যারাই স্বৈরাচার হয়ে উঠবে তারাই এই দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে।খুনি হাসিনা তার বাস্তব উদাহরণ।- জামায়াতে ইসলামীর আমির
- আপডেট টাইম : ১২:০৩:১০ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ১৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
যারা দেশের স্বাধীনতা বিক্রি করে দিয়েছে, তারাই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যে দেশের আদর্শ ধারণ ও লালন করে সেই দেশে চলে গেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এদেশে ফিরে এসেছেন তার বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে। ভারতের কাছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ক্ষমতার বিনিময়ে বন্ধক দিতে। শেখ মুজিবকে কারা হত্যা করেছে? স্বাধীনতার স্বপক্ষের সেনা সদস্যরা হত্যা করেছে। কেন করেছে? কারণ শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বেরিয়ে এসে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদের যাত্রা শুরু করেছিল। তার মেয়েও পরে ভারতের তাবেদারি করতে এদেশের আলেম, ছাত্র-জনতা, কৃষক-শ্রমিক ও সাধারণ জনগণকে হত্যা করছে।’
সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পল্টন মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি কেন প্রশ্ন রেখে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতা ছিনতাই করে এক পরিবারের সম্পদ বানানো হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান কবে, কোথায় স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে সেটি এদেশের কারো জানা নেই। ৭ মার্চ যদি শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়ে থাকেন, তাহলে ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে শেখ মুজিবুর রহমান নিজের বাসভবনে কেন পাকিস্তানের পতাকা ঝুলিয়েছে? তৎকালীন ছাত্ররা সেই পতাকা খুলে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ঝুলিয়ে দিয়েছিল।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘এই পল্টন ময়দানে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের বক্তব্য ছিল ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’ এই তুমুল ঝড় এদেশের ১৮ কোটি জনগণের বুকের ভেতরের ঝড়। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সকল হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার করা হবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় পল্টন মোড়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশ রূপ নেয় জনসমুদ্রে। সকাল ১০টার দিকে সমাবেশ শুরুর নির্ধারিত সময়ের আগেই পল্টন মোড় থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত সড়কের চারপাশ মুখরিত হয়ে ওঠে।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘এই বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হবে ভারতীয় আধিপত্যবাদ নিপাত যাক, পরাজিত শক্তি ভারতের দোসর আওয়ামী লীগ নিপাত যাক, জাতীয় স্বার্থে সব বিভেদ ভুলে আমরা ঐক্যবদ্ধ। এ সময় তিনি ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব রাজনৈতিক দলকে এক কাতারে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তবেই ১৯৭১ থেকে ২০২৪ স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য জীবন উৎস্বর্গকারী শহীদদের স্বপ্ন ও চেতনা পূরণ হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান, ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব সভাপতি মুজাফফর হোসেন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে বর্গা দেয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এ দেশের ছাত্র-জনতা জীবন ও রক্ত দিয়ে সেই স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছে। ছাত্র-জনতার অর্জিত সেই স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে, শেখ হাসিনা ভারতে বসে তার ভারতীয় প্রভুদের ঘাড়ে বসে ষড়যন্ত্র করতেছে। ছাত্র-জনতার অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় জামায়াত-শিবির এদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না। নতুন বাংলাদেশ, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি মানবিক ও কল্যাণরাষ্ট্র হিসেবে গঠন করতে তিনি দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।সমাবেশ শেষে আমীরে জামায়াতের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য র্যলী বের হয়। র্যলীটি প্রেসক্লাব,হাইকোর্ট ,মৎস্যভবন হয়ে কাকরাইল মোড়ে এসে রেলি সমাপ্ত হয়।