কোনাবাড়িতে বিএনপি’র দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া: আতঙ্কে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ

- আপডেট টাইম : ০৬:৪৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ীতে একটি হাউজিংয়ের ভেতরে প্রায় অর্ধশতাধিক মাদকাসক্ত যুবক বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত দশটার দিকে প্রবেশ করে কয়েকটি দোকানের শাটার শাটার ও কয়েকটি বাড়ির গেট এবং জানালা ভাঙ্চুর করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার হাউজিংয়ের একটি বাড়ির মালিক সালাউদ্দিন সিদ্দিকীর মৃত ছেলের কুলখানি করার জন্য আলোচনায় বসে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এ সময় কোনাবাড়ি থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল হোসেনের ছেলে সালিম ও তার একান্ত সহযোগী ইমরুল সহ অন্যান্য অর্ধশতাধিক যুবকদের নিয়ে ওই আলোচনা পন্ড করার জন্য হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ৮ নং ওয়ার্ড ব বিএনপি’র সহ-সভাপতি বারেক সরকার।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন ভাবে আরো একাধিকবার অনেক নিরীহ মানুষের উপর হামলা চালিয়েছেন সালিম ও তার সহযোগিরা। এভাবে চলতে থাকলে বিএনপি’র বদনাম ও মান ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং সামনের দিনে জাতীয় নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন। নিজেদের দলের মধ্যে ক কোন দলের উপর ভিত্তি করে হাউজিংয়ে রাতে এসে মানুষের দোকানপাট ও বাড়িতে হামলায় বুঝা যাচ্ছে সামনের দিনগুলোতে বিএনপি’র উপর ভোটের প্রভাব পড়বে।
বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গাজীপুর মহানগরের আট নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি বারেক সরকার অনুরোধ করেছেন, যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে এই হামলায় নেপথ্যে কারা ও সরাসরি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক,
হাউজিংয়ের বিভিন্ন ফ্লাটের ভাড়াটিয়ারা বলেন, বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে হঠাৎ করেই বিভিন্ন দোকানের সাটারে দাঁড়ালো কোবা দিয়ে কোপাতে থাকে। এ সময় অনেক দোকানদারেরা দোকান রেখে দ্রুত পালিয়ে যায় জীবন রক্ষার্থে। এদিকে প্রত্যেকটা বাড়ির প্রধান ফটক ভিতর থেকে আটকে দেয়। এ সময় প্রায় এক ঘন্টা ধরে ওই এলাকার মানুষ জিম্মি হয়ে থাকে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
মহানগরীর ৮ নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি বারেক সরকার ও মিরাজ এর বাড়ির ম্যানেজার সহ আরো অনেকেই অভিযোগের সুরে জানান, প্রত্যেকটি বাড়ির নিচ তলায় একাধিক দোকান করা হয়েছে। এসব দোকানের শাটার গুলো ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তছনছ করে দিয়েছে।
সরে জমিনে দেখা গেছে, মহিউদ্দিনের একাধিক দোকান, শহীদের একাধিক দোকান, আতাউর রহমানের দোকানে, আজিজের দোকানে, নাসিমার দোকানে, জুয়েল মিয়ার দোকানে, ডাক্তার ফরিদের দোকানে, নুরু মিয়ার দোকানে, শাওনের দোকানে, স্বপনের দোকানে এরকম আরো কয়েকটি দোকানের শাটারে কুপিয়েছে। এরপরে অপুখান, জুয়েল মিয়া, মিলন, মজনুদের বাড়ির জানালাও গেটে কুপের দাগও দেখা গেছে।
ওই হাউজিং এর একটি বাড়ির মালিক মিরাজ এর ম্যানেজার দুলাল মিয়া জানান বৃহস্পতিবার রাতে আনুমানিক দশটার দিকে হঠাৎ করেই প্রায় অর্ধশতাধিক উশৃংখল যুবক এসে ব্যাপক হামলা চালায়। এ সময় আমরা ভয়ে কেউই তাদের সামনে আসতে সাহস না পেলেও দূর থেকে রক্ষা করি। লক্ষ্য করে দেখা গেছে কোনাবাড়ি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল মিয়ার ছেলে মাদকাসক্ত সালিম ও তার একান্ত সহযোগী ইমরুল সহ অর্ধশতাধিক উশৃংখল যুবক এসে এই হাউজিংয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন কোনাবাড়ি থানায় সহযোগিতার জন্য ফোন করলে ঘটনাস্থলে কোনাবাড়ি থানার ওসি উপস্থিত হন। ওসি’র উপস্থিতিতে ওই হামলাকারীরা দ্রুত হাউজিং ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগী হাউজিং মালিকরা কোনাবাড়ী থানার ওসিকে ওই হামলার ঘটনার বিবরণ দেন বলে জানান বারেক সরকার সহ ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইমরুল বিগত ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন মাদক সেবন করে আসছে তার মধ্যে মরণঘাতী ইয়াবা ট্যাবলেট রাতে ও দিনেও সেবন করে বলে জানা গেছে। আরো তথ্য নিয়ে জানা গেছে ইমরুলকে তার বাবা বিভিন্ন সময় কয়েক লক্ষ টাকা করে দিয়েছেন ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু ইমরুল সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা না করে তাহার সহযোগীদের নিয়ে মাদক সেবন করে। এরকমভাবে তার মা ও বাবা এবং বড় ভাই প্রবাসী সবাই ইমরুলের প্রতি বিমুখ হয়ে গেছে।
কোনাবাড়ি থানার (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি’র দু গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ হয় এ সময় হাউজিংয়ের কিছু দোকানের শাটারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে তদন্ত চলেছে তদন্তের ফলাফল হাতে পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।