সেমাই ও চিনির বিক্রি বেড়েছে বাংলাদেশের
- আপডেট টাইম : ১১:২৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১
- / ২৮৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
অর্থনৈতিক রিপোর্টার।।
ঈদ সামনে রেখে রাজধানীর বাজারগুলোতে সেমাই ও চিনির বিক্রি বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বিভিন্ন মসলার বিক্রি।
বিক্রি বাড়লেও নতুন করে সেমাই ও চিনির দাম বাড়েনি। তবে আগে থেকেই বাড়তি দামে বিক্রি হওয়া চিনি কিনতে ক্রেতাদের বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। সে হিসাবে সেমাইয়ের দাম কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে। এর সঙ্গে স্বস্তি বিরাজ করছে গরম মসলার দামেও।
সচরাচর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গরম মসলার দাম বাড়লেও এবার তেমনটি ঘটেনি। ঈদ কেন্দ্রীক গরম মসলার দাম বাড়েনি। বরং কিছুটা কমেছে। অবশ্য মাংস রান্নার অপরিহার্য মসলা আদা ও রসুনের দাম কিছুটা বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সেমাই, চিনি ও মসলার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় রয়েছে। তুলনামূলক বেশি ভিড় দেখা গেছে মসলার দোকানে। বিভিন্ন মসলার দোকানে ভিড় করে ক্রেতারা দারুচিনি, এলাচ, জিরা, জয়ফল, কাজুবাদামসহ বিভিন্ন পণ্য কিনছেন।
রামপুরার মোল্লাবাড়ি বাজারে পাশাপাশি থাকা তিনটি মসলার দোকানেই ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা যায়। এর একটি দোকান থেকে বিভিন্ন মসলা কেনা রাফিয়া আক্তার বলেন, ‘ঈদের তো আর বাকি নেই। ঈদের সময় মসলা একটু বেশিই লাগবে। তাই একটু বাড়তি মসলা কিনে রাখছি।
তিনি বলেন, ‘একটা সময় গ্রামের বাড়িতে দিয়ে ঈদ করতাম। গত ৪-৫ বছর ধরে ঢাকাতেই ঈদ করছি। প্রতি বছরই কোরবানি দেয়া হয়। আল্লাহর রহমতে এবারও কোরবানি দেব। সোমবারের মধ্যে গরু কেনার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
এই বাজারের ব্যবসায়ী মো. আলামিন বলেন, ‘কোরবানির ঈদ, মসলা একটু বেশি বিক্রি হবে এটাই স্বাভাবিক। ২-৩ ধরে ভালো বিক্রি হচ্ছে। আশা করি ঈদের আগের দিন পর্যন্ত বিক্রি ভালো হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিক্রি বাড়লেও এবার মসলার দাম বাড়েনি। বরং এলাচ, জিরা ও দারুচিনির দাম স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এখন কম দামেই বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজার থেকে আমরা কম দামে কিনতে পারাই কম দামে বিক্রি করতে পারছি।’
মসলার দোকানের পাশাপাশি কিছু মুদি দোকানে ক্রেতাদের ভিড় করে সেমাই-চিনি কিনতে দেখা যায়। বাড্ডার একটি দোকান থেকে সেমাই-চিনি কেনা আরাফাত বলেন, ‘করোনা থাকুক আর যাই থাকুক ঈদের দিন সেমাই-চিনি লাগবেই। ঈদের তো আর বেশিদিন বাকি নেই। তাই এখনই সেমাই-চিনি কিনে রাখছি।’
তিনি বলেন, ‘দুই প্যাকেট লাচ্ছা সেমাই কিনেছি। লাচ্ছা সেমাইয়ের দাম তুলনামূলক কমই আছে। কিন্তু চিনির দাম অনেক। এক কেজি প্যাকেট চিনির দাম ৭৮ টাকা নিয়েছে। চিনির এতো দাম হওয়া ঠিক না।’
ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার সেমাই গত বছরের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন পরিচিত ব্র্যান্ডের প্যাকেটের ২০০ গ্রাম লাচ্ছা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। আর ৫০০ গ্রামের স্পেশাল লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে মানভেদে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। খোলা চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি।
কারওয়ানবাজারের সেমাই বিক্রেতা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের সময় সেমাই বিক্রি একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। গত কয়েকদিন ধরে ভালোই বিক্রি হচ্ছে। তবে করোনা না থাকলে বিক্রি আরও বেশি হতো। তারপরও যা বিক্রি হচ্ছে খারাপ না। আশাকরি সোমবার ও মঙ্গলবার বিক্রি আরও বাড়বে।’
অপরদিকে খুচরা পর্যায়ে শুকনো মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। হলুদের কেজি বক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকায়। ভারতীয় জিরার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। দারুচিনির কেজি বক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা। এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা কেজি। লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এ পণ্যগুলোর দাম বাড়া-কমার ঘটনা ঘটেনি।
খুচরা বাজারের মতো পাইকারি বাজারেও গরম মসলার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। পাইকারিতে ভারতীয় জিরার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। চারুচিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৬০ টাকা। এলাচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ থেকে ২ হাজার ৪৫০ টাকা। আর লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৪০ টাকা।
মৌলভীবাজারের মসলার পাইকারি ব্যবসায়ী মো. রুবেল বলেন, ‘পাইকারি বাজারের বিক্রি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। যখন আমাদের মূল বিক্রির সময়, সে সময়ই এবার লকডাউন পড়েছে। লকডাউন খুললেও আমাদের বিক্রি বাড়েনি। এখন যা বিক্রি হবে খুচরা দোকানে।