ছবি: আল জাজিরা
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় যুদ্ধ বন্ধে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর হচ্ছে আজ সোমবার। লোহিত সাগর উপকূলে মিসরের পর্যটন নগরী শারম আল-শেখে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসির যৌথ সভাপতিত্বে সম্মেলনে এ শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর হবে।
শনিবার মিসরের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০টির বেশি দেশের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধ, শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের প্রচেষ্টা জোরদার করতে এবং টেকসই আঞ্চলিক নিরাপত্তার নতুন যুগ শুরুর প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে।
গাজার জন্য ২৭ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা যুক্তরাজ্যেরগাজার জন্য ২৭ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা যুক্তরাজ্যের
সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ উপস্থিত থাকবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এছাড়া জার্মানি, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্দান, সৌদি আরব, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সম্মেলনে থাকবেন।
তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু উপস্থিত থাকবেন কি না, তা স্পষ্ট জানা যায়নি। অপরদিকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য হুসাম বাদরান জানান, সম্মেলনে হামাসের কোনো প্রতিনিধি সরকারি উপস্থিত থাকবেন না। তারা বরং কাতারি ও মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় চুক্তির বিষয়ে যাবতীয় তৎপরতা চালাবেন।
এর আগে বুধবার শারম আল-শেখে পরোক্ষ আলোচনার পর গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে সম্মতি জানায় ইসরাইল ও হামাসের প্রতিনিধিদল। দুপক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দেয় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। যুদ্ধবিরতির পর ইসরাইলি হামলার মুখে নিজেদের আবাস ছেড়ে যাওয়া গাজাবাসী বাড়ি ফিরতে শুরু করেন।
শনিবার গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর পাঁচ লাখ স্থানীয় বাসিন্দা গাজা শহরে ফিরেছেন।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা অনুসারে প্রথম ধাপের হলুদ সীমারেখায় ইসরাইলি সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। সোমবার চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পরপরই গাজায় আটক থাকা জীবিত ২০ জিম্মি ও ইসরাইলের কারাগারে থাকা দুই হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
গাজা যুদ্ধ শেষ: ট্রাম্পগাজা যুদ্ধ শেষ: ট্রাম্প
এরমধ্যে গাজায় ইসরাইলি হামলায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজ করছেন ফিলিস্তিনিরা। ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে বুলডোজার ব্যবহার করছেন তারা।
এক বুলডোজার অপারেটর আলি আল-আত্তার বলেন, গাজার ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা বর্ণনাতীত।
তিনি বলেন, ‘চলাচলের রাস্তা চালু করতেই অন্তত এক মাস সময় লাগবে, যাতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় লোকজন যেতে পারে। বুলডোজারগুলোর অবস্থাও ভালো না। আমি যেটি চালাচ্ছি, সেটির তেল লিক করে এবং এটিকে সারানো প্রয়োজন।’
গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাতিসংঘের সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট ছবিতে যা বোঝা যায়, তাতে শুধু গাজা শহরেই ৪১ হাজার বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায়, পুরো শহর ৮০ লাখ কিউবিক মিটার ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।
এদিকে, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার ব্যবস্থাপনায় গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ শুরু করেছে। শান্তি পরিকল্পনা অনুসারে প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন ৪০০ ট্রাক মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজায় ঢুকবে।
রোববার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ধ্বংসস্তূপ থেকে ১১৭ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া সাতজন নিহত ও ৩৩ জন আহত হন।
সব মিলিয়ে দুই বছরের আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮০৬ এবং আহতের সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজার ৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ বোরহান হাওলাদার জসিম, সহ-সম্পাদক মোসাম্মৎ সাথী আক্তার, নির্বাহী সম্পাদক, সরকার জামাল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, মাহফুজুর রহমান দীপ্ত, অতিরিক্ত মফস্বল, সম্পাদক জসীমউদ্দীন রাজিব বার্তা সম্পাদক মোঃ ফোরকান কাজী
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয় : ৪৩, হাটখোলা রোড চৌধুরী মল), টিকাটুলী, ঢাকা-১২০৩
সম্পাদকীয় কার্যালয় :১৯০,সি জামে মসজিদ রোড ফকিরাপুল মতিঝিল ঢাকা -১০০০