পরিবারের অভিভাবক যিনি, তিনি আগে থেকেই বন্দি সাজানো এক জীঘাংসার মামলায়; শুধু বন্দিই নন, ফাঁসির দণ্ডাদেশ নিয়ে অপেক্ষা করছেন যেকোনো দিন পৃথিবীকে বিদায় জানানোর। পিতার অনুপস্থিতিতে পরিবারের হাল ধরেছেন যুবক ছেলে। শত অশ্রুকে বুকের ভেতর সুপ্ত রেখে মা, বোন, স্ত্রী, কন্যাদের আগলে রেখেছেন যুবক।
একদিন তাকেও তুলে নেওয়া হলো মায়ের সামনে থেকে, স্ত্রীর বাহুডোর থেকে, শিশুকন্যাদের নিদারুণ আকুতিকে পেছনে ফেলে। হারিয়ে গেলেন তিনি। কোথায়? কেউ জানে না! কেউ না!
তারপর শুধুই অন্ধকার। যেখানে এক চিলতে আলোও নেই। জীবনমৃত্যুর মাঝামাঝি এক অদ্ভুত ভয়ংকর জীবন। প্রতিক্ষণ মৃত্যুর অপেক্ষা। প্রতিক্ষণ যন্ত্রণাকাতর। প্রতিটি মুহূর্ত অনিশ্চিত একরাশ তীব্র কষ্টে জড়ানো।
বাবাকে কি ফাঁসি দিয়ে ফেলা হয়েছে? মা, জায়া ও মেয়েরা কি বেঁচে আছে? তারা মুক্ত নাকি বন্দি? আমি এখানে আছি, তারা কি জানে? আমি কি এখানে মারা যাব? মেরে ফেলা হবে? নাকি কোনোদিন বের হতে পারব? সেই দিনটি কখন? কত দিন ও রাত পেরোলে? অথবা সপ্তাহ মাস বছর? উত্তর দেওয়ার কেউ নেই; চারদিকে চারটি নির্বাক জানালাহীন দেয়াল ছাড়া!
এভাবে কেটে যায় ৮টি বছর। আটবার বসন্ত। কিন্তু আট বছরে কোনো ফুল ফোটেনি বন্দি মানুষটির জন্য। অথবা তার পরিবারের জন্যও। বরং অবিরত অশ্রুর বর্ষাই ছিল তাদের ঋতু। মজলুমের অশ্রুমুখর চোখের জোয়ার একদিন সত্যি সত্যি বর্ষা নিয়ে এলো এ দেশের বুকে। হলো বর্ষাবিপ্লব!
অনিশ্চিত আলোছায়ায় অবরুদ্ধ জীবনের ওপার থেকে ফিরলেন সে যুবক। কিন্তু প্রায়বৃদ্ধ হয়ে। জীবনের সোনালি সময়কে হারিয়ে। দুঃসহ বন্দিজীবনের নির্বাক বেদনার স্মৃতি নিয়ে...
সেই নির্বাক বেদনাকে বহন করতে রাজি হলো কিছু সাদাকালো পৃষ্ঠা। আসছে আয়নাঘরের বন্দিজীবনের উপাখ্যান নিয়ে মীর আহমাদ বিন কাসেম আরমানের বই...
আয়নাঘরে অবরুদ্ধ জীবন।।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ বোরহান হাওলাদার জসিম, সহ-সম্পাদক মোসাম্মৎ সাথী আক্তার, নির্বাহী সম্পাদক, সরকার জামাল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, মাহফুজুর রহমান দীপ্ত, অতিরিক্ত মফস্বল, সম্পাদক জসীমউদ্দীন রাজিব বার্তা সম্পাদক মোঃ ফোরকান কাজী
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয় : ৪৩, হাটখোলা রোড চৌধুরী মল), টিকাটুলী, ঢাকা-১২০৩
সম্পাদকীয় কার্যালয় :১৯০,সি জামে মসজিদ রোড ফকিরাপুল মতিঝিল ঢাকা -১০০০