ঢাকা ০২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

ইংরেজি নববর্ষ ও ইসলামি মূল্যবোধ

  • সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৮:১৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ১ জানুয়ারি ২০২১
  • ৩০৮ ০.০০০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

ইসলামে ইংরেজি নববর্ষ আলাদাভাবে মূল্যায়নের কোনো অবকাশ নেই। মহান আল্লাহ্ বলেন, ‘তিনি সূর্যকে প্রচণ্ড দিপ্তি দিয়ে/চাঁদ বানিয়ে দিলেন স্নিগ্ধতা ভরে,/বছর গণনা ও হিসাবের তরে’ (কাব্যানুবাদ, সুরা ইউনুস, আয়াত: ০৫)।

পবিত্র কুরআনে বার মাসে এক বছর প্রসঙ্গে আছে- ‘নভোমণ্ডল-ভূমণ্ডল সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই আল্লাহ্ বারটি মাস নির্ধারণ করেছেন…’ (সুরা তওবা আয়াতাংশ: ৩৬)। নববর্ষ, বঙ্গাব্দ বা ইংরেজি বর্ষবরণ, হোক না তা হিজরি সনের প্রথম দিন। এখানে সত্যকথা হলো, আমরা মুসলমান এবং ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গে শৈথিল্যের অবকাশ ইসলাম রাখেনি এক দিনের জন্যও।

আমরা জানি, সুস্থ-সংস্কৃতি মানব মননের সুকোমল অভিব্যক্তি, যা ভূগোল ও বিশ্বাসের সীমা ছাড়িয়ে পরিশীলিত ঐক্য ও বিবেকের জাগরণ ঘটায়। তবে যেসব উত্সব আয়োজন ইবাদতের প্রতিবন্ধক, স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, সময় ও অর্থের অপচয় ইত্যাদির বাহুল্য থাকে তা একজন ঈমানদারের জন্য অশোভন।

প্রিয়নবীর (স) নবুওয়াতপূর্ব জাহিলিয়্যাত বা ‘মুর্খতার যুগে’র উত্সবে ছিল না নৈতিকতার ছোঁয়া। আইয়্যামি জাহিলিয়্যাতের আরবরা যুদ্ধবিদ্যা, অতিথি সেবা, পশুপালন, দেশভ্রমণ, আন্তঃদেশীয় ব্যবসায়-বাণিজ্য ইত্যাদিতে ছিল বিখ্যাত। শিল্প-সাহিত্যেও কম যায়নি। সে সময়ের ইতিহাস খ্যাত ছিল ‘উকাজের মেলা’। কবিতা উত্সবের সর্বশ্রেষ্ট সাতটি কবিতা স্থান পেয়েছিল পবিত্র কাবার দেওয়ালে যাকে বলা হয় ‘সাবউল মুয়াল্লাকাত’। ছিল নববর্ষ পালন ও ঘৌড়দৌড় উপলক্ষ্যে প্রচলিত দুটি উত্সব ‘নওরোজ’ ও ‘মেহেরগান’। এত সব কিছুর মধ্যে ছিল না মানবতা-নৈতিকতার ছোঁয়া। বরং ছিল সংস্কৃতির নামে অপ-সংস্কৃতির অবাধ্যতা। উত্সবের বেলেল্লাপনার পটভূমিতেই সুরা মায়েদার ৯০ নম্বর আয়াতে কতিপয় অপকর্মকে ‘ঘৃণিত শয়তানের কাজ’ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

অথচ পবিত্র কুরআনের সতর্কবাণী হলো-‘হে ঈমানদারগণ, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। যে কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন তো শয়তান নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ করবে’ (সুরা আন-নূর, আয়াত: ২১)। আমরা মুসলমান বিধায় সব কিছুর ব্যাখ্যা বুঝব ইসলামের আলোকে। কেননা, প্রিয় নবী (স) বলেন ‘যে অন্য কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণ বা সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে’ (আবু দাউদ)। সুতরাং বিদেশি সংস্কৃতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে আমরা বিরত থাকব। যে কোনো নববর্ষকে আমরা আল্লাহর নিয়ামত মনে করে তার শুকরিয়া আদায় করব। অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতা করব, শীতার্ত ও দুস্থ-দরিদ্র মানুষের খোঁজ-খবর নিব। পরবর্তী দিন ও মাসগুলিতে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি সঠিকভাবে পালন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করব। এ ব্যাপারে হবো আঙ্গীকারাবদ্ধ। উত্সবের আড়ালে অশ্লীলতা, বেহায়পনা, হারাম কাজ ও ফেতনা-ফ্যাসাদ থেকে বিরত থাকব। সরকারি নির্দেশনা মেনে চলব।

লেখক :সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

ইসলামিক স্টাডিজ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ, গাজীপুর।

সময়ের কন্ঠ পএিকার।।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভৈরবে আগানগরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষ

ইংরেজি নববর্ষ ও ইসলামি মূল্যবোধ

আপডেট টাইম : ০৮:১৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ১ জানুয়ারি ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

ইসলামে ইংরেজি নববর্ষ আলাদাভাবে মূল্যায়নের কোনো অবকাশ নেই। মহান আল্লাহ্ বলেন, ‘তিনি সূর্যকে প্রচণ্ড দিপ্তি দিয়ে/চাঁদ বানিয়ে দিলেন স্নিগ্ধতা ভরে,/বছর গণনা ও হিসাবের তরে’ (কাব্যানুবাদ, সুরা ইউনুস, আয়াত: ০৫)।

পবিত্র কুরআনে বার মাসে এক বছর প্রসঙ্গে আছে- ‘নভোমণ্ডল-ভূমণ্ডল সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই আল্লাহ্ বারটি মাস নির্ধারণ করেছেন…’ (সুরা তওবা আয়াতাংশ: ৩৬)। নববর্ষ, বঙ্গাব্দ বা ইংরেজি বর্ষবরণ, হোক না তা হিজরি সনের প্রথম দিন। এখানে সত্যকথা হলো, আমরা মুসলমান এবং ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গে শৈথিল্যের অবকাশ ইসলাম রাখেনি এক দিনের জন্যও।

আমরা জানি, সুস্থ-সংস্কৃতি মানব মননের সুকোমল অভিব্যক্তি, যা ভূগোল ও বিশ্বাসের সীমা ছাড়িয়ে পরিশীলিত ঐক্য ও বিবেকের জাগরণ ঘটায়। তবে যেসব উত্সব আয়োজন ইবাদতের প্রতিবন্ধক, স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, সময় ও অর্থের অপচয় ইত্যাদির বাহুল্য থাকে তা একজন ঈমানদারের জন্য অশোভন।

প্রিয়নবীর (স) নবুওয়াতপূর্ব জাহিলিয়্যাত বা ‘মুর্খতার যুগে’র উত্সবে ছিল না নৈতিকতার ছোঁয়া। আইয়্যামি জাহিলিয়্যাতের আরবরা যুদ্ধবিদ্যা, অতিথি সেবা, পশুপালন, দেশভ্রমণ, আন্তঃদেশীয় ব্যবসায়-বাণিজ্য ইত্যাদিতে ছিল বিখ্যাত। শিল্প-সাহিত্যেও কম যায়নি। সে সময়ের ইতিহাস খ্যাত ছিল ‘উকাজের মেলা’। কবিতা উত্সবের সর্বশ্রেষ্ট সাতটি কবিতা স্থান পেয়েছিল পবিত্র কাবার দেওয়ালে যাকে বলা হয় ‘সাবউল মুয়াল্লাকাত’। ছিল নববর্ষ পালন ও ঘৌড়দৌড় উপলক্ষ্যে প্রচলিত দুটি উত্সব ‘নওরোজ’ ও ‘মেহেরগান’। এত সব কিছুর মধ্যে ছিল না মানবতা-নৈতিকতার ছোঁয়া। বরং ছিল সংস্কৃতির নামে অপ-সংস্কৃতির অবাধ্যতা। উত্সবের বেলেল্লাপনার পটভূমিতেই সুরা মায়েদার ৯০ নম্বর আয়াতে কতিপয় অপকর্মকে ‘ঘৃণিত শয়তানের কাজ’ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

অথচ পবিত্র কুরআনের সতর্কবাণী হলো-‘হে ঈমানদারগণ, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। যে কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন তো শয়তান নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ করবে’ (সুরা আন-নূর, আয়াত: ২১)। আমরা মুসলমান বিধায় সব কিছুর ব্যাখ্যা বুঝব ইসলামের আলোকে। কেননা, প্রিয় নবী (স) বলেন ‘যে অন্য কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণ বা সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে’ (আবু দাউদ)। সুতরাং বিদেশি সংস্কৃতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে আমরা বিরত থাকব। যে কোনো নববর্ষকে আমরা আল্লাহর নিয়ামত মনে করে তার শুকরিয়া আদায় করব। অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতা করব, শীতার্ত ও দুস্থ-দরিদ্র মানুষের খোঁজ-খবর নিব। পরবর্তী দিন ও মাসগুলিতে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি সঠিকভাবে পালন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করব। এ ব্যাপারে হবো আঙ্গীকারাবদ্ধ। উত্সবের আড়ালে অশ্লীলতা, বেহায়পনা, হারাম কাজ ও ফেতনা-ফ্যাসাদ থেকে বিরত থাকব। সরকারি নির্দেশনা মেনে চলব।

লেখক :সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

ইসলামিক স্টাডিজ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ, গাজীপুর।

সময়ের কন্ঠ পএিকার।।