ঢাকা ০৮:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে গাজীপুর মহানগরীর বাইপাস চৌরাস্তা থেকে বোর্ডবাজার পর্যন্ত বিশাল মিছিল ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে সকল মেহনতি শ্রমিকদের প্রতি প্রাণঢালা অভিনন্দন নাগরপুর-দেলদুয়ার আসনের সকলের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম এর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক, মে দিবস উপলক্ষে, পিরোজপুর জেলার, মঠবাড়ীয়া উপজেলায়, রিকশা-ভ্যান অটো শ্রমিক দলের বর্ণাঢ্য রেলী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটার যানজট। ছবি: সবুজ সংকেত’ পেয়ে বিএনপি মিত্রদের নির্বাচনি তোড়জোড় পাবনা পার- ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন বিএনপির ৪ও৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র কর্মী সম্মেলন চট্টগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ২৮ টি ঘর হস্তান্তর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ধর্ষণের সহযোগিতা চেয়ে সাংবাদিক আবু হাসানকে ডেকে নিয়ে অপহরণের চেষ্টা,গ্রেফতার ২ নারী শ্রমিকদের মধ্যে বৈষম্য দূর করে ইসলামী শ্রমনীতি চালুর মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে দেশের শ্রমজীবী সমাজ তাদের হাতকে শক্তিশালী হাতিয়ারে পরিণত করবেনঃ অধ্যক্ষ নূরুন্নিসা সিদ্দীকা

মিতু হত্যা ॥ নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি আসামি মুছার স্ত্রী পান্নার

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১১:১০:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুন ২০২১
  • / ২৬৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

চট্টগ্রাম অফিস।।

চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার ‘পলাতক’ আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার পরদিনই পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন।

জবানবন্দি দেওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কায় মঙ্গলবার দুপুরে তিনি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেন বলে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কী জানান।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ঘটনার পর তাকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়। গতকাল তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন। তাই নিজের ক্ষতি হতে পারে ভেবে তিনি জিডি করেছেন বলে জানিয়েছেন।

কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মধ্যম ঘাগড়া গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। তিনি নগরীর বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার এলাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকতেন।

পান্না আক্তার বলেন, আমি নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি।

এখন কেউ হুমকি দিয়েছে কিনা বা কোনো কারণে নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন কিনা জানতে চাইলে পান্না আক্তার বলেন, এখন হুমকি দেয়নি। পাঁচ বছর আগে দিয়েছিল।

সোমবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মো. রেজার কাছে পান্না আক্তার ১৬৪ ধারায় সাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মিতু হত্যার সঙ্গে মুছার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কী জানেন- এমন প্রশ্নে পান্না গত ১৩ মে বলেন, আমি তাকে (মুছা) জিজ্ঞেস করেছি, কিন্তু সে কখনো খোলাসা করে কিছু বলেনি। তবে পুলিশ তুলে নিয়ে যাবার আগে একবার ফোনে বলতে শুনেছি… ‘আমি সমস্যায় পড়ে গেছি। আপনার কথায় বিশ্বাস করে কাজ করেছি। আমার পরিবারের কিছু হলে মুখ খুলতে বাধ্য হব স্যার’।

“২০০৩ সাল থেকে আমার স্বামী বাবুল আক্তারের বিশ্বস্ত সোর্স ছিল। বাবুল সাহেবের যত কাজ, প্রায় সব কিছুর পেছনে মুছার ভূমিকা ছিল। বাবুলের সাথে মুছার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তিনি বিদেশে গেলেও আমার স্বামীর সাথে যোগাযোগ রাখতেন।”

একসময় সৌদি আরবে থাকা মুছা ২০০২ সালে দেশে ফিরে বালু সরবরাহের ব্যবসা শুরু করেন। তখনই পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার ‘সখ্য’ গড়ে ওঠে।

২০০৩ সালে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর মুছা তার সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করে।

পুলিশ মুছাকে ‘পলাতক’ বললেও তার স্ত্রী পান্নার দাবি, ২০১৬ সালের ২২ জুন সকালে বন্দরনগরীর কাঠগড় এলাকার একটি বাসা থেকে তার স্বামীকে ‘পুলিশই’ তুলে নিয়ে যায়। সেদিনই মুছা ‘আত্মসমর্পণের’ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেও দাবি পান্নার।

মিতু হত্যায় তার বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের করা হত্যা মামলার প্রধান আসামি পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার আর তার ‘সোর্স’ হিসেবে পরিচিত কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা।

কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা এখনো ‘পলাতক’ বলে জানান মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

২০১৬ সালের ৫ জুন বন্দরনগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন চট্টগ্রামে বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু।

পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদফতরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল। হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে তিনি মামলা দায়ের করেন।

ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য শুরুতে জঙ্গিদের সন্দেহ করা হলেও ২৬ জুন মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম ও মো. আনোয়ার নামে দুজনকে গ্রেফতারের পর তদন্তকারীরা বলেছিলেন খুনিরা ‘পেশাদার অপরাধী’।

ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভিডিও দেখে পুলিশ যাদের চিহ্নিত করেছিল, তাদের একজন হলেন বাবুলের ‘সোর্স’ মুছা। আদালতে ওয়াসিমের দেওয়া জবানদন্দিতেও মুছার নাম এসেছিল।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে মামলাটি আসে পিবিআইয়ের হাতে। এরপর গত ১১ মে মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই।

পরদিন ১২ মে পিবিআই প্রধান সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বাবুল নিজেই তার স্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে ‘জড়িত’।এরপর বাবুলের করা মামলাটিতে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আর বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় নিজের জামাতাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নতুন এ মামলায় বাবুলের ‘সোর্স’ মুছাকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। আসামির তালিকায় নাম থাকা মুছার বড়ভাই সাইফুল আলম শিকদার সাক্কুকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পিবিআই’র দাবি মিতু হত্যার পর লোক মারফত কয়েক দফায় মুছাকে টাকা পাঠিয়েছিল বাবুল আক্তার।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মিতু হত্যা ॥ নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি আসামি মুছার স্ত্রী পান্নার

আপডেট টাইম : ১১:১০:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুন ২০২১

চট্টগ্রাম অফিস।।

চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার ‘পলাতক’ আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার পরদিনই পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন।

জবানবন্দি দেওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কায় মঙ্গলবার দুপুরে তিনি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেন বলে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কী জানান।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ঘটনার পর তাকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়। গতকাল তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন। তাই নিজের ক্ষতি হতে পারে ভেবে তিনি জিডি করেছেন বলে জানিয়েছেন।

কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মধ্যম ঘাগড়া গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। তিনি নগরীর বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার এলাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকতেন।

পান্না আক্তার বলেন, আমি নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি।

এখন কেউ হুমকি দিয়েছে কিনা বা কোনো কারণে নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন কিনা জানতে চাইলে পান্না আক্তার বলেন, এখন হুমকি দেয়নি। পাঁচ বছর আগে দিয়েছিল।

সোমবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মো. রেজার কাছে পান্না আক্তার ১৬৪ ধারায় সাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মিতু হত্যার সঙ্গে মুছার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কী জানেন- এমন প্রশ্নে পান্না গত ১৩ মে বলেন, আমি তাকে (মুছা) জিজ্ঞেস করেছি, কিন্তু সে কখনো খোলাসা করে কিছু বলেনি। তবে পুলিশ তুলে নিয়ে যাবার আগে একবার ফোনে বলতে শুনেছি… ‘আমি সমস্যায় পড়ে গেছি। আপনার কথায় বিশ্বাস করে কাজ করেছি। আমার পরিবারের কিছু হলে মুখ খুলতে বাধ্য হব স্যার’।

“২০০৩ সাল থেকে আমার স্বামী বাবুল আক্তারের বিশ্বস্ত সোর্স ছিল। বাবুল সাহেবের যত কাজ, প্রায় সব কিছুর পেছনে মুছার ভূমিকা ছিল। বাবুলের সাথে মুছার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তিনি বিদেশে গেলেও আমার স্বামীর সাথে যোগাযোগ রাখতেন।”

একসময় সৌদি আরবে থাকা মুছা ২০০২ সালে দেশে ফিরে বালু সরবরাহের ব্যবসা শুরু করেন। তখনই পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার ‘সখ্য’ গড়ে ওঠে।

২০০৩ সালে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর মুছা তার সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করে।

পুলিশ মুছাকে ‘পলাতক’ বললেও তার স্ত্রী পান্নার দাবি, ২০১৬ সালের ২২ জুন সকালে বন্দরনগরীর কাঠগড় এলাকার একটি বাসা থেকে তার স্বামীকে ‘পুলিশই’ তুলে নিয়ে যায়। সেদিনই মুছা ‘আত্মসমর্পণের’ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেও দাবি পান্নার।

মিতু হত্যায় তার বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের করা হত্যা মামলার প্রধান আসামি পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার আর তার ‘সোর্স’ হিসেবে পরিচিত কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা।

কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা এখনো ‘পলাতক’ বলে জানান মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

২০১৬ সালের ৫ জুন বন্দরনগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন চট্টগ্রামে বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু।

পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদফতরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল। হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে তিনি মামলা দায়ের করেন।

ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য শুরুতে জঙ্গিদের সন্দেহ করা হলেও ২৬ জুন মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম ও মো. আনোয়ার নামে দুজনকে গ্রেফতারের পর তদন্তকারীরা বলেছিলেন খুনিরা ‘পেশাদার অপরাধী’।

ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভিডিও দেখে পুলিশ যাদের চিহ্নিত করেছিল, তাদের একজন হলেন বাবুলের ‘সোর্স’ মুছা। আদালতে ওয়াসিমের দেওয়া জবানদন্দিতেও মুছার নাম এসেছিল।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে মামলাটি আসে পিবিআইয়ের হাতে। এরপর গত ১১ মে মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই।

পরদিন ১২ মে পিবিআই প্রধান সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বাবুল নিজেই তার স্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে ‘জড়িত’।এরপর বাবুলের করা মামলাটিতে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আর বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় নিজের জামাতাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নতুন এ মামলায় বাবুলের ‘সোর্স’ মুছাকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। আসামির তালিকায় নাম থাকা মুছার বড়ভাই সাইফুল আলম শিকদার সাক্কুকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পিবিআই’র দাবি মিতু হত্যার পর লোক মারফত কয়েক দফায় মুছাকে টাকা পাঠিয়েছিল বাবুল আক্তার।