বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার বেশিদিন থাকলে জনগণ তা মেনে নেবে না।
পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘একটি জরিপে বলেছে ৮০ শতাংশ লোক চায় যে যতদিন খুশি এই সরকার থাকবে। আমি জানি না এই কথা তারা কোথা থেকে পেল, কীভাবে পেল। কিন্তু জনগণ এটা কোনোদিনই মেনে নেবে না।’
রাজধানীর ডিআরইউ মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।
ওই জরিপের প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি পত্রিকার নাম বলছি না একটা জরিপের বরাত দিয়ে লিখেছে। এই জরিপ কারা করেছে আমি ঠিক বলতে পারব না। এ ধরনের কথা, রিপোর্ট করা থেকে আমার মনে হয় ভেবেচিন্তে করা উচিত যেন বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়, সেই বিষয়টা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেশ কিছু সংগঠন, গোষ্ঠী তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন যে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাখা হোক। তারা একেবারেই পরিবর্তন করে দেবে। সব সংস্কার তারাই করে দেবে। তাহলে তো জনগণের দরকার নাই, পার্লামেন্টের দরকার নাই।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলেছি একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে এবং নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ও অবাধ। এখন নিরপেক্ষ সরকার আছে। নির্বাচনের পরেই যারা নির্বাচিত হবেন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন যে কোন কোন পরিবর্তনগুলো দরকার।’
‘শুধু কি পরিবর্তন, নাকি নতুন করে লিখতে হবে। নতুন করে লিখতে হবে নাকি বাতিল করে দিয়ে সংবিধান আনতে হবে। এটা পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে যে নতুন সুযোগ তৈরি করেছে দেশের জনগণের জন্য, সেটাকে নস্যাৎ করার জন্য, নষ্ট করার জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আমি অত্যন্ত অবাক হই যখন দেখি আমাদের শিক্ষিত মানুষেরা, সমাজে যাদের গুরুত্ব আছে, তারা যখন বিভিন্ন রকম কথা বলে যা বিভ্রান্তিমূলক।’
‘যারা দায়িত্ব পেয়েছেন, এই সরকার যাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন, তাদের মধ্যেই অনেকেই যখন বলেন যে নতুন দল তৈরি করতে হবে, তখন বিস্মিত হই। এই এখতিজয়ার উনাকে কে দিয়েছে? উনি এই দায়িত্ব পেলেন কোথায় যে নতুন দল তৈরি করতে হবে?’ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
অবিলম্বে নির্বাচন দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করতে হলে ন্যূনতম যে পরিবর্তনগুলো দরকার, ব্যবস্থা দরকার সেটা করতে হবে। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনের যে সংস্কার করা দরকার সেটা করতে হবে। প্রশাসনিক কাঠামো, জুডিশিয়ারি সংস্কার, পরিবর্তন যেটা দরকার করতে হবে। এসব করে অবিলম্বে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আরও বেশকিছু দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব। বলেন, আমি আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, হয়রানি মূলক ও গায়েবি মামলা, যার সংখ্যা এক লাখ ৪৫ হাজার, অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার করা হোক। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত-আহত ও তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এখনো আপনার প্রশাসনে সেই সব ব্যক্তিরা রয়ে গেছেন, যারা ফ্যাসিবাদ সরকারের রেজিমকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য কাজ করেছেন। তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে সরানো করা হোক।’