ঢাকা ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
৬০০ টাকা পাওয়াকে কেন্দ্র করে মা ছেলেকে মারধর থানায় অভিযোগ দায়ের গুম ফেরত সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল’র বাক স্বাধীনতা হরণ লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের সম্ভাবনা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চামড়া শিল্পের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে সারাদেশে ব্যক্তিগতভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছি’ গ্রেটা থুনবার্গের জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ আটকের কারণ কী, যা বলছে ইসরাইল ঢাকা রাজধানী খিলগাঁও, ঈদুল আযহারের তৃতীয় দিনে ডিপুর পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সাথে প্রেরণামূলক দেখা সাক্ষাৎ। কাউন্সিলর পতপ্রার্থী বিক্ষোভে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলস, গাড়িতে আগুন বিক্ষোভ চলাকালে গাড়িতে আগুন ২ মেয়েকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যার চেষ্টা নির্বাচনে ভিন্ন কোনো দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়: জামায়াত আমির এইবারে ঈদুল আযহারঃকুরবানির পশু চামড়া ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

খুনি হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেদিন ঢাকা সহ সারাদেশে মেতেছিল খুনের নেশায়(২৮) অক্টোবর ২০০৬

নিজস্ব প্রতিবেদন
  • আপডেট টাইম : ১২:৫২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১৬৭ ১৫০.০০০ বার পাঠক

আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠার নৃশংসতার ভয়াবহ চিত্র

অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার ও শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।

প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

আপনারা অবগত আছেন যে, ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত দিন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদের শেষ দিন কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ছিল। ঐ দিন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ১৪-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে একই দিন সারাদেশ থেকে লগি-বৈঠা নিয়ে ঢাকায় সমবেত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪-দলীয় জোটের সন্ত্রাসীরা লগি-বৈঠা, আগ্নেয়াস্ত্র, লোহার রড, রামদা, ছোরা, লাঠিসহ নানা অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জামায়াতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সশস্ত্র হামলা চালায় এবং নেতাকর্মীদের পিটিয়ে এবং গুলি চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। তারা মৃত লাশের উপর নৃত্য করে উল্লাস প্রকাশ করে। গণমাধ্যমে এই পৈশাচিক দৃশ্য বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করে। মানবতাবিরোধী এই ঘটনা বিশ্বের বিবেকবান মানুষকে নাড়া দেয়। পুলিশ প্রশাসন এই নির্মম হত্যাকাণ্ড বন্ধের কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। এই ঘটনায় ঢাকাসহ সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন এবং প্রায় সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গিয়েছেন। এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত মানবতাবিরোধী গণহত্যা। মূলত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় গাজীপুরে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতা জনাব রুহুল আমীনকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সারাদেশে এই সন্ত্রাসী তাণ্ডব শুরু করেছিল।

সম্মানিত দেশবাসী,

ঢাকা মহানগরী জামায়াতের পক্ষ থেকে গণহত্যার সাথে জড়িত ১৪ দলের সন্ত্রাসী ঘাতকদের সনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে সুনির্দিষ্টভাবে মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। কিন্তু তৎকালীন সরকার ঐ ঘটনার তদন্ত করে আসামীদের গ্রেফতার করে বিচারের কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগের সৃষ্ট সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের পথ ধরে দেশে ওয়ান এলেভেন-এর আগমন ঘটে। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশে বি-রাজনীতিকরণের পদক্ষেপ নেয়। অবশেষে এই সরকারের নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিত করার জন্য আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করে। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সমঝোতার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতা দখল করে তারা দেশে গুম, খুন, হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ সৃষ্টি করে। দেশের বিচারবিভাগ এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংস করে দেয়। তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে বিনাভোটে ক্ষমতায় থাকার সংস্কৃতি চালু করে। তারা জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার লক্ষ্যে প্রহসনের বিচারের নামে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে।

সংগ্রামী দেশবাসী,

দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর এদেশের মানুষ স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছে। অবশেষে দেশের ছাত্রসমাজ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলে। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক-শ্রমিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, রাজনৈতিক দলসমূহ এবং সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেড় সহস্রাধিক লোকের প্রাণ ও হাজার হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে দেশ ৫ আগস্ট স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্তিলাভ করে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে গণমানুষের রক্ত ও জনআকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

প্রিয় দেশবাসী,

২৮ অক্টোবর শুধু জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে হত্যা করা হয়নি, গণতন্ত্রকেও হত্যা করা হয়েছিল। সেদিন দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার চক্রান্ত করা হয়েছিল। তাই ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দেশে ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।

বাংলাদেশের জনগণের দাবি হচ্ছে-

অবিলম্বে ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা পুনরায় সচল করে খুনিদের গ্রেফতার ও শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

খুনি হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেদিন ঢাকা সহ সারাদেশে মেতেছিল খুনের নেশায়(২৮) অক্টোবর ২০০৬

আপডেট টাইম : ১২:৫২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠার নৃশংসতার ভয়াবহ চিত্র

অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার ও শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।

প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

আপনারা অবগত আছেন যে, ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত দিন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদের শেষ দিন কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ছিল। ঐ দিন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ১৪-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে একই দিন সারাদেশ থেকে লগি-বৈঠা নিয়ে ঢাকায় সমবেত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪-দলীয় জোটের সন্ত্রাসীরা লগি-বৈঠা, আগ্নেয়াস্ত্র, লোহার রড, রামদা, ছোরা, লাঠিসহ নানা অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জামায়াতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সশস্ত্র হামলা চালায় এবং নেতাকর্মীদের পিটিয়ে এবং গুলি চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। তারা মৃত লাশের উপর নৃত্য করে উল্লাস প্রকাশ করে। গণমাধ্যমে এই পৈশাচিক দৃশ্য বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করে। মানবতাবিরোধী এই ঘটনা বিশ্বের বিবেকবান মানুষকে নাড়া দেয়। পুলিশ প্রশাসন এই নির্মম হত্যাকাণ্ড বন্ধের কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। এই ঘটনায় ঢাকাসহ সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন এবং প্রায় সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গিয়েছেন। এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত মানবতাবিরোধী গণহত্যা। মূলত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় গাজীপুরে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতা জনাব রুহুল আমীনকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সারাদেশে এই সন্ত্রাসী তাণ্ডব শুরু করেছিল।

সম্মানিত দেশবাসী,

ঢাকা মহানগরী জামায়াতের পক্ষ থেকে গণহত্যার সাথে জড়িত ১৪ দলের সন্ত্রাসী ঘাতকদের সনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে সুনির্দিষ্টভাবে মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। কিন্তু তৎকালীন সরকার ঐ ঘটনার তদন্ত করে আসামীদের গ্রেফতার করে বিচারের কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগের সৃষ্ট সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের পথ ধরে দেশে ওয়ান এলেভেন-এর আগমন ঘটে। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশে বি-রাজনীতিকরণের পদক্ষেপ নেয়। অবশেষে এই সরকারের নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিত করার জন্য আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করে। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সমঝোতার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতা দখল করে তারা দেশে গুম, খুন, হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ সৃষ্টি করে। দেশের বিচারবিভাগ এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংস করে দেয়। তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে বিনাভোটে ক্ষমতায় থাকার সংস্কৃতি চালু করে। তারা জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার লক্ষ্যে প্রহসনের বিচারের নামে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে।

সংগ্রামী দেশবাসী,

দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর এদেশের মানুষ স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছে। অবশেষে দেশের ছাত্রসমাজ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলে। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক-শ্রমিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, রাজনৈতিক দলসমূহ এবং সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেড় সহস্রাধিক লোকের প্রাণ ও হাজার হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে দেশ ৫ আগস্ট স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্তিলাভ করে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে গণমানুষের রক্ত ও জনআকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

প্রিয় দেশবাসী,

২৮ অক্টোবর শুধু জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে হত্যা করা হয়নি, গণতন্ত্রকেও হত্যা করা হয়েছিল। সেদিন দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার চক্রান্ত করা হয়েছিল। তাই ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দেশে ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।

বাংলাদেশের জনগণের দাবি হচ্ছে-

অবিলম্বে ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা পুনরায় সচল করে খুনিদের গ্রেফতার ও শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত