গুম ফেরত সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল’র বাক স্বাধীনতা হরণ

- আপডেট টাইম : ০১:৩৫:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫
- / ১ ১৫০.০০০ বার পাঠক
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের ফেসবুক আইডি বন্ধ: মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা হরণের আরেকটি উদাহরণ নয় কি?
অন্যায় অনিয়ম দুর্নীতি গুম খুন চাঁদাবাজি দখলবাজি ক্ষমতার অপব্যবহার সন্ত্রাস ছিনতাই ধর্ষণ রাহাজানি মানবাধিকার স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে আপোষহীন একজন দেশ প্রেমিক প্রতিবাদী বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের শিকার পেশাদার সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল এর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বন্ধ করে দেওয়ার অর্থ সত্য প্রকাশে বাধা দান এবং বাকস্বাধীনতা হরণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল নয় কি?
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল,বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সব সময় তথ্য প্রমান সহ বস্তুনিষ্ঠ ধারাবাহিক সংবাদ সংবাদ প্রকাশিত করার কারণে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলের শিকার হয়ে ২০২০ সালে নিখোঁজ হন। কাজল’র নিখোঁজ এর সংবাদ তৎকালীন সময়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ফালাও করে প্রকাশিত হতে থাকলে নিখোঁজের ৫৩ দিন দিন পর সাংবাদিক কাজল যশোরের বেনাপোল সীমান্ত এলাকা থেকে উদ্ধার হন।নিখোঁজ থেকে উদ্ধারের পরে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ভোগ করেন। সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম কাজল সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন যে,তার ফেসবুক আইডি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন,তার গুমের সঙ্গে জড়িত তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ফেসবুকে লেখালেখি করার কারণেই তার গুমের সাথে জড়িত গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করার জন্য এই ন্যাক্কারজনক পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাতে করে তার ৫৩ দিন গুমের লহমর্ষক ঘটনাগুলো দেশ ও জাতির সামনে প্রকাশিত করতে না পারেন।সাংবাদিক কাজল আরও বলেন আওয়ামী লীগ সরকারের গুম খুন অন্যায় অনিয়ম দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার চাঁদাবাজি মাদক ব্যবসা ভূমিদস্যুতা দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে দেশ ও জনগণের স্বার্থে তথ্য প্রমান সহ সংবাদ প্রকাশিত করার কারণে তাকে গুম করা হয়েছিল,কিন্তু ৫৩ দিন গুম থাকার সময়েও তার ফেসবুক আইডি বন্ধ করার মতো দুঃসাহস করেনি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
কাজল অভিযোগ করেন,বর্তমান সরকার এবং গুমের সাথে জড়িত আসামিরা মিলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে ভুয়া আইডির মাধ্যমে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করিয়েছে যাতে করে তার নিজের গুম এর ৫৩ দিনের সেই অমানবিক নির্যাতনের লোহমোর্ষক বর্ণনা এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম থেকে ফেরত আসা এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের পক্ষে প্রকৃত সত্য প্রকাশিত করে বিচারের দাবি নিয়ে দেশের আপামর জনগণের মাঝে জাগরণ তৈরির কাজকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য “এই সরকার এবং গুমের আসামিরা মিলে আমার ফেসবুক বন্ধ করিয়েছে।”
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল বর্তমান সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন:- কোটা বিরোধী দুঃশাসন অত্যাচার নির্যাতন খুন গুম দুর্নীতি মাদক ব্যবসা ক্ষমতার অপব্যবহার বাক স্বাধীনতা হরণ জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা ভোটাধিকার হরণ বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ২০২৪ শে জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে বিতাড়িত করার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করার পর আজ আমি সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের ফেসবুক আইডি বন্ধ করে দিয়ে বর্তমান সরকার কি আমার গুমের সাথে জড়িতদের রক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছে?
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল’র ফেসবুক আইডি বন্ধ করে দেওয়ার এই ঘটনা বাংলাদেশের বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনরা। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে কিছু হাইকোর্টে স্থগিত হয়েছে। তবে, তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার ঘটনা একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই পরিস্থিতি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং সাংবাদিক সংগঠনগুলো এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। তারা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে বাধা সৃষ্টি করে এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
সাংবাদিক কাজলের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। এই ধরনের ঘটনা রোধে বর্তমান সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধান স্বীকৃত রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ সাংবাদিকতা। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়া এবং সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।