কুড়িগ্রামে অবৈধভাবে সেচ লাইসেন্স সংযোগ -লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্র
- আপডেট টাইম : ১২:৪৫:১৭ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১
- / ২৭৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
রুহুল আমিন রুকু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে রেজুলেশনে স্বারক ছাড়াই দেয়া হয়েছে সেচ লাইসেন্স। অবৈধভাবে এসব সেচ লাইসেন্স এবং সংযোগ দিতে একটি সিন্ডিকেট চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ-লাখ টাকা। এতে করে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে আর প্রকৃত কৃষকগণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কুড়িগ্রাম উলিপুর উপজেলায় থেতরাই ইউনিয়নের তেলিপাড়া কিশোরপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম এবং পাশের ইউনিয়নের বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের আঠারো পাইকা গ্রামের বাসিন্দা সাব মিয়ার লাইসেন্স নং একই। সাইফুল ইসলাম-১১৮৫ সেচ লাইসেন্স নিয়েছেন ২০১৮সালে। আর ২০১৯ সালে একই লাইসেন্স নম্বর দিয়ে সেচ লাইসেন্স দেয়া হয়েছে সাব মিয়াকে। নিজস্ব জমি না থাকার কারণে সেচ লাইসেন্স না জুটলে আবারো সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে নেবার চেষ্ঠা করছেন ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মালতিবাড়ি দিঘর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম। অনেকেই সেচ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেও লাইসেন্স না পেলেও উপজেলার গুনাইগাছ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এবং তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম দুটি সেচ লাইসেন্স পেয়েছেন। সেচ লাইসেন্স এবং সংযোগ নিতে সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য খলিলুর রহমানসহ কয়েকজনকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে লাইসেন্স পাওয়ার কথা স্বীকার করেন সাব মিয়া। চুক্তির ২ লাখ টাকা নিলে ও কাজ শেষ না করে
বাকি টাকা নিতে মরিয়া হয়ে সিন্ডিকেট ক্রকে পুরো টাকা না দেয়ায় এখনো সেচ লাইসেন্স না পেলেও অনায়াসে অবৈধভাবে সেচ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অনিয়ম করে একই লাইসেন্স নং দিয়ে অন্যকে লাইসেন্স দেয়া অবৈধ। কেউ একটি লাইসেন্স না পেলেও নিজেদের নামে দুটি সেচ লাইসেন্স নিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এবং তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। আশরাফুলের নিজের নাম কোন সম্পত্তি না থাকলেও কিভাবে সেচ লাইসেন্সের আবেদন করেছেন সেটা জানা নেই আশরাফুলের মামা। তবে এমন অবৈধ সেচ লাইসেন্স এবং সংযোগের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার মেলে না। আর এসব অবৈধ লাইসেন্স এবং সংযোগ পাওয়া যায় লাখ-লাখ টাকার মাধ্যমে সিন্ডিকেট চক্রকের সাহায্যে।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের উপ-সহকারি কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র রায় বলেন,আশরাফুলের বিষয়ে লিখিত অভিযোগের তদন্ত চলছে। তবে সাব মিয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানা নেই তার।
জানাযায়, উপজেলায় চলতি বছর সেচ লাইসেন্সের জন্য আবেদন পড়েছে প্রায় ৩শতাধিক। এরমধ্যে ২২১টি আবেদনকে বৈধ এবং ৭৬টি আবেদনকে অবৈধ ঘোষণা করে সেচ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় গত ২৭জানুয়ারি। গত পাঁচ মাসেও সেচ কমিটির অনুষ্ঠিত সভার রেজুলেশন স্বারক না বসিয়েও মোটা অংকের উৎকোচের মাধ্যমে বাতিলকৃত আবেদন থেকে ৭১টি আবেদনকে সেচ লাইসেন্স দিতে মরিয়া একটি সিন্ডিকেট চক্র। এসবের সত্যতা পাওয়া যায় ৪সদস্যের পরিদর্শন কমিটি বাতিলকৃত আবেদনে পরিদর্শন কমিটির সকলের স্বাক্ষর না থাকায়।
উলিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু বলেন সরকারি বিধিকে তোয়াক্কা না করেই রেজুলেশনে স্বারক নাম্বার না বসিয়ে সেচ লাইসেন্স দেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি নিজেও স্বীকার করেন একটি সিন্ডিকেট চক্র লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
তবে এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন,আমার জানা মতে রেজুলেশনে স্বারক নং দেয়া হয়েছে। সেচ লাইসেন্সে কোন অনিয়ম বা অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে সেগুলো বাতিল করাও সম্ভব বলে তিনি জানান।#