চট্টগ্রাম নগরীতে দিন দুপুরে ১’যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর নাম আফতাব উদ্দিন তাহসিন (২৬) ২১অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪’টার দিকে নগরীর চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ হোসেন তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মাইক্রোবাস যোগে এসে গুলি করে চলে যায়- আশ পাশের লোকজন থাকলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। নিহত আফতাব ইট বালুর ব্যবসা করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়ার উদুর পাড়া এলাকায় আফতাব তাঁর ব্যবসার জন্য আনা বালু ও ইট রাখেন ব্যবসায়িক স্থানে। বিকেল সোয়া ৪’টার দিকে মজুতের জন্য ১’ট্রাক বালু আনা হয়। এ কারণে আফতাব সেখানে আসেন। কিছুক্ষণ পর সেখানে ১টি নোয়াহ মাইক্রোবাস আসে। প্রথমে গাড়ির ভেতর থেকে আফতাবকে লক্ষ্য করে ১টি গুলি করা হয়। এরপর সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও তাঁর সহযোগী মাহমুদ, হাছান’সহ ৪’জন গাড়ি থেকে নেমে গুলি করতে থাকেন। তাঁরা আফতাব’কে পরপর ৪’টি গুলি করে দ্রুত চলে যায়। আশ পাশের লোকজন থাকলেও তাঁদের হাতে অস্ত্র থাকায় কেউ ভয়ে এগিয়ে আসেনি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের লাশ’ঘরের সামনে নিহত আফতাবের ছোট ভাই মো. তানভীর জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী সাজ্জাদের অপরাধের বিষয়ে তাঁর ভাই ফেসবুকে লেখালেখি করতেন। ইট বালুর ব্যবসা করতে হলে ভাইয়ের কাছে চাঁদা চাইতেন এ কারণে এর আগে আফতাব নিরাপত্তার জন্য আদালতে ১টি কোর্ট”জিডিও করেন। এক পর্যায়ে তানভীর বলেন,। পুলিশ তাঁকে খুঁজে না পাওয়ার কারণে গ্রেপ্তার করতে পারেনা।
ওই সময় তানভীরের সাথে সেখানে উপস্থিত এলাকা থেকে আসা প্রায় অর্ধশত লোক উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পুলিশ চোখকে ফাঁকি দিয়ে আত্মগোপনে থাকা সাজ্জাদক একের পর এক ঘটনা করতে থাকায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার না হওয়ায় তারা দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন আফতাবের মা-বাবা। বাবা মোহাম্মদ মুছা লাশঘরের সামনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আর কত লাশ ফেলবে সাজ্জাদ। আমার ছেলেকে কেন গুলি করল।’
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালার’পুল এলাকার ১টি নির্মাণাধীন ভবনে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে ছোট সাজ্জাদ ও তাঁর ২ সহযোগীদের নিয়ে গুলি করেন। এ ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজে উঠে আসে। ভয়ে ভবন মালিকেরা কেউ মামলা করেনি। ওই ঘটনার আগে গত ৩০ আগস্ট একই এলাকায় দুজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় ছোট সাজ্জাদ ও তাঁর সহযোগীকে।
জানতে চাইলে সিএমপি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, সন্ত্রাসী সাজ্জাদই গুলি করেছে প্রাথমিক’ভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
কে এই সাজ্জাদ
বায়েজিদ থানা সীমান্তে হাটহাজারীর শিকার’পুরের মোঃ জামালের ছেলে,ও হাজী পাড়ার গোলাম শরীফ টেন্ডল বাড়ির জামাই ঔষধ ব্যবসায়ী মুছা বলেন আরো কিছু দুর্ধর্ষ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত সন্ত্রাসীর সহযোগী হিসেবে এই ছোট সাজ্জাদ অপরাধ জগতে পা বাড়ান। এরপর দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে। শেষ গত ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। এর কিছুদিন পরেই সে জামিনে বেরিয়ে আসে। এ বিষয়ে চাঁদগাও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আফতাব উদ্দিন বলেন অপরাধীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে, খুব শীঘ্রই আমরা হত্যায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারব।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন অনন্য আবাসিক শীতলঝর্ণা,কালারপুল,হাজীপাড়া,বায়েজিদ থানার সীমান্তবর্তী হাটহাজারীর কুয়াইশ, নগরীর চান্দগাঁও হাজীরপুল ও পাঁচলাইশ এলাকায় সাজ্জাদ ১০ থেকে ১৫ জনের বাহিনী নিয়ে দাপুটে ঘুরে বেড়ায়।