ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন না করলে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের পরিবর্তে নতুন সংঘ গঠিত হতে পারে। মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে নান্দাইলে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে সাঈদী-মুজাহিদের কবর জিয়ারতের পথে নেতাকর্মীদের বহনকারী বাস দুর্ঘটনার কবলে, নিহত ৩ বাগেরহাটে বাণিজ্যিক ভবনে ভয়াবহ আগুন, এক নারীর মৃত্যু ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ ড. ইউনূসের বলিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতি : এব্যাপারে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে হরিরামপুরে তারুণ্যের উৎসব -২০২৫ বিজয়ীদের পুরস্কার বিতারন করা হয় ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ে,এস এস সি-২০২৫ এর বিদায় সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন টঙ্গীতে মারধর ও মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি কথিত যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ শহিদ মিনারে ২ দফা দাবি নিয়ে ‘বিডিআর কল্যাণ পরিষদের’ অবস্থান

ড. ইউনূসের বলিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতি : এব্যাপারে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫৬:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

বিএনপির সাম্প্রতিক অতীতের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে যে তারা বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের মনোভাব বা সেন্টিমেন্ট সম্পর্কে পুরাপুরি অবগত নয়। বিএনপির বর্তমান হাইকমান্ড সম্পর্কে এই কথাটি এই মুহূর্তে প্রযোজ্য কিনা সেটি সঠিক বলা যাচ্ছে না। তবে ঢাকার প্রধান সারির নেতৃত্ব যে বর্তমান জনমত সম্পর্কে অবহিত নন সেটি নিঃসন্দেহে বলা যায়। গত বেশকিছুদিন ধরে বিএনপির ঢাকার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সংবিধান সংস্কার, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন, বাংলাদেশের প্রতি ভারতের বর্তমান এ্যাটিচ্যুট ইত্যাদি সম্পর্কে তারা যেসব উক্তি করছেন সেগুলোর মধ্যে জনমতের কোনো প্রতিফলন নাই। বরং তাদের এসব উক্তি যেন অনেকটা ভারত এবং আওয়ামী লীগের কন্ঠস্বর বলে অনেকে ধারণা করছেন। এই ধরণের সর্বশেষ উক্তিটি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার প্রধানের মধ্যকার বৈঠককে দুই দেশের জন্য ‘আশার আলো’ হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত শুক্রবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক নিয়ে এরকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বিমসটেকের সাইডলাইনে বৈঠক হয়েছে, এটা (বৈঠক) খুব আনন্দের কথা। আমরা মনে করি যে, ভূণ্ড রাজনীতি এবং বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির যে প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশ-ভারতের এই অঞ্চলের যে প্রেক্ষাপট সেই প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ( মুহাম্মদ ইউনূস) এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি (নরেন্দ্র মোদী) সাহেবের বৈঠকটা আমাদের সামনে একটা আশার আলো তৈরি করছে। ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের মধ্যে যে একটা বিটারনেস (তিক্ততা) তৈরি হয়েছিলো সেই বিটারনেসটা তৈরি যেন আর বেশি সামনে না যায় অথবা এটা যেন কমে আসে সেখানে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি যতদূর দেখেছি, তাতে করে আমার মনে হয়েছে এই ব্যাপারে দুজনই যথেষ্ট আন্তরিক এবং এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মানুষকে এবং ভারতের মানুষকে দুই দেশের মানুষের উপকার করবে।
নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ রাজনৈতিক মহল ভেবে পাচ্ছেন না যে মির্জা ফখরুল ইউনূস মোদি বৈঠকে কোথায় আশার আলো দেখলেন? বরং যে কোনো সাধারণ পাঠকের নিকটও এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ভারত যে ড. ইউনূসের সরকার সম্পর্কে কঠোর মনোভাব নিয়েছেন সেটি তিনি কোনো রখাঢাক না করে ড. ইউনূসকে সোজা সাপ্টা জানিয়ে দিয়েছেন। এই বৈঠকে ভারত উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়েছে।
সম্পর্কের অবনতির প্রশ্ন
নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূসকে বলেছেন যে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে যেন কোনো অবনতি না ঘটে সে ধরণের কোনো উক্তি করার ব্যাপারে বাংলাদেশ যেন সতর্ক থাকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তিটির সত্যের সম্পূর্ণ অপলাপ। সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে ভারতের অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যম শতকরা ১০০ ভাগ দায়ী। শুধু তাদের কথা বলবো কেন? ভারতের সেনাপ্রধানও এই সম্পর্কের অবনতিতে ইন্ধন জুগিয়েছেন।
ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র ত্রিবেদি তো রাখঢাক না করে সোজা বলে দিয়েছেন যে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক তখনই স্বাভাবিক হবে যখন বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকার আসবে। আসলে এটি একটি রাজনৈতিক উক্তি। এটি তো কোনো দেশের সেনাবাহিনীর কোনো বিষয় নয়। সেনাপ্রধান ত্রিবেদির এই উক্তির পর বেশ কিছুদিন পার হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভারত সরকার এ ব্যাপারে কিছু বলেনি। এ থেকে বোঝা যায় যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সায় আছে সেনাপ্রধানের এই উক্তিতে।
উভয় দেশের সম্পর্কে ক্ষতিকর উক্তি করা শুরু করেছে এককভাবে ভারত। শাসক দল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী তার দলবল নিয়ে সীমান্তে এসে অনেক অবাঞ্ছিত হুঙ্কার দিয়েছেন। তার দলের অনেক নেতা এবং অনেক গণমাধ্যম এতদূরও গিয়েছেন যে প্রয়োজন হলে তারা ফেনীকে কেটে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভারতের সাথে যুক্ত করবেন। ভারতের এই ধরণের চূড়ান্ত ঔদ্ধত্যের পরেও বিএনপি কোনো কথা বলেনি।
সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গ
বৈঠকের পর নরেন্দ্র মোদি তার সরকারি এক্স হ্যান্ডেলে যে টুইট করেছেন এবং বৈঠক শেষে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদেরকে যে ব্রিফ করেছেন সেসব ক্ষেত্রে তারা স্পষ্ট বলেছেন যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। এই নির্যাতন বন্ধ করার শুধু দাবিই তারা জানাননি, সাথে বলেছেন যে প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার করতে হবে। এব্যাপারে বাংলাদেশ অতীতেও যা বলেছে, নরেন্দ্র মোদির কাছেও ড. ইউনূস তাই বলেছেন। বলেছেন যে কোনো হিন্দু নির্যাতন হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের পর জনরোষের মুখে পড়েছিল আওয়ামী লীগ। যেসব হিন্দু আওয়ামী লীগ করেছেন তাদের কেউ কেউ রাজনৈতিক কারণে জনরোষের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু সাম্প্রদায়িক কারণে অর্থাৎ হিন্দু হওয়ার কারণে একজন হিন্দুর ওপরেও কোনো নির্যাতন করা হয়নি। অতীতেও ভারতকে বলা হয়েছিল যে আপনারা সাংবাদিকদের পাঠান। তারা সরেজমিনে দেখে যাক। নরেন্দ্র মোদিকেও ড. ইউনূস বলেছেন, আপনারা উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠান। তারা সরেজমিনে দেখে যাক। কিন্তু ড. ইউনূসের এই আবেদনে নরেন্দ্র মোদি কোনো কথা বলেননি।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক কারণে হিন্দুদের ওপর যে কোনো নির্যাতন হয়নি এবং হিন্দুরা যে এখন মুসলমানদের সাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করছেন সেই কথা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে মির্জা ফখরুলদের বলা উচিৎ ছিল।
সীমান্ত হত্যা
বাংলাদেশ ভারতের অভিন্ন সীমান্তে বাংলাদেশীদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা ভারতের বিএসএফের একটি রাজনৈতিক রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে অতীতে বাংলাদেশ একাধিকবার ভারতের একাধিক প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিষয়টি উত্থাপন করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্তও কোনো সুরাহা হয়নি। বরং এবার মোদি-ইউনূস বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি সুর ঘুরিয়েছেন। বলেছেন যে রাতের বেলা বাংলাদেশীরা নাকি বেশি করে অনুপ্রবেশ করে, তাই ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদেরকে সেটা ঠেকাতে হয়। নরেন্দ্র মোদি এই কথার মাধ্যমে বিএসএফের বর্ডার কিলিংকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেছেন। আসলে ভারত যে বর্ডার কিলিং চালিয়ে যাবে সেটি করার জন্য ভারত ড. ইউনূসের সামনে একটি এ্যালিবাই (অজুহাত) খাড়া করলো। দেশের বৃহত্তম দল হিসেবে বিএনপি এব্যাপরে নীরব কেন?
অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন
মোদি ইউনূস বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদের সাথে বৈঠক করেন। সেখানে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের কথা বিশেষভাবে বলেন। বাংলাদেশের নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে কিনা সেটি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। দেখা যাচ্ছে যে ভারত বাংলাদেশের প্রতিটি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নির্লজ্জভাবে নাক গলাচ্ছে। এসব ব্যাপারেও তো বিএনপির সোচ্চার হওয়া উচিৎ। বিএনপি কি বলতে পারে না যে ২০১৪ সালের নির্বাচন যখন বিএনপি সহ সমস্ত দল বয়কট করেছিল তখন কোথায় ছিল ভারতের ইনক্লুসিভ ইলেকশন? কেন ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং এসে মরহুম জেনারেল এরশাদকে আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করেছিলেন? ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে কেলেঙ্কারি করেছিল সেটি ইতিহাসে নজিরবিহীন। দিনের ভোট কোনোদিন রাতে হয় না। সেটিও যখন আওয়ামী লীগ করলো তখন কি ভূমিকা ছিল ভারতের? চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা নয় কি? তারপর ২০২৪ সালের আমি আর ডামির নির্বাচন। তখনও ভারতের ইনক্লুসিভ ইলেকশন কোথায় ছিল?
যে তিনটি ভোট ডাকাতির নির্বাচনের কথা উল্লেখ করলাম সেগুলোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিএনপি। সেই সব কথা বিএনপি আজ বেমালুম চেপে যাচ্ছে কেন? বিএনপি কি এখনো ঐ থিওরিকে বিশ^াস করে যে ভারতের সাহায্য ছাড়া বাংলাদেশের ইলেকশনে জয়লাভ সম্ভব নয়? আর জয়লাভ করলেও ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভভ নয়? ২০২৪ এর গণবিপ্লব প্রমাণ করেছে যে ক্ষমতার পট পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর সেই সমস্ত কোটি কোটি সাধারণ মানুষ, যারা রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক। আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছর ভারতের সেবা দাসত্ব করেছে। কিন্তু ইউনূস সরকার ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে। সেজন্য ড. ইউনূস আজ বিশ্ব বরেণ্য। বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ ড. ইউনূসকে চান। শহীদ জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি সরকার পেয়েছে যারা প্রকৃতে অর্থেই দেশটিকে যথার্থ স্বাধীন হিসেবে বিশ্ব মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন।
বলা হতো যে ড. ইউনূস নাকি মার্কিনপন্থী। কিন্তু তার চীন সফরের পর প্রমাণ হয়েছে যে ড. ইউনূস কোনো পন্থী নন। তাই তিনি তিস্তা নদীর পানির ব্যবস্থাপনা চীনের হাতে দেওয়ার কথা বলেছেন। শুধু তিস্তা নয়, বাংলাদেশের ৫৪ টি অভিন্ন নদী শাসনের পরামর্শের জন্যও চীনকে আহ্বান জানিয়েছেন।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বাংলাদেশ, ভূটান, নেপাল, ভারতের সেভেন সিস্টার্স এবং উদীয়মান আরাকান স্টেট নিয়ে এক ধরণের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক জেট গঠনের জন্য তার ভিশন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকের সময় তার এই ভিশন তথা পরিকল্পনা তিনি চীনের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে উন্মোচন করেছেন। চীনও তাতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। এছাড়াও তিনি মোংলা বন্দর ব্যবহার এবং তার আধুনিকীকরণের দায়িত্ব চীনের হাতে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে বন্দর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এখন ইন্ডিয়া আউট, চীন ইন। আর এসবেই ভারত এমন আচরণ করছে যেন মনে হচ্ছে যে তার শরীরে বিছুটি কামড় দিয়েছে। তারা এখন ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের ক্ষমতা থেকে সরাতে উন্মাদ হয়ে উঠেছে। জাতির এই ক্রিটিক্যাল জাংচারে প্রয়োজন ড. ইউনূসের পেছনে দল মত নির্বিশেষে সকলের ঐক্যবদ্ধ সমর্থন।
এ ব্যাপারে বিএনপি যদি এগিয়ে আসে তাহলে সামনের নির্বাচনে তার জয় সুনিশ্চিত। আর তা না করে এখন যদি তারা নতুন করে ভারত এবং আওয়ামী লীগের প্রতি দুর্বলতা পোষণ করে তাহলে বাংলাদেশের মানুষ উপযুক্ত সময়ে সঠিক রায় দেবেন। বিএনপির ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই। কারণ ড. ইউনূস কোনো পলিটিক্যাল পার্টি করবেন না এবং ইলেকশনেও দাঁড়াবেন না। সুতরাং ড. ইউনূসকে প্রতিদ্বন্দ্বি ভাবার কোনো কারণ নাই বিএনপির।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ড. ইউনূসের বলিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতি : এব্যাপারে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে

আপডেট টাইম : ০৭:৫৬:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫

বিএনপির সাম্প্রতিক অতীতের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে যে তারা বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের মনোভাব বা সেন্টিমেন্ট সম্পর্কে পুরাপুরি অবগত নয়। বিএনপির বর্তমান হাইকমান্ড সম্পর্কে এই কথাটি এই মুহূর্তে প্রযোজ্য কিনা সেটি সঠিক বলা যাচ্ছে না। তবে ঢাকার প্রধান সারির নেতৃত্ব যে বর্তমান জনমত সম্পর্কে অবহিত নন সেটি নিঃসন্দেহে বলা যায়। গত বেশকিছুদিন ধরে বিএনপির ঢাকার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সংবিধান সংস্কার, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন, বাংলাদেশের প্রতি ভারতের বর্তমান এ্যাটিচ্যুট ইত্যাদি সম্পর্কে তারা যেসব উক্তি করছেন সেগুলোর মধ্যে জনমতের কোনো প্রতিফলন নাই। বরং তাদের এসব উক্তি যেন অনেকটা ভারত এবং আওয়ামী লীগের কন্ঠস্বর বলে অনেকে ধারণা করছেন। এই ধরণের সর্বশেষ উক্তিটি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার প্রধানের মধ্যকার বৈঠককে দুই দেশের জন্য ‘আশার আলো’ হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত শুক্রবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক নিয়ে এরকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বিমসটেকের সাইডলাইনে বৈঠক হয়েছে, এটা (বৈঠক) খুব আনন্দের কথা। আমরা মনে করি যে, ভূণ্ড রাজনীতি এবং বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির যে প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশ-ভারতের এই অঞ্চলের যে প্রেক্ষাপট সেই প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ( মুহাম্মদ ইউনূস) এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি (নরেন্দ্র মোদী) সাহেবের বৈঠকটা আমাদের সামনে একটা আশার আলো তৈরি করছে। ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের মধ্যে যে একটা বিটারনেস (তিক্ততা) তৈরি হয়েছিলো সেই বিটারনেসটা তৈরি যেন আর বেশি সামনে না যায় অথবা এটা যেন কমে আসে সেখানে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি যতদূর দেখেছি, তাতে করে আমার মনে হয়েছে এই ব্যাপারে দুজনই যথেষ্ট আন্তরিক এবং এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মানুষকে এবং ভারতের মানুষকে দুই দেশের মানুষের উপকার করবে।
নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ রাজনৈতিক মহল ভেবে পাচ্ছেন না যে মির্জা ফখরুল ইউনূস মোদি বৈঠকে কোথায় আশার আলো দেখলেন? বরং যে কোনো সাধারণ পাঠকের নিকটও এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ভারত যে ড. ইউনূসের সরকার সম্পর্কে কঠোর মনোভাব নিয়েছেন সেটি তিনি কোনো রখাঢাক না করে ড. ইউনূসকে সোজা সাপ্টা জানিয়ে দিয়েছেন। এই বৈঠকে ভারত উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়েছে।
সম্পর্কের অবনতির প্রশ্ন
নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূসকে বলেছেন যে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে যেন কোনো অবনতি না ঘটে সে ধরণের কোনো উক্তি করার ব্যাপারে বাংলাদেশ যেন সতর্ক থাকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তিটির সত্যের সম্পূর্ণ অপলাপ। সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে ভারতের অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যম শতকরা ১০০ ভাগ দায়ী। শুধু তাদের কথা বলবো কেন? ভারতের সেনাপ্রধানও এই সম্পর্কের অবনতিতে ইন্ধন জুগিয়েছেন।
ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র ত্রিবেদি তো রাখঢাক না করে সোজা বলে দিয়েছেন যে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক তখনই স্বাভাবিক হবে যখন বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকার আসবে। আসলে এটি একটি রাজনৈতিক উক্তি। এটি তো কোনো দেশের সেনাবাহিনীর কোনো বিষয় নয়। সেনাপ্রধান ত্রিবেদির এই উক্তির পর বেশ কিছুদিন পার হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভারত সরকার এ ব্যাপারে কিছু বলেনি। এ থেকে বোঝা যায় যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সায় আছে সেনাপ্রধানের এই উক্তিতে।
উভয় দেশের সম্পর্কে ক্ষতিকর উক্তি করা শুরু করেছে এককভাবে ভারত। শাসক দল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী তার দলবল নিয়ে সীমান্তে এসে অনেক অবাঞ্ছিত হুঙ্কার দিয়েছেন। তার দলের অনেক নেতা এবং অনেক গণমাধ্যম এতদূরও গিয়েছেন যে প্রয়োজন হলে তারা ফেনীকে কেটে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভারতের সাথে যুক্ত করবেন। ভারতের এই ধরণের চূড়ান্ত ঔদ্ধত্যের পরেও বিএনপি কোনো কথা বলেনি।
সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গ
বৈঠকের পর নরেন্দ্র মোদি তার সরকারি এক্স হ্যান্ডেলে যে টুইট করেছেন এবং বৈঠক শেষে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদেরকে যে ব্রিফ করেছেন সেসব ক্ষেত্রে তারা স্পষ্ট বলেছেন যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। এই নির্যাতন বন্ধ করার শুধু দাবিই তারা জানাননি, সাথে বলেছেন যে প্রতিটি নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার করতে হবে। এব্যাপারে বাংলাদেশ অতীতেও যা বলেছে, নরেন্দ্র মোদির কাছেও ড. ইউনূস তাই বলেছেন। বলেছেন যে কোনো হিন্দু নির্যাতন হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের পর জনরোষের মুখে পড়েছিল আওয়ামী লীগ। যেসব হিন্দু আওয়ামী লীগ করেছেন তাদের কেউ কেউ রাজনৈতিক কারণে জনরোষের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু সাম্প্রদায়িক কারণে অর্থাৎ হিন্দু হওয়ার কারণে একজন হিন্দুর ওপরেও কোনো নির্যাতন করা হয়নি। অতীতেও ভারতকে বলা হয়েছিল যে আপনারা সাংবাদিকদের পাঠান। তারা সরেজমিনে দেখে যাক। নরেন্দ্র মোদিকেও ড. ইউনূস বলেছেন, আপনারা উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠান। তারা সরেজমিনে দেখে যাক। কিন্তু ড. ইউনূসের এই আবেদনে নরেন্দ্র মোদি কোনো কথা বলেননি।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক কারণে হিন্দুদের ওপর যে কোনো নির্যাতন হয়নি এবং হিন্দুরা যে এখন মুসলমানদের সাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করছেন সেই কথা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে মির্জা ফখরুলদের বলা উচিৎ ছিল।
সীমান্ত হত্যা
বাংলাদেশ ভারতের অভিন্ন সীমান্তে বাংলাদেশীদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা ভারতের বিএসএফের একটি রাজনৈতিক রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে অতীতে বাংলাদেশ একাধিকবার ভারতের একাধিক প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিষয়টি উত্থাপন করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্তও কোনো সুরাহা হয়নি। বরং এবার মোদি-ইউনূস বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি সুর ঘুরিয়েছেন। বলেছেন যে রাতের বেলা বাংলাদেশীরা নাকি বেশি করে অনুপ্রবেশ করে, তাই ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদেরকে সেটা ঠেকাতে হয়। নরেন্দ্র মোদি এই কথার মাধ্যমে বিএসএফের বর্ডার কিলিংকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেছেন। আসলে ভারত যে বর্ডার কিলিং চালিয়ে যাবে সেটি করার জন্য ভারত ড. ইউনূসের সামনে একটি এ্যালিবাই (অজুহাত) খাড়া করলো। দেশের বৃহত্তম দল হিসেবে বিএনপি এব্যাপরে নীরব কেন?
অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন
মোদি ইউনূস বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদের সাথে বৈঠক করেন। সেখানে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের কথা বিশেষভাবে বলেন। বাংলাদেশের নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে কিনা সেটি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। দেখা যাচ্ছে যে ভারত বাংলাদেশের প্রতিটি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নির্লজ্জভাবে নাক গলাচ্ছে। এসব ব্যাপারেও তো বিএনপির সোচ্চার হওয়া উচিৎ। বিএনপি কি বলতে পারে না যে ২০১৪ সালের নির্বাচন যখন বিএনপি সহ সমস্ত দল বয়কট করেছিল তখন কোথায় ছিল ভারতের ইনক্লুসিভ ইলেকশন? কেন ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং এসে মরহুম জেনারেল এরশাদকে আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করেছিলেন? ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে কেলেঙ্কারি করেছিল সেটি ইতিহাসে নজিরবিহীন। দিনের ভোট কোনোদিন রাতে হয় না। সেটিও যখন আওয়ামী লীগ করলো তখন কি ভূমিকা ছিল ভারতের? চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা নয় কি? তারপর ২০২৪ সালের আমি আর ডামির নির্বাচন। তখনও ভারতের ইনক্লুসিভ ইলেকশন কোথায় ছিল?
যে তিনটি ভোট ডাকাতির নির্বাচনের কথা উল্লেখ করলাম সেগুলোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিএনপি। সেই সব কথা বিএনপি আজ বেমালুম চেপে যাচ্ছে কেন? বিএনপি কি এখনো ঐ থিওরিকে বিশ^াস করে যে ভারতের সাহায্য ছাড়া বাংলাদেশের ইলেকশনে জয়লাভ সম্ভব নয়? আর জয়লাভ করলেও ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভভ নয়? ২০২৪ এর গণবিপ্লব প্রমাণ করেছে যে ক্ষমতার পট পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর সেই সমস্ত কোটি কোটি সাধারণ মানুষ, যারা রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক। আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছর ভারতের সেবা দাসত্ব করেছে। কিন্তু ইউনূস সরকার ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে। সেজন্য ড. ইউনূস আজ বিশ্ব বরেণ্য। বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ ড. ইউনূসকে চান। শহীদ জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি সরকার পেয়েছে যারা প্রকৃতে অর্থেই দেশটিকে যথার্থ স্বাধীন হিসেবে বিশ্ব মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন।
বলা হতো যে ড. ইউনূস নাকি মার্কিনপন্থী। কিন্তু তার চীন সফরের পর প্রমাণ হয়েছে যে ড. ইউনূস কোনো পন্থী নন। তাই তিনি তিস্তা নদীর পানির ব্যবস্থাপনা চীনের হাতে দেওয়ার কথা বলেছেন। শুধু তিস্তা নয়, বাংলাদেশের ৫৪ টি অভিন্ন নদী শাসনের পরামর্শের জন্যও চীনকে আহ্বান জানিয়েছেন।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বাংলাদেশ, ভূটান, নেপাল, ভারতের সেভেন সিস্টার্স এবং উদীয়মান আরাকান স্টেট নিয়ে এক ধরণের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক জেট গঠনের জন্য তার ভিশন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকের সময় তার এই ভিশন তথা পরিকল্পনা তিনি চীনের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে উন্মোচন করেছেন। চীনও তাতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। এছাড়াও তিনি মোংলা বন্দর ব্যবহার এবং তার আধুনিকীকরণের দায়িত্ব চীনের হাতে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে বন্দর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এখন ইন্ডিয়া আউট, চীন ইন। আর এসবেই ভারত এমন আচরণ করছে যেন মনে হচ্ছে যে তার শরীরে বিছুটি কামড় দিয়েছে। তারা এখন ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের ক্ষমতা থেকে সরাতে উন্মাদ হয়ে উঠেছে। জাতির এই ক্রিটিক্যাল জাংচারে প্রয়োজন ড. ইউনূসের পেছনে দল মত নির্বিশেষে সকলের ঐক্যবদ্ধ সমর্থন।
এ ব্যাপারে বিএনপি যদি এগিয়ে আসে তাহলে সামনের নির্বাচনে তার জয় সুনিশ্চিত। আর তা না করে এখন যদি তারা নতুন করে ভারত এবং আওয়ামী লীগের প্রতি দুর্বলতা পোষণ করে তাহলে বাংলাদেশের মানুষ উপযুক্ত সময়ে সঠিক রায় দেবেন। বিএনপির ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই। কারণ ড. ইউনূস কোনো পলিটিক্যাল পার্টি করবেন না এবং ইলেকশনেও দাঁড়াবেন না। সুতরাং ড. ইউনূসকে প্রতিদ্বন্দ্বি ভাবার কোনো কারণ নাই বিএনপির।