মোংলায় স্বপ্নের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু
- আপডেট টাইম : ০৫:৪৬:৪৫ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১ জুন ২০২৪
- / ১১২ ৫০০০.০ বার পাঠক
উদ্বোধনের ৭ মাস পর শনিবার স্থলবন্দর বেনাপোল জংশন থেকে ছেড়ে আসে বেতনা এক্সপ্রেস। এটি খুলনার ফুলতলায় এসে নাম বদলে মোংলা কমিউটার নামে মোংলার উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসেন।
শনিবার (১ জুন) দুপুরে মোংলা রেলওয়ে স্টেশন থেকে নতুন রুটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন, বাগেরহাট-৩ এর সংসদ সদস্য বেগম হাবিবুন নাহার।
সকাল ১০টার দিকে যাত্রী ভর্তি করে মোংলার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ট্রেনটি। ১৩৮ কিলোমিটার রুটে মোট আটটি স্টেশনে দাঁড়াবে। খুলনার ফুলতলা পর্যন্ত এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, এরপর ফুলতলা থেকে মোংলা নতুন রেলপথে এ ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।
এ বিষয়ে এক ট্রেনে যাত্রী বলেন, আমি সকালে ভারত থেকে এসেছি। এখন মোংলার ট্রেনে উঠেছি এবং মোংলা স্টেশনে নামব। এর আগে বাসে যাতায়াত করতাম। এতে খুলনা থেকে বাস পরিবর্তন করতে হতো। কিন্তু ট্রেন চালু হওয়াতে সময় কম লাগবে আর ভাড়াও কম। এ বিষয়ে মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করি ট্রেনে করে। এখন মোংলা থেকে বেনাপোলে যাতায়াত করতে পারব। যদি যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি মালবাহী ট্রেনও চালু হয়, তাহলে মালামাল বহনের জন্যও অনেক সুবিধা হবে এবং তারা দ্রুত মালবাহী ট্রেন চালুর দাবি জানান।
প্রথম দিনে মোংলা রেলপথে ট্রেন চলাচলের সাক্ষী হতে বেতনা এক্সপ্রেসে যাত্রা শুরু করেন কয়েকজন তরুণ ও তরুণীরা। তারা বলেন, আমরা সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য আগে বাসে যেতাম। এতে করে সময় বেশি লাগত। এখন আমরা ট্রেনে করে অল্প সময়ে মোংলা গিয়ে সুন্দরবন ঘুরে আসতে পারব। যদিও আজ সুন্দরবন যাচ্ছি না, আজ ইতিহাসে সাক্ষী হতে মোংলার পথে প্রথম ট্রেনে যাত্রা করছি। এ বিষয়ে মাস্টার খলিলুর রহমান বলেন, আমার এক লোক বেনাপোল থেকে যাত্রী ভর্তি বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মোংলার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। আর বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে মোংলায় পৌঁছায়। এ বিষয়ে মোংলা স্টেশন মাস্টার এস, এম মনির আহম্মেদ কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোংলা কমিউটার ট্রেন চালুর মধ্যদিয়ে বেনাপোলের সঙ্গে মোংলার সরকারি সংযোগ স্থাপিত হলো। যাত্রী, মালামাল সব কিছুই এই ট্রেনে বহন করা যাবে। এখন একটি ট্রেন চালু হলো। তবে ভবিষতে এই রুটে ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়বে। যখন একটি লাইন চালু হয়, দুই একটি ট্রেন দিয়েই চালু হয়। তারপর দিন দিন ট্রেন বাড়বে। মানুষের সুযোগ সুবিধাও বাড়বে। এই রুটে চলাচলকারী প্রত্যেকেই উপকৃত হবেন।
এবিষয়ে তিনি আরও বলেন, দুপুর ৩টায় মোংলা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় কমিউটার ট্রেনটি। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় ৫শ যাত্রী নিয়ে বেনাপোল থেকে মোংলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসেন এ ট্রেনটি। ট্রেনটি ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, ফুলতলা হয়ে মোংলায় পৌছায় দুপুর ২টায় সময়। এবং মোংলা থেকে ৩শ ৬১ জন যাত্রী নিয়ে আবারও ট্রেনটি বেনাপোলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ট্রেনটি সন্ধ্যায় বেনাপোল পৌঁছাবে।
উল্লেখ্য গত ১’লাই নভেম্বর খুলনা টু মোংলা পর্যন্ত নতুন রেল লাইনের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের প্রায় ৭ মাস পর এ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু।