে পরিচয় দিতে যেমন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তেমনি একজন অভিনেতা হিসাবেও গর্বিত বলে জানিয়েছেন। আজ জীবনের ৭৬ বসন্তে পা রাখছেন এ অভিনেতা। দিনটি উদযাপন উপলক্ষ্যে আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ একটি বিশেষ আয়োজনও করছে। জন্মদিন উদযাপন ও আরও অন্যান্য প্রসঙ্গে আজকের ‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি।
* আপনার কাছে জন্মদিনের বিশেষত্ব কী?
** সত্যি বলতে কি, জন্মদিন নিয়ে কিন্তু বিশেষ কিছু বলার নেই। দিনটিতে সকাল থেকেই প্রিয় কিছু মানুষ আমার বাসায় আসেন। আমার সঙ্গে সময় কাটান, ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। অনেকেই কেক নিয়ে আসেন। কিন্তু আমি কখনো কেক কাটি না। এ বিষয়টি আমি এড়িয়ে চলি।
* ‘তোমারই হোক জয় আসাদুজ্জামান নূর’ নামে শিল্পকলা একাডেমিতে আপনার জন্মদিন নিয়ে আজ বিশেষ আয়োজন হচ্ছে…
** জীবনের ৭৫ বসন্ত পেরিয়ে এসেছি। তাই বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ দিনটি বিশেষভাবে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। তারা একটি কমিটিও গঠন করেছে বলে জেনেছি। আজ বিকালে আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে আমি সব সময়ই চাই অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিকভাবেই কাটুক আজকের দিনটি।
* ছোটবেলায় কীভাবে কাটত আপনার জন্মদিন?
** ছোটবেলায়ও আমার জন্মদিন বিশেষভাবে উদ্যাপন করা হতো না। বাড়িতে হয়তো সেদিন মা একটু বেশি রান্না করতেন। আর তেমন বিশেষ কিছু নয়।
* অভিনয়ে কম দেখা যাচ্ছে আপনাকে…
** রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার কারণে অভিনয়ে সময় দেওয়াটা আমার জন্য অনেক কঠিনই হয়ে পড়েছে। যে কারণে ধীরে ধীরে অভিনয়ে আমার উপস্থিতি কমে যায়। তবে রাজনীতিতে এসে সাধারণ মানুষের পাশে এসে সরাসরি দাঁড়াতে পেরেছি এটা অনেক আনন্দের, অনেক ভালোলাগারও। কারণ সাধারণ মানুষের সমস্যা নিজে জেনে তাদের সহযোগিতা করতে পারছি। এমনিতে গল্প এবং চরিত্র যদি আমার মনের মতো হয় তাহলে অভিনয় করতেও ভালো লাগে। কিছুদিন আগেও একটি নাটকে কাজ করেছি। দর্শকের ভালোবাসাটাই আসলে আমাদের অনেক বড় প্রাপ্তি।
* আপনার সন্তানদের মধ্যে কী অভিনয়ে কারও আগ্রহ আছে?
** আমার এক ছেলে এক মেয়ে। অভিনয়ের প্রতি ছেলে সুদীপ্তর কোনো আগ্রহই ছিল না। কিন্তু মেয়ে সুপ্রভার মধ্যে কিছুটা আগ্রহ ছিল। পড়াশোনার চাপে সেদিকে আর খুব বেশি মনোযোগ দিতে পারেনি।
* অবসরে কী করেন সাধারণত?
** আমি কিন্তু খুব বেশি অবসর যে পাই এমনটি নয়। তবে অবসরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার চেষ্টা করি। বই পড়ি, আবৃত্তি করি, সিনেমা দেখি, সর্বোপরি পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাতে ভালোবাসি আমি।
* জীবনের এ পর্যায়ে এসে আপনার উপলব্ধি কী?
** জীবনে কখনোই কিন্তু আমি পরিকল্পনা করে এগিয়ে চলিনি। এক সময় ছাত্ররাজনীতি করতাম। তার পর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম। তারপর চাকরি জীবন, সেখান থেকে শুরু হলো অভিনয় জীবন। এক সময় এমপি হলাম। পরে ২০১৪ সালে এসে সংস্কৃতিমন্ত্রী হলাম। এখানে একটি কথা না বললেই নয় যে আমি যা কিছুই করেছি আমার জীবনে তা বেশ গুরুত্ব দিয়ে করেছি, মনোযোগ দিয়ে করেছি। যে কারণে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমি সফল হয়েছি। তাই আমার কাছে জীবন হচ্ছে আগামীর পথে এগিয়ে চলা।
* কোনো দুঃখবোধ কী আপনাকে পীড়া দেয়?
** প্রত্যেক মানুষের জীবনেই হয়তো কোনো না কোনো দুঃখ থাকে। আমারও আছে। আমার বাবা আবু নাজেম মোহাম্মদ আলী যখন মারা যান তখন তার সুচিকিৎসা করার মতো টাকা ছিল না আমার। হয়তো বা অনেক টাকা থাকলে বাবার সুচিকিৎসা হতো। এ দুঃখবোধটা রয়েছে আমার।