দীর্ঘ সতেরো বছর পর দেশে আগত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে এক নজর দেখার অদম্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ঢাকার তিনশ ফিট এলাকায় সমবেত হয়েছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর এবং পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী।এই বিশাল জনসমাগমের পেছনে ছিল নিরলস প্রস্তুতি পরিকল্পনা এবং আত্মত্যাগের এক উজ্জ্বল উদাহরণ যার বড় একটি অংশের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম মহানগরের হেভি ওয়েট নেতা বেলায়েত হোসেন বুলু চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এবং ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিন নাহি চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব।
পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের এই সু-সংগঠিত প্রস্তুতিকে সফল করতে দিন রাত এক করে কাজ করেন পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক এবং দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম আরিফ।
স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের জন্য মাথায় পরার ক্যাপ টি-শার্ট এবং যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।সকালের নাস্তা দুপুরের খাবার রাতের ডিনারসহ পুরো সময় জুড়ে খাবার পানীয় এবং থাকা খাওয়ার সুশৃঙ্খল আয়োজনও করা হয়।এই সব আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতারা এবং পাঁচলাইশ থানার নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা।ব্যস্ত নগরী চট্টগ্রাম থেকে তারা যাত্রা করেন ঢাকার উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র প্রিয় নেতার আগমনকে স্বচক্ষে দেখার আশায় এবং তার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা প্রকাশের জন্য।
গত তেইশ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে ধারাবাহিকভাবে নেতাকর্মীরা ঢাকার পথে রওনা হন।কেউ ট্রেনে কেউ বাসে কেউবা নিজ উদ্যোগে পৌঁছে যান রাজধানীতে।তাদের এই সফরের যাবতীয় খরচ বহন করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ।এতে করে যে কোনো ধরনের আর্থিক অসুবিধা দূর করে দেওয়া হয় যাতে সাধারণ কর্মীরাও নির্ভার মনে প্রিয় নেতাকে বরণ করে নিতে পারেন।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল সংগঠিত প্রস্তুতি। পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক এবং দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম আরিফ নিজেই পুরো প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করেন।কারা যাবে কোথা থেকে যাত্রা শুরু করবে কার দায়িত্ব কী হবে কারা খাবারের দায়িত্ব দেখবে কারা দলের পতাকা এবং ব্যানারের দায়িত্বে থাকবে সব কিছু সুশৃঙ্খলভাবে ভাগ করে দেন তিনি।ফলে ঢাকার তিনশ ফিট এলাকায় পৌঁছে চট্টগ্রাম থেকে আসা নেতাকর্মীরা খুব সহজেই নিজেদের দলে দলে সংগঠিত করে উপস্থিত হতে পেরেছেন।
নেতাকর্মীদের হাতে ছিল ধানের শীষের ছোট পতাকা আর শরীরে ছিল স্বেচ্ছাসেবক দলের নামাঙ্কিত টি-শার্ট। মাথায় ছিল সাদা ক্যাপ।এই একরূপ সাজসজ্জা ঢাকার তিনশ ফিট এলাকায় আলাদা এক আবহ সৃষ্টি করেছিল।দূর থেকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছিল এরা সবাই চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন।অনেকেই বলছিলেন এত সুন্দর সমন্বিত প্রস্তুতি অনেক দিন দেখা যায়নি।
তারেক রহমানের আগমনকে ঘিরে এই উচ্ছ্বাসের পেছনে রয়েছে সতেরো বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা।রাজনৈতিক প্রতিকূলতা নানা মামলায় দেশের বাইরে থাকতে হয়েছে এই নেতাকে।তাই বাংলাদেশে ফিরে এসে নিজ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করার সুযোগ তৈরি হওয়ায় চট্টগ্রামের কর্মীদের মনে নেমে আসে আনন্দের বন্যা।সেই আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ছিল তাদের চোখে মুখে কণ্ঠে এবং আচরণে।
নেতাকর্মীদের জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাবারের যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল তা ছিল প্রশংসনীয়।সকালে গরম নাস্তা দুপুরে ভাত মাংস ডাল সবজি এবং রাতে আবার ভাতসহ নানা আয়োজন ছিল।সকালের নাস্তা রাতের ভাত এবং দুপুরের খাবারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় এবং মহানগর ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।এতে করে কেউই না খেয়ে থাকতে হয়নি বরং সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কাটাতে পেরেছেন।
মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম আরিফ বলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন কর্মী হিসেবে নেতাকর্মীদের পাশে থাকা আমার দায়িত্ব।আমাদের নেতারা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা মাঠে তা বাস্তবায়ন করেছি।যেসব ভাইয়েরা দেশের দূর প্রান্ত থেকে এসে কষ্ট করে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে যোগ দিয়েছেন তাদের জন্য আমরা যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।তিনি আরও বলেন রাজনীতি মানে ত্যাগ আর ভালোবাসা। আমাদের নেতাকর্মীরা তা প্রমাণ করেছেন ঢাকায় এসে।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক বেলায়েত হোসেন বুলু বলেন তারেক রহমান আমাদের প্রেরণা আমাদের সাহস।তিনি দেশে ফিরে এসেছেন এটি আমাদের জন্য গর্বের।তাই নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঢাকায় গেছেন।তাদের যেন কোনো কষ্ট না হয় সেজন্য দলের পক্ষ থেকে আমরা যথাসাধ্য ব্যবস্থা নিয়েছি।
সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিন নাহি বলেন সংগঠনের শক্তি ঐক্যে। আমরা দেখেছি সবাই এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন।পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দল বিশেষভাবে প্রশংসার দাবিদার।তারা সংগঠনগতভাবে খুব সুন্দর প্রস্তুতি নিয়েছে।
নেতাকর্মীদের চোখেমুখে ছিল এক ধরনের স্বপ্ন।তারা বলছিলেন তারেক রহমান ফিরে এসেছেন মানে গণতন্ত্রের লড়াই নতুন গতিতে এগিয়ে যাবে।তারা বিশ্বাস করেন এই দেশে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।সেই বিশ্বাস থেকে তারা ঢাকায় গিয়ে প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য তারেক জিয়া নামে পরিচিত বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বাংলাদেশে উপস্থিত হন পঁচিশ ডিসেম্বর দুই হাজার পঁচিশ খ্রিস্টাব্দে।তার এই আগমনকে কেন্দ্র করে গোটা দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় আলোচনা।দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে বরণ করে নিতে নানাবিধ প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলও সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অভূতপূর্ব আয়োজন করে।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের জুনিয়র এবং সিনিয়র পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ত্যাগ ও পরিশ্রম।তারা কেউ দিনমজুর কেউ ব্যবসায়ী কেউ ছাত্র কেউ প্রবাসে থাকা পরিবারের একমাত্র সম্বল।তবুও ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা ভুলে তারা দাঁড়িয়েছেন দলের পাশে।চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে যাত্রার সময়ও তারা ছিলেন শৃঙ্খলাপূর্ণ এবং পরস্পরের প্রতি সহযোগিতাপূর্ণ।
নানান বয়সের মানুষ এই সফরে অংশ নিয়েছেন।কারও কাঁধে ছিল দলের পতাকা কারও হাতে ছিল ব্যানার কারও গলায় ঝোলানো ছিল তারেক রহমানের ছবি।তাদের কণ্ঠে ছিল স্লোগান ভালোবাসা এবং প্রত্যাশার অম্লান সুর।
এই সফরের সময় নেতাকর্মীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে দলীয়ভাবে যেসব দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছিল তার বড় অংশের সমন্বয় করেন মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম আরিফ।কেউ যদি পথ হারায় বা কোনো সমস্যা হয় তাহলে যেন দ্রুত সহায়তা পায় সে জন্য আগে থেকেই যোগাযোগের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছিল।এতে করে কোনো বড় ধরনের সমস্যা ছাড়াই পুরো সফর সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।
ঢাকার তিনশ ফিট এলাকায় যখন প্রিয় নেতা উপস্থিত হন তখন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন নেতাকর্মীরা।অনেকের চোখে জল নেমে আসে।তারা বলেন এ যেন স্বপ্নের মতো মুহূর্ত। সতেরো বছরের অপেক্ষার অবসান হলো আজ।
চট্টগ্রাম থেকে আসা নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকেই বলেন এই সফর তাদের জীবনের স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে। কারণ এটি শুধু রাজনৈতিক সমাবেশ ছিল না বরং ছিল আবেগ অনুভূতি ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগের এক বিরল সমাহার।
স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে দেওয়া টি শার্ট এবং মাথার ক্যাপ অনেকেই যত্ন করে রেখে দিয়েছেন স্মৃতির অংশ হিসেবে।তারা বলছেন এটি শুধু একটি পোশাক নয় বরং এটি তাদের সংগ্রামের প্রতীক।
এই পুরো আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল একটি সুসংগঠিত শক্তি।নেতা কর্মীদের মধ্যে যে আন্তরিকতা বোঝাপড়া এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ লক্ষ্য করা গেছে তা ভবিষ্যতে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সবশেষে বলা যায় তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে চট্টগ্রাম মহানগর এবং পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যে প্রস্তুতি এবং দায়িত্বশীলতার পরিচয় পাওয়া গেছে তা সংগঠনের ইতিহাসে গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পাবে। এই উদ্যোগের অন্যতম কারিগর মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম আরিফসহ সকল নেতাকর্মীকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষও।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ বোরহান হাওলাদার জসিম, সহ-সম্পাদক মোসাম্মৎ সাথী আক্তার, বার্তা সম্পাদক মোঃ ফোরকান কাজী
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয় : ৪৩, হাটখোলা রোড চৌধুরী মল), টিকাটুলী, ঢাকা-১২০৩
সম্পাদকীয় কার্যালয় :১৯০,সি জামে মসজিদ রোড ফকিরাপুল মতিঝিল ঢাকা -১০০০
ইমেইলঃ-D[email protected]
© SomoyerKonthaNewspaper@