আমি ধর্মের অনুসারী যদি চারটি বিবাহ করি তাহলে এতে কার কী বলেছেন-মামুনুল হক
- আপডেট টাইম : ০৯:৩৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৯ এপ্রিল ২০২১
- / ২৯৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
নারায়ণগঞ্জে রিসোর্ট কাণ্ডের পর আলোচনায় থাকা হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, “আমি একাধিক বিয়ে করেছি। শরীয়তে, ইসলামে একজন মুসলিম পুরুষকে চার চারটি বিয়ে করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। দেশীয় আইনেও চার বিবাহ করার প্রতি কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা অনুৎসাহ নেই। কাজেই আমি যদি চারটি বিবাহ করি তাহলে এতে কার কী?
“যদি আমার একাধিক বিবাহের ওপর কোনো অভিযোগ বা আপত্তি থাকে সেটি থাকবে আমার পরিবারের, আমার স্ত্রীদের। একাধিক বিবাহ করে আমি যদি আমাদের স্ত্রীদেরকে কোনো অধিকার বঞ্চিত করে থাকি, তাহলে তারা অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযোগ দায়ের করতেন।”
বৃহস্পতিবার ফেইসবুক লাইভে এসে মামুনুল এ কথা বলেন। তার ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে রেকর্ড করা ওই লাইভ দুপুরে প্রচার করা হয়, যাতে নানা সমালোচনার জবাব দেন তিনি।
সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে নারীসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গত শনিবার অবরুদ্ধ করে স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা সেখানে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে তাকে নিয়ে যায়।
এ ঘটনা প্রকাশের পর তা গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার পায়। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে মামুনুলের একটি অডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।
অডিওর কথোপকথনের বিষয় নিয়েই বৃহস্পতিবারের ফেইসবুক লাইভে কথা বলেন এ হেফাজত নেতা।
এই ঘটনাকে ব্যক্তিগত অধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করে মামুনুল এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দেন লাইভে এসে।
যারা এসব কাজ করেছে তাদেরকে মামুনুল ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
মামুনুল বলেন, “কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ কি দেখাতে পারবে, আমার কোনো স্ত্রী কোথাও আমার বিরুদ্ধে এতটুকু অভিযোগ করেছে যে, আমি তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি। আমার স্ত্রীদের অধিকার নিয়ে আমার স্ত্রীদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে, তাদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কী ধরনের হবে, কোন স্ত্রীর সাথে আমার সম্পর্কের পরিধি কতটুকু জানাবো কতটুকু জানাবো না, সেটি সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত এখতিয়ার।”
মামুনুল বলেন, “একাধিক বিয়ে করার ক্ষেত্রে আমার স্ত্রীকে কিভাবে ম্যানেজ করবো, কোন কথা দিয়ে আমি প্রবোধ দেব, কোন পরিস্থিতিতে কোন কথা বলে আমি সান্ত্বনা দেব, সেটিও আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইসলামী শরিয়তে এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে। স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার জন্য, খুশি করবার জন্য প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে সত্যকে গোপন করার অবকাশ রয়েছে। সেই বিষয়ে যদি কোনো অভিযোগ থেকেও থাকে সেট থাকবে একান্তই স্ত্রীর।”
ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে মামুনুল বলেন, “আমার স্ত্রীর সাথে আমার ফোনালাপ, আমার স্ত্রীদের সাথে আমার কথপোকথন এগুলো একান্তই আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়। আমার সেই ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। সেই আলাপচারিতা জনসম্মুখে প্রকাশ করে আমার নাগরিক, ধর্মীয় অধিকার, আমার ব্যক্তি স্বাধীনতায় যারা হস্তক্ষেপ করেছেন তারা প্রচলিত আইনে চরম অপরাধ করেছেন। ইসলামী শরীয়ত মোতাবেকও অনেক বড় অন্যায় ও অপরাধ করেছেন।
“ইসলামী শরীয়তের বিধান লঙ্ঘন করার কারণে আল্লাহর আদালতে বিচার দায়ের করবো এবং প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করার অপরাধে যারা দুষ্ট তাদের বিরুদ্ধেও অনতিবিলম্বে আইনি পদক্ষেপ অবলম্বন করব। ব্যক্তিগত আইন পরামর্শদাতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যে পরামর্শ করা শুরু করেছি। অচিরেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
মামুনুল অভিযোগ করেন, হেফাজতের ইসলামের নেতৃত্বে ভাঙ্গন ধরাতে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।